নারীর মর্যাদা, নিরাপত্তা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যৌতুকবিরোধী আইনের কঠোর প্রয়োগ চাই

 

যৌতুকমুক্ত বিয়ের জন্য যুবকদেরকে সরকারি-বেসরকারিভাবে চাকরিতে অগ্রাধিকার প্রদান, যুবকদেরকে স্বাবলম্বী করতে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ম্যারেজ ফান্ড গঠন করার, যৌতুক ও নারী নিপীড়ন বিরোধী আন্দোলন সামাজিকভাবে ছড়িয়ে দেয়ার এবং নারীর মর্যাদা, নিরাপত্তা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যৌতুকবিরোধী আইনের কঠোর প্রয়োগের আহ্বান জানানোর মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম লালদীঘি ময়দানে যৌতুকবিরোধী মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।  ১৮ মার্চ শনিবার আনজুমানে রজভীয়া নূরীয়া বাংলাদেশ বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে এবং এ সংগঠনের চেয়ারম্যান পীরে তরিকত আল্লামা আবুল কাশেম নূরীর (মজিআ) আহ্বানে অনুষ্ঠিত যৌতুকবিরোধী নবম মহাসমাবেশে প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্বে করেন নগর আনজুমানের সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মদ নুরুল হক। এতে উদ্বোধক ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব মাওলানা এম এ মতিন। প্রধান বক্তা ছিলেন আনজুমানে রজভীয়া নূরীয়া বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান পীরে তরিকত আল্লামা আবুল কাশেম নূরী। তিনি বলেন, আজ হতে ১৪শত বছর আগে অন্ধকার যুগে নারীর মর্যাদা ও অধিকার বলতে কিছুই ছিলনা। নারীরা ছিল অধিকার বঞ্চিত, বিপন্ন ও মর্যাদাহীন। নারী জাতিকে এই অন্ধকার জগত থেকে ফিরিয়ে এনে সর্বপ্রথম মহানবী (দ) নারীর মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আজ সভ্যতার অগ্রগতির যুগেও বিশ্বজুড়ে চলছে নারী নিপীড়ন ও নারীর প্রতি নিগৃহ। আল্লামা নূরী বলেন, আজ গরিব পরিবারের ঘরে ঘরে নীরব কান্না ও আহাজারি চলছে। যৌতুক দিতে না পারায় প্রতিদিন শত শত সংসার ভেঙে যাচ্ছে। নারীদের প্রতি এই অমানবিক নিপীড়ন থামাতে দায়িত্ববোধ থেকেই যৌতুকবিরোধী আন্দোলনের সূচনা করেন বলে আল্লামা নূরী তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন। উদ্বোধক মাওলানা এম এ মতিন বলেন, যৌতুক ও জঙ্গিবাদ আজ বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যৌতুকের ব্যাধি থেকে নারী সমাজকে মুক্তি দিতে সামাজিক জাগরণ ও রাষ্ট্রীয় কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন। দেশে জঙ্গিবাদের বিস্তৃতির পেছনে সাম্রাজ্যবাদীদের হাত রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। যৌতুকবিরোধী আন্দোলন ত্বরান্বিত করায় তিনি আল্লামা নূরীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন বলেন, ইসলামে যৌতুকের স্থান নেই। যৌতুক নামক এই সামাজিক ব্যাধি থেকে রেহাই পেতে সচেতনতা কামনা করেন তিনি। চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, যৌতুক একটি সামাজিক অভিশাপ। ইসলামী নির্দেশনা মেনে বরের সাধ্যানুযায়ী মুহরানা ধার্য করতে হবে। মনীষী মোতাহের উদ্দিন চৌধুরীর উদ্ধৃতি দিয়ে অধ্যাপক মাসুম চৌধুরী বলেন, কেউ নাড়া দেয়, কেউ সাড়া দেয়। আল্লামা নূরীর আহ্বানে যৌতুকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে সর্বাত্মক সাড়া দিতে হবে। অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল সাম্প্রতিককালের নারী নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, সামাজিক জাগরণ ও আইনের কঠোর প্রয়োগ ছাড়া নারী নিপীড়ন ও যৌতুক প্রথা নির্মূল অসম্ভব। পটিয়ায় বখাটে কর্তৃক স্কুল শিক্ষিকার ওপর বর্বরতার ঘটনার নিন্দা জানান তিনি।

১২ দফা সমাবেশের প্রস্তাবনা পাঠ করেন আনজুমানের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাস্টার মুহাম্মদ আবুল হোসেন। মহাসমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন, চেম্বার সভাপতি মাহাবুবুল আলম, পীরে তরিক্বত মাওলানা গোলামুর রহমান আশরফ শাহ, অধ্যাপক মাসুম চৌধুরী, সোলায়মান খান রব্বানী, অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল, ইসলামী ফ্রন্ট নেতা মাওলানা নুরুল ইসলাম জাহেদী, রাজনীতিবিদ মুহাম্মদ এনামুল হক ছিদ্দিকী, অধ্যাপক কাজী মাওলানা ইউনুছ, মাওলানা আবুল হাসান মুহাম্মদ ওমাইর রজভী, সাংবাদিক আ ব ম খোরশিদ আলম খান, সিরাজুল ইসলাম সিদ্দিকী, যুব সেনা নেতা সৈয়দ মুহাম্মদ আবু আজম, ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এইচ.এম শহীদুল্লাহ, প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব মুহাম্মদ ওমর ফারুক, মুহাম্মদ শফিউল আলম, আবু সালেহ আঙুর, শায়ের মুহাম্মদ মাছুমুর রশিদ কাদেরী সঞ্চালনায় মহাসমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডা. কলিম উদ্দিন, মুহাম্মদ মিয়া জোনায়েত, আবদুল কাদের রজভী, নাদিমুল হক রানা, মাওলানা মাঈনুদ্দীন খান মামুন, তারেক আজিজ, মুহাম্মদ মাকসুদ আলম সর্দ্দার, আবুন নূর হাস্সান নূরী, আবদুল কাদের রুবেল, দিদারুল আলম কাদেরী, মুহাম্মদ মফিজ, সোহাইল আনসারী প্রমুখ। আনজুমানে রজভীয়া নূরীয়া ইসলামী সাংস্কৃতিক ফোরামের শায়েরগণ সকাল থেকে জিকারে নাতে মুস্তফা(দ) মাহফিলে ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশন করেন। সালাত সালাম শেষে দেশ-জাতির শান্তি ও কল্যাণ কামনায় মুনাজাত করা হয়।

পার্বত্য অঞ্চলের প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম একেএম মকছুদ আহমেদের স্বরণে নাগরিক শোকসভা :  পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিকতার জীবন্ত কিংবদন্তি প্রবীন সাংবাদিককে মরনোত্তর রাষ্ট্রীয় পদকে ভুষিত করার দাবী

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031