মৈত্রী সেতু হয়ে উঠবে দুই দেশের পর্যটন ও বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র—ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ ফেনী নদীতে নির্মিত ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুম ও বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়কে যুক্ত করা বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই সেতু দুই দেশের পর্যটন ও বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র আজ বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। আজ মঙ্গলবার (৯ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সেতুর উদ্বোধন করেন মোদি।
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ২০১৭ সালে আপনারা ত্রিপুরার উন্নয়নে দ্বিগুন মনোযোহী হন। আর এর ফলে যে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তা আজ আপনাদের সামনেই। যেখানে ঘুষ-দুর্নীতি ছাড়া কোনো কাজ হতো না, তা এখন সহজেই হচ্ছে। যেখানে কৃষকদের ফসল সরবরাহ করতে বিভিন্ন অসুবিধা হতো, সেখানে আজ কৃষকরা সরাসরি ফসল সরবরাহ করতে পারছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ত্রিপুরায় আজ যোগাযোগ তথা সড়কপথ, বিমানপথ এবং রেলপথের উন্নয়নের পাশাপাশি প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট সুবিধার মাধ্যমে জনগণের জীবনকে আরও সহজ করে তুলছে। সেই সঙ্গে তাদের অর্থনৈতিক দিকেরও উন্নয়ন হচ্ছে।’
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার এই সেতু পর্যটন ও বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র হবে এমন আশা ব্যক্ত করে মোদি বলেন, ‘এই সেতুর ফলে ত্রিপুরার তথা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধন একদিকে যেমন সমৃদ্ধির পথে আছে, তেমনি দুই দেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে। দুই দেশের অর্থনৈতিক বন্ধনও সুদৃঢ় হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নির্মিত এই মৈত্রী সেতুর কারণে পণ্য পরিবহন এবং পর্যটন খাত আরও উন্নত হবে। ফলে, পণ্য পরিবহনের জন্য এখন আর আপনাদের শুধু সড়ক পথের ওপর ভরসা করে বসে থাকতে হবে না, বাংলাদেশের সড়ক, নদী ও সমুদ্র পথেও সুবিধা পাবে এই রাজ্য।
মোদির বক্তব্য দেওয়ার আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফেনী নদীতে নির্মিত বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে শুধু বন্ধুত্বের বন্ধন নয় বরং দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে বাড়াতেও অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ফেনী নদী। সেতুটি বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্য বাড়াতে আরও সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই সেতুর মাধ্যমে সরাসরি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে যুক্ত হবে ত্রিপুরা। ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েস অ্যান্ড ইনফ্রাস্টাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তানিশ চন্দ্র আগারভাগ ইনপাকন প্রাইভেট লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে ৮২.৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে রামগড়ের মহামুনিতে ২৮৬ একর জমির উপর ‘মৈত্রী সেতু’ নির্মিত হয়েছে।
সেতুর ভারতীয় প্রকৌশলী মতিউর রহমান জানিয়েছেন, গত ১৩ জানুয়ারি সেতুর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়। এ সেতুর মোট পিলার ১২ টি। এরমধ্যে বাংলাদেশ অংশে নির্মাণ ৮ টি ও ভারতের অংশে ৪টি। সেতু থেকে ২৪০ মিটার এপ্রোচ রোড নির্মাণ করে রামগড়-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের সঙ্গে এবং ওপারে সেতু থেকে প্রায় ১২০০ মিটার এপ্রোচ রাস্তা নবীনপাড়া-ঠাকুরপল্লী হয়ে সাব্রুম-আগরতলা জাতীয় সড়কে যুক্ত হয়েছে। আন্কর্জাতিক মানের দুই লেনের এ সেতুর দুই পাশে রয়েছে ফুটওয়ে।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30