কাপ্তাই হ্রদের তীরবর্তী স্থানে কচুরিপানার জঞ্জাল, নৌ চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ কাপ্তাই হ্রদে কচুরিপানা জট আবারো বিস্তার লাভ করেছে। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে রাঙ্গামাটিসহ আশপাশের এলাকা ও পাড়া মহল্লাগুলো তীরবর্তী নদীগুলো। মাইলের পর মাইল এলাকায় কচুরিপানার জঞ্জালের কারনে হ্রদের সাথে জড়িত কয়েক হাজার মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তা ছাড়া এলাকায় নৌকা যোগে লাকড়ি বা মাছ বিক্রি করতে আসা বিক্রেতারা কেউ নদীর পাড়ের তীরবর্তী স্থানে আসতে পারছে না।
অন্যদিকে হ্রদে জমে থাকা কচুরি পানার জঞ্জালে নৌ চলাচলও বিঘিœত হচ্ছে। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন ১০টি উপজেলার মধ্যে ৬টি উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌপথ। এসব উপজেলায় কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নৌ পথে নিয়মিত কর্মস্থলে যাতায়াতে বিঘœ ঘটছে। স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা পড়–য়া স্কুল শিক্ষার্থীরাও কচুরিপানার ফলে নৌ পথে তারা সঠিক সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছতে না পাড়ায় যথা সময়ে ক্লাসে উপস্থিত হতে পারছে না। অনেক সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়াই হচ্ছে না।
অন্যদিকে দীর্ঘ সময় ধরে কাপ্তাই হ্রদের বিশাল এলাকা কচুরিপানার জঞ্জালে আবদ্ধ হয়ে পুরোপুরি অচল হয়ে গেছে হ্রদ বেষ্টিত রাঙ্গামাটি পাড়া মহল্লার এলাকাগুলো। হ্রদ এলাকায় কচুরিপানা জমতে জমতে হ্রদের পানি দেখা যায় না।
সরজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে কাপ্তাই লেক কচুরিপানার জঞ্জালে মারাত্মক দূষণের শিকার হচ্ছে। কচুরিপানা পঁেচগলে হ্রদের পানিকে দূষিত করে তুলেছে। ফলে হ্রদের পানি বিশুদ্ধ না থাকায় এবং তীরবর্তী এলাকাগুলোতে পানি বিশুদ্ধকরণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এখানকার মানুষ দূষিত পানি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে। আর এ হ্রদের পানি ব্যবহার করে মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে সাপ ও মশার উপদ্রব।
ইঞ্জিন চালিত নৌ যান চালক মোহাম্মদ ইদ্রিস জানান, ৫-১০ মিনিটের জায়গা যেতে বর্তমানে ঘণ্টা পার হয়ে যাচ্ছে। তবুও সঠিক সময়ে যাওয়া যাচ্ছে না। আর কচুরিপানার উপর নৌ যান চালাতে গিয়ে ইঞ্জিনের পাখা ভেঙ্গে যাচ্ছে। তার চেয়েও প্রচুর পরিমাণে খরচ হচ্ছে তেল।
মগবান থেকে নৌ যান করে আসা বিক্রেতা মঙ্গল কুমার চাকমা বলেন, প্রতি সপ্তাহে বাজারে আসতে খুব কষ্ট হয়। হ্রদের মধ্যভাগে কচুরিপানা না থাকলেও ঘোনা কিংবা আশেপাশে এলাকায় কচুরিপানার কারনে ইঞ্জিন বোট নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সেখান থেকে আসতে গিয়ে নদীতে আটকে থাকতে হয়। এতে করে বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে আসা পন্য সামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়। বাজারে গিয়ে সঠিক দাম আর পাওয়া যায় না।
ভুক্তভোগীরা জানান, গত কয়েক সপ্তাহের অধিক সময় ধরে এই করুণ অবস্থার সৃষ্টি হলেও প্রশাসন কচুরিপানা পরিষ্কার করার উদ্যোগ নেয়নি। একারণে ছোট ট্রলার ও স্পিডবোটগুলো চলাচলে তীব্র বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। অবিলম্বে কাপ্তাই হ্রদ ও আশেপাশের পাড়া মহল্লা এলাকাগুলো থেকে কচুরিপানা অপসারণের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30