বন্ধনে জোর হাসিনা-মোদীর : ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খুলনা-কলকাতা রেলপথে বন্ধন এক্সপ্রেসের উদ্বোধন

বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্স অংশ নেন

বন্ধন এক্সপ্রেসের পাশাপাশি ঢাকাকলকাতা রুটের মৈত্রী এক্সপ্রেসের উভয়প্রান্তে বহির্গমন কাস্টমস কার্যক্রম এবং ভারতীয় অর্থায়নে নির্মিত দুটি রেলসেতুলে উদ্বোদন করেন তারা

উদ্বোধনীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ায় একটি শান্তিপূর্ণ অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা ভারত এবং অন্যান্য নিকট প্রতিবেশীকে সহযোগিতা করতে চাই। যেখানে আমরা সুপ্রতিবেশী হিসেবে পাশাপাশি বসবাস করতে পারি এবং জনগণের কল্যাণের জন্য গঠনমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারি।

তিনি বলেন, “এই বন্ধন শুধু রেলের না, আমাদের এই বন্ধন যেন দুই দেশের জনগণের মাঝে বন্ধন সৃষ্টি করে, সার্বিক আর্থসামাজিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে পারি।

আর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মানুষে মানুষে যোগাযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত সাক্ষাৎ আলাপ আলোচনার ওপর জোর দেন

মোদী বলেন, “আমাদের মধ্যে যোগাযোগ হচ্ছে। কিন্তু আমরা আমাদের এই বন্ধন প্রটোকলের মধ্যে রাখতে চাই না।

বক্তব্যে শুরুতে দুই দেশের মানুষকে অভিনন্দন জানিয়ে নরেন্দ্র মোদী বাংলায় বলেন, “দুই দেশবাসীকে আমার অভিনন্দন জানাই। আজ আমাদের মৈত্রীর বন্ধন আরো সুদৃঢ় হল।

নতুন ট্রেন বন্ধন এক্সপ্রেস মৈত্রী এক্সপ্রেসের বহির্গমন কাস্টমস কার্যক্রমের পাশাপাশি ভারতের ঋণ সহায়তায় নির্মিত দ্বিতীয় ভৈরব দ্বিতীয় তিতাস রেলসেতুর উদ্বোধন হয়

মৈত্রী এক্সপ্রেসে ঢাকা থেকে কলকাতা যেতে বা আসার পথে এতদিন যাত্রীদের ইমিগ্রেশন কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হত। এখন ঢাকা থেকে ট্রেন ছাড়ার আগেই বাংলাদেশ অংশের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হবে। গন্তব্য শেষে কলকাতায় হবে ভারতীয় অংশের ইমিগ্রেশন

আর ঢাকাচট্টগ্রাম রেলপথে ভৈরব তিতাসের পুরনো সেতু দুটি নির্মাণ করা হয়েছিল ১৯৩৭ সালে। ভারতীয় ঋণে সেখানে নতুন দুটি সেতু হওয়ায় ডাবল লাইনে ক্রসিং ছাড়াই ট্রেন চলাচল করতে পারবে, যাতে যাতায়াতের সময়ও কমে আসবে বলে প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান

শেখ হাসিনা এবং নরেন্দ্র মোদী এই চার প্রকল্পের উদ্বোধনের সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও হাওড়ায় তার কার্যালয় নবান্ন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন

দিল্লিতে মোদীর সঙ্গে অনুষ্ঠানে ছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। আর ঢাকায় শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। রেল সেতু উদ্বোধনের সময় ভৈরব থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক

লাইন অব ক্রেডিট তহবিলের মাধ্যমে দ্বিতীয় ভৈরব দ্বিতীয় তিতাস রেলসেতুর পাশাপাশি বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য ভারতের সরকারকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

রেলওয়ে খাতে দুই দেশের মধ্যে চমৎকার সহযোগিতা রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “২০০৯ সাল থেকে এই সম্পর্ক আরও জোরালো হয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি; বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে ১৯৬৫ সালের পূর্ব পর্ন্ত যে সমস্ত লাইনগুলো চালু ছিল, যা ১৯৬৫ সালের পর বন্ধ হয়ে গিয়েছিলসেগুলো পুনরায় চালু করার।

কলকাতাখুলনা রুটের নতুন ট্রেন বন্ধন এক্সপ্রেস উদ্বোধনীর দিনে কলকাতার চিতপুর স্টেশন থেকে খুলনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। ভিডিও কনফারেন্সে দুই দেশের দুই সরকার প্রধান শেখ হাসিনা নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সবুজ পতাকা উড়িয়ে এই যাত্রার উদ্বোধন করেন

উদ্বোধনীতে বাংলাদেশ ভারত এখন শুধু রেল, সড়ক, নদী বা আকাশ পথে সংযুক্ত নয় মন্তব্য করে গত মে মাসে সাউথএশিয়ান স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে সহযোগিতার ক্ষেত্র মহাকাশ পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

তিনি বলেন, “আমরা ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ, উপকূলীয় নৌপথ, বিদ্যুৎ গ্রিড ইত্যাদির মাধ্যমেও সংযুক্ত। আমাদের সংযুক্ত হওয়ার এসব নতুন নতুন পথ সার্বিক সংযোগের কাঠামোতে বিচিত্র মাত্রা যোগ করেছে। এখানে আমি আনন্দের সঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, সম্প্রতি আমাদের এই যোগাযোগ মহাকাশ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।

শেখ হাসিনা তার বক্তব্যের শুরুতেই ভারতের জনগণকে দিওয়ালি এবং বিজয়ারবিলম্বিতশুভেচ্ছা জানান।

ভিডিও কনফারেন্সে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে চার প্রকল্পের কার্যক্রম উদ্বোধন করতে পারায় নিজের আনন্দের কথা প্রকাশ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ঢাকাকলকাতা এবং খুলনাকলকাতার মধ্যে আরামদায়ক ভ্রমণে সহায়ক হবে বলে আমি মনে করি। বিশেষ করে যাত্রীরা সুবিধা পাবে

আজকে যে একটা নতুন দ্বাড় উন্মোচিত হল; তাতে আমাদের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে।

বাংলাদেশ ভারতের মধ্যেচমৎকারসম্পর্ক একান্ত ভাবে অপরিহার্য বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের জনগণের জন্য ভারতের শুভকামনার কথা প্রকাশ করে মোদী বলেন, “আমরা চাই দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ যেন আরো মজবুত হয়। এই যোগাযোগের মূল লক্ষ্যই হল, দুইদেশের জনগণের মধ্যে যোগোযোগ।

মৈত্রী এক্সপ্রেসে ঢাকা কলকাতা রেল স্টেশনে ইমিগ্রেশন কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নের সুবিধার কথা তুলে ধরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এতে অনেক সুবিধা হল। এতে যাত্রার সময় প্রায় তিন ঘণ্টা কমে গেল।

বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে ১৯৬৫ সালের পূর্ব পর্ন্ত যে সমস্ত লাইনগুলো চালু ছিল, সেগুলো পুনরায় চালু করা নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মোদী বলেন, “১৯৬৫ সালের পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে আমরা এক পা এক পা করে এগিয়ে যাচ্ছি।

বাংলাদেশের উন্নয়নেবিশ্বস্ত সহযোগীহতে পারা ভারতের জন্য আনন্দের বলেও মন্তব্য করেন মোদী।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে যোগাযোগ যত বৃদ্ধি পাবে, দুদেশের তত উন্নয়ন সমৃদ্ধি হবে। আমাদের দুদেশের মৈত্রী বন্ধন আরো গতি পাবে।

এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতেই মমতা ব্যানার্জি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকেপূজনীয়হিসাবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে বন্ধন আরো সৃদৃঢ় হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন

মমতা বলেন, “দুই দেশের ঐক্য, দুই দেশের মৈত্রী, দুই দেশের সম্প্রিতি, দুই দেশের সংহতি, দুই দেশের ভাষার বন্ধন আরো সৃদৃঢ় হোক। আমাদের ওয়ান অফ দি বেস্ট ফ্রেন্ড ইন দি ওয়ার্ল্ড বলেও আমি মনে করি।

রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যানের সাথে মতবিনিময় সভা পার্বত্য অঞ্চলের জনগোষ্ঠীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে দৃষ্টি দিতে হবে ——ইউজিসি চেয়ারম্যান

Archive Calendar
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
2425262728