চট্টগ্রাম ব্যুরো :: প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক চট্টগ্রাম জেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন (৩য় পর্যায়) ৫৮৭টি পরিবারকে জমিসহ ঘরের মালিকানা হস্তান্তর করা হয়েছে।
বুধবার (২০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘মুজিবশতবর্ষে একজন লোকও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এর অধীনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১ম পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি সারাদেশে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
আগামী ২১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে ৩য় পর্যায়ের (২য় ধাপ) ২৬ হাজার ২২৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় ৩য় পর্যায়ে (২য় ধাপ) ৫৮৭টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে। পটিয়া উপজেলায় ১০টি, বোয়ালখালী উপজেলায় ১৫টি, চন্দনাইশ উপজেলায় ১৫টি, সাতকানিয়া উপজেলায় ২০টি, লোহাগাড়া উপজেলায় ৫১টি, বাঁশখালী উপজেলায় ১৫টি, হাটহাজারী উপজেলায় ৬০টি, ফটিকছড়ি উপজেলায় ১০০টি, আনোয়ারা উপজেলায় ১০০টি, মীরসরাই উপজেলায় ১০৯টি, রাউজান উপজেলায় ৫৪টি এবং সীতাকুণ্ড উপজেলায় ৩৮টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হবে।
এছাড়াও চট্টগ্রাম জেলার ৪টি উপজেলা যথাক্রমে পটিয়া, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলাকে হালনাগাদ যাচাই-বাছাইকৃত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ২১ জুলাই ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
॥রাহুল বড়ুয়া ছোটন, বান্দরবান ॥ যথাযোগ্য মর্যাদায় ও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বান্দরবানে পবিত্র ঈদুল আজহার ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১০ জুলাই) সকাল ৭টায় ঈদের প্রথম ও প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় বান্দরবান কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে। এসময় শহরের হাজার হাজার মুসল্লি একইসাথে মিলিত হয়ে ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করেন। এসময় জামাত পরিচালনা করেন বান্দরবান বাজার শাহী জামে মসজিদের খতিব মাওলানা এহেসানুল হক আল মঈনী। পরে বান্দরবান কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে সকাল ৮ টায় ঈদের দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয় এসময় জামাত পরিচালনা করেন বান্দরবান বনরুপাপাড়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল আওয়াল। এছাড়া ও বিভিন্ন সময়ে বান্দরবানের বিভিন্ন মসজিদে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্টিত হয়।
নামাজ শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনাও আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের আশায় মোনাজাতে অংশ নেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। ঈদের নামাজ ও মোনাজাতে অংশ নেন বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য মোঃ শফিকুর রহমান, পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বেবী, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীরসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তা এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের জনসাধারণ।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ লোডশেডিং যাতে কমিয়ে আনা যায় তার জন্য বিদ্যুৎ সাশ্রয় হতে রাঙ্গামাটি জেলাবাসীকে আহবান জানিয়েছেন রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তেল-গ্যাসসহ সব পণ্যের দাম বেড়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় অংকের ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। তাই বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে জেলাবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) সকালে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে রাঙ্গামাটি জেলা আইন শৃঙ্খলা সভায় এ আহবান জানিয়েছেন রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
এছাড়াও সভায় জেলার আইনশৃঙ্খলা বজায়, সন্ত্রাস ও নাশকতা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, করোনা সংক্রমন রোধে মাক্স এর ব্যবহার বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এসব বিষয়ের উপর সবাইকে বেশীবেশী সচেতন হতে বলা হয়েছে।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এ সময় পুলিশ সুপার মীর মোদাছছের হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য হাজি মোঃ কামাল উদ্দিন, সিভিল সার্জন ডাক্তার বিপাশ খীসা, মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা মোঃ সাইফুল ইসলাম, আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্যবৃন্দ ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সভায় বক্তব্য রাখেন, আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সুনীল কান্তি দে, নুরুল আবছার, রাঙ্গামাটি সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি নন্দন দেবনাথসহ আরো অনেকে।
এসময় আইন-শৃঙ্খলা সভায় রাঙ্গামাটি জেলায় বিদ্যুৎ সাশ্রয়, পর্যটনের সুন্দর্য বৃদ্ধি, করোনা সংক্রমন ঠেকাতে মাক্স ব্যবহারসহ সকল বিষয়ে উপর গুরুত্বরোপ করা হয়।
॥ মো সোহেল রানা, দীঘিনালা ॥ সেনা সদস্যদের মনোবল বাড়াতে ঈদুল আযহার উপলক্ষে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ। রবিবার (১০ জুলাই) পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে খাগড়াছড়ি রিজিয়নের বাঘাইহাট জোন পরিদর্শন করেন এবং পরে দীঘিনালা জোনের পাংখোয়া পাড়া সেনাবাহিনী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন তিনি। জোন পরিদর্শনকালে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তা ও সৈনিকদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। আজ দুপুরে সেনাপ্রধান বাঘাইহাট জোনে আসলে তাকে অভ্যর্থনা জানান ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) মেজর জেনারেল মো. সাইফুল আবেদীন ও খাগড়াছড়ির রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম। পরিদর্শনকালে সেনাপ্রধান সকল সদস্যদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা এবং কুশলাদি বিনিময় করেন।
এ সময় সেনাপ্রধান বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুর্গম পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। তারা পরিবার স্বজন ছেড়ে পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় দেশের নিরাপত্তায় কাজ করছে। দেশের যেকোন সংকটে সেনাবাহিনীর তার অর্পিত দায়িত্ব পালন করছে এবং করবে।
সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ উভয় ক্যাম্পেই গাছের চারা রোপণ করেন এবং দীঘিনালা জোনে সেনা সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উপলক্ষে আয়োজিত প্রীতিভোজে অংশ নেন।
পরিদর্শনকালে সামরিক সচিব মেজর জেনারেল খালেদ আল-মামুন, জিওসি ২৪ পদাতিক ডিভিশন ছাড়াও সেনা সদরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, খাগড়াছড়ি রিজিয়নের স্টাফ অফিসার মেজর জাহিদ হাসানসহ অন্যান্য সেনা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
॥ আশরাফ উদ্দিন, মিরসরাই ॥ মিরসরাইয়ে জোরারগঞ্জ থানায় গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৫টি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত সাড়ে ৯টার মধ্যে এসব চুরির ঘটনা ঘটছে। এসময় চোরের দল স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা সহ মূল্যবান আসবাবপত্র নিয়ে যায়। সর্বশেষ রবিবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যায় ধুম ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে আবুল হোসেন পাটোয়ারি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। আবুল হোসেন পাটোয়ারির ছেলে আমজাদ হোসেন রনি বলেন, রবিবার সন্ধ্যা ৮টার দিকে আমার মা, স্ত্রী সন্তান পাশে আমার অসুস্থ মামাকে দেখতে যান। সেখানে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ছিলেন। এরপর বাড়ি ফিরে দেখেন ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে ৩টি স্বর্নের চেইন, একটি আংটি ও আমার মা ও বোনের গচ্চিত টাকা, আমার মেয়ের ঈদ সালামির টাকাসহ প্রায় ১ লাখ ৬ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। ওই সময় এলাকায় বিদ্যুৎ ছিলো না। ঘরের সবকিছু তছনছ করে গেছে।
রনি আরো বলেন, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ৫বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। ২৮ জুন রাত সাড়ে ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে পশ্চিম হিঙ্গুলী এলাকার নিজাম উদ্দিনের বাড়িতে, ১ জুলাই বারইয়ারহাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের জামালপুর গ্রামের আবুল হাশেমের বাড়িতে, ২ জুলাই হিঙ্গুলী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের খায়েজ আহম্মদ, ফজলুল হকের বাড়িতে ও সর্বশেষ ৩ জুলাই ধুমে আবুল হোসেন পাটোয়ারির বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে।
জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নূর হোসেন মামুন বলেন, এলাকার চিহিৃত চোর-ডাকাতরা এখন এলাকায় নেই। অনেকে জেলে আছেন। হয়তো ছিচকে চোর মানুষের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে চুরি করছে। তবে এখনো পর্যন্ত এসব বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া সন্ধ্যার দিকে এলাকায় অপরিচিত কাউকে দেখলে পুলিশকে খবর দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
॥ লামা প্রতিনিধি ॥ বান্দরবানের লামা উপজেলার ৫ যুবক মালেশিয়া যেতে গিয়ে দালালেল খপ্পরে পদে সর্বস্ব হরিয়েছে। প্রতারণার শিকার যুবকের পরিবারের লোকজন বলেন, রবিবার (৩ জুলাই) মালেশিয়া যাওয়ার জন্য দালালের মাধ্যমে ঢাকা যায় লামা পৌরসভার ৫ যুবক। সোমবার (৪ জুলাই) বিকেল ৪টায় তাদের ফ্লাইট হবে বলে এয়ারপোর্ট নেয়া হয়।
প্রতারণার শিকার হলো, বান্দরবান জেলা লামা পৌরসভা ৯নং ওয়ার্ড হরিণঝিরি গ্রামের বাসিন্দা সাহ্লাচিং মার্মার ছেলে উচুমং মার্মা, সানি অং মার্মার ছেলে উমানু মার্মা, ধুংচিং মার্মার ছেলে অংসি মার্মা, উমং মার্মার ছেলে মংমেগ্য মার্মা ও নুর মোহাম্মদের ছেলে মোঃ মামুন।
সোমবার (৪ জুলাই) সকালে ঢাকা উত্তরা-দক্ষিণখান থানা এলাকায় নিউ এয়ারপোর্ট রোড়স্থ হোটেল জাকের আবাসিক এর ১০৫নং রুমে ৫ জন মিলে দালালকে ৭ লাখ টাকা দেয়। এর আগের দিন ৩ জুলাই তারা দালালের সাথে ঢাকা যায়।
দালালের নাম মোঃ শহীদুল্লাহ, পিতা- মোঃ শাহদাৎ হোসেন, জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ১৪৯৬০০৭৩৫০। দালালের বাড়ি, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলা ফাঁসিয়াখালী ইউপির ঘুনিয়া গ্রামে। একেকজন যুবক থেকে এক লাখ নব্বই হাজার টাকার বিনিময়ে মালেশিয়া নেয়ার জন্য চুক্তি হয় দালালের সাথে। দালাল মোঃ শহীদুল্লাহ তাদের কাছ থেকে সাড়ে ৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
॥ রোয়াংছড়ি প্রতিনিধি ॥ রোয়াংছড়ি থেকে বান্দরবান যাওয়ার প্রধান সড়কে ১২টি বেইলি সেতুর মধ্যে ৪টি সেতু ব্যাপক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে সেতু নয়, যেন মৃত্যু কূপে পরিণত হয়েছে। রোয়াংছড়ি থেকে জেলা শহর বান্দরবানের যাওয়া-আসার একটি মাত্র সড়ক। এ সড়কে প্রতিনিয়ত ভারী ও মাঝারি যানবাহন, ছোট বড় মটরযান চলাচলের ব্যস্ততম সড়ক হয়ে উঠেছে। এই সড়কে ছোট ও বড় মিলে প্রায় ১২টি সেতুর রয়েছে। তার মধ্যে ৪টি বেইলি সেতুটি উপর দিয়ে যানচলা করতে ব্যাপক ঝুঁকিতে রয়েছে। ৪টি সেতু হচ্ছে রোয়াংছড়ি উপজেলা সদরের জিরো পয়েন্টে তারাছা খালের উপর পুরানো বেইলি সেতু, ১১ কিলোমিটার পূর্ণবাসন পাড়া এলাকার বেইলি সেতু, ক্রাইক্ষ্যং পাড়া ও বিজিপি সেক্টর সদর দপ্তর এলাকার কালবার্ট সেতু এবং ৪কিলোমিটার এলাকার স্বাগতম সেতুসহ এ ৪টি সেতুটিতে নিচে বেইজের অংশে মাটি ধেবে ও মাটি সরে যাওয়ায় যে কোন সময়ে ভারী যানবাহন চলাচল করলে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে বলে ধারণা করছে এলাকার সংশ্লিষ্টরা।
এলাকার ঘুরে দেখা গেছে, পাহাড়ি ঢলে সেতুটিতে বেইজের নিচে অংশে পিলাররে নিচে মাটি ধেবে পাহাড়ি ঢলে মাটিগুলো সরে গিয়ে পুরানো গাইড ওয়ালগুলো ভেঙ্গে পড়েছে। সেতু নিচে মাটি সুরক্ষার্থে নির্মিত অধিকাংশই গাইড ওয়ালে ভেঙ্গে পড়ে যাওয়ায় ভারী ও মাঝারি যান চলাচলে ঝুঁকি ও মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে।
উৎপাদিত কৃষিপণ্য ও কাঁচামাল ব্যবসায়ী মো. আলঙ্গীর বলেন আমরা প্রতিনিয়ত ট্রাক্ট ও মিনি ট্রাক্ট ভরে মৌসুম অনুযায়ী কাঁচামাল নিয়ে ব্যবসা করছি। কিন্তু বর্তমানে বান্দরবান ও রোয়াংছড়ি সড়কে অধিকাংশই বেইলি সেতু নিচে মাটি সরে ভেঙ্গে যাওয়ায় দৈনন্দিন যানচলে ঝুঁকি হয়ে উঠেছে। কখন দুর্ঘটনা কবলে পড়বে ঠিক বলা যায় না। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে নতুন সেতু নির্মাণ করতে পারলে দুর্ঘটনা থেকে রেহায় পাব। মালামাল বহনকারি ড্রাইভার মো. আমির বলেন ব্রীজ ভেঙ্গে যাওয়া অবস্থা দেখেও না দেখে ভান করেন মনের আতঙ্কে গাড়ি চালাচ্ছি। এসড়কে প্রায় ব্রীজ ভাঙ্গ রয়েছে কিন্তু করার কিছুই নাই। পেতে দায়ে এ সড়কে ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি চাইসিং মারমা বলেন আমার ওয়ার্ড এলাকার কয়েকটি বেইলি সেতু পুরানো হয়ে যাওয়ায় গাড়ি চড়ে আসা যাওয়া করতে ব্যাপক ঝুঁকিতে আছে। সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে যান চলাচল ও জনগণের সুবিধা হবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারি প্রকৌশলী অংশৈপ্রু মারমা বলেন, বান্দরবান ও রোয়াংছড়ি সড়কে ১১টি সেতুতে মধ্যে ৫টি সেতু অত্যন্ত ঝুঁটিতে থাকায় হানসামা পাড়া এলাকায় নোয়াপতং খালের উপর সেতুটি বেইলি সেতুটি পরিবর্তে নতুন গার্ডার সেতু নির্মাণে কাজ চলমান রয়েছে। ইতি মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ থাকার সেতুটিকে পরিদর্শন করে রোয়াংছড়ি সদর জিরো পয়েন্টে বড় বেইলি সেতু, ১১ কিলোমিটার পূর্ণবাসন পাড়া এলাকার বেইলি সেতু ও ৪ কিলোমিটার এলাকার স্বাগতম সেতুসহ ৩টি সেতু ব্যাপক ঝুঁকি থাকায় নতুন সেতু নির্মাণের লক্ষে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি অর্থবছরে ডিসেম্বর মাসে দিকে নতুন সেতু নির্মাণে কার্যক্রম শুরু হতে পারেন বলে জানান।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটিতে উপজাতীয় ছাত্রাবাস পরিচালনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সকালে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্টিত উপজাতীয় ছাত্রাবাস পরিচালনা কমিটির সভায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আশরাফ উদ্দীনের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, রাঙ্গামাটি চাকমা চীফ সার্কেল ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য মোঃ জসিম উদ্দীন প্রমুখ।
সভায় চট্টগ্রামের উপজাতীয় ছাত্রাবাসটি দ্রুত উন্নয়ন ও সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ২০১৭ সালের ভয়াবহ পাহাড় ধ্বসের ঘটনায় বিধ্বস্ত হওয়া রাঙ্গামাটির সড়কগুলোর ক্ষত এখনো কাটেনি। রাঙ্গামাটি শহর ও আন্তজেলা সড়কের দেড় শতাধিক স্থানে ভাঙ্গনের শিকার হলেও পাঁচ বছরেও তা স্বাভাবিক হয়নি। বরং সড়কের নতুন নতুন জায়গায় দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। ১৪৯ কোটি টাকার সংস্কার কাজ শুরু হলেও কাজের ধীরগতির কারণে স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙ্গামাটিতে ঘটে স্মরণকালের ভয়াবহ পাহাড় ধ্বসের ঘটনা। এ ঘটনায় ১২০ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি বিধ্বস্ত হয় জেলার সড়ক যোগাযোগ। প্রায় এক মাস বন্ধ থাকে রাঙ্গামাটির সড়ক যোগাযোগ। এরপর রাঙ্গামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ এসব সড়কের ১৫৩টি ক্ষতিগ্রস্ত স্থান চিহ্নিত করে সংস্কার প্রকল্প গ্রহণ করে। এতে সরকার ১৪৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। ২০২০-২১ অর্থ বছরে এ প্রকল্প পাশ হলেও করোনা মাহামারি কারণে থমকে যায় বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া। পরে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে কাজ শুরু হলেও কাজের রয়েছে ধীরগতি। এতে চলতি বর্ষ মৌসুমেও শঙ্কামুক্ত হচ্ছে না সড়কগুলো। আর সড়কগুলো স্থায়ী সংস্কার না হওয়ায় সড়কের পাশে বসবাসকারীরাও রয়েছেন ঝুঁকিতে।
রাঙ্গামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ আল নুর সালেহীন জানান, ২০১৭ সালের পাহাড় ধ্বস রোধ কল্পে রাঙ্গামাটি সড়ক বিভাগ কর্তৃক একটি প্রকল্প গৃহিত হয় এবং বর্তমানে প্রকল্পটি চলমান রয়েছে। কিন্তু পার্বত্য এলাকার নানা বাস্তবতার কারণে প্রকল্পের কাজের ধীরগতি হচ্ছে। তবে আমরা আশা করছি ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের সমস্ত কাজ সমাপ্ত করতে পারবো। এ ছাড়াও নতুন করে ভাঙ্গন রোধে সড়ক বিভাগ তৎপর রয়েছে এবং সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে আমরা সার্বক্ষণিক দেখভাল করছি।
এদিকে পাহাড় ধ্বস রোধ কল্পে চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি নতুন করে ঝুঁকিপূর্ণ অংশের ভাঙ্গন ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবার পাশাপাশি সকলকে সঞ্চয় করার এবং দেশব্যাপী খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে যে কোন সংকট মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মহামারি করোনা ভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মূদ্রাস্ফীতির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা, বিদ্যুতের অভাব এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের শুরু থেকেই সর্তক থাকতে হবে। আমরা যদি সাবধানে এগিয়ে যাই, ইনশাআল্লাহ আমাদের কোন সমস্যা হবে না, এটা আমার বিশ্বাস।’
প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সকালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি’র ভাষণে এ কথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা সেনানিবাসের পিজিআর সদর দপ্তরের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
সরকার প্রধান বলেন, চলমান করোনা ভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, গ্রেট ব্রিটেনের মতো উন্নত দেশগুলোসহ বিশ্বব্যাপী মূদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি কয়লা না পাওয়া এবং গ্যাস ও ডিজেলের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী উপাদানের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির কারণে সেখানেও এখন বিদ্যুতের তীব্র সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, যুদ্ধের কারণে নিয়মিত জাহাজ চলাচল না করায় বিশ্ব বর্তমানে পরিবহন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, পরিবহন ব্যয় অত্যাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত জ্বালানির ব্যবহার কমাতে এলাকাভিত্তিক নির্দিষ্ট সময়ের লোডশেডিং করে বিদ্যুতের ব্যবহার কিছুটা কমানো যায় কি-না সে চিন্তাও করছেন তিনি। তবে সে ক্ষেত্রে আকস্মিক নয়, মানুষকে প্রস্তুত থাকার সময়টা দিয়েই তা করা যেতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিদ্যুতের ব্যাপারে আমাদের শুধু সাশ্রয়ীই হলে চলবে না। আমি যেমন চিন্তাও করেছি কিছুটা সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন একটু কমিয়ে দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে উপাদানগুলো সেগুলো যেন আমরা কম ব্যয় করতে পারি।’
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দেশবাসী প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং প্রত্যক্ষ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন বিশ^ পরিস্থিতির কারণে সংকট উত্তরণে এলাকা ভিত্তিক কিছুটা লোডশেডিং চলতে পারে।
সরকার প্রধান বলেন, ‘এখন আমরা একটা সুনির্দিষ্ট সময় যদি ধরে দেই যে একেক এলাকাভিত্তিক কিছুক্ষণের জন্য সেখানে বিদ্যুতের কিছুটা লোডশেডিং হবে, হঠাৎ যাবে হঠাৎ আসবে না, মানুষ প্রস্তুতি নিতে পারবে। সেভাবেই আমাদের কিছু কিছু পদক্ষেপ এখন থেকেই যদি আমরা নেই তাহলে আগামী দিনে যে আরো সমস্যাটা দেখা দিতে পারে সে পরিস্থিতি থেকে আমরা নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারবো।’
‘অনেক উন্নত দেশে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে,’ উল্লেখ করে তিনি দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি এবং জলাশয়কে কাজে লাগানোর মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ব্যক্তি থেকে প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সকলের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আরও যোগ করেন, ‘সে ক্ষেত্রে, আমরা যদি সাশ্রয়ী হয়ে উঠি এবং আমাদের সঞ্চয় বাড়াতে পারি তাহলে যে কোনও পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারবো।’
সরকার প্রধান বলেন, তাঁর সরকার প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে এবং দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে প্রতিটি গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষকে ঘর-বাড়ি করে দিচ্ছে।