কক্সবাজার প্রতিনিধি :: টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলি এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ মোট নয় পুলিশ সদস্যকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাদী। বিচারক তামান্না ফারাহ মামলাটি আমলে নিয়ে টেকনাফ থানাকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছ র্যাবকে। শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে আদালতে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. মোস্তফা। মামলা করার পর শারমিন আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এর আগে হত্যা মামলার প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানিয়ে শারমিন মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকলে অস্ত্র বের করে গুলি করতে মাত্র ৪ সেকেন্ড সময় লাগত আদনানের। সেটা সে করেনি বরং তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়েছে। আমরা হত্যা মামলা করব।” কমান্ডো ট্রেনিংপ্রাপ্ত সাবেক এসএসএফ সদস্য সিনহা মো. রাশেদ খানের ডাক নাম আদনান। সাবেক সহকর্মী ও বন্ধুরা সিনহা নামে ডাকলেও পরিবারের সদস্যরা তাকে আদনানই ডাকতেন। দুই বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া সিনহা ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণ বিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য গত প্রায় একমাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় ছিলেন। আরও তিন সঙ্গীকে নিয়ে তিনি উঠেছিলেন নীলিমা রিসোর্টে। গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের কথা জানিয়ে সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন’। পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে। তবে ঘটনার যে বিবরণ পুলিশ দিয়েছে, তা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। রাশেদ আদৌ অস্ত্র তাক করেছিলেন কি না, তা নিয়ে যেমন সন্দেহ তৈরি হয়েছে, তেমনি পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে নিতে দুই ঘণ্টা দেরি হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইতোমধ্যে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। যিনি সেদিন গুলি ছুড়েছিলেন, সেই পরিদর্শক লিয়াকত আলিসহ বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ২০ পুলিশ সদস্যকে ইতোমধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার সিনহার মা নাসিমা আখতারকে ফোন করে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস দেন বলে সরকারপ্রধানের দপ্তর থেকে জানানো হয়। ৫১ বিএমএ লং কোর্সে অংশ নিয়ে সেনাবাহিনীতে কমিশন পাওয়া সিনহা ২০১৮ সালে সৈয়দপুর সেনানিবাসে থাকা অবস্থায় স্বেচ্ছায় অবসরে যান।