চট্টগ্রাম ব্যুরো :: চসিক প্রশাশসক আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজনের গৃহিত “ক্যারাভান” কর্মসূচী কর্মযজ্ঞ উৎসবে পরিণত হয়েছে। দ্বিতীয় বারের মত আজকের ক্যারাভান কার্যক্রম ফিরিঙ্গীবাজার কবি কাজী নজরুল ইসলাম সড়ক, সদরঘাট রোড, মাঝিরঘাট হয়ে রশিদ বিল্ডিং মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এসময় শত শত উৎসুক জনতা প্রশাসককে অভ্যর্থনা জানিয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এসময় প্রশাসক দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে ষ্ট্যান্ড রোড উন্নয়নকাজের শুভ উদ্বোধন করেন। ষ্ট্যান্ড রোডের কাজটি ১৩ কোটি ২০ লক্ষ টাকায় জাইকার অর্থায়নে সম্পাদন করা হচ্ছে। প্রশাসক আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশনা দিয়ে বলেন, কাজের গুনগতমান ঠিক রেখে জনদূর্ভোগ লাঘব করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে দীর্ঘদিন যাবৎ ষ্ট্যান্ড রোডটি অবহেলিত ও জন দূর্ভোগের কারণ হয়ে আছে। এসব অযাচিত দূর্দশার জন্য প্রশাসক নগরবাসীর কাছে দু:খ প্রকাশ করেন এবং ধৈর্য্য ধারনের আহবান জানান। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর যে-সকল সড়ক ও মহাসড়ক সরাসরি বন্দরের আমদানী রপ্তানী পণ্য পরিবহনের সাথে যুক্ত সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ, সংস্কার ও উন্নয়ন কর্মকান্ডে বন্দর কর্তৃপক্ষের অংশীদারীত্ব ও সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন যে, মহানগরীর সড়ক যোগাযোগ কাঠামোর বন্দরের সাথে যুক্ত সড়কগুলোতে পণ্যবাহী ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে প্রতিবছর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এগুলোর বেহাল অবস্থা ফুটে ওঠে। ফলে এ সময় রাস্তাগুলো যানবাহন চলাচল তো বটেই, সাধারণ মানুষের চলাফেরা করাটাও দুরুহ হয়ে পড়ে। তিনি আজ অপরাহ্নে ফিরিঙ্গীবাজার থেকে স্ট্যান্ড রোড পর্যন্ত চসিকের প্রকৌশল বিভাগ ও পরিচ্ছন্ন বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত টিম নিয়ে নগর সেবায় ক্যারাভান কর্মসূচী পরিদর্শন ও তদারকীকালে গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ্যে এ কথাগুলো বলেন। তিনি আরো বলেন, কর্ণফুলীর নদী তীরবর্তী সদরঘাট থেকে বারেক বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত স্ট্যান্ড রোডটি প্রাচীনতম। অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন টার্মিনাল, পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত পদ্মা’র প্রধান কার্যালয়, লবণ গুদাম, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রসহ অসংখ্য বেসরকারী পণ্য পরিবহনের অনেকগুলো অফিস থাকায় প্রতিদিন অসংখ্য ভারী যানবাহন এই ঘাটসড়ক দিয়ে বন্দর ও সারাদেশ পর্যন্ত চলাচল করে। এ ছাড়াও সাধারণ গণপরিবহন ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ছোট-মাঝারী-বড় আকারের গাড়ি নিত্য চলাচল এই সড়ক দিয়েই। মাত্রাতিরিক্ত ভারী যানবাহন চলাচলের চাপ ধারণের মত ক্ষমতা না থাকায় সড়কটি প্রতিদিনই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যততত্র খানা-খন্দ গর্ত সৃষ্টি হচ্ছে এবং এতে পানি জমছে, এছাড়াও আছে এখানে-সেখানে আবর্জনার ভাগাড়। তিনি এ প্রসঙ্গে আরো বলেন, এই সড়কটি প্রতিমুহুত্বই যানবাহন চলাচলে ঝুকিপূর্ণ এবং প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটছে। চসিকের তত্ত্বাবধানে এই সড়কটির উন্নয়ন কাজের দায়িত্ব জাইকার দুই স্তরে উন্নয়নের কাজ ভাগ করে কাজ শুরু হলেও ওয়াসা সহ অন্যান্য সংস্থার প্রকল্পের কাজ একই সাথে চলায় রাস্তার কাজের গতিতে ছন্দপতন ঘটছে। ফলে জনদুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। তবে অবস্থা ও বর্তমান প্রেক্ষিত যা-ই হোক না কেন পরিস্থিতি আগে সামাল দিতে হবে। কারণ নগরবাসীদের কাছে জবাবদিহিতার দায় আছে বলেই চসিকের মাথা ব্যথাও বেশি। তিনি আরো বলেন, রাস্তার দৃশ্যমান করুণাবস্থা, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক বাতি এবং অপরিচ্ছনাতা দূরীকরণ ও নিরসনে চসিকের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে- এ ক্ষেত্রে তিল পরিমাণ গাফিলতি, অসমতা ও দায়িত্বপালনে অনীহার অবকাশ নেই। প্রশাসক হিসেবে যে-সময়ের জন্য দায়িত্ব থাকিনা কেন লক্ষ্য একটাই-এই নগরীকে সকল সামর্থ্য উজার করে বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা। এসময় প্রশাসক স্থানীয় জনসাধারণের সাথে চলমান সমস্যা,সমাধান ও পরামর্শমূলক আলাপ করেন। স্থানীয়রা বর্জ পরিস্কার,অবৈধ পাকিং,ফুটপাত দখল ও রাস্তা সংস্কারের অনুরোধ জানালে প্রশাসক তাৎক্ষণিক সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। মাঝিরঘাট থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত ষ্ট্যান্ড রোড উন্নয়ন কাজের উদ্ভোধন করে প্রশাসক কাজের গুনগত মান বজিয়ে রেখে দ্রুতগতিতে কাজ শেষ করতে সকল কে সহযোগিতার আহবান জানান। কবি নজরুল ইসলাম সড়কটির ও সংস্কার কাজ গুরুত্ব সহকারে দ্রুততার সহিত সম্পাদন করারজন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। এসময় প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের বন পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী,৩৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি স্বপন কুমার মজুমদার, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হোসেন বাচ্চু, আব্দুর রহমান, জহির আহমদ চৌধুরী, মাহবুবুল হক সুমন, ফরহান আহমেদ, কাউন্সিলর প্রার্থী পুলক খাস্তগীর, মাঈনুল হক লিমন, খলিলুর রহমান নাহিদ, কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুস সালাম মাসুম, শওকত হোসেন মুন্না, মো. আলমগীর, কাঞ্চন চৌধুরী, সাজ্জাদ হোসাইন, এনামুল হক মিলন, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, সাবেক কাউন্সিলর নীলু নাগ, চসিক প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী, নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফরহাদুল আলম, সহকারী প্রকৌশলী রিফাতুল করিম চৌধুরী,মিসবাহ উল আলম, উপসহকারী প্রকৌশলী তানজিম ভুঁইয়া, তসলিমা ইসলাম, বিপ্লব দাশ, মাসুদুর রহমান মাসুদ, কামরুল হক, জানে আলম, মো. নাছির উদ্দিন, ডা. সজীব তালুকদার, আজিজুর রহমান আজিজ, মো. সাইফুল্লাহ আনছারী, রকিবুল আলম সাজ্জী, রাজীব হাসান রাজন, আশিকুন্নবী চৌধুরী, মো. নোমান চৌধুরী, ইরফানুল আলম জিকু, উপস্থিত ছিলেন। যাত্রাপথে প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন নগরীর ফিরিঙ্গীবাজার, আলকরন এবং মাদারবাড়ী ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় নগরবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।