বান্দরবানের রুমায় পাহাড় ধ্বস, ছবিতেই মাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে জেসিকা

॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ বান্দরবান জেলা সদর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে রুমা সড়কের দৌলিয়ান পাড়ায় পাহাড় ধ্বসের ঘটনায় কেড়ে নিয়েছে কয়েকটি তাজা প্রাণ। আর এতে নিখোঁজ রয়েছে এখনো কয়েকজন। তার মধ্যে নিখোঁজ রয়েছে ১০ বছরের বয়সী জেসিকা বড়–য়ার মা মুন্নী বড়–য়া।
বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী জেসিকা। সকাল থেকে ঘরের দরজায় মায়ের অপেক্ষায় বসে আছে সে। তখন আসবে তার মা। বারবার তাকাচ্ছে ঘরের দেয়ালে ঝোলানো মায়ের ছবির দিকে। মায়ের অপেক্ষায় সময় যেন কাটছে না তার। কিন্তু সে বুঝতে পারছে না হয়তো আর কখনওই ফিরবেনা তার মা। তাকে ফেলে না ফেরার দেশে চলে গেছে তার মা। জেসিকার মা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মচারী মুন্নি বড়–য়া অফিসে যাওয়ার পথে পাহাড় ধ্বসে মাটির নিচে চাপা পড়েন। এ খবর সে শুনেছে তার নানির কাছ থেকে।
রবিবার (২৩ জুলাই) সকালে ভারী বৃষ্টিপাত উপেক্ষা করে আমার মেয়ে কর্মস্থল রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করে। তখনও আমার নাতনি  জেসিকা) ঘুম থেকে উঠেনি। মেয়ে শুধু আমাকে বলে যায়, জেসিকাকে দেখে রাখতে। আমার মেয়ে হয়তো বেঁচে নেই। আমি ওকে কী জবাব দেবো ? এভাবেই বিলাপ করছিলেন মুন্নীর মা নীলিমা বড়ুয়া। আদরের সন্তানের এমন খবরে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন তিনি।
চট্টগ্রামের কেডিএস গ্রুপে কর্মরত নিখোঁজ মুন্নীর স্বামী অমর বড়–য়া জানান, ২২ জুলাই রাতে মুন্নির সঙ্গে শেষ কথা হয় মোবাইল ফোনে। বৃস্পতিবার অফিস শেষে রুমা থেকে বান্দরবানের বাসায় ফেরার কথা ছিল মুন্নীর। তিনি আরো বলেন, দায়িত্বের প্রতি খুবই আন্তরিক ছিল আমার স্ত্রী। তাই প্রকিুল অবস্থা জেনেও কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল সে।
মুন্নি বড়–য়ার ভাই ছোটন বড়–য়া জানান, রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে খুঁজে পাওয়ার আশায় ঘটনাস্থলে অপেক্ষা করেছিলেন তারা। কিন্তু মুন্নীর পরণের জামার ছেঁড়া কাপড় ও হাতের ব্যাগটি ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায়নি।
বান্দরবান সদর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে দৌলিয়ান পাড়ায় সড়ক ভাঙ্গা থাকায় যাত্রীরা বাস থেকে নেমে হেঁটে সড়কের ওই অংশ পার হচ্ছিলেন। ঠিক তখনই পাশের একটি পাহাড়ের মাটি ধ্বসে তাদের উপর পড়ে। এসময় বেশ কয়েকজন যাত্রী মাটির নিচে চাপা পড়েন। খবর পেয়ে দমকল বাহিনী, সেনাবাহিনী, ও রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা এসে আহত অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এর পর পর পাওয়া যায় চিংমেহ্লা নামে এক স্কুল ছাত্রীর মরদেহ। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন মুন্নী বড়ুয়া, রুমা কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা গৌতমসহ বেশ কয়েকজন।

পার্বত্য অঞ্চলের প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম একেএম মকছুদ আহমেদের স্বরণে নাগরিক শোকসভা :  পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিকতার জীবন্ত কিংবদন্তি প্রবীন সাংবাদিককে মরনোত্তর রাষ্ট্রীয় পদকে ভুষিত করার দাবী

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031