চট্টগ্রাম : ভয়-আতঙ্ক কাটিয়ে কর্মচঞ্চল জনজীবন

চট্টগ্রাম ব্যুরো :: কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও ঘটেছে প্রাণহানি ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম। বন্ধ ছিল ইন্টারনেট সেবা, চলছে কারফিউ। সাধারণ ছুটিতে থমকে যায় জনজীবন। মানুষের মনে ভর করে ভীতি আর আতঙ্ক। কারফিউ শিথিল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শক্ত অবস্থানে পরিস্থিতি আগের চেয়ে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরছেন সাধারণ মানুষ। কর্মচঞ্চল হয়ে উঠছে চট্টগ্রাম।
সোমবার (২৯ জুলাই) সকালে দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার নতুন ব্রীজ এলাকা, নিউ মার্কেট, আগ্রাবাদ, জিইসি, দুই নাম্বার গেট, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, অক্সিজেন এলাকা ঘুরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কর্মচঞ্চল জীবনের চিত্র ফুটে ওঠে।
সড়কে বেড়েছে ব্যস্ততা, অফিসগামী মানুষের চলাচল এবং খুলেছে দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি চলাচল করছে শহরের অভ্যন্তরীণ সকল যানবাহন। নগরের মুরাদপুর এলাকায় কস্পিউটারের দোকান মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীনের। কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে বেশ কিছুদিন বন্ধ রাখতে হয়েছে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। রোববার কিছুক্ষণের জন্য দোকান খুললেও আতঙ্কিত হয়ে ফের বন্ধ করে দিয়ে বাসায় চলে যান। সোমবার সকাল থেকে দোকান খুলেছেন। অন্যান্য দিনের তুলনায় সেবাগ্রহীতার সংখ্যাও বেড়েছে।
নাজিম উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকদিন ধরে সহিংসতা, গুলির আতঙ্কে দিন পার করেছি। এ পরিস্থিতিতে দোকানে আসি, আবার বন্ধ করে দিয়ে চলে যাই। নির্ভয়ে ব্যবসা করার সুযোগ পাচ্ছি না। আজ সকাল থেকে দোকান খুলেছি? গ্রাহকরা আসছে? কাজ কাজের চাপও বাড়ছে। নগরের বহদ্দারহাট মোড়ের আম ব্যবসায়ী নাসির উদ্দীন বলেন, ভয়ে ভয়ে দোকান খুলেছি। মানুষের আনাগোনা অনেক বেড়েছে। তারপরেও শঙ্কা কাজ করছে। আমাদের এক আম বিক্রেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে। কারো সহযোগিতা সে পাচ্ছে না। তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু গরীব মানুষ। উন্নত চিকিৎসা করতে পারছে না। পুরো পরিবার তার ওপর নির্ভরশীল ছিল। এ পরিবার এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। পরিবার বাসা থেকে বের হতে দেয় না। কিন্তু পেটের দায়ে দোকান খুলে বসেছি।
নগরের চকবাজার এলাকায় কথা হয় রিকশাচালক জাফর মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, সবসময় একটা ভীতি কাজ করে। কোনদিক থেকে কি হয়ে যায় চিন্তায় থাকতে হয়। গরীব মানুষ, কিছু হলে চিকিৎসা করার টাকা কে দিবে? কারফিউতে সড়কে যাত্রী ছিল না। এখন অফিস খুলেছে, মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। যাত্রীও পাচ্ছি। এরপরও আতঙ্ক ভর করে আছে।
নগরের বহদ্দারহাট থেকে নিউ মার্কেটের আমতল রুটের টেম্পো চালক নাছির উদ্দিন। তিনি বলেন, কারফিউ চলাকালীন গাড়ি গ্যারেজে রাখতে হয়েছে। এখন শিথিল করে দেওয়ায় গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। আগের চেয়ে যাত্রীর চাপ বেড়েছে।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930