
//আলহাজ্ব একেএম মকছুদ আহমেদ //
—————————————–
সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক জনাব জাফর ওয়াজেদ এর ফেইস বুকের একটি লেখা নিয়ে কিছু বক্তব্য দিতে হচ্ছে। তিনি লিখেছেন, বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, এখন যে কেউ সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছেন। তারা মানুষকে ব্লাকমেইল করছেন। সাংবাদিকতার নামে সাংঘাতিকতা চলছে। এটা অবশ্যই আমাদের জন্য অপমানজনক। এ কারণে সাংবাদিক কারা? তা নির্ধারণ করা যেমন জরুরী হয়ে পড়েছে, তেমন নতুন আইনের ও দরকার হচ্ছে। আদার ব্যাপারীদের জন্য তো সাংবাদিকতা নয়। প্রকৃত সাংবাদিকদের জন্যই সাংবাদিকতা। এটাই এখন নিশ্চিত করার লক্ষ্য। বিচারপতি নিজামুল হক বর্তমানে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি অনেক কম লিখেছেন। সম্প্রতি রাঙ্গামাটিতে প্রেস কাউন্সিলের আয়োজিত সাংবাদিকদের এক প্রশিক্ষণের প্রধান অতিথি ছিলেন। তিনি অনেক খোলামেলা আলাপ করেছেন। এটা রুখতে বর্তমানে ডাটাবেইজ তৈরীর কথা বলেছেন। তা চলমান। তবে এটাতে সমস্যার সমাধান হবে না। যেভাবে ভূয়া নিয়োগ পত্র এবং পরিচয় পত্র তৈরি করছে সে টা বন্ধ করতে না পারলে আমাদের কপালে অনেক দূর্ভোগ আছে। এখানে আমি দুইটা উদাহরণ দিচ্ছি। সম্প্রতি চট্টগ্রামের একটি প্রভাবশালী দৈনিকের ফেইস বুকে একটি খবর প্রচারিত হয়েছে। যে উক্ত পত্রিকায় একজন ভূয়া প্রতিনিধি পার্বত্য চট্টগ্রামের লামা, আলীকদম এবং কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় ভূয়া নিয়োগ পত্র এবং পরিচয় পত্র নিয়ে দেদারছে চাঁদাবাজি করছে। অথচ উক্ত প্রতিনিধি সম্পাদকের নামও জানেন না। অন্য দিকে চট্টগ্রামের (বান্দরবানের) একটি দৈনিক ফেইসবুকে উকিল নোটিশ দিয়েছেন একজন প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। এ দুইটি উদাহরণ থেকে পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে যে, পত্রিকা কতৃপক্ষের বাহিরে ও একটি দল অপ সাংবাদিকতায় জড়িত। এদের দমন করা না গেলে আমাদের কপালের দুঃখ আর ও বেড়ে যাবে। অন্যদিকে কিছু কিছু অখ্যাত পত্রিকা বিভিন্ন ভাবে আর্থিক সুবিধা নিয়ে শুধুমাত্র পরিচয় পত্র দিচ্ছে। আরেকদিকে কিছু পত্রিকা একমাসের ১৫ কফি করে পত্রিকার দাম অগ্রীম নিয়ে পরিচয় পত্র দিচ্ছে। এ ধরণের কত অবিযোগ প্রেস কাউন্সিল সামলাবেন? প্রেস কাউন্সিলের ক্ষমতা বা কতোটুকু? পৃর্বে মামলা সংক্রান্ত যে ক্ষমতা ছিলো তাও কার্যকর নেই। বর্তমানে ডিজিটাল আইনের মামলায় সাংবাদিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমানে অনলাইন সাংবাদিকতার করণে সাংবাদিকতার কালিমা লেপন করতেছে। এটাকে রুখতে না পারলে সাংবাদিকতার কালোযুগ শেষ হবে না। কঠোরভাবে দমন করতে হবে অপ সাংবাদিক। তবে আইন তৈরি করতে সাবধানতার সাথে করতে হবে। অন্য দিকে ওয়েজ বোর্ড নিয়ে যে তেলেসমাতি চলছে এটাকে নিয়ন্ত্রন করতে না পারলে সংবাদ পত্র গুলো মারা যাবে নিঃসন্দেহে। বর্তমানে নবম ওয়েজ বোর্ড দেয়ার জন্য সাংবাদিক ইউনিয়ন গুলো চাপ সৃষ্টি করছে। ৮ম ওয়েজ বোর্ডতো দূরের কথা অনেক পত্রিকা ৫ম ওয়েজ বোর্ডও দিচ্ছে না। হাতে গোনা কিছু পত্রিকা ওয়েজ বোর্ড দিচ্ছে। তা ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে। নোয়াব সদস্য ভুক্ত ২টি পত্রিকা সম্পর্কে যতদুর জানা যায় একজন স্টাফ রিপোর্টার কে মাত্র ২৫০০ (আড়াই হাজার) টাকা নিদিষ্ট ভাতা এবং বিজ্ঞাপনের ২৫% কমিশন এবং অন্যএকটি পত্রিকা জেলা প্রতিনিধির দীর্ঘদিন যাবত কোন বেতন ভাতাই দিচ্ছে না। শুধু মাত্র বিজ্ঞাপন কমিশন ১০% তাও নিয়মিত দিচ্ছে না। আবার একটি নতুন প্রকাশিত পত্রিকা উপজেলা প্রতিনিধিদের ২০০০( দুই হাজার) টাকার নিদিষ্ট ভাবে ভাতা দিচ্ছে। অথচ বেতন বোর্ড মফস্বল সাংবাদিকদের জন্য যা নির্ধারণ করা আছে তা মোটেও দিচ্ছে না। এত অসামানজস্য যেখানে, সেখানে ওয়েজ বোর্ড নিয়ে নতুন করে বসতে হবে। ওয়েজ বোর্ড কমিটিতে মফস্বলের সম্পাদক এবং সাংবাদিকদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যে ওয়েজ বোর্ড নির্ধারণ করা হয়েছে তা কোনদিনই চলতে পারে না। এটাকে অবশ্যই সংশোধন করতে হবে। নতুবা সংবাদপত্র শিল্পকে বাঁচানো যাবে না। অন্যদিকে টিভি চ্যানেল গুলোর জন্য কোন নীতিমালা নেই। জরুরি ভিত্তিতে নীতিমালা প্রনয়ন করে নাজুক অবস্থার সমাপ্তি টানতে হবে। অনলাইন গুলোকে নিয়ন্ত্রন করা না গেলে কি ক্ষতি হবে তা চিন্তা করা যাবে না। বর্তমানে সংবাদপত্র শিল্পের যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে তাতে করে মফস্বলের পত্রিকা গুলোর অস্তিত্ত্ব হুমকির সমুখীন। বর্তমানে নিউজ প্রিন্ট, প্লেইট, টোনার, জিন্ক সহ সংবাদপত্রের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য উদ্ধগতি হওয়াতে সংবাদপত্র টিকিয়ে রাখতে কতৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে। জরুরী ভিত্তিতে মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টেনে না ধরলে টিকে থাকা অত্যন্ত মুশকিল হয়ে পড়বে। অন্যদিকে বিজ্ঞাপন বন্টনের সঠিক ব্যবস্থা না থাকাতে মফস্বলের সংবাদপত্র গুলোর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। কেননা মফস্বলের সব বিজ্ঞাপন ঢাকা সহ অন্যান্য এলাকা দেয়া হচ্ছে। স্থানীয় ভাবে বিশেষ করে উপজেলার বিজ্ঞাপন গুলো স্থানীয় পত্রিকার দেয়ার বিধান থাকলে ও দেয়া হচ্ছে না। ঢাকার পত্রিকার দেয়া হচ্ছে। কিন্তু ঢাকার কোন বিজ্ঞাপন মফস্বল পত্রিকার দেয়া হঢ না। ইতিপূর্বে যে বিজ্ঞাপন নীতিমালা ছিল তাতে ডিএফপি’র মাধ্যমে ৬০% ও ৪০% বিজ্ঞাপন বিলি করা হতো । অর্থাৎ মফস্বলের পত্রিকায় ৬০% এবং ঢাকার পত্রিকায় ৪০%। ঢাকার বিজ্ঞাপন পত্রিকায় ৬০% এবং মফস্বল পত্রিকায় ৪০% দেয়ার বিধান ছিল। পরবর্তীতে এটা বাদ দিয়ে উপজেলার সকল বিজ্ঞাপন মফস্বলের পত্রিকার দেয়া নিয়ম ছিল । তাও বাদ দেয়াতে বর্তমানে অস্থির অবস্থায় চলছে।
সঠিক বিজ্ঞাপন বিলি বন্টনের ব্যবস্থা না নিলে সংকট যাবে না। বিভিন্ন জাতীয় দিবসে যে ক্রোড়পত্র বিল করা হয়ে থাকে তাতেও মফস্বলের পত্রিকা বঞ্চিত হচ্ছে। উদারণ স্বরুপ স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে যে রঙ্গিন ক্রোড়পত্র দেয়া হয়েছে তাতে মফস্বলের কোন পত্রিকায় ক্রোড়পত্র দেয়া হয়নি।
রঙ্গিন না দিয়ে যদি সাদাকালো ক্রোড়পত্র দোয়া হতো তাহলে মফস্বলের সর্বাধিক প্রচারিত পত্রিকা গুলোতে দেয়া হলে রঙ্গিনের চাহিতে অনেক কম খরছ হতো।
মফস্বলের অনেক পত্রিকা আছে অনেক জাতীয় পত্রিকার চাইতেও বেশি প্রচারিত। মফস্বলের পাঠকেরা পদ্মা সেতুর ক্রোড়পত্র থেকে বঞ্চিত হয়েছে।এইসব সমস্যার ব্যপারে সংবাদপত্রের সহিত সংশ্লিষ্টদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। ভবিষ্যত প্রজন্মকে
উপলক্ষে র্যালী উত্তর আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ আল মামুন মিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসন, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ আরেফিন আজিম, রানী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রনতোষ মল্লিক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, রাঙ্গামাটি মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর উপ পরিদর্শক আবু বক্কর সিদ্দিক। এর আগে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মুখে বেলুন উড়িয়ে কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। পরে সচেতনতামুলক র ্যালী অনুষ্ঠিত হয়। র ্যালীটি রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।