॥ মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, খাগড়াছড়ি ॥ খাগড়াছড়িতে ইউফিডিএফের অবরোধে দ্বিতীয় দিনে বিজিবির কমান্ডারের গাড়িবহরে হামলা, ভাঙচুর হয়েছে। রবিবার (৭ জানুয়ারী) খাগড়াছড়িতে দ্বিতীয় দিনের অবরোধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) গাড়ি ভাঙচুর করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের কর্মীরা। বেলা পৌনে দুইটার দিকে খাগড়াছড়ির আলুটিলা পুনর্বাসন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এর আগে গত শনিবার দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষ ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের অবরোধ শেষ করে দলটি। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি’র বিজিবির দক্ষিণ-পূর্ব রিজিয়নের ভারপ্রাপ্ত রিজিয়ন কমান্ডার কর্নেল আনিসুর রহমানকে বহনকারী গাড়িসহ দুটি পাজেরো ও দুটি পিকআপ খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রামে ফিরছিল। গাড়ি বহর খাগড়াছড়ির আলুটিলা পুনর্বাসন এলাকায় পৌঁছলে পুনর্বাসন যাত্রী ছাউনির পাশের পাহাড় থেকে অবরোধ সমর্থক ৫/৭জন যুবক তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ও গুলতি ছোড়ে। এতে বিজিবির দক্ষিণ-পূর্ব রিজিয়নের ভারপ্রাপ্ত রিজিয়ন কমান্ডার কর্নেল আনিসুর রহমানকে বহনকারী পাজেরো গাড়ির ডান পাশের গ্লাস ভেঙে যায়। এসময় অপর পাজেরোটির পেছনের অংশ সামান্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তবে এসময় গাড়িতে থাকা কেউ আহত হয়নি বলে সূত্রটি জানিয়েছে। এসময় বিজিবি ও স্থানীয়দের উপস্থিতি দেখে অবরোধ সমর্থক ইউপিডিএফ কর্মীরা পালিয়ে যায়।
এদিকে বিজিবির কমান্ডারের গাড়িবহরে ইউপিডিএফের হামলা, ভাঙচুর প্রসঙ্গত, গত ৩ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি শহরের সুইচ গেইট এলাকায় প্রতিপক্ষের গুলিতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় নেতা মিঠুন চাকমা নিহত হয়। তার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও পিকেটারদের উপর হামলার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ’র ডাকে দ্বিতীয় দিনের মতো সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ করা হয়। পুলিশ পিকেটার ধাওয়া, বিভিন্ন স্থানে টমটম ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দিনের হরতাল পালিত হয়েছে। ইউপিডিএফ এ হত্যাকান্ডের জন্য ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিককে দায়ী করে আসছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক আব্দুল হান্নান জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি সদর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
উল্লেখ্য যে, প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ১৯ বছর পর গেল বছরের ১৫ নভেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ ভেঙে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক নামে আরো একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে।
এদিকে খাগড়াছড়ি শহরে অবরোধের ফলে সকল প্রকার যানবাহন বন্ধ ছিল, দুরপাল্লার যানবাহন গুলো আটকে দিয়েছে ইউপিডিএফ। আটকানোর পর ভাঙ্গচুর শুরু হয়। খাগড়াছড়ি পৌর এলাকায় বিভিন্ন স্থানে ইউপিডিএফ এর কর্মীরা ব্যাটারী চালিত চালকদের উপর ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে খাগড়াছড়ি’র প্রশাসন পৌর শহরে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি এবং যৌথ বাহিনী টহলরত ছিল। মিঠুন চাকমা হত্যার পরপরই খাগড়াছড়ি জেলায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।