শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে তার কাছে ফলাফলের এই অনুলিপি হস্তান্তর করেন।
বেলা ১২টায় সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এবারের ফলাফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী। দুপুর ২টা থেকে শিক্ষার্থীরা ফল জানতে পারবে।
গত বছর এ পরীক্ষায় ৮৮ দশমিক ২৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬১ জন।
সেই হিসাবে এবার পাসের হার ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে পাঁচ হাজার।
ফলাফল হস্তান্তরের পর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, পাসের হার কমায় তিনি বিস্মিত নন।
“এবার শান্তিপূর্ণ, নকলমুক্ত পরিবেশে সুশৃঙ্খলভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার পাসের হার অন্যান্য বছরের চেয়ে কম। এক্সামিনাররা খাতা নিয়ে যেত, কিন্তু ভালো করে দেখত না। এবার খাতা দেখার ক্ষেত্রে গাফলতি ছিল না।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “খাতা দেখার পদ্ধতির পরিবর্তন করা হয়েছে, তা সময়োপযোগী।”
যারা এবারের পরীক্ষার কৃতকার্য হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তাদের অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি ছেলেদের আরও মনোযোগী হতে বলেন।
হাওর, দ্বীপ ও পার্বত্য অঞ্চলে আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, “কেউ শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত থাকবে- সেটা চাই না।”
গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত এবারের এসএসসির তত্ত্বীয় এবং ৪ থেকে ১১ মার্চ ব্যবহারিক পরীক্ষা হয়।
দশ বোর্ডে এবার মোট ১৭ লাখ ৮১ হাজার ৯৬২ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে পাস করেছে ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৭২২ জন।
মন্ত্রী জানান, আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে এবার এসএসসিতে ৮১ দশমিক ২১ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলে ৭৬ দশমিক ২০ শতাংশ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৭৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে।
আট বোর্ডে ৯৭ হাজার ৯৬৪ জন, দাখিলে ২ হাজার ৬১০ জন এবং কারিগরিতে ৪ হাজার ১৮৭ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
পাসের হারে এবারও ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে। ৭৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ ছাত্রের বিপরীতে ৮০ দশমিক ৭৮ শতাংশ ছাত্রী মাধ্যমিকে পাস করেছে।
এসএমএসে ফল
যে কোনো মোবাইল অপারেটর থেকে এসএমএস করে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল জানা যাবে।
SSC/DAKHIL লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখতে হবে, এরপর স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৭ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে ফল জানা যাবে।
এছাড়া শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট (http://www.educationboardresults.gov.bd) থেকেও পরীক্ষার্থীরা ফল জানতে পারবেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো (www.educationboardresults.gov.bd) ওয়েবসাইটে গিয়ে ফল ডাউনলোড করতে পারবে। বোর্ড থেকে ফলাফলের কোনো হার্ডকপি সরবারহ করা হবে না।
তবে বিশেষ প্রয়োজনে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে ফলাফলের হার্ডকপি সংগ্রহ করা যাবে বলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি জানিয়েছে।
ফল পুনঃনিরীক্ষা
রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক থেকে আগামী ৫ থেকে ১১ মে পর্যন্ত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করা যাবে।
ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে RSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে বিষয় কোড লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
ফিরতি এসএমএসে ফি বাবদ কত টাকা কেটে নেওয়া হবে তা জানিয়ে একটি পিন নম্বর (পার্সোনাল আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) দেওয়া হবে।
আবেদনে সম্মত থাকলে RSC লিখে স্পেস দিয়ে YES লিখে স্পেস দিয়ে পিন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বর লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
প্রতিটি বিষয় ও প্রতি পত্রের জন্য ১২৫ টাকা হারে চার্জ কাটা হবে।
যে সব বিষয়ের দুটি পত্র (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র) রয়েছে, যে সকল বিষয়ের ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করলে দুটি পত্রের জন্য মোট ২৫০ টাকা ফি কাটা হবে।
একই এসএমএসে একাধিক বিষয়ের আবেদন করা যাবে, এক্ষেত্রে বিষয় কোড পর্যায়ক্রমে ‘কমা’ দিয়ে লিখতে হবে।
চট্টগ্রাম বোর্ডের
গত বছর ছেলেরা এগিয়ে থাকলেও এবার বিপরীত চিত্র দেখা গেছে। এবছর সামগ্রিকভাবে পাসের হার কমলেও জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েদের সংখ্যা বেড়েছে।
এবছর চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১ লাখ ১৭ হাজার ৮৯৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৪১২ জন, ছেলেদের সংখ্যা ছিল ৫৫ হাজার ৪৮৫ জন।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, মেয়েদের পাসের হার ৮৪ শতাংশ আর ছেলেদের ৮৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ। গত বছর ছিল যথাক্রমে ৮৯ দশমিক ৯৯ ও ৯০ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
৮ হাজার ৩৪৪ জন জিপিএ-৫ পাওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা ৪ হাজার ২৯১ জন ও ছাত্র সংখ্যা ৪ হাজার ৫৩ জন। গত বছর ৪ হাজার ১১৯ ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছিল।
বিভাগওয়ারি ফল বিশ্লেষণেও দেখা যায়, বিজ্ঞান বিভাগে ছেলেরা দশমিক ০৪ শতাংশ পয়েন্ট এগিয়ে থাকলেও মানবিকে মেয়েরা ৫ দশমিক ২৩ শতাংশ ও ব্যবসায় শিক্ষায় ৪ দশমিক ২৪ শতাংশ পয়েন্ট এগিয়ে আছে।
বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পাওয়াদের মধ্যে ছেলেরা এগিয়ে থাকলেও গত বছরের তুলনায় এবছর মেয়েদের সংখ্যা বেড়েছে।
গত বছর বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত মেয়েদের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ১৪২ জন এবং তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬১৪ জন।
মানবিকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ছেলেদের মধ্যে ১০ জন আর মেয়েদের ৩৩ জন। আর ব্যবসায় শিক্ষায় ৬৪৪ জন ছাত্রী এবং ২২৪ জন ছাত্র জিপিএ-৫ পেয়েছে।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ কাপ্তাই হ্রদের আজ সোমবার থেকে সকল প্রকার মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকন। সোমবার দিবাগত রাত (১ মে) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে সব ধরনের মাছ ধরা, বাজারজাতকরণ এবং পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, হ্রদে অবমুক্ত করা পোনা মাছের বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণসহ হ্রদের প্রাকৃতিক পরিবেশ মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির সহায়ক হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিবছর কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়।
আদেশে বলা হয়, কাপ্তাই হ্রদের সমগ্র এলাকায় এবং কাপ্তাই হতে বড়ই ছড়ি পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীতে রাঙ্গামাটি সীমানার অন্তর্ভূক্ত অংশে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল প্রকার মৎস্য আহরণ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ শুকানো এবং পরিবহন সম্ফয়র্ণ রুপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
হ্রদে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞাকালীন মৎস্য আহরণের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ২০ হাজার জেলেকে বিশেষ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের কর্মকর্তারা।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) প্রকাশ কান্তি চৌধুরী জানান, ১ মে থেকে মাছ শিকার বন্ধ কার্যকর হচ্ছে। মাছ শিকার বন্ধে নৌ পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ টিমও কাজ করে যাবে।
অবৈধ উপায়ে মাছ আহরণ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ বন্ধ করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি কাপ্তাই হ্রদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নৌ পুলিশ মোতায়ন করা হবে। হ্রদে অবৈধ উপায়ে মাছ শিকারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
থেকে রাত ১টা পর্যন্ত মোট ৪ঘন্টা সময়ে খাগড়াছড়ি‘র পানছড়ি উপজেলা‘র ১নং লোগাং ইউপি, ৩নং পানছড়ি সদর ইউপি‘র ও ৪নং লতিবান ইউপি (বর্তমানে ৫নং উল্টাছড়ি ইউপি)‘র বাঙ্গালি গ্রামে অগ্নি সংযোগসহ নির্বাচারে বাঙ্গালী শিশু, কিশোর, নারী, পুরুষ, আবাল, বৃদ্ধ, বনিতা যাকে যেখানে পেয়েছে তাকে সেখানেই হত্যা করেছে সন্তু লারমার
নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্রগ্রাম জন সংহতি সমিতি (জেএসএস)‘র বন্দুকধারী সন্ত্রাসীরা।
তৎ সময়ে বে–সরকারী হিসাবে মাত্র ৪ঘন্টা সময়ে নিরস্ত্র ও নিরীহ ৮শত ৫৩জন বাঙ্গালীকে হত্যা করা হয়েছে, আহত করা হয়েছে প্রায় ৫শত জনকে, অপহরণ ও গুম করা হয়েছে আরো কয়েক হাজার বাঙ্গালীকে। ৬হাজার ২শত ৪০টি বাড়ি সম্পূর্ন ভাবে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এতে গৃহহীন হয়ে পড়ে হাজার হাজার পরিবার।
সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন শান্তি বাহিনী‘র গেরিলা যোদ্ধারা সেই হামলায় এত গুলো মানুষকে হত্যা করতে একটি বুলেটও ব্যবহার করেনি। হাত–পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, দা দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে, জবাই করে, আগুনে পুড়িয়ে, শিশুদেরকে পায়ে ধরে গাছের সাথে বাড়ি দিয়ে, বেনেট ও অন্যান্য দেশি অস্ত্র দিয়ে খোঁচিয়ে খোঁচিয়ে হত্যা করেছিল। প্রতিটি লাশকেই বিকৃত করে সে দিন চরম অমানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল শান্তি বাহিনীর সন্ত্রাসীরা। ঘটনাটি যারা স্ব–চুখে দেখাছে বা বেচে যাওয়া কিছু কিছু সাক্ষী আজো আছে, কিন্তু ঘটনার কথা মনে পড়লে আজও তারা শিউরে উঠে।
এই হত্যা কান্ডের মধ্যে দিয়ে নরকীয়তা সৃষ্টি করেছিলো ৩৮হাজার বাঙ্গালীর হত্যাকারী খুনি জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা।
উল্লেখ্য. এদিকে ৭৫–৯৭ সাল পর্যন্ত সিএইচটিকে বাংলাদেশ আলাদা করতে জেএসএস‘র জঙ্গি বাহিনী তথা শান্তি বাহিনি নির্মম ভাবে খুন করে ২৫৬জন বীর সেনা এবং ৩০ হাজারের অধিক নিরীহ বাঙালিকে। স্বাধীন এই দেশে পরাধীন পাহাড়ের বাঙালিরা। বহিরাগত উপজাতি জঙ্গি চাদাবাজদের কবলে আজ আমাদের প্রিয় পার্বত্য চট্রগ্রাম।
বর্তমান সরকার পার্বত্য এলাকার শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে, পার্বত্য জেলার শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মান উন্নয়নে বিভিন্ন স্কুল কলেজকে জাতীয়করণ করে সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা হচ্ছে, আগামীতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে এমনটাই মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টায় বান্দরবানের সাঙ্গু উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, পাহাড়ের জনগোষ্টির শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মান উন্নয়নে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
এসময় অনুষ্টানে অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থোয়াইহ্লা মং মার্মা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হারুণ-অর-রশীদ, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: আলী হোসেন, পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বেবী, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষীপদ দাশ, সদস্য ফিলিপ ত্রিপুরা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আব্দুল আজিজ, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি অমল কান্তি দাশ, ৮নং ওয়ার্ড পৌর কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান খোকন, সাঙ্গু উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কামাল পাশা, সাঙ্গু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: ইমান আলী, সাঙ্গু উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মো: বশির খান সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার জনসাধারণ।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ৩০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে বান্দরবান কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ শ্মশানের বানিং হাউজের পাশ্বে ছাউনিযুক্ত গ্যালারী ও ৫৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ শ্মশানের চেহ -রাই: ঘর ও পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্থায়নে ৫০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে বান্দরবান কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ শ্মশানের মার্কেট উদ্বোধন করেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী “পোর্ট এক্সপো” আজ শুরু হয়। ব্যাপক উদ্দিপনা ও উৎসবমূখর পরিবেশে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে বর্ণিল করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্দর কারশেডে আয়োজিত “পোর্ট এক্সপো ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে” উদ্বোধন করেন। বন্দরের সম্ভবনাকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে এই “পোর্ট এক্সপো” গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বক্তরা। নৌপরিবহন মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর স্বাধীনতা যুদ্ধে অনেক অবদান রেখেছে এবং ১০১ জন লোক শহীদ হয়েছিল। বন্দর এক সময় ধ্বংস প্রায় অবস্থা ছিল। প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বে লয়েড লিস্টে ৯৮তম স্থান থেকে ৭৬তম স্থানে অগ্রসর হয়েছে। বর্তমানে যে সমস্ত প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে আরো অনেক অগ্রসর হবে এবং বন্দরের সক্ষমতা অনেকগুন বৃদ্ধি পাবে। প্রথম বারেরমত আয়োজিত এই পোর্ট এক্সপো থিম নির্ধারণ করা হয়েছে “বন্দরেই সমৃদ্ধি”।
অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, ভূমিপ্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, স্থানীয় সংসদ সদস্য এম.এ লতিফ, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, চেম্বার সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম বন্দরে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে চেক তুলে দেন। এক্সপো উপলক্ষে কারশেডে অর্ধশতাধিক স্টল রয়েছে। নবনির্মিত কারশেডে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী পোর্ট এক্সপো সকলের জন্য উন্মুক্ত বলে জানানো হয়েছে।
॥ এস.কে খগেশপ্রতি চন্দ্র খোকন, লামা ॥ বান্দরবানের লামায় জেএসএস’র সশস্ত্র বাহিনীর সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া হয়ে উঠায় উপজেলা আইন শৃংঙ্খলা কমিটির সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জনপ্রতিনিধিরা। গত রবিবার লামা উপজেলা আইন শৃংঙ্খলা কমিটির সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নিরাপত্তার স্বার্থে যথাযথ ব্যবস্থা প্রহণে প্রশাসন ও সরকারের কাছে জোর দাবি তুলেছেন।
আইন শৃংঙ্খলা সভায় ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন মজুমদার বলেন, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের গয়ালমারায় গত ২০ এপ্রিল ২০-২২ জনের জেএসএস’র সশস্ত্র বাহিনী স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ব্যক্তির কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের চাঁদা আদায় করেছে। এতে স্থানীয় জনসাধারণ হামলার আতঙ্কে ভুগছে।
লামা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, মেরাখোলা এলাকার গরু ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে সে পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের কবলে রয়েছে। লামা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজীর দৌরাত্ম্য দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। সন্ত্রাসীরা তামাক চাষীসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও কৃষকদের কৃষি পণ্যের উপর চাঁদাবাজি চালাচ্ছে।
রূপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু বলেন, জেএসএস সমর্থিত সশস্ত্র বাহিনীর একটি গ্রুপ গত ২০ এপ্রিল নাইক্ষ্যংমুখ বাজারে এসে ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। তাদের নির্যাতনে চার জন আহত হন। ইউপি মেম্বার কায়ওয়ে মুরং আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, সন্ত্রাসীরা যে কোন মুর্হুতে নাইক্ষ্যংমুখ বাজারে হামলা চালিয়ে জান মালের ক্ষতি করতে পারেন।
লামা থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্থ কেউ আইনগত সহায়তা চাইলে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আলীকদম জোনের বিদায়ী কমান্ডার লে. কর্ণেল মোহাম্মদ সারোয়ার হোসেন বলেছেন, কোন ক্রমেই পার্বত্য এলাকাকে সন্ত্রাসীদের অভায়রণ্য হতে দেওয়া যাবে না। সকলকে সম্মলিতভাবে কাজ করে সন্ত্রাসীদের র্নিমূল করতে হবে।
নবাগত জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল মাহাবুবুর রহমান বলেছেন, আমাদের শান্তি যারা কেড়ে নিতে চায় তাদের কোন ক্রমেই ছাড় দেওয়া হবে না। সন্ত্রাসী নির্মূলে সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য আমাদের।
মঙ্গলবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের অভিভাবক কিন্তু রাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি। এখানে যখন ভাস্কর্য বসানো হয়, তখন সেটা আমাদের জানানো হয়নি; সরানো হবে কিনা, সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত প্রধান বিচারপতিই নেবেন।
“যখন এই ভাস্কর্যের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে কিছু বিপরীত যুক্তি আসছে, তখন আমাদেরকে দেখতে হবে, সুপ্রিম কোর্ট অত্যন্ত পবিত্র স্থান। এখানে যেন কোনো অরাজক পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেটা সকলের বিবেচনা করা উচিত।”
তাহলে রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক ‘লেডি জাস্টিস’র আদলে তৈরি ওই ভাস্কর্য সুপ্রিম কোর্টের পবিত্রতাকে কলুষিত করেছে কিনা- সে প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, “আমি বলেছি, এটা কিছু প্রশ্নের উদ্রেক করেছে, সেটা ধরে আপনারা বুঝে নেন আমি কী বলতে চাইছি।”
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে ওই ভাস্কর্য স্থাপনের পর থেকে হেফাজত ইসলাম ও ওলামা লীগসহ কয়েকটি ইসলামী সংগঠন তার বিরোধিতায় নামে।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের বিপরীতে দাঁড়িয়ে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলে যে সমাবেশ করেছিল হেফাজত, ভাস্কর্য সরানোর দাবিতে সরকারকে ফের একই ধরনের সমাবেশের হুমকি দেয় তারা।
এরপর ১১ এপ্রিল হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফী নেতৃত্বাধীন এক দল ওলামার সঙ্গে গণভবনে বৈঠকে শেখ হাসিনা ভাস্কর্যটি সরাতে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর সেটা নিয়ে নানা সমালোচনার চলছে।
এ প্রেক্ষাপটের মধ্যে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ন্যাশনাল ‘ইন্টারন্যাশনাল লেবার স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড লেবার লেজিসলেশন ফর জাজেস অ্যান্ড জুডিসিয়াল অফিসার্স’ শীর্ষক ট্রেইনিং কোর্সের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এই অনুষ্ঠান শেষে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডকে আমৃত্য কারাদণ্ড বিবেচনা করে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিষয়ে মন্ত্রীর মন্তব্য জানতে চান সাংবাদিকরা।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “পূর্ণাঙ্গ রায় যেটা বেরিয়েছে সেটা যদি আমি না পড়ে একটা কথা বলি, তাহলে সেটা অন্য রকম হয়ে যাবে। পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপিটা যদি আজকে পাই, সেটা পড়ে কয়েকদিনের মধ্যে সে বিষয়ে কথা বলব।”
কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শ্রম আদালতের সংখ্যা কম হওয়ায় এবং বিচারে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে শ্রমিকরা সুবিধা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।
তিনি বলেন, “দেখা যায়, ৫০ হাজার বা ১ লাখ টাকার জন্য শ্রমিকরা আদালতে যায়। কিন্তু বিচারে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। আবার আপিল হয়। আপিলের পরেও যদি পক্ষে রায় আসে, তারপরও মালিকপক্ষ আবার হাই কোর্টে গিয়ে বিরুদ্ধে রিট করে। তখন শ্রমিকরা আর বিচার এগিয়ে নিতে পারেন না।”
সেক্ষেত্রে প্রশাসনিক আপিল ব্যবস্থার শ্রম আপিল আদালতে পুরো বিষয়টি নিষ্পত্তি করা যায় কি-না সে প্রস্তাব আইনমন্ত্রীর কাছে রাখেন তিনি।
বিচারপ্রাপ্তির পথ সহজ করার জন্য মতিঝিলে একই ভবনে থাকা তিনটি শ্রম আদালতের দুটিকে নারায়ণগঞ্জ ও টঙ্গীতে সরানোর দাবি জানান শ্রম প্রতিমন্ত্রী।
প্রয়োজনে শ্রম মন্ত্রণালয় সেজন্য আলাদা ভবন করে দিতে রাজি আছে বলে তিনি জানান।
এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “নাগরিকের বিচারপ্রাপ্তির যে ধারা সেটাতে হাই কোর্টে রিট করার সুযোগ দিতে হবে মালিকপক্ষকে। তবে শ্রম আদালতেও অর্থ ঋণ আদালতের মতো পাওনার অর্ধেক আগেই পরিশোধ করার বিধান রাখা যায় কিনা, সে বিষয় দেখা যেতে পারে।”
শ্রম মন্ত্রণালয় জায়গা করে দিলে দুটি আদালত ‘অবশ্যই’ নারায়ণগঞ্জ ও টঙ্গীতে সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী।
এছাড়া শ্রম প্রতিমন্ত্রীর দাবি অনুযায়ী সিলেট ও রংপুর জেলায়ও শ্রম আদালত করার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা হবে বলে মন্তব্য করে আনিসুল হক।
বিচার প্রশাসন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি মুসা খালেদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আইনসচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকেন, আইএলওর দেশীয় পরিচালক শ্রিনিবাসন বি রেড্ডি বক্তব্য দেন।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ প্রবল বর্ষণে রাঙ্গামাটি শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। হুমকীর মুখে পড়েছে রাঙ্গামাটি পৌর শহরের বেশ কয়েকটি এলাকার শত শত মানুষ। পৌরসভার ড্রেন গুলো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় দূর্ভোগ পোহাচ্ছে মানুষ গুলো। দিকে গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে পুলিশ হাসপাতাল এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবার হুমকীর মুখে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সমীর চৌধুরী জানান, পুলিশ হাসপাতাল এলাকার ড্রেনটি অনেক পুরো হওয়ায় দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের। তিনি বলেন, এই ড্রেনটি দিয়ে পুলিশ হাসপাতাল সহ পুরো এলাকার পানি নিস্কাশন হয়। ড্রেনটি ভেঙ্গে গিয়ে পানি গুলো আমাদের বাসার ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে। এই পানির কারণে আমার রান্না ঘর সহ এলাকার মাটি ধ্বস দেখা দিয়েছে। যে কোন মুহুর্তে বড় ধনের দুর্ঘটনা ঘটনার আশংকা রয়েছে এলাকাটিতে। তাই দ্রুত এই ড্রেন সংস্কারের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দরা জানান, আরো দুই দিন এই ভাবে বৃস্টিপাত হলে এলাকার মানুষ গুলো আরো বেশী দুর্ভোগে পড়বে। এই অবস্থায় আমরা কেউ রাতে ঘুমাতে পারছি না। বৃষ্টি যতো বেশী হচ্ছে আমাদের মাঝে আতংক বাড়ছে।
এই ব্যাপারে রাঙ্গামাটি পৌরসভার কাউন্সিলার পুলক দের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের কানে এসেছে। আমাদের মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী সহ আমরা সম্প্রতি গিয়ে এলাকাটি পরিদর্শন করে এসেছি। এলাকাবাসীর দাবী প্রেক্ষিতে আমরা বর্ষার আগেই ড্রেনটি নতুন কাজ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। অফিসিয়াল প্রসেসিং সহ টেন্ডার প্রক্রিয়া ছাড়া তা করা সম্ভব নয়। তার পরও বৈশাখ মাসে এই ধনের বৃষ্টি হবে আমরা কেউ কল্পনা করিনি। আমরা যত দ্রুত পারি এই ড্রেন নতুন করে কাজ শুরু করবো।
হাটহাজারী প্রতিনিধি: দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে কার্প জাতীয় মা-মাছ ডিম ছেড়েছে। গত শুক্রবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নমুনা ডিম ছাড়ার পর রাত আনুমানিক সাড়ে দশটার দিকে ডিম আহরণকারীরা ডিম সংগ্রহ শুরু করে। গতকাল শনিবার (২২এপ্রিল) সকাল থেকে ১১টা পর্যন্ত মৃগেল, কালবাউশ, কাতাল, রুই জাতের মাছের ডিম সংগ্রহ করা হয়। নদী দূষন সহ অনুকুল পরিবেশের অভাবে গত বছর ডিম ছাড়েনি মা মাছ। এক বছর অপেক্ষার পর হালদা নদীতে মা মাছ ডিম দেওয়ার ফলে ডিম আহরণকে কেন্দ্র করে ডিম সংগ্রাহকদের মুখে ফুটে উঠেছে আশার আলো। হালদা নদীতে এবার প্রায় ১০৫টি নৌকা নিয়ে ডিম আহরণ কারীরা ডিম সংগ্রহ করে। ডিম আহরণের পরিমাণ আণুমানিক ১ হাজার ৬৮০কেজি । তবে এর মধ্য থেকে মাত্র ২৮ কেজি রেনু পাওয়া যাবে বলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক হালদা বিশেষজ্ঞ ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া জানান।
ডিম আহরণকারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাতে হালদা নদীর হাটহাজারী উপজেলার নাপিতের ঘোনা আজিমের ঘাট এলাকায় প্রথমে মা মাছ আংশিক ডিম দেওয়ার খবর পান এক ডিম সংগ্রহকারী। এরপর খলিফার ঘোনা রামদাসহাট থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত এলাকায় কার্প জাতীয় মা মাছ ডিম ছেড়েছে। গত কয়েকদিন পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টিপাত ও নদীতে পাহাড়ি ঢলের কারণে মা মাছ ডিম ছাড়ার পরিবেশ তৈরি হলে ও মা মাছ ডিম ছাড়ে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক হালদা বিশেষজ্ঞ ড.মঞ্জরুল কিবরিয়া এই প্রতিবেদকে বলেন গত বছর প্রায় দুই শ নৌকা ডিম সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছিল দিনের পর দিন। বিভিন্ন সংস্থা সহ মহাজন থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ডিম সংগ্রহের অপেক্ষায় থাকলেও সেই বার ডিম না পেয়ে অনেকে হতাশ হয়ে ডিম ধরা পেশা ছেড়ে দিয়েছে। গত বার নমুনা ডিম ছাড়লেও দখল দুষনের কারনে হালদায় মাছ মাছ ডিম দেয়নি। সেজন্য এবার মাত্র ১০৫ টি নৌকা ডিম সংগ্রহ করে। তিনি বলেন, হালদা নদীতে মা মাছ ডিম কম দেওয়ার কারণ হল হালদা নদীতে রাবার ড্যাম নির্মান সহ এশিয়ান পেপার মিলের বর্জ্য নদীতে গিয়ে প্রতিনিয়ত পানির সাথে মিশে পানি দুষিত করছে। এছাড়া আবহাওয়াও শীতল নয় এবং পাহাড়ি ঢলও প্রবল নয়। ফলে ডিমও পাওয়া গেছে কম।
গড়দুয়ারা নয়াহাট এলাকার ডিম সংগ্রহকারী কামাল সওদাগর ও মার্দাশা এলাকার শফি ও জামশেদ বলেন রাতে ভাটার সময় ডিম ছেড়েছে মা-মাছ। ভাটার ¯্রােতের সাথে সাথে মা-মাছ ডিম দিতে মদুনাঘাট এলাকায় চলে আসে। তারা বলেন, এবার মা-মাছ রাতের বেলায় ডিম দেওয়ায় ডিম সংগ্রহ করতে পারেনি অনেক ডিম আহরণকারীরা।
হালদা নদীর হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার ২০ কিলোমিটার অংশে মা মাছ শিকারীদের ঠেকাতে মৎস অধিদপ্তর পাহারা বসিয়েছে বলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মমিনুল হক জানান। এছাড়া হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা ও মদুনাঘাট এলাকায় সরকারী হ্যাচারী প্রস্তুত রেখেছে মৎস অধিদপ্তর। যাতে ডিম আহরণকারীরা হ্যাচারীতে সহজে ডিম ফুটাতে পারে ।
শুক্রবার সকাল থেকে তুমুল বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতও চলছে। বৃষ্টিতে নগরীর মুরাদপুর, ষোলশহর, হালিশহর, আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও অলিগলিতে পানি জমে যাওয়ায় নাকাল হতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
পানির কারণে বিভিন্ন স্থানে ছুটির দিনেও যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। নিচু এলাকায় বাড়িঘরে পানি ঢোকারও খবর পাওয়া গেছে।
মুরাদপুর ও ষোলশহর এলাকার প্রধান সড়কের পাশাপাশি অলিগলিও পানির নিচে তলিয়ে গেছে। “সকালে মুরাদপুরের বাসা থেকে বের হয়েছিলাম আগ্রাবাদে অফিসে যাওয়ার জন্য। মুরাদপুরের প্রধান সড়কে কোমর সমান পানি। আমি ফরেস্ট এলাকা দিয়ে বের হয়ে ষোলশহর পর্যন্ত এসেও কোনোদিকে যেতে পারিনি।”
টানা বৃষ্টিতে ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়েও পানি জমে গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক জসীম উদ্দিন জানান, তাদের মাঠে প্রায় তিন ফুট পানি জমেছে। গ্যারেজ, ফুয়েল রুম, প্রশাসনিক ভবনেও পানি ঢুকেছে।
মাঠে রাখা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সরঞ্জাম পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রমেও জটিলতা সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করছেন জসীম। ভোর থেকে ৯টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টির পর তোড় কিছুটা কমলেও ১০টার পর আবার বাড়তে শুরু করে। ঝড়বৃষ্টির মধ্যে নগরীর বিভিন্ন এলাকা সকাল থেকেই বিদ্যুৎহীন। আবহাওয়া অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয় জানিয়েছে, সকাল ৬টা থেকে ছয় ঘণ্টায় ৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে তারা। আবহাওয়াবিদ শেখ ফরিদ আহমেদ বলেন, কালবৈশাখীর সঙ্গে ভারি বর্ষণ শনিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে এজন্য কোনো সংকেত দেখাতে বলা হয়নি।