
॥ মিল্টন বাহাদুর ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পার্বত্য শান্তিচুক্তির প্রতিটি শব্দ ও ওয়াদা অক্ষর অক্ষরে পূরণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি। তিনি বলেন, ভূমি জটিলতার সমস্যা ছাড়া পাহাড়ী এলাকার সব সমস্যা সমাধান করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। কি নেই আজ রাঙ্গামাটিতে, সবই আছে। ভূমি সমস্যার সমাধান হলে সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের উপর আস্থা রাখুন। শেখ হাসিনার উপর আস্থা রাখুন। হানাহানি মারা মারি রক্তপাত এই পাহাড়ে আর চাই না। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করুন।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, পাহাড়ে আপনার অনেক ঝুঁকি নিয়ে আওয়ামীলীগকে গড়ে তুলেছেন। জীবনের অনেক ঝুঁকি নিয়ে আপনারদের এগিয়ে যেতে হয়েছে। এখনো ঝুঁকি আছে। এখনো সংঘাতে রক্তপাত মাঝে মাঝে আমরা দেখতে পায়। এই রক্তপাত বন্ধ করতে হবে। পাহাড়ী-বাঙ্গালী সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।
এসময় তিনি আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আগামী বছর নির্বাচন। অন্তর কলহ থেকে আপনারা নিজেদের বিরত রাখুন। অন্তর কলহ আপন ঘরে যার শক্রু, তার শক্রুতা করার জন্য বাইরের শক্রুর দরকার নেই। দুঃসময়ের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করুন, যারা এক সময় একটি সাথে পার্টি করেছে। ঘরের কহল নিজেরা বসে সমাধান করুন, আলাপ আলোচনা করুন। কোন অবস্থাতে আওয়ামীলীগের মধ্যে অন্তর দন্দ্ব-অন্তর কলহ এগুলো সমাধান করতে হবে বলে সবার প্রতি অনুরোধ জানান এবং আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিজয় ধরে রাখতে দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।
তিনি মঙ্গলবার (২৪ মে) সকালে রাঙ্গামাটির জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের ভ্যাচুয়ালী যোগদিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক ও সেতু মন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি এইসব কথা বলেন।
রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিষ্টিটিউট প্রাঙ্গনে রাঙ্গামাটি জেলা সভাপতি দীপংকর তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, কেন্দ্রীয় ধর্ম বিসয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খাঁন এমপি, কেন্দ্রীয় উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম, তিন পার্বত্য জেলার মহিলা সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের শুভ সূচনা করা হয়।
এসময় বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি আরো বলেন, পদ্মা সেতুর ব্যায় নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল অন্ধকারে ঢিল ছুড়ছেন। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে গিয়েছে, জুনে উদ্বোধন হবে। পদ্মাসেতু নিয়ে সারা বাংলার মানুষ যখন আনন্দে উচ্ছাসিত সে সময় শুধুমাত্র বিএনপি ও মির্জা ফখরুলের বুকে ব্যাথা বিষ জ¦ালা ছড়িয়েছে। এই বিষ জ্বালায় তারা আজ দিশেহারা। আজ মানুষের মুখে সুখের হাসি আর বিএনপি’র মুখে শ্রাবনের আকাশের সব কালো মেঘ। আজ বিএনপি মুখ ঢেকে ফেলেছে।
সম্মেলনে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, এখন যত কথাই বলুক, আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে অংশ নেবে। সরকার প্রধান শেখ হাসিনা থাকবে আর স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং বিএনপি যে আস্ফালণ করছে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকতে সেই পরিস্থিতি কখনোই সৃষ্টি হবে না।
এসময় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ এমপি বলেন, জামায়াত-বিএনপি পাকিস্তানের মদদে পরিচালিত বিধায় বাংলাদেশের অর্জন-অগ্রগতি তাদের পছন্দ হয় না। তারা শেখ হাসিনাকে দু’চোখে দেখতে পারে না। তিনি আরো বলেন, ইদানিং দেখা যাচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীরা বেফাঁস ও লাগামহীন কথাবার্তা বলছে। আপনাদের হুঁশিয়ার দিয়ে বলতে চাই, এভাবে কথা বলতে থাকলে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা আপনাদেরকে মাঠেই প্রতিহত করবে।
এদিকে বিকালে সম্মেলনকে ঘিরে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এবারের জেলা কাউন্সিলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুটি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কাউন্সিলে সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি দীপংকর তালুকদার এবং তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান সহ-সভাপতি হাজী মোঃ কামাল উদ্দিন।