
নিউজডেক্স: কভিড -১৯ তথা করোনভাইরাস সংক্রমণের প্রভাবে দেশজুড়ে চলছে সাধারণ ছুটি। ছুটির মেয়াদ একমাসের অধিক সময় পার করল। বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত কর্মচঞ্চল চট্টগ্রাম যেন থমকে আছে। কর্মহীন উচ্চবিত্ত থেকে মধ্যেবিত্ত, যার ফলে নিম্নবিত্ত সাধারণ কেটে মানুষ যারা দৈনিক আয়ে সংসার চলে তাদের একমাত্র অবলম্ভন সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন পর্যায় থেকে বিতরণ করা ত্রাণ।
নিম্ন আয়ের মানুষের যাতে খাদ্য সংকট না হয় এই জন্য প্রধানমন্ত্রী থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ত্রাণ উপহার অসহায় মানুষের কাছে পৌছে যাচ্ছে নিয়মিতভাবে। এমনকি জেলা প্রশাসন, পুলিশ, সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধনট্য ব্যাক্তিবর্গ এসব অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে। যা নিয়মিতভাবে বিতরণ করে যাচ্ছে।
এসব অসহায় নিম্ন আয়ের মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে মরিয়া হয়ে উঠছে একটি মহল । যার ফলে সম্প্রতি চট্টগ্রাম নগরসহ বিভিন্ন জেলায় ত্রান ইস্যুতে বিক্ষোভ ও মানবন্ধনের মতো ঘটনাও ঘটেছে এসব মহলের ইন্ধনে।
যা ইতোমধ্যে সরকারী গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বেশ কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। যাদের ইন্ধনে এসব অসহায় মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ ও মানবন্ধন করেছে। যারা কলকাটি নেড়েছে, তারা গোয়েন্দা নজরদারীতে আছে বলে সূত্র জানায়।
গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে যাদের নাম উঠে এসেছে, তাদের মধ্যে শ্রমিকদল, শিবির ক্যাডার এমনকি নামধারী যুবলিগ নেতাও রয়েছে।উল্লেখযোগ্য কয়েকজনের মধ্যে রয়েছে, সিতাকুন্ড অঞ্চলের শিবির ক্যাডার আজাদ, বাকলিয়ার শ্রমিকদল নেতা মহিউদ্দীন রণি এবং কর্নেলহাট এলাকার যুবলীগ নেতা মনোয়ার উল আলম নোবেল।
১৬ এপ্রিল বৃহাসপতিবার কর্নেলহাট এলাকায় ত্রাণের জন্য বিক্ষোভ করেন শতাধিক মানুষ। এতে যুবলীগ নেতা নামধারী মনোয়ার উল আলম নোবেলের বিরুদ্ধে ইন্ধনের অভিযোগ পাওয়া যায়। মনোয়ার উল আলম নোবেলের পরিবারের অন্যান্য সদস্য বিএনপির রাজনীতির সাথে সংপৃক্ত বলে জানা যায়।সে পলাতক যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর বাবরের অনুসারী এবং সিআরবি জোড়া হত্যা মামলার আসামি।
আরো পড়ুন : ফসল উৎপাদন উপযোগী এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে আহবান প্রধানমন্ত্রীর
১৭ এপ্রিল শুক্রবার চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারি ইউনিয়নে ত্রাণের দাবিতে অর্ধশতাধিক লোক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে । এতে শিবির ক্যাডার আজাদের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তার ভাড়াটিয়াদের দিয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করা হয় বলে তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা।
একই দিন বাকলিয়া তুলাতলীতে সড়ক অবরোধ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালায় কিছু লোক, যা বাকলিয়ার শ্রমিকদলের সভাপতি মহিউদ্দিন রনির ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ আছে।
১৮ এপ্রিল শনিবার চট্টগ্রাম হালিশহর বড়পোল এলাকায় রাষ্ট্রায়ত্ব তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েলের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী ও ফল নিয়ে যাওয়ার সময় ছিনিয়ে নেয় কিছু লোক। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে কিছু মালামাল ফেরত পাওয়া যায়।
হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, কিছু লোক সড়কে অবস্থান নিয়েছিল। তারা একটি গাড়ি থেকে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ফেলেছিল। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে কিছু ফেরত পাওয়া যায়। যারা এর পিছনে ইন্ধন দিচ্ছে তাদের বের করে আইনের আওতায় আনতে কাজ করে যাচ্ছে বরে তিনি জানান।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজাম উদ্দীন বলেন, বাড়ির মালিক ভাড়া চাওয়ায় কিছু লোক সড়কে নেমে এসেছিল। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিয়েছে। বাকলিয়া এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। ত্রাণের জন্য মানুষের বিক্ষোভ করার প্রশ্নই আসে না।
আরো পড়ুন : ছাত্রলীগের মাথায় করে কৃষকের বাড়ী যাচ্ছে সোনার ফসল
আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ত্রাণের দাবিতে কিছু লোক বিক্ষোভ করেছে। আমরা তাদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা প্রতিদিন ত্রাণ দিচ্ছি। বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগেও ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তারপরও বিক্ষোভ করেছে কিছু লোক। আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে কয়েকজন ব্যক্তি এসব ঘটনায় ইন্ধন দিচ্ছে। আমরা তাদের নজরদারি করছি