॥ এস.কে খগেশপ্রতি চন্দ্র খোকন, লামা ॥ বান্দরবানের লামায় জেএসএস’র সশস্ত্র বাহিনীর সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া হয়ে উঠায় উপজেলা আইন শৃংঙ্খলা কমিটির সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জনপ্রতিনিধিরা। গত রবিবার লামা উপজেলা আইন শৃংঙ্খলা কমিটির সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নিরাপত্তার স্বার্থে যথাযথ ব্যবস্থা প্রহণে প্রশাসন ও সরকারের কাছে জোর দাবি তুলেছেন।
আইন শৃংঙ্খলা সভায় ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন মজুমদার বলেন, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের গয়ালমারায় গত ২০ এপ্রিল ২০-২২ জনের জেএসএস’র সশস্ত্র বাহিনী স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ব্যক্তির কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের চাঁদা আদায় করেছে। এতে স্থানীয় জনসাধারণ হামলার আতঙ্কে ভুগছে।
লামা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, মেরাখোলা এলাকার গরু ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে সে পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের কবলে রয়েছে। লামা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজীর দৌরাত্ম্য দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। সন্ত্রাসীরা তামাক চাষীসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও কৃষকদের কৃষি পণ্যের উপর চাঁদাবাজি চালাচ্ছে।
রূপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু বলেন, জেএসএস সমর্থিত সশস্ত্র বাহিনীর একটি গ্রুপ গত ২০ এপ্রিল নাইক্ষ্যংমুখ বাজারে এসে ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। তাদের নির্যাতনে চার জন আহত হন। ইউপি মেম্বার কায়ওয়ে মুরং আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, সন্ত্রাসীরা যে কোন মুর্হুতে নাইক্ষ্যংমুখ বাজারে হামলা চালিয়ে জান মালের ক্ষতি করতে পারেন।
লামা থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্থ কেউ আইনগত সহায়তা চাইলে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আলীকদম জোনের বিদায়ী কমান্ডার লে. কর্ণেল মোহাম্মদ সারোয়ার হোসেন বলেছেন, কোন ক্রমেই পার্বত্য এলাকাকে সন্ত্রাসীদের অভায়রণ্য হতে দেওয়া যাবে না। সকলকে সম্মলিতভাবে কাজ করে সন্ত্রাসীদের র্নিমূল করতে হবে।
নবাগত জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল মাহাবুবুর রহমান বলেছেন, আমাদের শান্তি যারা কেড়ে নিতে চায় তাদের কোন ক্রমেই ছাড় দেওয়া হবে না। সন্ত্রাসী নির্মূলে সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য আমাদের।
॥ রাহুল বড়–য়া ছোটন,বান্দরবান ॥ পার্বত্য চট্রগ্রামের দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী সকল সম্প্রদায়ের মাঝে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌছে দিতে দশ হাজার সোলার প্যানেল বিতরণ করবে আঞ্চলিক উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রতিষ্ঠান পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি প্রকল্পের মাধ্যমে তিন পার্বত্য জেলায় পাঁচ হাজারেরও বেশি সোলার প্যানেল বিতরণ করেছে। পাহাড়ে যেসব এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ সুবিধা পৌছেনি যেসব এলাকার পাড়াগুলোতে এসব সোলার প্যানেল বিতরণ করা হচ্ছে। পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ের চিনি পাড়ার ১৭টি পরিবারের মধ্যে সোলার প্যানেল বিতরণ কালে পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি এ তথ্য জানান।
পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবানের রেস্ট হাউসে অনুষ্ঠিত এই বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত সচিব ভাইস চেয়ারম্যান তরুণ কান্তি ঘোষ, বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, সোলার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো:মজ্ঞুরুল আলম, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্নিবান চাকমা, মো: আলী হোসেন, পার্বত্য জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শহিদুল আলম, পার্বত্য চট্রগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কাজল কান্তি দাশ, পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আব্দুল আজিজ, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষীপদ দাশ, সদস্য কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা, সদস্য ফিলিপ ত্রিপুরা, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি অমল কান্তি দাশ।
এছাড়া অনুষ্ঠানে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীর সহধর্মিনী মেহ্লা প্রু মারমা, ডনবস্কো সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সীমা দাশ সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী জানান, পার্বত্য চট্রগ্রামে ৫৬৫ কোটি টাকার নতুন বিদ্যুৎতায়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এছাড়া জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় ২৫০ কোটি টাকার সোলার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তিন পার্বত্য জেলায় মহিলাদের সাবলম্বি করতে গাভী বিতরণ করা হবে। তিন পার্বত্য জেলা বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ সব দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর।
সোলার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো: মজ্ঞুরুল আলম জানান, ২০১৫-১৬ অর্থ বছর থেকে সোলার প্যানেল বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে পার্বত্য চট্রগ্রামে। প্রকল্পটির ব্যায় ৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩৮ কোটি টাকাই সোলার প্যানেল বিতরণ কাজে ব্যায় করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে প্রায় ৩ হাজার সোলার প্যানেল বিতরন করা হয়েছে। দুর্গম যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ সুবিধা পৌছেনি যেসব এলাকায় সোলার প্যানেল গুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার পাশাপাশি নানা সুবিধা পাচ্ছে। আলোকিত হয়ে উঠেছে পাড়াগুলো। এদিকে অনুষ্ঠানের আগে প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যায়ে উন্নয়ন বোর্ড রেস্ট হাউসের নতুন কটেজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও ভিভিআইপি কক্ষের উদ্ধোধন করেন। উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আব্দুল আজিজ জানান, আধুনিক স্থাপত্য শৈলী ফুটিয়ে তুলা হয়েছে হিলটপ রেস্ট হাউসটিতে,এর মাধ্যমে হিলটপ রেস্ট হাউসটি পর্যটকদের জন্য আরো আর্কষনীয় হবে।
॥ ছোটন বড়–য়া/খগেশপ্রতি চন্দ্র খোকন ॥ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চিন্তা করেছিল বলেই আজ পার্বত্য এলাকায় শান্তির সু-বাতাস বইছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা শান্তি চুক্তি করে পার্বত্য বাসির শান্তি ও উন্নয়ন জোয়ার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমি বান্দরবানের উন্নয়নের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত। বান্দরবানকে আগামী দিনে মডেল জেলা হিসাবে উপহার দিব। সবাই আমাকে সহায়তা করলে বান্দরবানকে বাংলাদেশের শান্তির শহর গড়ে তুলব। তিনি আরো বলেন, লামার মানুষ অনেক ভাল। আমি লামার মানুষকে অনেক ভালবাসি। গতকাল লামা-গজালিয়া জীপ স্টেশনে উপজেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত এক জনসভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এম.পি. এইসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) ১ দিনের সরকারী সফরে লামায় আসেন। এই সময় তিনি লামা পৌর বাস টার্মিনাল ও প্রতিবন্ধী স্কুল সহ ৯টি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর করেন। বেলা ১২টায় প্রতিমন্ত্রী লামা পৌছান। এসময় তিনি লামা পৌর বাস টার্মিনালের ভিত্তিপ্রস্তর, লামা কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারের পালিটোল ভবনের উদ্বোধন, মুক্তিযোদ্ধা দ্বিতল ভবনের উদ্বোধন, লামামুখ উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের উদ্বোধন, লামামুখ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুতোষ পাঠাগার উদ্বোধন, চাম্পাতলী প্রতিবন্ধী স্কুলের উদ্বোধন, কেয়াং ঘর উদ্বোধন, লামা-গজালিয়া জীপ স্টেশনের দ্বিতল যাত্রী ছাউনির উদ্বোধন করেন। বিকাল ৫টায় লামা-গজালিয়া জীপ স্টেশনে উপজেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত এক জনসভায় ভাষণ দেন। লামা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এম.পি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, সহকারী জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোঃ মাকসুদ চৌধুরী, বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ, বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষীপদ দাশ, লামা পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম, মোস্তফা জামাল, ফাতেমা পারুল, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক বাথোয়াইচিং মার্মা, যুগ্ন সম্পাদক বিজয় কান্তি আইচ, ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা, মিন্টু কুমার সেন, জাকের হোসেন মজুমদার, জালাল আহমদ, মোঃ ফরিদ উদ্দিন, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ রফিক ও সম্পাদক তাজুল ইসলাম সহ প্রমূখ।
প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এম.পি বলেন, শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি অগ্রসর হতে পারেনা। আদর্শ একটি জাতি গঠণে সুদক্ষ শিক্ষকের প্রয়োজন। শিক্ষা খাতে যে কোন সমস্যাকে সবার আগে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে এই দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে দেখতে চান। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
॥ এস.কে খগেশপ্রতি চন্দ্র খোকন, লামা ॥ বান্দরবান পার্বত্য জেলার আলীকদম উপজেলায় ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফ সমাপ্ত প্রকল্পের সদ্য জাতীয়করণকৃত ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮০জন শিক্ষককের চাকুরী সরকারী করণে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম সহ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জনসাধারণ। প্রকৃত কর্মরত শিক্ষকদের চিি হ্নত করে কাগজে পত্রে দেখানো ভুয়া শিক্ষকদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান পত্র প্রেরণ করেছেন।
প্রেরিত পত্রের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে ইউএনডিপি পার্বত্য চট্টগ্রাম মৌলিক শিক্ষা প্রকল্পের অধিনে আলীকদম উপজেলায় ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২০১৫ইং সন থেকে বিদ্যালয়গুলো বন্ধ হয়ে যায়। প্রকল্প চলমান অবস্থায় প্রতি বিদ্যালয়ে স্থানীয় একজন শিক্ষক কর্মরত ছিল, সংশ্লিষ্টগন অনিয়মের আশ্রয় গ্রহণের মাধ্যমে কাগজে কলমে প্রতি বিদ্যালয়ে ৪জন শিক্ষককে কর্মরত দেখিয়েছে।
গত ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ তারিখে সরকার ইউএনডিপি’র বর্ণিত প্রকল্পের ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রতি বিদ্যালয়ে ৪জন করে মোট ৮০ জন শিক্ষকের চাকুরী সরকারি করা হবে।
মারাং রাইতম লাংথই পাড়া বিদ্যালয়ের সভাপতি মারাং ¤্রাে কমান্ডার, ইয়াংরি মাংক্রাত পাড়া বিদ্যালয়ের সভাপতি ইয়াংরিং ¤্রাে, বিদ্যামনি পাড়া বিদ্যালয়ের সভাপতি সতিচন্দ্র ত্রিপুরা, লাওলিং ন্যাদয় কাম্পুক পাড়ার সভাপতি ইয়াংএ ¤্রাে ও মেনক্য মেনকক পাড়া বিদ্যালয়ের সভাপতি মাংক্রি ¤্রাে জানিয়েছেন, প্রায় ৩ বছর ধরে প্রকল্প সহায়তা বন্ধ। বর্তমানে কাগজে পত্রে দেখানো শিক্ষকগন কখনো অত্র বিদ্যালয় গুলোতে আসে নাই। স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন তাদের চিনে না। কাগজে কলমে দেখানো ভুয়া শিক্ষকদের চাকুরী সরকারী না করে জেলা পরিষদের মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষার লোকজনকে নিয়োগ দেওয়ার দাবী তুলেছেন স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জনসাধারণ।
আলীকদম উপজেলার চেয়ারম্যান আবুল কালাম জানিয়েছেন, বিদ্যালয়গুলো সরকারী করণের প্রজ্ঞাপন জারির পর ইউএনডিপি’র জনৈক সাবেক কর্মী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ভাঙ্গিয়ে শিক্ষকদের চাকুরী সরকারী করণের জন্য প্রকাশ্য উৎকোচ আদায় করছে। বিগত দিনে বিদ্যালয়ে কখনো গমন করে নাই এবং বিদ্যালয় চিনে না এমন লোকজনকে শিক্ষক হিসেবে সরকারি চাকুরীতে নিয়োগের জন্য প্রক্রিয়া চলছে। পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে চলছে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতি। জন প্রতি লক্ষ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে সমাপ্ত প্রকল্পের জনৈক কর্মীর বিরুদ্ধে।
বিদ্যালয় গুলো জাতীয়করণ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর পরই ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮০ জন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রকাশ্য উৎকোচ গ্রহণের মহোৎসব চলছে। এক পর্যায়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেই চাকুরী প্রত্যাশীদের কাছ থেকে জন প্রতি লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করেছেন।
ইউএনডিপি বান্দরবান জেলার কো-অর্ডিনেটর খুশি রাই ত্রিপুরা জানিয়েছেন, বিদ্যালয় গুলো সরকারী করণের বিষয়টি সরকারের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। ই্উএনডিপি’র সাবেক কোন কর্মী কর্তৃক শিক্ষক নিয়োগে উৎকোচ গ্রহণের বিষয়টি আমাদের জানা নেই। নিয়োগ প্রক্রিয়ার দায়িত্ব সরকারের।
আলীকদম উপজেলার শিক্ষা অফিসার বাসু দেব কুমার সানা বলেছেন, দূর্গমের বিদ্যালয় গুলোর শিক্ষক কর্মরত না থাকার বিষয়টি আমার জানা নেই।
এ ব্যাপারে বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভা:) রিটন কুমার বড়–য়া জানান, বিদ্যালয় জাতীয় করণের প্রজ্ঞাপন জারির কপি পেয়েছি। শিক্ষকদের সরকারি চাকুরীতে নিয়োগের বিষয়ে কোন পত্র আমরা এখনো পায়নি।
॥রাহুল বড়–য়া ছোটন,বান্দরবান ॥ আওয়ামীলীগ সরকার পার্বত্য শান্তিচুক্তি করেছে বলেই পাহাড়ের প্রতিটি এলাকায় উন্নয়ন হচ্ছে, পাহাড়ের মানুষ শিক্ষা অর্জন করতে, অর্থনৈতিক দিক থেকে পাহাড় এগিয়ে যাচ্ছে। শান্তিচুক্তি হয়েছিল বলেই পাহাড়ে শান্তির সুবাতাস বইছে ও উন্নয়ন হচ্ছে, পার্বত্য জেলায় উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। বান্দরবানে ত্রিপুরাদের বৈসু উৎসব উদযাপন উপলক্ষে পার্বত্য জেলা পরিষদ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের সাংস্কৃতি শাখার উদ্যোগে ত্রিপুরাদের ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরুস্কার বিতরণী,পিঠা উৎসব ও লোকজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এসব কথা বলেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ৩নং ওয়ার্ড ত্রিপুরা পাড়া সংলগ্ন কালাঘাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দিন ব্যাপী আয়োজিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ছিল পুথির মালা গাথাঁ,দড়ি টানা-টানি,ধান ভাঙ্গা,উল্লুক ঝুলা,লাউ ছিড়া,শক্তির লড়াই,ভৌমড় উড়া,বাশঁ মুড়ানো শক্তি পরিক্ষা,প্রদীপ প্রজ্জলন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক
দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ণিবাণ চাকমা,বান্দরবানের পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বেবী,পার্বত্য চট্রগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কাজল কান্তি দাশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট পরিচালক মংনুচিং, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির সহধর্মিনী মেহ্লা প্রু, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষীপদ দাশ, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর,উৎসব উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক উইলিয়াম ত্রিপুরা,উৎসব উদ্যাপন পরিষদের সদস্য সচিব গাব্রিয়েল ত্রিপুরা, উৎসব উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা ও পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ফিলিপ ত্রিপুরা, প্রমুখ। বান্দরবানের ব্যতিক্রমধর্মী এ উৎসব উপভোগ করার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত পর্যটকের আগমন ঘটেছিল। অনুষ্ঠান সুষ্ঠ সুন্দর ও আনন্দময় করে তোলার জন্য জেলার সকল শ্রেনীর পেশার মানুষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। অনুষ্ঠানে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী এক লক্ষ টাকা ও পৌর মেয়র ত্রিশ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেন।
॥ রাহুল বড়–য়া ছোটন, বান্দরবান ॥ বান্দরবানে পুষ্ঠি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি জনগনের মাঝে ব্যাপক প্রচারের লক্ষে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে ও বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে বান্দরবানে শুরু হয়েছে দিনব্যাপী বৈশাখী কৃষি প্রযুক্তি মেলা ।
গতকাল শুক্রবার সকালে বান্দরবান রাজার মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার উদ্ভোধন করেন পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশেসিং এমপি। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন পল্লী ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মো: মশিউর রহমান রাঙ্গা, পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ক্য সা প্রু, পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বেবী,পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম,বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আলতাফ হোসেনসহ সরকারী বেসরকারী কর্মকর্তারা।
মেলায় প্রায় ৫০টি স্টল অংশ নিয়েছে আর কৃষি পন্যের প্রদশর্নীসহ কৃষিজ পন্যের প্রযুক্তি সর্ম্পকে জানতে মেলায় আগত দর্শনার্থীদের ভীড় বেড়েছে সকাল থেকেই।
দিনব্যাপী এই বৈশাখী কৃষি প্রযুক্তি মেলা প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত চলবে ।
॥ রাহুল বড়–য়া ছোটন, বান্দরবান ॥ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা আর নদীতে ফুল ভাঁসিয়ে বান্দরবানে চাকমা-তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের তিন দিনের বৈসাবি উৎসব শুরু হয়েছে। বুধবার (১২এপ্রিল) সকালে সদর উপজেলা বাঘমারা এলাকায় চাকমা এবং তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণী ও বিভিন্ন বয়সী লোকজন তাদের ঐতিহ্যবাহী পোষাকে সজ্জিত হয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি বাঘমারা বাজারের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ শেষে বাঘমারা খালে এসে শেষ হয়।
পরে বাঘমারা খালে ফুল ভাঁসিয়ে পুরানো বছরকে বিদায় জানিয়ে আর নতুন বছরকে বরণ করে নেয় চাকমা-তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুনীরা। এসময় নদীতে ফুল ভাসিয়ে পুরাতনকে বিদায় আর নতুন শুভ সুচনার জন্য প্রার্থনা করে সকলে।
এদিকে মারমা ,চাকমা-তঞ্চঙ্গ্যাসহ পাহাড়ী জনগোষ্ঠি সম্প্রদায়ের বৈসাবি উৎসবকে ঘিরে পার্বত্য জেলায় উৎসবের আমেজ সৃষ্ঠি হয়েছে সর্বত্র।
॥ রাহুল বড়–য়া ছোটন, বান্দরবান ॥ পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রাণের উৎসব “বৈসাবি”-কে ঘিরে বান্দরবান পার্বত্য জেলা আনন্দের জোয়ারে ভাসছে। পাহাড়ি গ্রামগুলোতে এখন সাজ-সাজ রব। পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরের বরণকে সামনে রেখে প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামগুলোতে চলছে নানা প্রস্তুুতি। হাট-বাজারগুলোতে পড়েছে কেনা-কাটার ধুম। এদিকে বৈসাবি উৎসবকে সামনে রেখে বান্দরবানের হোটেল-মোটেল আগাম বুকিং হয়ে গেছে। বৈসাবি উৎসবে স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ পৃথক বার্তায় সুখ, সমৃদ্ধি কামনা করেছেন।
বান্দরবান জেলার প্রতিটি জনপদ এখন উৎসবের জোয়ারে ভাসছে। বৈসাবি উৎসবকে সামনে রেখে বান্দরবান জেলার হাট-বাজারে কেনা-কাটা বেড়েছে। বিপনী বিতানগুলোতে এখন পাহাড়িদের পাশাপাশি বাঙ্গালী তরুণীদেরও উপচে পড়া ভীড়।
১২ এপ্রিল বিকেলে তংচঙ্গ্যাদের ঘিলা খেলার মধ্য দিয়ে শুরু হবে আদিবাসীদের বৈসাবি পালন । আর ১৩ এপ্রিল সকালে মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব উপলক্ষে মহাশোভাযাত্রা, বয়োজ্যেষ্ঠ পূজা ।১৪ এপ্রিল সাঙ্গু নদীতে বুদ্ধ মূর্তি ¯œান ও পিঠা তৈরি ।১৫ ও ১৬ এপ্রিল বিকেলে স্থানীয় রাজার মাঠে মৈত্রী পানি বর্ষন উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ১৭ এপ্রিল বৌদ্ধ বিহারের মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলন ও বয়স্কদের পূজার মধ্য দিয়ে এই বৈসাবি উৎসবের সমাপ্তি হবে।
এদিকে উৎসবের সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন এবং বর্ণাঢ্য আয়োজনে এবার ও আরো জাকজমকভাবে এই উৎসব উদযাপনের কথা জানালেন সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি হ্লাগ্যচিং মার্মা।
পার্বত্য চট্টগ্রামে আবহমান কাল ধরে লালিত ঐতিহ্যবাহী কৃষ্টি ও সংস্কৃতির অংশ হিসেবে মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই, চাকমা সম্প্রদায়ের বিজু আর ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসু, এবং বাঙালিদের চৈত্র সংক্রান্তি ও বর্ষবরণ উৎসব পালন করে আসছে। এ উৎসব-আনন্দ পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি বাঙালি জনগোষ্ঠীও উপভোগ করে থাকেন । ১৯৮৫ সাল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত তিন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামে এ উসব পালন করে আসছে। যা সময়ের ব্যবধানে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে ‘বৈসাবি’ শব্দটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। মারমা,চাকমা ও ত্রিপুরা, সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব নামে ‘মারমা ভাষায় সাংগ্রাই, ত্রিপুরা ভাষায় বৈসু এবং চাকমা ভাষায় বিজু’ নামে এ উৎসব পালন হয়ে থাকে। এ তিন সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষার নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’ নামকরণ করা হয়।
ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামে তঞ্চঙ্গ্যা,বম, খিয়াং, লুসাই, পাংখোয়া, ¤্রাে, খুমি, আসাম, চাক ও রাখাইনসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলো নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে তাদের ভাষা-সংস্কৃতি ও অবস্থানকে বৈচিত্রময় করে করে তুলতে প্রতি বছর চৈত্রের শেষ দিন থেকে ‘বৈসাবি’ উৎসব পালন করে থাকে।
এদিকে নতুন বছরকে বিদায় আর পুরাতন বছরকে কেন্দ্র করে উৎসবে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা দিতে প্রস্তুত প্রশাসন আর অনুষ্ঠানে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় ও কাজ করছে জেলা পুলিশ এমনটাই জানালেন বান্দরবানের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়। তিনি জানান আনন্দ আয়োজনের এই উৎসবে পর্যাপ্ত নিরাপদের চাদরে ডাকা থাকবে পুরো জেলা।
আসন্ন বৈসাবি উৎসবের মধ্য দিয়ে পাহাড়ী-বাঙ্গালীর মধ্যে শান্তি-সম্প্রীতি ও ঐক্য আরো সু-দৃঢ় হোক এই প্রত্যাশা সকলের।
॥ বান্দরবান প্রতিনিধি ॥ বান্দরবান সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এর নেতৃত্বে সঙ্গীয় অফিসার এসআই মোঃ খালিকুর রহমান, এএসআই মকছুদ আহমদ, এএসআই এস.এম রাশেদ এবং সঙ্গীয় ফোর্স কনস্টেবল ইফতে খাইরুল হাসানসহ থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করার সময় বান্দরবান সদর থানাধীন রেইচা বাজারের দক্ষিণে ঝিরির পাশে মোঃ কামাল হোসেন এর বসতঘরে আসামী কামাল হোসেন এবং তার সহযোগী ২/৩ জন ব্যক্তি নেশাজাতীয় দ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেটসহ সশস্ত্র অবস্থায় অবস্থান করছে এমন গোপন সূত্রে সংবাদ পেয়ে গতকাল রবিবার ভোর ৫টায় ৩নং সদর, সুয়ালক ইউপি এলাকায় রাত্রীকালীন পেট্রোল-২ ডিউটিতে নিয়োজিত অফিসার এএসআই দিদারুল ইসলাম ও সঙ্গীয় ফোর্সসহ মোঃ কামাল হোসেনের বাড়ির সামনে উপস্থিত হলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ৩/৪ জন ব্যক্তি পালানোর সময় সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সের সহায়তায় আসামী মোঃ কামাল হোসেন (৩৪), পিতা-মোঃ কালা মিয়া, মাতা-মৃত নয়ন সোনা, সাং-রেইছা বাজার, ১নং ওয়ার্ড, ৩নং সদর ইউপি, থানা ও জেলা-বান্দরবানকে গ্রেফতার করা হয়।
এসময় স্থানীয় মেম্বার নুরুন্নবীসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গগণের উপস্থিতিতে আসামী মোঃ কামাল হোসেনের দেহ তল্লাশী করার সময় তার পরণের প্যান্টের পেছনে কোমরে লুকানো অবস্থায় একটি দেশীয় তৈরি এল.জি, যার ভিতরে লোড করা অবস্থায় একটি কার্তুজ এবং প্যান্টের পকেটে থাকা ১০ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট পেয়ে সাক্ষীদের মোকাবেলায় জব্দ করা হয়।
পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ কামাল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায় যে, পলাতক আসামী লিটন দাশ (৩৮), পিতা-মৃত শীতল দাশ, মাতা-সুইতারা দাশ, সাং-শীতইল্যা ঘোনাপাড়া, রেইছা, ১নং ওয়ার্ড, সদর ইউপি, থানা ও জেলা-বান্দরবানসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন আসামীরা উক্ত বসতঘরে বর্ণিত অস্ত্রশস্ত্রসহ ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রয় করার উদ্দেশ্যে অবস্থান করেছিল।
এই সংক্রান্তে বান্দরবান সদর থানায় গ্রেফতারকৃত আসামী, পলাতক আসামী এবং অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে পৃথকভাবে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
॥ রাহুল বড়ুয়া ছোটন / এসকে খগেশ প্রতি চন্দ্র খোকন ॥ পার্বত্য অঞ্চলে কোন ভাবেই জঙ্গীদের আস্থানা গড়ে তুলতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এম.পি। তিনি বলেন, এই অঞ্চলের সহজ সরল মানুষ গুলোকে ভুল বুঝিয়ে জঙ্গীরা তাদের ফায়দা লোটার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যাতে জঙ্গীরা কোন ভাবেই এই অঞ্চলে আস্থানা গড়তে না পারে তার জন্য সাধারণ জনগণকে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান জানান।
গতকাল লামা উপজেলায় সরকারের বাস্তবায়িত ২৩ কোটি টাকার ১১ টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন, ভিত্তিপ্রস্তর, হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
রুপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এম.পি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) হারুণ-অর রশীদ, বান্দরবানের সহকারী পুলিশ সুপার অর্ণিবান চাকমা, লামা পৌরসভার মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম, পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য কাজল কান্তি দাশ, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষীপদ দাশ, পরিষদ সদস্য মোস্তফা কামাল, সদস্য ফাতেমা পারুল, সদস্য কিউচিং চাক, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল আজিজ, এলজিইডি জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমা, লামা আর্মি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার লেফটেনেন্ট রাশেদ, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল, লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিন ওয়ান নু, রূপসীপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শহীদুল ইসলামসহ প্রমূখ।
বীর বাহাদুর বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ শান্তিপ্রিয়। এই অঞ্চলের মানুষের উন্নয়নের কাজে কোন চাঁদাবাজী আমরা সহ্য করবো না। তিনি বলেন, উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করতে গেলে যদি চাঁদা দিতে হয় তাহলে সেই উন্নয়ন কার্যক্রম ভালো হয় না। তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের এই সকল চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হই তাহলে আমাদের উন্নয়ন কর্মকান্ডে কেউ চাঁদা দাবী করতে পারবে না। উন্নয়ন কর্মকান্ড শতভাগ ভালো হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এসময় তিনি লামা উপজেলা পরিষদের সামনে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর কর্তৃক লামা পৌরসভাকে দেয়া ডাম্পার ট্রাকের চাবি লামা পৌরসভার মেয়রের কাছে হস্তান্তর করেন। এছাড়া পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী মসজিদ ও বৌদ্ধ ক্যাং এ সাউন্ড সিস্টেম প্রদান, একটি বাড়ি একটি খামার ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর, ৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পাচউবো কর্তৃক মাতামুহুরী নদীর উপর রাজবাড়ি পয়েন্টে পিসি গার্ডার ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর, লামামুখ হতে শিলেরতুয়া রাস্তার ভিত্তিপ্রস্তর,২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তপোবন বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রের উদ্বোধন, ২২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ভদ্রসেন পাড়া ধর্মরত্ম বৌদ্ধ বিহারের উদ্বোধন, ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রাজবাড়ী নালন্দা বৌদ্ধ বিহারের উদ্বোধন, ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে লামা পৌর এলাকায় ডাস্টবিন সরবরাহ, ৫ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রূপসীপাড়ায় লামা খালের উপর নির্মিত ব্রিজের উদ্বোধন, রুপসীপাড়া হতে মংপ্রু পাড়া রাস্তার ভিত্তিপ্রস্তর, ২০ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে রুপসীপাড়া মসজিদের দ্বি-তল ভবনের উদ্বোধন, ১৬ লক্ষ আটষট্টি হাজার রূপসী পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবন নির্মান, ও সবশেষে স্কুল মাঠে রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় অংশগ্রহণ করেন।
প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, এই এলাকার মানুষ আমাকে ৫ বার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে তাদের খাদেম হিসেবে কাজ করার সুযোগ দিয়েছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কাজ করে যাচ্ছি। সকলের প্রচেষ্টায় ২০২১ সালের মধ্যে এই দেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে।
এ সময় পার্বত্য প্রতিমন্তীকে একনজর দেখতে লামার সর্বস্তরের জন-সাধারণের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে অর্ধশত তোরণ নির্মাণ করে মন্ত্রীকে কয়েক হাজার নর-নারী ফুল দিয়ে বরণ করেন। সকাল ১০টায় জননেতা বীর বাহাদুর লামায় উপস্থিত হলে উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে তাকে ফুলের দিয়ে বরণ করা হয়।