॥ জিয়াউর রহমান জুয়েল ॥ রাঙ্গামাটি বাঘাইছড়ির চাঞ্চল্যকর সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থিকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণকারী তিন বখাটে অপরাধ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। রাঙামাটির অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাবরিনা আলী ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আসামীদের জবানবন্দি গ্রহণ করেন শুক্রবার (০২ ফেব্রুয়ারি)।
পরে তিন আসামীকেই জেলহাজতে পাঠানো আদেশ দিয়ে তিনি পরর্বতী তারিখ নির্ধারণ করেন আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি। একই সাথে ধর্ষিতা ওই কিশোরির ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য আদেশ দেয়া হলে একইদিন সন্ধ্যায় রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালে তা সম্পন্ন হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো আমতলীর সর্দ্দার পাড়ার আবদুস সালামের ছেলে মো. নাঈম ইসলাম (১৮), মজিবুর রহমানের ছেলে মো. ফরহাদ হোসেন (১৮) ও আমতলীর আয়া হালিমার নাতি মো. হাফিজ উল্লাহ রাহিদ(১৮)। তিনজনই বাঘাইছড়ি আমতলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল।
৩১ জানুয়ারি নিজেদের ধর্ষণের ভিডিও ফাঁস হলে রাতে স্থানীয় পুলিশ ওই তিন জনকেই আটক করে। পরদিন বৃহস্পতিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) বাঘাইছড়ি থানায় ধর্ষিতা কিশোরির বাবা মামলা দায়ের করেন। এই তিন জনের বিরুদ্ধে পর্ণোগ্রাফি ও নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত বছরের ৪ নভেম্বর সকালে বাঘাইছড়ির আমতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থিকে গাছের সঙ্গে বেঁধে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে নিজেদের মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে ওই তিন বখাটে। পরে ইন্টারনেটে ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে আরো দু’দফায় ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করে তারা। মূলত অন্য বন্ধুদের কাছে ‘হিরোগিরি’ দেখাতে গিয়ে নিজেরাই সেই ধর্ষণের ভিডিও ফাঁস করে দেয়। এরইমধ্যে ধর্ষণের এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
বাঘাইছড়ি থানার ওসি(তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক তিনবন্ধুই অপরাধ স্বীকার করায় রিমান্ড চাওয়া হয়নি। ফলে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আসামীদের জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
ভিকটিমের ভাই জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ বর্ণা খীসা ধর্ষিতা কিশোরির ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন।
গতকাল শুক্রবার সংবাদমাধ্যশে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণকারী ওই তিন বখাটের গ্রেফতারের খবর প্রকাশিত হয়। এতে বাঘাইছড়ি আমতলী এলাকার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এই প্রতিবেদককে মোবাইল ফোনে জানান, গ্রেফতার হওয়া তিন বখাটে এলাকায় ‘উঠতি মাস্তান’ হিসেবেই পরিচিত। স্কুলগামী মেয়েদের উত্যক্ত করেই তাদের সময় কাটতো। এর আগেও দুই মেয়ে শিক্ষাথিৃর বাড়ির কাছে কুরুচিপূর্ণ গান গেয়ে উত্যক্ত করার ঘটনায় তিনজনকে দু’বার পুলিশ আটক করে। পরে স্থানীয় নেতাদের তদবীরে ছাড়া পায়।