চট্টগ্রাম ব্যুরো :: চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জি: মোশাররফ হোসেন এম.পি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানে দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। এই সাফল্য শেখ হাসিনার, এই সাফল্য আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। তৃণমূল আওয়ামী লীগের ঐক্য ধরে রাখা গেলে শেখ হাসিনার সমাদৃত ও প্রশংসিত অর্জনগুলোর কারণে আওয়ামী লীগের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। তৃণমূল ঐক্যবদ্ধ না হলে ২০০১ সারের চেয়েও খারাপ পরিণতি আমাদের জন্য অপেক্ষা করবে। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি এখন থেকে নিতে হবে। তূণমূল আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী সংগঠন থাকলে কেউ আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে পারবেনা, আগামী নির্বাচনে আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। আজ ১৪ মে ২০২২ (শনিবার) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম নগরির জিইসি কনভেনশনর সেন্টারে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এম.পি বলেন, বিএনপি সরকার দূর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। যথেষ্ট দূর্নীতি করেছিল বিএনপি কিন্তু ১/১১ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকার সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার করেছিল শেখ হাসিনাকে। খাদ্য ঘাটতির বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ। বিদ্যুতের উৎপাদন বেড়েছে অনেকাংশে। উন্নয়নের যে ধারা দেখা যাচ্ছে তাতে বিশ্লেষকরা বলছেন শীঘ্রই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। তাই এই দেশে শেখ হাসিনার সরকার বার বার দরকার।
বিশেষ অতিথি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাসান মাহমুদ এম.পি বলেন, শ্রীলঙ্কার নেতারা এখন যেভাবে পালাচ্ছে, বিএনপির নেতারা সেভাবে আগেই পালিয়ে গেছে। তারেক রহমান ‘আমি আর রাজনীতি করবো না’ মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে গেছেন। ঢাকায় তাদের নেতা মাহবুবুর রহমানকে দলের নেতাকর্মীরা ধাওয়া করেছিল। ৮০ সালে জিয়াউর রহমান যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যান তখন তাকেও জুতা নিক্ষেপ করেছিল। এখন নিজেরা কীভাবে পালাবেন সেটির পথ খুঁজুন। তিনি বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভীসহ বিএনপি নেতারা পদ্মা নদীর ওপারে কীভাবে যাবেন- তা দেখার অপেক্ষায় আছি। তারা কি গাড়িতে চড়ে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যাবেন, নাকি আওয়ামী লীগের নৌকায় চড়ে ওপারে যাবেন।
তিনি বলেন, তৃণমূল হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রাণ। জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলের নেতারাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রেখেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে নানা সমস্যা নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে বাংলাদেশ আ.লীগ। অনেক নেতা দ্বিধান্বিত ও বিচলিত হয়েছেন, অনেক নেতা দল ত্যাগ করেছেন, মূল নেতৃত্বের সঙ্গে বেঈমানি করেছেন। কিন্তু তৃণমূল কখনো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে বেঈমানি করেনি।
বিশেষ বক্তা চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি বলেন, তৃণমূলে নেতা-কর্মীরা হচ্ছে সংগঠনের প্রাণ, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বিশ্বস্থ, শেখ হাসিনার বিশ্বাস রয়েছে এই তৃণমূলের উপর। তৃণমূলের ঐক্যের কারনে শেখ হাসিনা অতীতে বহু বিপদ সঙ্কুল পথ পেরিয়েছে। ঐক্যবদ্ধ থাকলে আওয়ামী লীগকে কেউ পরাজিত করতে পারবে না। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা অহেতুক সমালোচনা করবেন না। দল-নৌকা আমাদের, নৌকাকে জিততেই হবে। শেখ হাসিনা মানে উন্নয়ন, অগ্রগতি, শেখ হাসিনা থাকলেই দেশ ভাল থাকবে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, প্রতিনিধি সভা মূলত ঐক্যের সমাবেশ। আমরা এমপি ও দলীয় নেতা-কর্মীরা মিলে যদি সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন জনগণের মাঝে সঠিকভাবে প্রচার করতে পারি এবং জোট সরকার আমলের চিত্রগুলো তুলে ধরা গেলে আগামী নির্বাচনে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৬টি আসন আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে উপহার দিতে পারব। তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দলের সকল স্তরে ঐক্য সুদৃঢ় করার আহবান জানান।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ধারাবাহিকভাবে পর পর তিনবার দেশের শাসনভার গ্রহণ করে আজ জনগণকে সেবা ও দেশের কল্যাণ করে যাচ্ছেন। আজকে আমি মনে করি বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী এমন একটি দল, যে দলের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা এনেছিলেন। শুধু তাই নয় বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর তাঁর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানুষের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের মত দেশের মানুষের সেবা দিয়েছে এমন কোন দল নেই।
আওয়ামী লীগের অর্থ পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি বলেন, দেশ যখন স্বাধীন হয়, তখন পাকিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে ৭০ গুণ ধনী ছিল। আজকে বাংলাদেশের এক টাকা সমান পাকিস্তানের দুই রূপির চেয়ে বেশি। শ্রীলংকার বৈদেশিক রিজার্ভ ৫০ মিলিয়ন, পাকিস্তানের বৈদেশিক রিজার্ভ ১০.৫ বিলিয়ন, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের বৈদেশিক রিজার্ভ যোগ করলে ১১ বিলিয়ন, এর মধ্যে বাংলাদেশে বৈদেশিক রিজার্ভ হচ্ছে ৪১ বিলিয়নের বেশি। অর্থাৎ শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের চেয়ে চার গুণ বৈদেশিক রিজার্ভ রয়েছে। যা দিয়ে ৬ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সক্ষমতা রয়েছে। আজকে আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই বাংলাদেশ কখনও পাকিস্তান বা শ্রীলংকা হবে না।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি, আওয়ামী লীগের ধর্ম সম্পাদক এড: সিরাজুল মোস্তফা, নজরুল ইসলাম চৌধুরী এম.পি, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এম.পি এবং ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিবৃন্দ।
উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, সহ-সভাপতি আবুল কালাম চৌধুরী, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইদ্রিস, সহ-সভাপতি চেয়ারম্যান মো: হাবিবুর রহমান, সহ-সভাপতি এড: এ কে এম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সহ-সভাপতি এম এ সাঈদ, এস এম আবুল কালাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাজাদা মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এড: জহির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোছলেহ উদ্দিন মনসুর, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড: মির্জা কছির উদ্দিন, আবু সুফিয়ান, শ্রম সম্পাদক খোরশেদ আলম, দপ্তর সম্পাদক আলহাজ্ব আবু জাফর, প্রচার সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী, কৃষি সম্পাদক এড: আবদুর রশিদ, শিক্ষা সম্পাদক বোরহান উদ্দিন এমরান, বন বিষয়ক সম্পাদক এড: মুজিবুল হক, ক্রীড়া সম্পাদক গোলাম ফারুক ডলার, তথ্য সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন, কোষাধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান সিআইপি, ধর্ম সম্পাদক আবদুল হান্নান চৌধুরী মঞ্জু, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো: নাছির, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতিন, মহিলা সম্পাদিকা এড: কামরুন নাহার, স্বাস্থ্য সম্পদক ডা: তিমির বরণ চৌধুরী, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিজয় কুমার বড়ুয়া, সাতকানিয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল মোতালেব সিআইপি, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য নুরুল আলম, দেবব্রত দাশ, মোজাম্মেল হক, সাবেক চেয়ারম্যান নাছির আহমদ, মো: মুছা, মোস্তাক আহমদ আঙ্গুর, ওমর ফারুক, আয়ুব আলী, মাহবুবুর রহমান সিবলী, সৈয়দুল মোস্তফা চৌধুরী রাজু, এ কে আজাদ, আনোয়ার কামাল, ছিদ্দিক আহমদ বি.কম, সেলিম নবী, লোহাগাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি খোরশেদ আলম, সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন হিরু, আনোয়ারা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক এম এ মালেক, সাতকানিয়া সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন, বোয়ালখালী আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আ ক ম সামশুজ্জামান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, চন্দনাইশ উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবু আহমদ জুনু, কর্নফুলী আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী রনি, চন্দনাইশ পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমান খোকা, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগ সভাপতি আ ম ম টিপু সুলতান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক পার্থ সারথী চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবনা, দক্ষিণ জেলা শ্রমিক লীগ সভাপতি আবদুল হাকিম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মো: গালিব সাদলী, বোয়ালখালী পৌরসভা মেয়র জহুরুল ইসলাম জহুর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা কৃষকলীগ সভাপতি আতিকুর রহমান চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এস এম বোরহান উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো: আবু তাহের প্রমুখ।
প্রতিনিধি সমাবেশে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটি, পৌরসভা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামী লীগের প্রতিটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।