মিয়ানমার থেকে বান্দরবানের রুমা সীমান্ত দিয়ে এবার আসছে উপজাতি শরনার্থী

॥ বান্দরবান সংবাদদাতা ॥ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা মুসলিম প্রবেশের পর এবার বান্দরবান উপজাতি শরণার্থী প্রবেশ করছে। গত ২ দিন পাহাড়ে অবস্থানের পর রাখাইন, খুমী, বম সম্প্রদায়ের মোট ১২৪ জন উপজাতি বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারী) রাত সাড়ে ৭টার দিকে রুমা সীমান্তের চৈক্ষ্যংপাড়া দিয়ে তারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। শরনার্থীরা যে জায়গায় অবস্থান করছেন তা অত্যন্ত দূর্গম এবং সীমান্তের কাছাকাছি বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কোনো অবস্থান না থাকার ফলে অনেকটা সহজেই তারা এই পথে প্রবেশ করতে পেরেছে। বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর এসব শরণার্থীদের দেখা দিয়েছে খাদ্য সঙ্কট।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গত দুই দিন বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ৭১ নম্বর জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি অবস্থানের পর সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মিয়ানমারের চীন স্টেটের প্লাটোয়া জেলার কান্তিলান পাড়ার ১২ খুমি পরিবারের ৪৮জন, খামংওয়াং পাড়ার ২৩ রাখাইন পরিবারের ৭৬ জনসহ মোট ১২৪ জন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে। এদের মধ্যে শিশু রয়েছে ৫০ জনের বেশী। বান্দরবানের রুমা উপজেলার সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের চিন রাজ্যের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য আরো কয়েকটি পরিবার জড়ো হচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। রুমার দুর্গম রেমাক্রী পাংসা ইউনিয়নের ৭২নং পিলারের কাছে চাইক্ষিয়াং পাড়ার ওপারে এসব মানুষ অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
এছাড়াও বম সম্প্রদায়ের প্রায় ১৫টি পরিবার রুমা সীমান্ত দিয়ে ঢুকে নিজ সম্প্রদায়ের বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির সদস্যদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকায় সীমান্তে মিয়ানমারের উপজাতীয় শরণার্থীর প্রবেশ অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
রেমাক্রী পাংসার ইউপি চেয়ারম্যান জিরা বম জানান, সীমান্তের ওপারে চিন রাজ্যের প্লাতোয়া জেলার কান্তালিন, খামংওয়া, তরোয়াইন এলাকাগুলোর পাড়ায় হেলিকপ্টার থেকে ব্যাপক গুলি ও বোমাবর্ষণ করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এসব জায়গা থেকে মিয়ানমারের খুমি, খেয়াং, বম ও রাখাইন সম্প্রদায়ের প্রায় ২০০ নারী-পুরুষ ও শিশু আতঙ্কিত হয়ে বাংলাদেশের সীমান্তে অনুপ্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে। তারা রুমা উপজেলার রোমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের চাইক্ষিয়াং সীমান্তের ওপারে তিদং এলাকায় জড়ো হয়েছে। এসব নাগরিক বান্দরবান সীমান্তের চাইক্ষিয়াং পাড়া, নেপু পাড়াসহ কয়েকটি পাড়ায় প্রবেশে চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে বান্দরবান জেলা প্রশাসক মোঃ দাউদুল ইসলাম সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেছেন, সীমান্তের জিরোলাইনের কাছে ১২টি খুমি পরিবারের নারী, পুরুষ ও শিশুসহ মোট ৪৮ জন এবং ২৩টি রাখাইন পরিবারের মোট ৭৬ জন সদস্য অবস্থান করছে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা যে কোনো সময় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে।
তবে জিরো লাইনে থাকা শরণার্থীরা কোনোভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সীমান্তে বাড়তি সতকর্তায় রাখা হয়েছে বলে জানান বান্দরবান সেক্টর কমান্ডার কর্নেল জহিরুল ইসলাম।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30