॥ এস.কে খগেশপ্রতি চন্দ্র খোকন, লামা ॥ গত ২৩ জানুয়ারী বান্দরবানের আলীকদম মাতামুহুরী রিজার্ভ ফরেষ্টের দুর্গম ইয়ংনং মুরুং পাড়ার একটি কুকুরের সঙ্গে বন্য ছাগলটি খেলা করতে দেখে পাড়ার লোকজন। পরে পাড়ার কয়েকজন স্থানীয় লোকজন বন্য ছাগলটি ধরে এনে লালন পালন করতে শুরু করেন।
বান্দরবানের লামা বন বিভাগের মাতামুহুরী সংরক্ষিত বন থেকে উদ্ধার হওয়া বন ছাগল ছানাটি (সেরো) শনিবার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয়েছে। বনকর্মীদের মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া এ বনছাগলটি ‘আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন)’-এ বিশ্বে বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী হিসেবে তালিকাভূক্ত। প্রকৃতি বিশারদদের মতে, এ প্রজাতির বনছাগল বাংলাদেশে বিরল।
এ ব্যাপারে লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়চার জানান, বাংলাদেশে দুর্লভ প্রজাতির এ বনছাগল ছানাটি আলীকদম উপজেলার কুরুকপাতা ইউনিয়নের ইয়াংনং মুরুং পাড়ায় পাওয়া গেছে। সেখানকার মুরুং বাসিন্দারা দুর্গম বন থেকে ছাগল ছানাটি গত ১৭ জানুয়ারী পাড়ার লোকজন আটক করে। আমরা খবর পেয়ে আজ ২৫ জানুয়ারী বন ছাগল ছানাটি উদ্ধার করি।
তিনি আরো জানান, উদ্ধার হওয়া বন ছাগল ছানার ইংরেজি নাম রেড সেরো। এটি দেশের বিরল প্রজাতির একটি বন্যপ্রাণী। বাসস্থান ক্ষতি এবং শিকারের জন্যে এ প্রজাতির বনছাগলের অস্তিত্ব পুরো পৃথিবীতে হুমকির সম্মুখীন। যার কারণে ‘আইইউসিএন’ তালিকায় বিপন্ন প্রজাতি প্রাণী হিসেবে এটি অন্তর্ভূক্ত।
এ ছাড়া এ প্রজাতির বনছাগল গুলো সন্ধ্যা ও খুব ভোরে খেতে বের হয়। সারাদিন গর্তে বসে জাবর কাটে। ঝোপ-ঝাড়ে কিংবা পাথুরে ঢালে পালিয়ে থাকে বলে এদের দেখা পাওয়া মুশকিল। এরা এক ধরনের গন্ধগ্রন্থির সাহায্যে গন্ধ ছড়িয়ে টেরিটোরি মার্ক করে রাখে। বনছাগল বাংলাদেশে অত্যন্ত বিপন্ন ও দূর্লভ প্রাণী। তার মতে, প্রকৃতিতে মুক্ত বনছাগলের ছবি কেউ বাংলাদেশে তুলতে পারেনি।
মাতামুহুরী রেঞ্জ কর্মকর্তা জহির উদ্দিন মো. মিনার চৌধুরী জানান, উদ্ধার হওয়া বনছাগলটি গত ২৩ জানুয়ারি ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে স্থানান্তর করা হয়েছে। সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী ও ডাক্তার মাহফুজুর রহমানের তত্বাবধানে বন ছাগল ছানাটির চিকিৎসা চলছে বলে তিনি জানান।