মোস্তফা-হাকিম মাতৃসদন হাসপাতালে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উদ্বোধন

রবিবার সকালে মোস্তফা-হাকিম মাতৃসদন হাসপাতালে শিশুকে ভিটামিন “এ” ক্যাপসুল খাইয়ে দিয়ে ভিটাািমন “এ” প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২০ দিনব্যাপি কর্মসূচির উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন । চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোজাম্মেল হক ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলী বক্তব্য রাখেন। এতে উপস্থিত ছিলেন মোস্তফা-হাকিম মাতৃসদন হাসপাতালের ইনচার্জ ডা. নাছিম ভূইয়া, কনসালটেন্ট ডা. সুশান্ত বড়–য়া, জোনাল মেডিকেল অফিসার ডা. সুমন তালুকদার, ইউনিসেফের চট্টগ্রাম বিভাগের প্রধান নিউট্রিশন কর্মকর্তা ডা. উবা সুই চৌধুরী, সমাজসেবক ও রাজনীতিক মো. নেছার উদ্দিন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রশাসক বলেন, ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী প্রতিটি শিশুকে একটি নীল রঙের (১লক্ষ ইউনিট) ও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী প্রতিটি শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২লক্ষ ইউনিট) খাওয়ানো হবে। এই ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য হল শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি ও ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবজনিত শিশুর অন্ধত্ব প্রতিরোধ করা ও পুষ্টি বিষয়ক অন্যান্য কর্মসূচি সমন্বিতভাবে বাস্তবায়ন করা। উক্ত কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যা অবশ্যই পালন করতে হবে তা হল ৬ মাস বয়সী শিশুকে মায়ের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি সুষম খাবার খাওয়ানোর বিষয়ে পুষ্টি বার্তা প্রচার এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া চিকিৎসার জন্য মনিটরিং টিম গঠন করা, আইপিসি সম্পন্ন করা ও ওয়ার্ড ভিত্তিক উদ্দিষ্ট শিশুর তালিকা সংরক্ষন করার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, সামাজিক ভাবে সুস্থ থাকলে জাতি হিসেবে আমরা সুস্থ থাকতে পারবো না। এ প্রসঙ্গে তিনি নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে স্থায়ী/অস্থায়ী ১২৮৮ কেন্দ্রে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী প্রায় ৮০ হাজার শিশুকে ১টি করে নীল রঙের ও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী সাড়ে ৪ লাখ শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। তিনি বলেন, করোনার কারণে সিটি কর্পোরেশনের টিকা কেন্দ্রগুলোতে আজ থেকে আগামী ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিগত সময়ে যে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছে এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। নগরীর ৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশু যাতে এই কর্মসূচীর আওতাভুক্ত হয় সেই ব্যাপারে আরো দায়িত্বশীল হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান প্রশাসক। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবায় চিকিৎসকের ভুমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বে মানুষের গড় আয়ু যেখানে ৬৯ বছর। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ৭৩ বছর। এই সাফল্যের পেছনে যাদের অবদান তারা হলেন আমাদের চিকিৎসক সমাজ। তিনি বলেন, জীবনের ফুল ফুটানো হচ্ছে ডাক্তার ও নার্সদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ। চিকিৎসা সেবা বিষয়টিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করেছে। চসিক পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র সমূহ নগরীর ৬০ লক্ষ লোকের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে চসিক নগর স্বাস্থ্য, চক্ষু পরিচর্যা কেন্দ্র, ভিসিটি সেখার ও নগর মাতৃসদন সেবা চালু রেখেছে । এই সকল স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র ও মাতৃসদন হাসপাতালে দক্ষ ও অভিজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছে। এই প্রসংগে মেয়র বলেন, এ সকল নগর স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র ও মাতৃসদন হাসপাতলের রোগীদের সাধারণ রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি টিকাদান কর্মসূচী, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মসূচী ও স্বল্প মূল্যে নিদিষ্ট প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরিক্ষা ও গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য পরিচর্যার সকল সুযোগ-সুবিধা ও পরামর্শ প্রদান করে থাকে। প্রশাসক বলেন, হাসপাতালের সেবাকেন্দ্রের পরিবেশ ভাল থাকলে মনও সুস্থ থাকে। তিনি হাসপাতালের চারদিকে ফুলের টব ও গাছ লাগানোর জন্য নির্দেশ দেন। প্রশাসক মোস্তফা-হাকিম মাতৃসদন হাসপাতালে সেবাদানের ক্ষেত্রে স্লথ গতির কথা উল্লেখ করে এর গতি আরো বাড়ানোর জন্য হাসপাতাল ইনচার্জ ডা. নাসিম ভূইয়াকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930