
॥ নন্দন দেবনাথ ॥ রাঙ্গামাটি চট্টগ্রাম সড়ক চালু হওয়ায় স্বস্তি ফিরে এসেছে রাঙ্গামাটি জেলাবাসীর মাঝে। গত ১৩ জুন অতি বৃষ্টির ফলে দীর্ঘ ৮ দিন পর গত ২১ জুন বিকাল থেকে রাঙ্গামাটি চট্টগ্রাম সড়কে পুনস্থাপিত হওয়ায় সেনাবাহিনী ও সড়ক ও জনপথ বিভাগকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাঙ্গামাটির জনগন। সড়ক চালু হওয়ায় চট্টগ্রাম থেকে পন্য সামগ্রী সরাসরি রাঙ্গামাটি নিয়ে আসছে ব্যবসায়ীরা। স্বাধীনতার পর থেকে এতো বড়ো দূর্ভোগে সইতে হয়নি রাঙ্গামাটিবাসীকে।
এদিকে পুনস্থাপিত হওয়া রাস্তার উপর কড়া নজর রেখেছে প্রশাসন। কোন ভাবেই হালকা যানবাহন ছাড়া ভাড়ী যানবাহনকে এই রাস্তায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা এবং রাঙ্গামাটি পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তারা এই সড়কের দুই পাশে ট্রাফিক ব্যবস্থা জোরদার করেছে। কোন ভাড়ী যানবাহন যাতে এই রাস্তার উপর দিয়ে যেতে না পারে তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
রাঙ্গামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আবু মুছা জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগে ও সেনাবাহিনীর অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই রাস্তাটি ৮ দিন পর আমরা খুলে দিতে সক্ষম হয়েছি। তিনি বলেন, এই রাস্তা দিয়ে ৫ টনের গাড়ী গেলেও কিছু হবে না কিন্তু রাস্তা প্রসস্থ খুব অল্প হওয়ায় আমরা সেই রিক্স নিচ্ছি না। তারজন্য আমরা ছোট পিক আপ গুলোকে অনুমতি দিয়েছি মালামাল নিয়ে যাওয়ার জন্য। তিনি বলেন ছোট ছোট পিকআপ গুলো দিয়ে রাঙ্গামাটি থেকে কাঠাল আনারস নিয়ে চট্টগ্রাম যাচ্ছে। আবার চট্টগ্রাম থেকে পণ্য নিয়ে রাঙ্গামাটি ঢুকছে। এছাড়া সিএনজি যাত্রী নিয়ে রাঙ্গামাটি আসা যাওয়া করছে। তিনি বলেন, এখনো আমাদের কাজ অব্যাহত রয়েছে। আমরা এটি নয় পুরো রাঙ্গামাটির যে সকল রাস্তার ক্ষতি হয়েছে তা সংস্কারেও হাত দিচ্ছি।
রাঙ্গামাটির সিএনজি চালক আব্দুল আজিজ জানান, পাহাড় ধ্বসের পর দিন আমরা বাড়ী থেকেও বের হতে পারিনি। প্রতিটি রাস্তায় মাটি ধ্বসের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। তার পরও যারা বের হয়েছে তেলের অভাবে গাড়ী চালাতে পারেনি। দীর্ঘ ৮ দিন আমরা শহরেই গাড়ী চালিয়েছি। গতকাল যানবাহনের জন্য খুলে দেয়া আমরা যাত্রী নিয়ে রাঙ্গুনিয়ার রানীর হাটে যাত্রীদের নামিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি। এর চাইতে ভালো লাগা আর কিছুই হতে পারে না।
রাঙ্গামাটি রিজার্ভ বাজারের তেল ব্যবসায়ী লালু দাশ গুপ্ত জানান, দীর্ঘ ৮ দিন আমাদের দীর্ঘ ৮ বছর মনে হয়েছিলো। রাঙ্গামাটি জেলাবাসীকে সেবা দেয়ার জন্য আমরা সড়ক পথে চট্টগ্রাম থেকে কাপ্তাই এবং কাপ্তাই থেকে রাঙ্গামাটি নৌপথে তেল এনে জনগনকে সেবা দিয়েছি। তার জন্য রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোঃ মানজারুল মান্নান আমাদেরকে ব্যাপক সহযোগিতা করেছিলো। বর্তমানে আমরা বড় গাড়ী করে তেল এনে সাপছড়ির শালবাগান এলাকায় ড্রাম রাখি পরবর্তীতে ছোট গাড়ী করে তেল গুলো রাঙ্গামাটির বাজারে নিয়ে এসে মানুষকে সেবা দিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এদিকে রাঙ্গুনিয়ার বেশ কিছু কাঁচামাল ব্যবসায়ী তাদের রুটি রোগজার ছিলো রাঙ্গামাটির উপর। দীর্ঘ ৮ দিন যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় তারা কষ্ট ভোগ করেছে সব চেয়ে বেশী। কাঁচা তরি তরকারী ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় নিয়ে এসে দুর্গম পাহাড়ী পথ বাড়ী দিয়ে অপার থেকে গাড়ী করে রাঙ্গামাটি এনে পণ্য বিক্রয় করতে হয়েছে। তারা কয়েকজন বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে আমরা রাঙ্গামাটিতে ব্যবসা করছি কখনো এ রকম কষ্ট ভোগ করতে হয়নি। এই রাস্তা চালু হওয়ায় আমরা অত্যন্ত খুশি।