রাঙ্গামাটিতে বাংলা ভাষায় এই প্রথম বৌদ্ধগ্রন্থ ত্রিপিটক প্রকাশিত হচ্ছে

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বাংলাদেশের ইতিহাসে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বৌদ্ধ ধর্মীয়গ্রন্থ ত্রিপিটক এই প্রথম বাংলায় প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। পূর্নাঙ্গভাবে বাংলা ভাষায় ত্রিপিটক প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে রাঙ্গামাটি রাজবন বিহার। পালি ভাষায় ৫৯টি গ্রন্থকে ২৫ খন্ডে বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে এই ত্রিপিটক গ্রন্থে স্থান পেয়েছে। ২৫ আগষ্ট বাংলা ভাষায় অনুবাদ করা ত্রিপিটকের মোড়ক উন্মোচন করবে বিহার কর্তৃপক্ষ।
আড়াই হাজার বছর পূর্বে গৌতম বুদ্ধ বৌদ্ধত্ব লাভের পর মানবমুক্তির জন্য ধর্ম প্রচার করেছিলেন। সেই সাধনালব্ধ অর্জিত জ্ঞান দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে তিনি জীব জগতে হিত-সুখ কামনায় প্রচার করেছিলেন তারই সমন্বিত রূপ হলো ত্রিপিটক। এ ত্রিপিটক নানা দেশে বহু ভাষায় পূর্নাঙ্গভাবে প্রকাশিত হলেও বাংলা ভাষায় আজো ত্রিপিটক প্রকাশিত হয়নি।
রাঙ্গামাটি রাজ বন বিহারের বনভান্তের শিষ্যসংঘের প্রধান, শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির জানান, বৌদ্ধদের তীর্থ স্থান হিসেবে খ্যাত রাঙ্গামাটির রাজবন বিহারের প্রয়াত ধর্মীয় গুরু বনভান্তের আশা ও স্বপ্ন ছিল একদিন বাংলা ভাষায় পূর্নাঙ্গ ত্রিপিটক অনুবাদ করা হবে। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে বনভন্তের শিষ্যরা বাংলায় ত্রিপিটক অনুবাদ করা উদযোগ নেয়। এ চিন্তা থেকেই রাজবন বিহার কর্তৃপক্ষ ২০১৫ সালে নয় সদস্য বিশিষ্ট ‘বাংলায় সমগ্র ত্রিপিটক প্রকাশনা কমিটি’ গঠন করেন। এ কমিটি দীর্ঘ দেড় বছর ধরে ত্রিপিটকের পালি ভাষায় রচিত ৫৯টি গ্রন্থকে ২৫ খন্ডে বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে।
পালি ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় এই প্রথম ত্রিপিটক প্রকাশের ফলে বাংলা ভাষাষীদের গৌতম বুদ্ধের জীবন দর্শন ও শান্তির বাণী মনে প্রাণে ধারন করে উপলদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া বাংলা ভাষায় ত্রিপিটক প্রকাশের ফলে শুধু বৌদ্ধ ধর্ম নয়, বাংলা সাহিত্যও উপকৃত হবে। ত্রিপিটকের বৌদ্ধ উপদেশ বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হওয়ায় প্রয়াত বনভন্তের স্বপ্ন পুরণ হয়েছে বলে জানান বনভন্তের শিষ্য শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির।
পালি ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় এই প্রথম ত্রিপিটক প্রকাশের ফলে বাংলা ভাষাভাষীদের মাঝে বিশেষ করে বৌদ্ধদের মধ্যে গৌতম বুদ্ধের জীবন দর্শন ও শান্তির বাণী প্রাণে উপলদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মনে করছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930