সরবরাহ কমে যাওয়ার আশংকায় বান্দরবানে নিত্যপণ্য কেনার হিড়িক, দ্রব্যমুল্যের উর্ধগতি

॥ রাহুল বড়–য়া ছোটন, বান্দরবান ॥ সরবারহ কমে যাওয়ার আশষ্কায় বান্দরবানে নিত্যপণ্য কেনার হিড়িক পড়েছে, আর এই সুযোগে প্রায় প্রতিটা পণ্যেও দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। এদিকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের নজরদারী আরো বাড়ানোর দাবী জানিয়েছে স্থানীয়রা।
করোনা ভাইরাস আতঙ্কে অস্থির বান্দরবানের নিত্যপণ্যের বাজার। গেল কয়েকদিনে চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুণ, দাম বেড়েছে প্রতিটা পণ্যের। প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত পণ্য কিনছে অনেকেই। দেশের অনেক এলাকার মত বান্দরবানে প্রতি বস্তা চাউলের দাম বেড়েছে (১শ থেকে ২শ) টাকা। শুধু চাউলই নই, নিত্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছ কয়েকগুণ। বান্দরবানের বাজারে কয়েকদিন আগে যে পেয়াঁজ বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪০ টাকা এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭৫ টাকায়। আলু, আদা, রসুনের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৫-১০ টাকা। আর এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে নিম্মমধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা।
বান্দরবান বাজারে বাজার করতে আসা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বান্দরবান বাজারে সব জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এখন বাজারে পেয়াঁজ ও চাউলের দাম সবচাইতে বেশি।
বাজার করতে আসা উত্তম দাশ বলেন, প্রশাসনের জোর তদারকি করা দরকার এই মহুর্তে কেননা, বান্দরবান বাজারে এক দোকানে পেঁয়াজ ৪০ টাকা আর এক দোকানে ৭০ টাকা। চাউলের দোকানে প্রতিবস্তা চাল ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা বেশি হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন বাজারে অতিরিক্ত চাপের কারনেই দ্রব্য মূল্যের এই ঊর্ধ্বগতি, আবার অনেকে দাম বাড়ার গুজবের কারণে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত মালামাল মজুদ করে রাখছে।
বান্দরবান বাজারের বিসমিল্লাহ স্টোরের মালিক জানান, বান্দরবানে হঠাৎ করে দ্রব্যমুল্যের অনেকাটার মূল্য বেড়েছে, তবে আমাদের পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে। তিনি আরো বলেন, ক্রেতারা হঠাৎ করে বান্দরবানে বিভিন্ন দ্রব্য বেশি কেনা শুরু করে দিয়েছে আর এতে সরবরাহ কমে যাচ্ছে এবং দাম উর্ধগতি দেখা দিচ্ছে।
এদিকে বাজারে দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রণ রাখতে শনিবার সকালে বান্দরবান বাজারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে ঘুরে দ্রব্যমুল্যের দাম যাচাই এবং ব্যবসায়ীদের বেশিদামে পণ্য বিক্রি না করতে নিষেধ করেছে বাজার মনিটরিং কর্মকর্তা ও মুদি ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দরা।
মনিটরিং কর্মকর্তা ও মুদি ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দরা বলছেন বাজারে কোন জিনিসের সংকট নেই, তার পরও ক্রেতারা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি জিনিস পত্র কেনায় বাড়ছে দাম। তারা আরো জানান, কেউ যাতে ভোক্তাদের ঠকাতে না পারে আর মালামাল মজুদ করে বেশি মুনাফা নিতে না পারে তার জন্য প্রয়োজনে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে অতিরিক্ত মুনাফালোভীদের শাস্তি দেওয়া হবে।
বান্দরবান বাজার মুদি দোকান ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দাশ বলেন, আমরা সব সময় বান্দরবান বাজারের দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি, যাতে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। তিনি আরো বলেন, কেউ যাতে ভোক্তাদের ঠকাতে না পারে আর মালামাল মজুদ করে বেশি মুনাফা নিতে না পারে তার জন্য আমাদের সমিতির পাশাপাশি প্রশাসনের ও আরো নজরদারি বাড়ানো দরকার।
জেলা বাজার মনিটরিং কর্মকর্তা বিজয় ধর জানান, আমরা সবসময় বাজারের অবস্থা মনিটরিং করি, তারপরে ও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দাম ঠিক রাখে না, মুল্যতালিকা প্রকাশ করতে চায় না আর এতে ভোক্তাদের প্রতারিত হতে হচ্ছে, তবে আমরা অসাধু ব্যবসায়ীদের কোন ছাড় দেব না। দ্রব্যমূল্য বেশি নিলে তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি প্রদান করবো।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30