চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেনের নির্দেশে বিদেশ ফেরতদের হোম কোয়ারেন্টিনসহ সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিতকরণ, বাজার মনিটরিং, করোনার প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে মাইকিং, অপ্রয়োজনীয় জনসমাগম প্রতিরোধকল্পে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সমন্বয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রেখেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেসী টিম। পৃথক পৃথক অভিযানে মোট ৯১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
আজ ৮ এপ্রিল ২০২০ ইং বুধবার নগরীর চান্দগাঁও, পাচলাইশ ও খুলশী এলাকায় বিকেলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের চান্দগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মামনুন আহমেদ অনিক। এসময় মূল্য তালিকা না টাঙিয়ে অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রির অপরাধে বহদ্দারহাট এলাকার ২টি মুদির দোকানকে ৬ হাজার, খুলশীর ঝাউতলা বাজারের ২টি মুদির দোকানকে ১ হাজার ৫’শ টাকা ও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ব্যবসা পরিচালনার অপরাধে বহদ্দারহাটের অন্যান্য ৩টি দোকানকে ২ হাজার টাকাসহ মোট সাড়ে ৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এলাকাগুলোতে বিভিন্ন বাজার মনিটরিং, হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতসহ মাইকিংয়ের মাধ্যমে করোনার প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে জনগণকে সচেতন ও বিনা প্রয়োজনে বাসার বাইরে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়। পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা অভিযানে সহযোগিতা করেন।
নগরীর চান্দগাঁও, পাচলাইশ ও খুলশী এলাকায় সকালে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের বাকলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আশরাফুল হাসান। এসময় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ব্যবসা পরিচালনার অপরাধে কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকার হোসেন সওদাগরের হার্ডওয়্যারের দোকানকে ১৫ হাজার টাকা, শফি সওদাগরের হার্ডওয়্যারের দোকানকে ১৫ হাজার টাকা, এ.আর কম্পিউটারের দোকানকে ৪’শ টাকা, নোভা হার্ডওয়্যারকে ১’শ টাকা ও ওজনে কম দেয়ার অপরাধে বহদ্দারহাটের ১ টি মাংসের দোকানকে ৫ হাজার টাকাসহ মোট ৩৬ হাজার ৫’শ টাকা জরিমানা করা হয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী অভিযানগুলোতে সহযোগিতা করেন।
নগরীর চকবাজার, বায়েজিদ, কোতোয়ালি ও সদরঘাট এলাকায় সকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ফাহমিদা আফরোজ। অভিযানে চকবাজারের ‘মিষ্টি মুখ’ নামক প্রতিষ্টানে রসগোল্লার উপর তেলাপোকা ভেসে থাকার অপরাধে ১৪ হাজার ৫’শ টাকা, নিষেধাজ্ঞা অমান্যসহ সামাজিক দুরত্ব বজায় ন্ ারেখে ব্যবসা পরিচালনার অপরাধে বায়েজিদের রউফাবাদে ৫টি সেলুন দোকানকে ৭ হাজার ৬’শ টাকা ও মূল্য তালিকা না টাঙিয়ে অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রির অপরাধে ২টি মুদির দোকানকে ৪ হাজার টাকাসহ মোট ২৬ হাজার ১’শ টাকা জরিমানা করা হয়। একইসাথে এলাকাগুলোর কাঁচা বাজার পরিদর্শন ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকল্পে নগরবাসীকে ব্যাপকভাবে সচেতন করা হয়।
নগরীর আকবর শাহ, হালিশহর ও পাহাড়তলী এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মাসুদ রানা। এ সময় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ব্যবসা পরিচালনার অপরাধে ৫টি হার্ডওয়্যারের দোকানকে ২ হাজার টাকা, ১টি হোটেল ও ১টি ইলেকট্রনিক্সের দোকানকে ১ হাজার টাকাসহ মোট ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বিনাপ্রয়োজনে রিক্সাসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলে নিষেধ করার পাশাপাশি নগরীর প্রবেশমুখ সিটি গেইট দিয়ে যানবাহন প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। এছাড়া এসব এলাকার কাঁচা বাজার পরিদর্শন ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকল্পে নগরবাসীকে ব্যাপকভাবে সচেতন করা হয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী অভিযানগুলোতে সহযোগিতা করেন।
নগরীর বন্দর, পতেঙ্গা ও ইপিজেড এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এহসান মুরাদ। অভিযানকালে সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ব্যবসা প্রতিষ্টান খোলা রাখার অপরাধে এলাকাগুলোর ৭টি প্রতিষ্টানকে মোট ১৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একইসাথে বোট যোগে যাত্রী পারাপারের অপরাধে পতেঙ্গা ১৫ নং নৌ ঘাট বন্ধ করে দেন ম্যাজিষ্ট্রেট। পৃথক পৃথক অভিযানগুলোতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সহযোগিতা করেন।