আজ গুইমারা উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচন
॥ লিটন ভট্টাচার্য্য রানা, খাগড়াছড়ি ॥ জেলার নবগঠিত গুইমারা উপজেলায় আজ সোমবার প্রথমবারের মতো উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনী প্রচারণা চললেও ভোটের দিন ঘনিয়ে আসতেই প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে নানা শঙ্কা বাসা বেধেছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সরকার দলীয় আওয়ামীলীগসহ বিএনপি ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। তবে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বগ্রহণের পরে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের এটি দ্বিতীয় নির্বাচন হওয়ায় কমিশনের ওপর আস্থা রাখতে চায় জনগণ।
আওয়ামীলীগ ও বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের প্রভাব বিস্তারের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সরকার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেয়ার প্রবণতার কথা উল্লেখ করে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এছাড়া, নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে বহিরাগতদের নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা, ভয়ভীতি প্রর্দশনের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামীলীগ সমর্থিত ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো: নুরুন্নবীর বিরুদ্ধে। এতে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভীতি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রার্থীরা।
তবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এটিএম কাউছার হোসেন। ভোটাররা যাতে সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন সেজন্য ১১জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৩ প্লাটুন বিজিবি ও ২ প্লাটুন র্যাব এবং পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স মাঠে থাকবে। এছাড়া নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরাসহ পুলিশ ও আনসার সদস্যরা পৌঁছে গেছেন।
প্রসঙ্গত, গুইমারা উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২৭হাজার ৯শত ৯২জন। নারী ভোটার ১৩হাজার ৬শ ২৫জন, পুরুষ ভোটার ১৪হাজার ৩শ ৬৭জন। ভোট কেন্দ্র ১৪টি ও বুথ সংখ্যা ৯৮টি। চেয়ারম্যান পদে ৩জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪জন ও সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
ছাত্র রাজনীতির প্রতি আস্থাহীনতা শুভ নয়: রাষ্ট্রপতি
বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনে তিনি বলেছেন, “ডাকসু ইলেকশন ইজ মাস্ট, তা না হলে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব শূন্য হয়ে যাবে।”
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের খেলার মাঠে ৫০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে একথা বলেন বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য আবদুল হামিদ।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অনেক বাঁক বদলের সাক্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই যুগের বেশি সময় ধরে ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় রাজনীতিকদের মধ্যে খেদ রয়েছে।
ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে নাম লেখানো আবদুল হামিদ তার সময়কার এবং বর্তমানের তুলনা করে হতাশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, “আমাদের সময়ের রাজনীতি আর আজকের ছাত্র রাজনীতির মধ্যে তফাৎ অনেক বেশি। ষাটের দশকে আমরা যারা ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল দেশ-জাতির কল্যাণ। দেশের মানুষকে পরাধীনতার নাগপাশ থেকে মুক্ত করে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এক্ষেত্রে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বার্থের কোনো স্থান ছিল না।
“ছাত্ররাই ছাত্র রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করত, নেতৃত্ব দিত। লেজুড়বৃত্তি বা পরনির্ভরতার কোনো জায়গা ছিল না। সাধারণ মানুষ ছাত্রদের সম্মানের চোখে দেখত।”
এখনকার অবস্থা তুলে ধরে করে আবদুল হামিদ বলেন, “ছাত্র রাজনীতির বর্তমান হালচাল দেখে মনে হয় এখানে আদর্শের চেয়ে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বার্থের প্রাধান্য বেশি। কিছু ক্ষেত্রে অছাত্ররাই ছাত্র রাজনীতির নেতৃত্ব দেয়, নিয়ন্ত্রণ করে। “ফলে ছাত্র রাজনীতির প্রতি সাধারণ মানুষের, এমনকি সাধারণ শিক্ষার্থীদের আস্থা, সমর্থন ও সম্মান হ্রাস পাচ্ছে।”
“এটি একটি দেশ ও জাতির জন্য শুভ নয়। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে ছাত্র রাজনীতিকে সঠিকপথে পরিচালিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে,” বলেন রাষ্ট্রপতি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজনীতির সূতিকাগার অভিহিত করে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনেক বরেণ্য রাজনীতিবিদের জন্ম দিয়েছে। তারা মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও জাতীয় উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। এখনও পথ প্রদর্শক হিসেবে দেশ ও জাতিকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, “দেশ ও জাতির উন্নয়নে রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিকল্প নেই। গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক। একটি ছাড়া অপরটি অচল। তাই গণতন্ত্রের ভিতকে মজবুত করতে হলে দেশে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। আর সেই নেতৃত্ব তৈরি হবে ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমেই। আদর্শভিত্তিক ও কল্যাণমুখী ছাত্র রাজনীতির নিরবচ্ছিন্ন চলার পথ নিশ্চিত করতে হবে। ছাত্রসমাজকেই এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।”
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদানের কথা তুলে ধরে আব্দুল হামিদ বলেন, “যে কোনো অন্যায়, অবিচার ও অপশাসনের প্রতিবাদে এবং আমাদের মুক্তিসংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি যে কোনো হুমকি মোকাবিলায় এ দেশের ছাত্রসমাজ বারবার এগিয়ে এসেছে। এজন্য অনেক নিপীড়ন-নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। জেল-জুলুম ভোগ করতে হয়েছে। কিন্তু তারুণ্যের জোয়ার কখনো থেমে থাকেনি এবং ভবিষ্যতেও থেমে থাকবে না।” সন্ত্রাসবাদ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে আমরা বিজয়ী হলেও পঁচাত্তরের হত্যাযজ্ঞের ফলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ও বিপক্ষের শক্তির লড়াই, প্রগতি ও প্রতিক্রিয়া, শুভ ও অশুভ এবং ধর্মপরায়ণতা ও ধর্মান্ধতার লড়াই আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে শেষ হয়ে যায়নি। আজকের লড়াইয়ে শুভশক্তি জয়ী না হলে রাষ্ট্র হিসেবে, জাতি হিসেবে আমরা আবার পিছিয়ে যাব। মুখ থুবড়ে পড়বে আমাদের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অগ্রগতির চাকা।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও গবেষণাকেন্দ্র খোলার প্রশংসা করেন রাষ্ট্রপতি।
এবারের সমাবর্তনে মোট ১৭ হাজার ৮৭৫ জন স্নাতক অংশ নিচ্ছেন। এরমধ্যে ৮০ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে ৯৪টি স্বর্ণপদক এবং ৬১ জনকে পিএইচডি ও ৪৩ জনকে এমফিল সনদ দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিওর প্রেসিডেন্ট ও উপাচার্য অধ্যাপক অমিত চাকমা। তাকে দেওয়া হয় সম্মানসূচক ডক্টর অব সায়েন্স ডিগ্রি।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আআমস আরেফিন সিদ্দিক ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) নাসরীন আহমাদ বক্তব্য দেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক মাসের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পাচ্ছেন। পুল ও প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের মধ্য থেকে এ নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের (ডিপিইও) নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। এ নিয়োগের পরও সহকারী শিক্ষকের অন্তত ১৭ হাজার পদ শূন্য থাকবে। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে ১৫ হাজারের বেশি।
সহকারী শিক্ষক নিয়োগে সরকারের এ সিদ্ধান্তে পুল-প্যানেলের এসব প্রার্থীর বিগত ৪ বছরের বেশি দিনের অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন জেলা শিক্ষা অফিসে নিয়োগের বিনিময়ে মোটা অংকের অর্থ দাবির অভিযোগ উঠেছে।
এ কারণে নিয়োগ প্রত্যাশীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অনেকেই ‘ঘুষ’ দেয়া থেকে বাঁচতে প্রভাবশালীদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। বেনামে মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে (ডিপিই) অভিযোগও জমা পড়ছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলাম খান যুগান্তরকে বলেন, পুল-প্যানেলের অবশিষ্ট প্রার্থীদের ৩০ মার্চের মধ্যে নিয়োগ দিতে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। আদালতের রায়ের আলোকে এই কাজটি করলেও একে (রায়) শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণের উপায় হিসেবে আমরা নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এ নিয়োগের নামে যদি কেউ কোথাও অর্থ নেন বা দাবি করেন- প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি লিখিতভাবে প্রমাণ দেয়ার জন্য ভুক্তভোগীদের অনুরোধ জানান।
বর্তমানে ৬৫ হাজার নতুন-পুরাতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় অর্ধ লাখ শিক্ষকের পদ খালি আছে। এর মধ্যে ১৬ হাজার প্রধান শিক্ষকের, বাকিরা সহকারী শিক্ষক। এর মধ্যে গত আগস্টে ৩৪তম বিসিএস থেকে ৮৯৮ জনকে প্রধান শিক্ষকের পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। এখন সহকারী শিক্ষকের পদ পূরণের উদ্যোগ নেয়া হল।
ডিপিইওদের কাছে প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে নিয়োগে পাঁচটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্যানেলভুক্ত অবশিষ্ট ৭ হাজার ২১৮ জন এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুলভুক্ত ১০ হাজার ২৫৫ জনকে নিয়োগের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।
এতে প্যানেলভুক্তদের বিদ্যালয়বিহীন এলাকায় স্থাপিত নতুন ও জাতীয়করণকৃত স্কুলে এবং পুলভুক্তদের সরকারি স্কুলে নিয়োগ করতে বলা হয়। নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর নিজ এলাকা ও উপজেলা অগ্রাধিকার দিতে হবে। শূন্য পদ না থাকলে পর্যায়ক্রমে পার্শ্ববর্তী উপজেলা, জেলা বা বিভাগে দিতে হবে। প্যানেলের মেয়াদ গত বছরের ৯ এপ্রিল শেষ হওয়ায় ২ বছর (মেয়াদ) বাড়ানো হয়।
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ছিদ্দিকুর রহমান যুগান্তরকে মোবাইল ফোনে জানান, পুল ও প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগের লক্ষ্যে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে শূন্য পদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। আমরা তা পাঠিয়ে দিয়েছি। জেলা থেকে এখন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।
রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের লক্ষ্যে ২০১০ সালের ২১ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সরকার। তখন আবেদনকারীদের পরীক্ষা নিয়ে ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল ৪২ হাজার ৬১১ জনের মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। তাদের মধ্যে তখন ১০ হাজার ৫১৪ জন নিয়োগ পান। বাকি ২৮ সহস াধিকের নিয়োগ ঝুলে ছিল। পরে প্রার্থীদের মামলার কারণে গতবছর কিছু নিয়োগ পান। বাকি ৭ হাজার ২১৮ জন নিয়োগ পাচ্ছেন এখন।
অপরদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের লক্ষ্যে ২০১১ সালের ৪ আগস্ট বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নেয়া পরীক্ষায় ২৭ হাজার ৭২০ জন উত্তীর্ণ হন। তাদের মধ্য থেকে তখন ১২ হাজার ৭০১ জনকে শূন্য পদে নিয়োগ দেয়া হয়। বাকি ১৫ হাজার ১৯ জনকে এক নীতিমালার আলোকে পুলভুক্ত করে রাখা হয়। কথা ছিল, পুলের শিক্ষকরা উপজেলায় সংযুক্ত থাকবেন।
যখন যে স্কুলে শিক্ষকের সংকট দেখা দেবে- সেখানে সাময়িকভাবে পদায়ন করা হবে। কিন্তু এক সময়ে এসব প্রার্থীর প্রত্যাশা বেড়ে যায়। ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সরকার সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিলে পুলভুক্তরা মামলা করেন।
স্থায়ী নিয়োগ না দিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়ায় এর (বিজ্ঞপ্তি) বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয় এতে। এরপর আরও একাধিক মামলা হয়। এসব মামলার রায়ের আলোকেই এখন নিয়োগ পাচ্ছেন পুলভুক্তরা।
এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) মহাপরিচালক ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল যুগান্তরকে বলেন, স্কুলে শিক্ষকের অনেক শূন্যপদ আছে। এবার পুল-প্যানেলের কোনো প্রার্থী আর নিয়োগবঞ্চিত থাকবেন না।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পার্বত্য অঞ্চলের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অবদানের স্বীকিৃতির জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয় আগামী বছর থেকে গুনীজনদের সম্মাননা জানাবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের সম্মাননা জানানো না গেলে আগামীতে কোন ক্রীড়াবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব উঠে আসবে না। তিনি বলেন, রাঙ্গামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমী যে ১জন গুনী ব্যক্তিকে সম্মাননা দিয়েছে তাদের দেখে আগামী দিন গুলো আরো প্রতিভার সৃষ্টি হবে। এই প্রতিভারাই একদিন পার্বত্য অঞ্চলের সুনাম দেশ বিদেশে ছড়িয়ে দেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রাঙ্গামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে গতকাল ২ মার্চ রাঙ্গামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে সমাজে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অসমান্য অবদান রাখায় ১০ জন গুনীজনকে সম্মাননা জানানোর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বৃষ কেতু চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী ও রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য ও শিল্পকলার আহবায়ক মনোয়ারা আক্তার জাহান। গুনীজনদের পক্ষ থেকে অনুভূতি ব্যক্ত করেন রাঙ্গামাটির প্রাক্তন শিক্ষা অফিসার ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং আবৃতিকার হিসাবে গুনীজন সম্মাননা প্রাপ্ত অঞ্জুলিকা খীসা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাঙ্গামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হক বুলবুল।
বীর বাহাদুর বলেন, যে দেশে গুনীদের কদর করা হয় না সে দেশে কখনোই গুনী জন্ম গ্রহণ করে না। গুনীদের কদর করতে না জানলে নিজের প্রতিভাও প্রকাশ করা সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের আনাচে কানাচে অনেক গুনী শিল্পী ও ক্রীড়াবিদ পড়ে আছে তাদের ঠিক মতো গড়ে তুলতে পারলেই আগামী দিন গুলোতে পার্বত্য অঞ্চলে নাম দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়বে। তিনি আরো বেশী বেশী সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানান।
তিনি রাঙ্গামাটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার কথা উল্লেখ করে বলেন। রাঙ্গামাটিতে অনেক ক্ষুদে খেলোয়াড় রয়েছে তাদের সঠিক ভাবে তৈরী করতে পারলেই আগামীতে পার্বত্য অঞ্চলের অনেক ক্রীড়াবিদ তৈরী হবে। তিনি রাঙ্গামাটি জেলা ক্রীড়া সংস্থা যদি ফুটবল লীগ শুরু করে তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা প্রদানের ঘোষণা প্রদান করেন। এছাড়া রাঙ্গামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমীর উদ্যোগে সম্মাননা প্রাপ্ত ১০ জন গুনীজনকে তার পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ প্রদান করেন বীর বাহাদুর এমপি।
মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কথা দেশ বিদেশে ছড়িয়ে দিতে আমাদের সকলকে আরো বেশী কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী আমাদের পাশে রয়েছে। তার হাত ধরেই আমরা আগামী দিনে এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে আরো উপরে নিয়ে যাবো এই আশা প্রকাশ করছি।
সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন, চারুকলায় রতিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা, যাত্রা শিল্পী হিসাবে নন্দ রানী চাকমা, কন্ঠ সংগীতে ফনীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, নৃত্যকলায় হুমায়ুন কবীর, যন্ত্র শিল্পী ধারশ মনি চাকমা, লোক সংস্কৃতিতে আনন্দলতা চাকমা, আবৃত্তিতে অঞ্জুলিকা খীসা, কন্ঠ সংগীতে অমর শান্তি চাকমা, নাট্যকলায় ঝিমিত ঝিমিত চাকমা, যন্ত্রশিল্পী হিসাবে ঝুলন দত্ত।
আলোচনাসভা শেষে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি ও অন্যান্য অতিথিরা গুনী ব্যক্তিদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।
॥ রাহুল বড়–য়া ছোটন, বান্দরবান ॥ দেশের সবচেয়ে দুর্গম পার্বত্য উপজেলা থানচিতে বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (১ মার্চ) দুপুরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি এই প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন।
এসময় বান্দরবান প্রান্তে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল যুবায়ের সালেহীন পিএসসি, এনডিইউ, পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম, থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ক্য হ্লাচিং মারমা, বিভিন্ন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সুধীজন এবং সাংবাদিকবৃন্দ।
এদিকে স্থানীয় বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ জানায়, প্রধানমন্ত্রীর রুপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রায় ৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে দুর্গম থানচিতে বিদ্যুতায়নের কাজ শুরু হয় বিগত ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে। এজন্য চিম্বুকে স্থাপন করা হয় ৩৩/১১ কেভি সক্ষমতা সম্পন্ন একটি উপকেন্দ্র। কাজ শুরুর মাত্র চৌদ্দ মাসের মাথায় গত বছরের জুলাই মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হলে কিছু এলাকায় পরীক্ষামুলকভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর এখন পুরোপুরিভাবে বিদ্যুতের সংযোগ দেয়া হবে। জেলা সদর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দুরের উপজেলা থানচিতে ৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এই বিদ্যুতায়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়, নীলগীরি পর্যটন কেন্দ্র, ডিম পাহাড় ও তার আশপাশের বিভিন্ন আদিবাসি অধ্যুষিত পাড়া গ্রামসহ থানচি উপজেলা সদর এবং বলিপাড়া ইউনিয়নের প্রায় আড়াই হাজার গ্রাহকের মাঝে বিদ্যুত সুবিধা পৌছে যাবে। এদিকে দুর্গম এলাকার পাড়া গ্রামে বিদ্যুত সংযোগ পৌছে যাওয়ায় খুশি সেখানকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী। রাতের আঁধার নামার সাথে সাথে দুর্গম পাহাড়ে জ্বলছে বৈদ্যুতিক বাতি। আলোকিত করছে পাহাড়ের জনপদকে।
দেশ স্বাধীনের ৪৫ বছর পর বিদ্যুত সংযোগ চালু হওয়ার অনুভূতি জানাতে গিয়ে থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা গিরিদর্পণকে জানান, এতদিন প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ অন্ধকারে ছিল। সন্ধ্যা না হতেই রাত নেমে আসতো। মাত্র কয়েক শতাংশ মানুষই সৌর বিদ্যুতের সুবিধা পেতো। এখন সে দিন আর নেই। বিদ্যুত সংযোগ পাওয়ায় এলাকার পর্যটন, শিক্ষা, চিকিৎসার উন্নয়ন হবে। সাবেক চেয়ারম্যান মংথোয়ইম্যা রনি জানান, থানচিবাসী বিদ্যুত সুবিধা পাবে এটা দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। কিছুটা দেরিতে হলেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ এখন বিদ্যুত সুবিধা পাচ্ছে। বিদ্যুতের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে এখানকার শিক্ষা, কৃষি এবং পর্যটনসহ অনেকে ক্ষেত্রে উন্নয়ন হবে এতে সন্দেহ নেই। থানচি সদরের মুদি দোকানি অংচা হ্লা মারমা বলেন, এতদিন সন্ধ্যা হলে আমরা জেনারেটরের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট সময় বিদ্যুত সংযোগ পেতাম। এবার সরাসরি বিদ্যুত সংযোগ পাওয়ায় আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যে আর কোন অসুবিধা হবেনা।
এদিকে থানচিতে বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে পার্বত্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর সাংবাদিকদের বলেন, এই বিদ্যুত প্রকল্পের মাধ্যমে উপজেলার সবাইকে বিদ্যুত সুবিধা দেয়া সম্ভব না হলেও আগামিতে সোলার পাওয়ারের মাধ্যমে বিদ্যুত সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। আর এ জন্য সরকার মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে যা শীঘ্রই বাস্তবায়ন করা হবে। এসময় তিনি বিদ্যুত ব্যবহারে সকলকে মিতব্যয়ী হবারও আহবান জানান।
মোবাইলে উপবৃত্তি বিতরণ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
বুধবার গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে ‘মায়ের হাসি’ নামে প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “একটা আবেদন করব অভিভাবকদের প্রতি যে, নিজের ছেলেমেয়ে মন দিয়ে যাতে পড়াশোনা করে সেদিকে যেমন দৃষ্টি রাখবেন, আবার ছেলেমেয়ে যেন বিপথে না যায় ছোটবেলা থেকেই তাকে সেইভাবে গড়ে তুলবেন।
“যেন তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারে। তারা যেন দেশকে ভালবাসতে পারে।”
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ‘মায়ের হাসি’ নামে প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি বিতরণ করা হবে দেশের এক কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর মায়ের হিসাবে। এতে দেশের নারীর ক্ষমতায়ন বাড়বে বলে সরকার মনে করছে।
আগে এই উপবৃত্তির অর্থ শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া হত। এখন তা সরাসরি চলে যাবে তাদের মায়ের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে।
রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল কোম্পানি টেলিটকের হিসাবে উপবৃত্তির টাকা পাঠানো হবে রূপালি ব্যাংকের শিওরক্যাশ মোবাইল ব্যাংকিং থেকে।
প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য মাসে ৬০০ টাকা হিসাবে বছরে এ উপবৃত্তিবাবদ ১৬০০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে অনুষ্ঠানে জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।
শেখ হাসিনা বলেন, “শিক্ষার্থীদের মানসিকতা এমনভাবে গড়ে উঠবে যেন এ দেশটা তার নিজের এবং দেশকে ভালবাসতে হবে, দেশের কল্যাণ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের মোবাইল ফোন নেই, টেলিটক বিনামূল্যে প্রায় ২০ লাখ সিম ও প্রত্যেক মাসে ২০ টাকা বিনামূল্যে কথা বলার সুযোগ দেওয়ার একটা চুক্তি করেছে।শেখ হাসিনা জানান, তিনি ক্ষমতায় আসার আগে বিরোধীদলে থাকার সময় শিক্ষার্থীদের স্কুলে না আসা ও ঝরে পড়ার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে বৃত্তি ও উপবৃত্তি দেওয়ার বিষয়টি মাথায় আসে।
“আমরা শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছি। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত এক কোটি ৭৩ লাখ ছাত্র-ছাত্রী বৃত্তি ও উপবৃত্তি পাচ্ছে।”
এবছর বিনা পয়সায় ৪ কোটি ১৬ লাখ শিক্ষার্থীকে বই দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বই কেনার খরচ, এটাও কিন্তু বাবা-মাকে নিতে হচ্ছে না। এ দায়িত্বটা আওয়ামী লীগ সরকার নিয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টুঙ্গীপাড়া, পীরগঞ্জ ও পার্বতীপুর উপজেলায় সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
এর আগে সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীকে বিজয় সরণীর যানজট নিরসনে ‘সমন্বিত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার’ ওপর একটি এনিমেটেড উপস্থাপনা দেখানো হয়।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রীকে উপস্থাপনাটি দেখান সেনাবাহিনীর প্রধান প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমান সরকার।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সেনা প্রধান আবু বেলাল মো. শফিউল হক, মুখ্যসচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন প্রমুখ।
বিদ্যুৎতায়নে থানচিবাসীদের ৩য় সপ্ন পূরণ.
বুধবার ভিডিও কম্ফারেন্সের শুভ উদ্ভোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
॥ থানছি সংবাদদাতা ॥ স্বাধীনতা ৪৬ বছর পরে দুর্গম থানচি উপজেলা বিদ্যুৎতায়নের থানচিবাসীদের ৩য় সপ্ন পূরণ হলো ।প্রধান মন্ত্রী ১লা মার্চ ২০১৭ ইং বুধবার সকাল ১০ টা ভিডিও কম্ফারেন্স মাধ্যমে শুভ উদ্ভোধন করবেন। ২০৫৩.৯৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ের বিউবো রাঙ্গামাটি জেলা তত্ত্বাবধানে থানচি উপজেলা বিদ্যুৎতায়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ ও শুভ উদ্ভোধনের বান্দরবান জেলা প্রশাসক কম্ফারেন্স হলে সকল প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে । থানচি উপজেলা থেকে অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের ভিডিও কম্ফারেন্স উপস্থিত থাকা ও প্রধান মন্ত্রীর উদ্ভোধনের সরাসরি উপভোগের আমন্ত্রণ কার্ড বিতরণ চলছে ।
থানচিবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্বাধীনতা পর থেকে থানচিবাসীদের সপ্ন ছিল দেশের বিভিন্ন স্থানে মতো বিদ্যুৎতে আলো, যোগাযোগ, শিক্ষা,স্বাস্থ্য জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ নানা সরকারী সেবা নিশ্চি পাওয়ার কাজ করে যাচ্ছে । কিন্তু জেলা সদর থেকে যোগাযোগে সড়ক না থাকায় অন্যান্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকতে হয়েছে ৪৬টি বছর । ২০০০ সালে জেলা সদর থেকে উপজেলা সদর পর্যন্ত সড়কনির্মানের যোগাযোগে উন্নয়ন সুফল ভোগ করছে । ২০১২ সালে সাংগু সেতু স্থাপন ও নির্মানের ফলে থানচিবাসীদের কৃষি খাত ও অন্যান্যখাতে উদপাদিত ফসলের নিতিবাচক রুপ ধারণ করেছে এবং সুফল ভোগ করেছে । এক মাত্র বাকি ছিল বিদ্যুৎ সুবিধা কিন্তু ২০১৬ সালে বিদ্যুৎতায়ন প্রকল্পের বাস্তবায়নে ফলে থানচি বাসীদের ৩য় সপ্ন পূরণ হচ্ছে বলে থানচিবাসী উপজেলা হাট বাজার চা দোকান, সেলুন দোকানসহ বিভিন্ন স্থানে মন্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে।
২০১৭ সালে শুরুতে থানচি উপজেলা দুইটি বাজার ও তার আশে পাশ্বে এলকায় বিদ্যুৎতে আলো সজ্জা শুরু করেছে । থানচি বাসীদের আশার আলো ও স্বপ্নের ঠিকানা গন্তব্যে স্থানে পৌছার আর বাকি রয়েছে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ও একটি গুনগতমান উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ( কলেজ) স্থাপনের জরুরী মনে করছেন অনেকে । বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিউবো ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, থানচি উপজেলা বিদ্যুৎতায়ন এদঅঞ্চলের জনসাধারনের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মান উন্নীতকরণ , সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি,নর-নারী কর্মসংস্থান ও শিল্পোন্নয়ন বৃদ্ধি এবং পর্যটন শিল্প বিকাশ করার লক্ষ্যে সরকার বিদ্যুৎ.জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে ২০ কোটি ৫৩ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা ব্যয়ের এপ্রিল ২০১৫ থেকে জুন ২০১৬ সালে প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ সমাপ্তি হওয়ার কথা থাকলে ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী সংস্থা কাজের শ্রমিক স্বল্পতা কারনে জানুয়ারী ২০১৭ পর্যন্ত কাজ করতে হয়েছে । ইতিমধ্যে ৩৩/১১ কেভি,৪ লাইনে ১.৬৭, ২ লাইনে ২৩ এমভিএ , গ্রামীণ উপকেন্দ্র ০১ টি । এর মধ্যে ৩৫ কেভি লাইন ৩৫ কিঃমিঃ, ১১ কেভি লাইন ২৮ কিঃমিঃ,১১/৪ কেভি লাইন ২ কিঃমিঃ,০.৪ কেভি লাইন ৫ কিঃমিঃ,০.২৩ কেভি লাইন ১০ কিঃমিঃ ও বিতরণ ট্রাাস্ফরমার ১৭টি কাজ সম্পাদন করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
থানচি উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মংবোওয়াংচিং মারমা মন্তব্যে করে বলেন, প্রধান মন্ত্রী সদিচ্ছা ও পার্বত্যবাসীদের উপর অফুরন্ত ভালবাসা সহানুভূতি যথেষ্টতা রয়েছে তা এখন প্রমান মিলছে, স্বাধীনতা ৪৬ বছরের মধ্যে ও বিদ্যুৎতায়ন প্রকল্পর বাস্তবায়ন মধ্য দিয়ে থানচি উপজেলাকে একটি আধুনিক, ডিজিটালাইজ আওতায় আনছেন। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ও পার্বত্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীকে থানচি বাসী পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও প্রাণ ঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খামলাই ম্রো বলেন, যোগাযোগ, শিক্ষা, বিদ্যুৎতায়নের সফলতা ,অসাধারণ সাফল্য ও অর্জন হওয়া থানচিবাসীদের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ও পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীকে আন্তরিকতা সাথে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা মন্তব্য করে বলেন, বিদ্যুৎ, জা¦ালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ,প্রধান মন্ত্রী ও পার্বত্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অক্লান্ত প্রচেষ্টায় থানচি উপজেলা বিদ্যুৎতায়ন প্রকল্প দ্রুততাসাথে বাস্তবায়ন ও সম্পাদনা করতে স্বক্ষম হয়েছে । আমরা এর সুফল ভোগ করছি এবং ১ লা মার্চ বুধবার থেকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্প কারখানাসহ উদ্যোগ নিতে পারবো । বিদ্যুৎ না থাকায় স্বাধীনতা ৪৬ বছর পর্যন্ত আমাদের থানচির চিত্রকে বিশ্বের দরবারে আকর্ষণীয় গড়ে ওঠার সম্ভব হয় নি । এবারে পর্যটন সম্ভাবনাময় ও পর্যটন শিল্প বিকাশ অবশ্যই ঘটবেই। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ও পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান তিনি।
পার্বত্য অঞ্চলের নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী কোটার বিধিমালা মেনে
রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে
* তিন জেলার ৯২ জন ও অন্যান্য জেলার ৯৩ জন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক কর্মচারীর ক্ষেত্রে উপজাতি ৩২ জন ও অ-উপজাতি ১৯ জন
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় (রাবিপ্রবি) এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১৪ সালে। বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে এবং ৯ নভেম্বর ২০১৫ ইং তারিখ হতে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।
রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় একটি নতুন বিশ^বিদ্যালয় বিধায় স্বাভাবিকভাবে অন্যান্য নবপ্রতিষ্ঠিত বিশ^বিদ্যালয়ের ন্যায় ভাড়াকৃত বাসায় অস্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ^বিদ্যালয় সূচনালগ্নে দেশের প্রায় প্রত্যেকটি বিশ^বিদ্যালয়ে অস্থায়ী ক্যাম্পাস অথবা ভাড়া করা স্থাপনায় শিক্ষা কার্যক্রমসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের লক্ষ্যে রাবিপ্রবি কর্তৃক রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের নিকট প্রয়োজনীয় অর্থ হস্তান্তর করা হয়েছে। কিছু আইনগত ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বিলম্বিত হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক আগামী মার্চ, ২০১৭ -এর মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রাবিপ্রবির নিকট হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন।
রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের তথ্য কর্মকর্তার দেয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে বিশ^বিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও ব্যবস্থাপনা- এই দুইটি বিভাগের ০২ (দুইটি) ব্যাচে ১৮৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। যারমধ্যে তিন পার্বত্য জেলার শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯২ জন ও অন্যান্য জেলার শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯৩ জন। তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে অ-উপজাতি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৭ জন অর্থাৎ ৬১.৯৬% এবং উপজাতি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫ জন অর্থাৎ ৩৮.০৪%।
রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় একটি সংবিধিবদ্ধ স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হলেও প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পাদনের ব্যাপারে সরকারি বিধিমালা অনুসরণ করে থাকে। সরকারি বিধানমতে, কিছু সংখ্যক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষা বাধ্যতামূলক নয়। শিক্ষাগত যোগ্যতা, মেধা ও অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে যথাযথ বিধি মেনে বিশ^বিদ্যালয়ের সকল পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বিশ^বিদ্যালয়ে দুটি ব্যাচে শিক্ষার্থী ভর্তি করার পর থেকে ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে এবং এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে শিক্ষার্থীদের সেশনজটে পড়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে পার্বত্য অঞ্চলের নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী কোটার যে বিধিমালা রয়েছে তা অনুসরণ করে রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিশ^বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। বর্তমানে রাঙ্গামাটি জেলা থেকে ২৩ জন, খাগড়াছড়ি জেলা থেকে ১৭ জন এবং অন্যান্য জেলা থেকে ১১ জনসহ সর্বমোট ৫১ জন (উপজাতি ৩২ জন ও অ-উপজাতি ১৯ জন) শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বিশ^বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন।
বিশ^বিদ্যালয়ে ¯œাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রথম ব্যাচের তুলনায় দ্বিতীয় ব্যাচে আরো অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী আবেদন করেছে এবং ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। যেমন, ভর্তি পরীক্ষায় কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও ব্যবস্থাপনা দুটি বিভাগে ৫০টি করে সর্বমোট ১০০টি আসনের বিপরীতে প্রথম ব্যাচে ৩০১ জন শিক্ষার্থী ও দ্বিতীয় ব্যাচে ১০১২ জন শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন করেছিলেন এবং তৃতীয় ব্যাচে (২০১৬-১৭) ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া ২৮/০২/২০১৭ পর্যন্ত চলমান থাকবে। প্রথম ব্যাচের (২০১৪-১৫) ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দৈনিক সমকাল ও ঞযব ওহফবঢ়বহফবহঃ, দ্বিতীয় ব্যাচের (২০১৫-১৬) ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক পূর্বকোণ, দৈনিক পার্বত্য চট্টগ্রাম, ঞযব ইধহমষধফবংয ঞড়ফধু এবং তৃতীয় ব্যাচের (২০১৬-১৭) ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দৈনিক জনকন্ঠ ও ঞযব ইধহমষধফবংয ঞড়ফধু পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দুটি জাতীয় দৈনিকে (দৈনিক জনকন্ঠ ও ঞযব ইধহমষধফবংয ঞড়ফধু) প্রকাশিত হওয়ার পাশাপাশি ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার প্রেস বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও আঞ্চলিক পত্রিকায় পাঠানো হয়েছে এবং সংবাদ আকারে দুইটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় (দৈনিক প্রথম আলো ও ঞযব উধরষু ঝঃধৎ) প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও এ যাবতকালের সকল ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেছেন, বৃহত্তম এই কাপ্তাই হ্রদে জাক ও অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে রক্ষা করতে মৎস্য বিভাগ, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি’সহ সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, জাকের মাধ্যমে যেভাবে দিন দিন মা মাছ ও পোনা মাছ নিধন করা হচ্ছে তাতে ভবিষ্যতে এ লেকে মৎস্য উৎপাদনে বিপর্যয় নেমে আসবে। সাধারণ জনগণের নৌ-চলাচলে বিঘœ হচ্ছে। তাই জাক অপসারণ ও হ্রদ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন, নৌ পুলিশ, জেলা প্রশাসন’সহ সকলকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান। জেলার সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে পরিষদের প্রতিটি সভায় প্রতিনিধি প্রেরণ না করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের উপস্থিত থাকার আহ্বান রাখেন তিনি।
রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ইং) সকালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সভাকক্ষে জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম জাকির হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্র্বিক) আবু শাহেদ চৌধুরী, পুলিশ বিভাগের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি পারভেজ আলী, সিভিল সার্জন ডাঃ শহীদ তালুকদার, বিএফডিসি’র ম্যানেজার কমান্ডার মোহাম্মদ আসাদুজাম্মান, (জি) এ এফডব্লিউসি, পিএসসি, প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, বন বিভাগ, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, গণপূর্তসহ জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় রাঙ্গামাটি সরকারী কলেজের প্রতিনিধি বলেন, কলেজের ছাত্রী হোস্টেলের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়ে গেছে। ফার্নিচার এল্ েচালু করা হবে। এছাড়া প্রশাসনিক ও একাডেমীক ভবনের কাজ প্রায় ৭০ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।
মহিলা কলেজের প্রতিনিধি বলেন, কলেজের ডিগ্রী সেটআপ অনুযায়ী পদ সৃজনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ অব্যাহত আছে।
বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, গ্রীষ্ম মৌসুমকে সামনে রেখে বিদ্যুৎ বিতরণ কার্যক্রম চলছে। এছাড়া কাপ্তাই হতে রাঙ্গামাটি পর্যন্ত লাইন সংযোগ স্থাপনের কাজ চলছে।
ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স এর কর্মকর্তা বলেন, নদী ফায়ার স্টেশনের অংশ হিসেবে চলতি মাসের ১৬তারিখ ১টি ইঞ্জিনচালিত বোট পাওয়া গেছে। যার ফলে হ্রদের পাশ্ববর্তী এলাকায় অগ্নিকান্ড নিয়ন্ত্রণ করা অনেকটা সম্ভব হবে। এছাড়া কাউখালী উপজেলার ফায়ার স্টেশন ভবন এর কাজ শেষ হয়েছে। খুব শীঘ্রই উদ্বোধন করা হবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। বাঘাইছড়িতেও ফায়ার স্টেশন বসানোর জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছে।
মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন এর প্রতিনিধি বলেন, বিএফডিসি, নৌপুলিশ, জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে চলতি মাসের ৪ হতে ২৪ তারিখ পর্যন্ত ১০৫টি জাক অপসারণ, অভয়াশ্রমের মধ্যে অবৈধভাবে মৎস্য শিকার করায় ৩জনকে আটক ও জাক ঘেরা অবস্থায় ১টি কেচকি জাল আটক করা হয়েছে।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রতিনিধি জানান, বর্তমানে মাদার লেকটেটিং ও ৫টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান কার্যক্রম চলছে।
হেডম্যান এসোসিয়েশনের প্রতিনিধি মন্তব্য করেন, জাক অপসারণের বিষয়ে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে মিটিং করা গেলে আরো ফলপ্রসূ হতো।
এছাড়া সভায় উপস্থিত অন্যান্য বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ স্ব স্ব বিভাগের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।
২০০১ এর নির্বাচনের পর বিএনপি মিরসরাইতে সুনীল সাধু, রেবতী মোহন জলদাস সহ ২৯ জনকে হত্যা করেছে
—- মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন
॥ মিরসরাই প্রতিনিধি ॥ বাংলাদেশ পুলিশের উদ্দেশ্য হলো, সমাজের সব শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে পুলিশের সৌহার্দপূর্ন সর্ম্পক গড়ে তুলে সবধরনের পুলিশি সেবা আন্তরিকভাবে জনগনের দোরগোড়ায় পৌছে দেয়া। কমিউনিটি পুলিশিং এর মাধ্যমে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে পুলিশিং কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। একশ্রেণীর দালালরা সাধারণ মানুষকে পুলিশি সেবার কথা বলে হয়রানী করে থাকে, তাই দালালের মাধ্যমে যেন জনগন পুলিশকে চিনতে না হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পাতিবার) মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে জেলা কমিউনিটি পুলিশের মহাসমাবেশে প্রধান আলোচকের বক্তৃতাদানকালে বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক বিপিএম পিপিএম এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বতর্মান সময়ে বাংলাদেশের অন্যতম জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে জঙ্গীবাদ। জামায়াত ইসলাম ধর্মের দোহাই দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করছে। তারা মানুষকে ভুল বুঝিয়ে বিপদগামী করছে। তিনি জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের সন্তানদের দিকে লক্ষ্য রাখুন। পারিবারিক ভাবে বাবা-মায়েরা সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখলে দেশ থেকে জঙ্গীবাদ অনেকাংশে নিমূল হয়ে যাবে।
উক্ত সমাবেশের প্রধান অতিথি গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, বিএনপি দেশের জনগনকে উপহার দিয়েছে চুরি ডাকাতি রাহাজানি আর সন্ত্রাস। ২০০১ এর নির্বাচনের পর বিএনপি মিরসরাইতে সুনীল সাধু, রেবতী মোহন জলদাস সহ ২৯ জনকে হত্যা করেছে। কিন্তু আমরা ক্ষমতায় আসার পর ফিরিয়ে এনেছি শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছি। এই সময় তিনি সব শ্রেণীর মানুষকে পুলিশের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
চট্টগ্রামের জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনার সভাপতিত্বে, আবৃত্তি শিল্পী জাভেদ হোসেন ও অনিন্দিতা দত্ত’র সঞ্চালনায় উক্ত মহাসমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক শামছুল আরেফিন, ডি আইজি চট্টগ্রাম রেঞ্জ শফিকুল ইসলাম বিপিএম, পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার, উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য ও মিরসরাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ আতাউর রহমান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাহাব উদ্দিন, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহছানুল হায়দার চৌধুরী, সীতাকুন্ড উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আল মামুন, ১নং করেরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন।
সমাবেশে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক শামসুল আরেফিন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিডিএর সদস্য জসিম উদ্দিন, জেলা কমিউনিটি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক মাহাতাব উদ্দিন হাসান, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন ফরিদ, মিরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ইয়াসমিন শাহীন কাকলী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, বারইয়ারহাট পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন, মিরসরাই পৌর মেয়র গিয়াস উদ্দিন, জোরারগঞ্জ থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর সভাপতি জহির উদ্দিন ইরান, সীতাকুন্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইফতেখার হাসান, মিরমরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইরুল ইসলাম, জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল কবির চৌধুরী প্রমুখ।