॥ মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, মানিকছড়ি থেকে ফিরে ॥
আগামী ৬ মার্চ প্রথম বারের মত অনুষ্ঠিতব্য নবসৃষ্ট গুইমারা উপজেলা নির্বাচন। ইতিমধ্যে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো গুইমারা উপজেলায়। এ উপজেলায় জয়ের লক্ষেকে টার্গেট নিয়ে মাঠে নেমেছে (নৌকা) প্রতীক নিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের মনোনিত মেমং মারমা, (ধানের শীষ) প্রতীক নিয়ে বিএনপির মনোনিত মো: ইউসুফ ও (আনারস) প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক হাফছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান উশ্যেপ্রু মারমা। জয় পরাজয়ের মাঠে অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে শঙ্খা নতুন কিছু নয়। নতুন নির্বাচন কমিশনের অধিনে বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাচনের পর পাহাড়ের দ্বিতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে খাগড়াছড়ি জেলার নব সৃষ্ট গুইমারা উপজেলায়।
তবে সুষ্ঠ নির্বাচন না কি ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর জয়ের লক্ষে ভোট হতে যাচ্ছে তা নিয়ে নানা গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে লোকের মূখে। শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের আড়ালে জাল ভোটের কারসাজি নিয়েও শঙ্খিত জাতীয় বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বিএনপির মনোনিত প্রার্থী। পাশাপাশি ক্ষমতাহীন এর উপর ক্ষমতাসীনের চাপিয়ে দেওয়া নির্বাচন নামের শব্দ’টির ভিন্নরূপ ঘটতে যাচ্ছে কি না তা নিয়ে দলের মধ্যে গুঞ্জনের শেষ নেই বিএনপির। বিগত দিনের গুইমারাবাসীর প্রত্যাশা পুরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসলেও কোন জনপ্রতিনিধি তাদের কথা রাখেনি বলে অভিযোগের শেষ নেই। গুইমারা সদর ইউনিয়নের অনেক রাস্তা ঘাটের চিত্রই বলে দেয় এ ধরনের অভিযোগের বাস্তবতা। অনেক সড়কে সেকেলে নির্মিত ইটের রাস্তা থাকলেও বর্তমানে কাচা সড়কের মত বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছে। তার পরও কোন জনপ্রতিনিধির চোখে পড়েনা। আর সদর বাজারের পানি, শোচাগারসহ নাগরিক সুবিধার দিকে সৃষ্টি দিলেই মিলবে উন্নয়নের দৃশ্যপট ও ভোটের পূর্ববর্তী প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন। অন্যদিকে এবারের নির্বাচনের ইশতিহারে যোগ হয়েছে নতুন একটি ইস্যু। নতুন উপজেলা বাস্তবায়নে অবদান কার বেশি ? ভোটারদের মন জয়ের লক্ষে প্রার্থীদের নানা প্রতিশ্রুতি আর মিষ্টি কথার ফুল ঝুঁড়িতে নয় এবার উপজেলাবাসীর দাবী সৎ, যোগ্য, শান্তি-সম্প্রীতি ও উন্নয়নের কর্ণধার হয়ে যে আর্শিবাদ নিয়ে আসবে তাকে চাই গুইমারা উপজেলাবাসী। তবে এ উপজেলায় জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী প্রতিদ্বন্ধী ৩ প্রার্থীই। তাই ভোটের এখন একটাই প্রশ্ন জয় তুমি কার। আওয়ামীলীগের প্রার্থী মেমং মারমা নিজেকে উপজেলা বাস্তবায়নের রূপকার দাবী করে জয়ে লক্ষে তিনি শতভাগ আশাবাদী।
অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাফছড়ির ইউপির চেয়ারম্যান উশ্যেপ্রু মারমাও আনারস প্রতিক নিয়ে ভেতরে ভেতরে পিছিয়ে নেই। উপজাতীয় ভোটারদের বড় একটি অংশ তার ভক্ত বলে দাবী স্থানীয় উলাপ্রু মারমা, আব্দুল মজিদ, ক্যওজাইসহ একাদিক ভোটারের। ফলে আওয়ামীলীগ-বিএনপির কসাকসিতে মাঝপথে জয়ের পথে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে সে এমনি শুনা যাচ্ছে লোকমূখে। অন্যদিকে বিএনপি আছে ফুরফুরে অবস্থানে ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে মাঠে থাকা মো: ইউসুফের রাজনৈতিক ভাবে যেমনি দূরদর্শী তেমনি ভদ্র, শিক্ষিত ও যোগ্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী হিসেবে রয়েছে সুখ্যাতি।
অন্যদিকে জাতীয় প্রতিকে নির্বাচন হওয়ায় হয়েছে প্লাস পয়েন্ট। সব মিলিয়ে ৩ প্রার্থীর মধ্যে দু’জন উপজাতী হওয়ায় ভোটের হিসাব-নিকাশে জয় এখন ভাগ্যের খেলায় পরিণত হয়েছে। তবে অবাধ, সুষ্ঠ,নিরপেক্ষ ও প্রভাবহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে জনগণের ভোটে জয় সুনিশ্চিত বলে জানান। হাফছড়ি, সিন্ধুকছড়ি ও গুইমারা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নবসৃষ্ট এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২৭হাজার ৭শ ৮৫ জন।
রাঙ্গামাটিতে সানফ্লাওয়ার সমবায় সমিতি লিঃ এর লাকী কুপন ড্র ও পুরস্কার বিতরণ
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটিতে সমবায় বিভাগের অর্ন্তভুক্ত সমিতি সানফ্লাওয়ার সমবায় সমিতি লিমিটেড এর লাকী কুপন ড্র ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় শহরের বনরূপাস্থ সানফ্লওয়ার সমবায় সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সানফ্লওয়ার সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে জেলা আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর, বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম, জেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ কাজল, সমবায় কর্মকর্তা আশিষ চৌধুরী ও সানফ্লওয়ার সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহম্মদ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, সমিতির সদস্যদের কল্যাণের পাশাপাশি এই সমিতি সমাজের হতদরিদ্র ও অসুস্থ ব্যক্তিদের সহায়তা, গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সামগ্রী ও বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নে সহযোগিতা করছে এটি অবশ্যই প্রসংসার দাবীদার রাখে। তাদের ন্যায় সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া এ সমবায় বিভাগ আজ দেশের আনাচে কানাচে জনগনের উন্নয়ন ও কল্যাণে কাজ করছে। আর এ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে জাতির পিতার সুযোগ্য কণ্যা বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার যখনই ক্ষমতায় আসে দেশের সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন সাধিত হয়। যা অন্য কোন সরকার করতে পারেনা। সঠিক নের্তৃত্বের মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ডগুলোকে চলমান রেখে আগামীতে এই সমিতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি সানফ্লওয়ার সমিতির সকল সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। পরে সমিতির আসবাবপত্র ক্রয়ের জন্য ২০হাজার টাকা প্রদানের প্রতিশ্র“তি দেন চেয়ারম্যান। শেষে অতিথিরা বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
২০০১ এর নির্বাচনের পর বিএনপি মিরসরাইতে সুনীল সাধু, রেবতী মোহন জলদাস সহ ২৯ জনকে হত্যা করেছে
—- মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন
॥ মিরসরাই প্রতিনিধি ॥ বাংলাদেশ পুলিশের উদ্দেশ্য হলো, সমাজের সব শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে পুলিশের সৌহার্দপূর্ন সর্ম্পক গড়ে তুলে সবধরনের পুলিশি সেবা আন্তরিকভাবে জনগনের দোরগোড়ায় পৌছে দেয়া। কমিউনিটি পুলিশিং এর মাধ্যমে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে পুলিশিং কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। একশ্রেণীর দালালরা সাধারণ মানুষকে পুলিশি সেবার কথা বলে হয়রানী করে থাকে, তাই দালালের মাধ্যমে যেন জনগন পুলিশকে চিনতে না হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পাতিবার) মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে জেলা কমিউনিটি পুলিশের মহাসমাবেশে প্রধান আলোচকের বক্তৃতাদানকালে বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক বিপিএম পিপিএম এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বতর্মান সময়ে বাংলাদেশের অন্যতম জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে জঙ্গীবাদ। জামায়াত ইসলাম ধর্মের দোহাই দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করছে। তারা মানুষকে ভুল বুঝিয়ে বিপদগামী করছে। তিনি জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের সন্তানদের দিকে লক্ষ্য রাখুন। পারিবারিক ভাবে বাবা-মায়েরা সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখলে দেশ থেকে জঙ্গীবাদ অনেকাংশে নিমূল হয়ে যাবে।
উক্ত সমাবেশের প্রধান অতিথি গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, বিএনপি দেশের জনগনকে উপহার দিয়েছে চুরি ডাকাতি রাহাজানি আর সন্ত্রাস। ২০০১ এর নির্বাচনের পর বিএনপি মিরসরাইতে সুনীল সাধু, রেবতী মোহন জলদাস সহ ২৯ জনকে হত্যা করেছে। কিন্তু আমরা ক্ষমতায় আসার পর ফিরিয়ে এনেছি শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছি। এই সময় তিনি সব শ্রেণীর মানুষকে পুলিশের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
চট্টগ্রামের জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনার সভাপতিত্বে, আবৃত্তি শিল্পী জাভেদ হোসেন ও অনিন্দিতা দত্ত’র সঞ্চালনায় উক্ত মহাসমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক শামছুল আরেফিন, ডি আইজি চট্টগ্রাম রেঞ্জ শফিকুল ইসলাম বিপিএম, পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার, উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য ও মিরসরাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ আতাউর রহমান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাহাব উদ্দিন, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহছানুল হায়দার চৌধুরী, সীতাকুন্ড উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আল মামুন, ১নং করেরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন।
সমাবেশে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক শামসুল আরেফিন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিডিএর সদস্য জসিম উদ্দিন, জেলা কমিউনিটি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক মাহাতাব উদ্দিন হাসান, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন ফরিদ, মিরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ইয়াসমিন শাহীন কাকলী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, বারইয়ারহাট পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন, মিরসরাই পৌর মেয়র গিয়াস উদ্দিন, জোরারগঞ্জ থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর সভাপতি জহির উদ্দিন ইরান, সীতাকুন্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইফতেখার হাসান, মিরমরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইরুল ইসলাম, জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল কবির চৌধুরী প্রমুখ।
জেলা কমিউনিটি পুলিশের মহা সমাবেশে আইজিপি শহীদুল হক
জনগনের সহযোগিতা ছাড়া পুলিশের কাজ করা সম্ভব নয়
॥ মিরসরাই প্রতিনিধি ॥ মানুষ আগে বিভিন্ন সমস্যার জন্য পুলিশের কাছে সরাসরি না এসে এক শ্রেণীর দালালের সাহায্য নিতো। কমিউনিটি পুলিশের বদৌলতে এখন মানুষের ধারনার পরিবর্তন হয়েছে, সাধারন মানুষের সাথে পুলিশের দুরত্ব কমে গিয়ে এখন বন্ধুত্বের সর্ম্পক গড়ে উঠেছে। কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা ইভটিজিং, বাল্য বিবাহ, মাদক ও সর্বনাশা জঙ্গীবাদের দীর্ঘ স্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব সর্ম্পকে সাধারণ জনগনকে সচেতন করবে। পুলিশের উদ্দেশ্য হলো, সব শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে পুলিশের সৌহার্দপূর্ন সর্ম্পক গড়ে তুলে আন্তরিকভাবে সেবা পৌছে দেয়া।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১১ মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ হাই স্কুল মাঠে বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি শহীদুল ইসলাম জেলা কমিউনিটি পুলিশের মহাসমাবেশে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনার সভাপতিত্বে উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, মাননীয় গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। এছাড়া সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক সামছুল আরেফিন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাহাবুদ্দীন আহম্মদ, সীতাকুন্ড উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন, রাউজান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য ও মিরসরা ইউপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ আতাউর রহমান প্রমুখ। উক্ত সমাবেশে চট্টগ্রামের ১৪টি উপজেলা থেকে কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা অংশগ্রহন করে।
বাঘাইছড়ি নব নির্বাচিত পৌর মেয়রে সঙ্গে সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ
সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই বিজয়—দীপংকর তালুকদার
॥ জগৎ দাশ, বাঘাইছড়ি ॥ গত ১৮ তারিখ অনুষ্টিতব্য পৌর নির্বাচনে আওয়ামীলীগ বিজয়ী প্রার্থী মেয়র, জাফর খাঁন বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ার) বিকাল ৫ ঘটিকার সময় রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে, আওয়ামীলীগ সভাপতি, কেন্দ্রিয় কার্যনির্বাহী সদস্য দীপংকর তালুকদারকে ফুলেল শুভেচ্ছাসহ কৃতঙ্গতা প্রকাশ জানাতে ছুটে আসেন।
জেলা আওয়ামীলীগের আয়োজনে দলীয় কাযর্লয়ে ছোট পরিষরে আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়। সভায় অন্যান্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি, হাজী কামাল উদ্দিন, সহ সভাপতি, চিংকিউ রোয়াজা, সহ সভাপতি নিখিল কুমার চাকমা, সাধারন সম্পাদক, হাজী মুছা মাতব্বর, দপ্তর সম্পাদক, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সভায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভাপতি দীপংকর তালুকদার বলেন, এই বিজয় সকলের সম্মলিত প্রচেষ্টার বিজয়। এই বিজয়ে বাঘাইছড়িবাসী তথা পৌরবাসীদের প্রতি ধন্যবাদসহ কৃতঙ্গতা জানান, সাথে মেয়র সফর সঙ্গীদের ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি আরও বলেন, পৌর নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর, বিরোধীতা কারি দলীয় নেতা কর্মীদের চিহ্নিতকরনের মধ্যদিয়ে ব্যবস্থা গ্রহনের কথা বলেন এবং প্রতিষ্টা লগ্ন হতে দীর্ঘ ১২ বছর যাবত উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত পৌরসভার দ্রুত উন্নয়ন কর্মকান্ড শুরু হবে এবং দুই বছরের মধ্য পৌরবাসী উন্নয়ন কর্মকান্ড ভোগ করবেন বলে আশ্বাস প্রধান করেন। অন্যান্যদের মধ্য বক্তব্য দেন নব নির্বাচিত মেয়র জাফর আলী খাঁন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পদক হাজী মুছা মাতব্বর প্রমুখ।
থানচিতে নব নির্মিত ৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও সমাবেশ
থানচিকে মডেল উপজেলা পরিণত করা হবে
——-বীর বাহাদুর এমপি
॥ অনুপম মারমা, থানচি ॥
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বীর বাহাদুর (উশৈসিং) এমপি বলেছেন, বান্দরবান জেলা এক সময় থানচি ছিল পিছিয়ে পড়া অবহেলিত উপজেলা। ২০১২ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাংগু সেতু উদ্বোধনের যোগাযোগে এক ধাব এগিয়ে নিয়েছে। ২০১২ থেকে ২০১৭ সালে মধ্যে পার্বত্য মন্ত্রনালয় থানচিকে একটি মডেল উপজেলা পরিনত করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বিদ্যুতায়নসহ, উপজেলা পরিষদ ভবন, ইউপি ভবন, অভ্যন্তরীণ সংযোগ সড়ক, ব্রিজ কালভার্ট, অবকাঠামো ইত্যাদি নির্মাণ করেছে। অচিরে থানচি হবে পর্যটন শিল্পের প্রধান আকর্ষণীয় অঞ্চল হিসেবে বিশ্ব ব্যাপী সুপরিচিতি করবে। থানচি উপজেলার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে ২১টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ ঘোষনা করেছেন এবং বাস্তবায়ন কাজ চলছে। থানচি উপজেলা হত দরিদ্র জনসাধানের জন্য সরকারে উন্নয়নের পার্বত্য মন্ত্রনালয়, উন্নয়ন বোর্ড,জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কোটি কেটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে এবং উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বজায় রাখা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে সার্বিক শান্তির শৃংখলা রক্ষায় পূনঃরায় আওয়ামী লীগ ও নৌকা প্রতীকের রায় দিয়ে সহযোগীতা করার আহবান জানান।
তিনি বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) সকাল ৯ টা নব নির্মিত ৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে থানচি বাজার প্রাঙ্গঁনে স্থানীয় আওয়ামীলীগের আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
জনসভায় জেলা আঃ লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বান্দরবান পৌর মেয়র ইসলাম বেবী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষীপদ দাশ, ফিলিপ্স ত্রিপুরা, মোজাম্মেল হক বাহাদুরসহ উপজেলার, ইউনিয়ন আঃ লীগের নেতৃবৃন্দ প্রমূখ। সভা শেষে হত দরিদ্রদের মাঝে সেলাই মেশিন, স্প্রে মেশিন, ভিজিডি কার্ডধারীদের চাউল, শীত বস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করেন। এর আগেই বিএনপি ও জনসংহতি সমিতি থেকে শতাধিক নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
থানচিতে সকালে এসে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি ৩ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা ব্যয়ের নব নির্মিত ও বাস্তবায়িত প্রকল্পের মধ্যে থানচি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন, সদর ইউপি ভবন, সেগুম ঝিড়ি সেতু, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার, হাইলমারা পাড়া রাস্তা,বাগান পাড়া রাস্তা, হিন্দু পাড়া রাস্তা, মংনাই পাড়া অভ্যন্তরীণ সংযোগ রাস্তা, দাকছৈ পাড়া বৌদ্ধ বিহারের উপাসকদের ভাবনা কেন্দ্র নির্মিত ভবন শুভ উদ্বোধন করেন।
উদ্ভোধনের সময় জেলা প্রশাসক দিলিপ কুমার বণিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বান চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আজিজ, উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলমসহ সরকারি ১৭ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অংশগ্রহন করেন।
তিন পার্বত্য জেলায় ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফের
২১০টি বিদ্যালয় জাতীয়করণ
॥ সুমন্ত চাকমা, জুরাছড়ি ॥ তিন পার্বত্য জেলার ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফের প্রকল্পের সহায়তায় স্থাপিত ২১০টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয় করণ করেছে সরকার। গত কাল (সোমবার) প্রাথমি ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয় শাখা-১ এর উপ-সচিব মুহম্মদ হিরুজ্জামানের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয় অধিগ্রহন আইন ১৯৭৪ এর ৩ (১) ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের আওয়াতায় তিনটি শর্তে আদেশ জারীর সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনায়ন করা হয়েছে। শর্তে মধ্যে (ক) অধিগ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যালয় সমূহ জমি, গৃহ, নগদ তহবিলসহ যাবতীয় সম্পদ সরকারে অনুকুলে হস্তান্তরিত ও ন্যস্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে। (খ) বিদ্যালয় সমূহের বর্তমান পরিচালনা কমিটি বিলুপ্ত হইবে এবং তদস্থলে বিধি মোতাবেক নতুন পরিচালনা গঠন করিতে হইবে। (গ) বিদ্যালয়সমূহের তথ্যাদি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক/শিক্ষিকার পদ সৃষ্টি করা হইবে। পদ সৃষ্টির আনুষ্ঠানিকতা শেষে শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ বিধি মোতাবেক সরকারীকরণ করা হইবে।
২০০৯ সালে তিন পার্বত্য জেলার ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফের মৌলিক শিক্ষা সহায়তা প্রকল্পের বান্দরবান জেলার ৮০টি, রাঙ্গামাটি জেলার-৮১টি এবং খাগড়াছড়ি জেলার ৪৯টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। এ সব বিদ্যালয়ে প্রকল্পের আওয়াতায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে ১ জন করে শিক্ষক সহায়তা দিলেও পাড়াবাসীর অর্থায়নে ৩ জন শিক্ষক পদায়ন করা হয়।
জুরাছড়ি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশিষ কুমার ধর জানান সংশ্লিষ্ট্য বিদ্যালয় গুলো জাতীয় করণের বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ওয়েভসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে তবে এখনো আমাদের হতে চিঠি পায়নি।
উল্লেখ্য তিন পার্বত্য জেলার ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফের মৌলিক শিক্ষা সহায়তায় প্রকল্পের আওয়াতায় পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীর মৌলিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে ২০০৯ সালে তিন পার্বত্য জেলায় ২১০টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়।
তিন গুণী ব্যক্তিত্বকে সম্মাননা প্রদান করলো সুর নিকেতন,
নিজের দায়বদ্ধতা থেকেই আজীবন বাংলা ভাষা তথা দেশের সাহিত্য সংস্কৃতির উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে গেছিঃ মাকছুদ আহমেদ
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ অমর একুশে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘিরে পাহাড়ি তিন গুণী ব্যক্তিত্বকে সম্মাননা প্রদান করেছে রাঙ্গামাটির ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুর নিকেতন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সংবর্ধিত অতিথি এ কে এম মকছুদ আহমেদ বলেন, আমরা স্বীকৃতি বা পুরষ্কার পাওয়ার আশায় কাজ করিনি, জাতির প্রয়োজনে নিজের দায়বদ্ধতা থেকে আজীবন বাংলা ভাষা তথা এদেশে সাহিত্য সংস্কৃতির উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে গেছি। উদ্দেশ্য ছিল পিছিয়ে পড়া পার্বত্য অধিবাসীদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা, তবে কাজের স্বীকৃতি মানুষকে আরো পরিণত এবং দায়বদ্ধ হতে উদ্বুদ্ধ করে। তাই আজ সে সম্মাননা পেলাম এর জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে সুর নিকেতনকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
প্রবীণ এই সাংবাদিক আরো বলেন, আমি না চাইলেও বহু প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা আমাকে কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ বিভিন্ন পদক প্রদান করেছে। তবে এর মধ্যে মাদার তেরেসা পদক পাওয়ার অনুভূতিটি আমার কাছে কাছে একটু ভিন্ন এবং অত্যন্ত প্রেরণা দায়ক। কারণ নোবেল পুরস্কার পাওয়া এই মহিয়সী নারী সারা বিশ্বে শান্তিকামী মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। তিনি বলেন, এখন থেকে প্রায় চার দশক আগে যখন আমি পার্বত্য চট্টগ্রামে সংবাদপত্র প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করি তখন একটি পত্রিকা বের করা অনেক কঠিন ও কষ্টসাধ্য বিষয় ছিল। কিন্তু শত অভাব ও প্রতিবন্ধকতার মাঝে আমি পত্রিকা প্রকাশ করে গেছি। আজ অনেক ভালো লাগছে আমার প্রকাশিত গিরিদর্পণে লেখালেখি করে দেশে আজ অনেক প্রতিষ্ঠিত লেখকের সৃষ্টি হয়েছে। কেউ পাহাড়ের মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জনের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে, আবার কেউ একুশে পদক পেয়েছে।
রাঙ্গামাটির সামাজিক সংগঠন ও সঙ্গীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুর নিকেতনের নিজস্ব মিলনায়তনে একুশে ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে মাদার তেরাসা পদক পাওয়ার জন্য দৈনিক গিরিদর্পণ ও সাপ্তাহিক বনভূমির সম্পাদক এ কে এম মকছুদ আহমেদ, পাহাড়ের একমাত্র ব্যক্তিত্ব হিসেবে একুশে পদক পাওয়ার জন্য লেখক কবি ও গবেষক মংছেন চিং (মংছিন) এবং মুনীর চৌধুরী পদক পাওয়ার জন্য বিশিষ্ট লেখক কবি মৃত্তিকা চাকমাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রবীণ সাংবাদিক ও রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সুনীল কান্তি দে ও দৈনিক রাঙামাটি সম্পাদক এবং রাঙ্গামাটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক। সুর নিকেতনের সভাপতি ওস্তাদ মনোজ বাহাদুর গুর্খার সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যে মধ্যে বক্তব্য রাখেন জুন ঈসথেটিক কাউন্সিলের সভাপতি শিশির চাকমা।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে সুর নিকেতনের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় ছিল ঘন্টাব্যপী সঙ্গীত পরিবেশনা। এর আগে অতিথিগণ অনুষ্ঠান স্থলে এসে পৌঁছলে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি তাদের উত্তরীয় পরিয়ে সম্মান জানানো হয়। পরে সুর নিকেতনের সভাপতি সংবির্ধত অতিথিবৃন্দের হাতে মানপত্র তুলে দেন।
সংবর্ধনার জবাবে লেখক কবি ও গবেষক মংছেন চিং (মংছিন) বলেন, আমি যখন লিখালেখি শুরু করি তখন ভাবিনি যে একুশে পুরস্কার পবো। নিজের অন্তর থেকে গরজ অনুভব করেছি বলেই আজীবন লিখে গেছি। তিনি বলেন, লেখালেখি একজন মানুষের দায়বদ্ধতা ও মনোজাগতিক নেশা। এই নেশা থেকেই নিজের প্রতিষ্ঠা, বাড়ি গাড়ি বিত্ত বৈভব কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে লিখেই গেছি। আজ সমাজ এবং রাষ্ট্র যে ভাবে স্বীকৃতি দিচ্ছে তাতে এই দায়বদ্ধতা আরো বেড়ে গেল। তিনি বলেন, লেখক হিসেবে আজকে মংছিন গিরিদর্পনেরই সৃষ্টি। গিরিদর্পণের কারণেই আমি লেখালেখির জগতে এতদূর এগিয়েছি।
কবি মৃত্তিকা চাকমা বলেন, গিরিদর্পণ দিয়েই আমার লেখালেখির জীবনে প্রবেশ ঘটে। সেউ তরুণ বয়েসে লেখার একটি ক্ষেত্র পেয়েছিলাম বলে আজও লিখে যাচ্ছি। জাতির জন্য সমাজ ও সংস্কৃতির জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি। গিরিদর্পণে লেখালেখির সুযোগ পেয়ে অনেক মানুষ আজ এই জগতে বেশ নাম করেছে। তাই পাহাড়ের মানুষ সব সময় মকছুদ ভাইকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। তিনি বলেন, দেশে বেশ কিছু পদক ছাড়াও পাশ্ববর্তী দেশ থেকে আমার স্বীকৃতি পাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে, তবে নিজের এলাকায় নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে যে সম্মাননা পেলাম, এর অনভ’তি যেন ভিন্নতর।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুনীল কান্তি দে বলেন, গুণীর কদর না হলে সে সমাজে গুণীর জন্ম হয় না। আজ গুণীদের সম্মাননা জানিয়ে সুর নিকেতন যে দায়িত্ব পালন করেছে সে দায়িত্ব ছিল আমাদের। এই প্রসংশনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা আমি সুর নিকেতনকে সাধাবাদ জানাচ্ছি। তিনি বলেন, পাহাড়ের সাহিত্য সংস্কৃতিক বিকাশে মকছুদ আহমেদের এ অঞ্চলের মানুষ সব সময় শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। তিনি তৎকালীন সময়ে পত্রিকা প্রকাশনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলেই পাহাড়ের সাংবাদিকতা বিকশিত হয়েছে। সুনীল কান্তি দে আরো বলেন, পাহাড়ের গবেষক মংছেন চিং একুশে পদক পেয়ে পার্বত্য বাসীর জন্য যে সম্মান বয়ে এনেছেন তার জন্য আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি উল্লেখ করেন সম্মাননা পাওয়ার পর গুণীদের দায়িত্ব আরো বেড়ে যায়, আমরা আশা করি এই সম্মানীত ব্যক্তিবর্গ আগামী দিনে পার্বত্য সমাজ ও মানুষের উন্নয়নে আরো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন।
দৈনিক রাঙামাটি সম্পাদক তার বক্তব্যে বলেন, একুশের এ দিনটি আমাদের জাতীয় জীবনের জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। একুশে ফেব্রুয়ারি নিজেদের প্রাণের বিনিময়ে যারা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারা শুধু আমাদের ভাষার অধিকার ও মর্যাদাই প্রতিষ্ঠা করেনি। এই আন্দোলনের সূত্র ধরেই আমাদের বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক মর্যাদা পেয়েছে, আমাদের শহীদ দিবস আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সম্মান পেয়েছে। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ দিনে সুর নিকেতন ভাষা সাহিত্য ও সংস্কৃতির জন্য কাজ করে যাওয়া তিন গুণী ব্যক্তিত্ব সম্মান জানিয়ে যে নতুন একটি ইতিহাসের জন্ম দিল। তিনি বলেন, আমাদের ভাষা যতদিন বিশ্বের বুকে টিকে থাকবে, ততদিন পাহাড়ের মানুষ দৈনিক গিরিদর্পণ ও এর সম্পাদক একেএম মকছুদ আহমেদের নাম শ্রদ্ধার সাথে উচ্চারণ করবে। কারণ মানুষের মনোজগত ও বস্তুজগতের যে অসীম বিস্তার এবং প্রসার আজ বিশ্বের বিভিন্ন মানবগোষ্ঠীর সংস্কৃতিতে আমরা দেখতে পাই, তা ভাষারই সৃষ্টি, ভাষারই অবদান। ভাষার সাথে সাহিত্য এবং সাংবাকিতা অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। আর পার্বত্য চট্টগ্রামের সাংবাদিকতার কথা উচ্চারণ করতে হলে সবার আগে একেএম মকছুদ আহমেদের নাম উচ্চারণ করতে হবে।
রাঙ্গামাটিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহীদ দিবস
ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সারা বিশ্বের ন্যায় যথাযোগ্য মর্যাদা ও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে রাঙ্গামাটিসহ পার্বত্য তিন জেলায় পালিত হয়েছে ‘অমর একুশে’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’। এ উপলক্ষে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের তিন দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে শিশুদের চিত্রাঙ্কন, শহীদ দিবস স্মরণে গান ও সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি ও প্রবন্ধ পাঠসহ ব্যাপক কর্মসূচি পালিত হয়।
একুশের প্রথম প্রহরে রাঙ্গামাটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় সংসদের মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান ও পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া ভোর অবধি সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা, রাজনৈতিক, সামাজিক, সংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন রাঙ্গামাটি জেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করে। সকালে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের উদ্যোগে প্রভাত ফেরীর আয়োজন করা হয়। ২১ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যা ৬টায় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহে ভ্রাম্যমান চলচিত্র প্রদর্শনী প্রদর্শীত হয়।
এছাড়া ২১ ফেব্রুয়ারী সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সকল সরকারি-বেসরকারি ভবন ও প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। বিকাল ৫টায় রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক চত্বরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বই মেলা উদ্বোধন করা হয়। তাছাড়া সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমীর অডিটরিয়ামে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া সকল মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডায় ভাষা শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।
॥ মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, খাগড়াছড়ি ॥ খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় তক্ষকসহ এক উপজাতী ব্যবসায়ী নামে একজনকে আটক করেছে নিরাপত্তাবাহিনীর সেনা সদস্যরা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় দিকে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কমলাকান্ত কার্বারী পাড়ায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তক্ষকসহ তাকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে, নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে আটক বুদ্ধ মনি চাকমা কমলাকান্ত কার্বারী পাড়ার রবীন্দ্র লাল চাকমার ছেলে এবং স্থানীয় তক্ষক ব্যাবসায়ী।
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা জোন সুত্রে জানা যায়, বুদ্ধ মনি চাকমার বাড়িতে তক্ষক রয়েছে এমন গোঁপন খবরের ভিত্তিতে মাটিরাঙ্গা জোনের জোনাল স্টাফ অফিসার ক্যাপ্টেন তানজিম হোসাইন‘র নেতৃত্বে নিরাপত্তাবাহিনী কমলাকান্ত কার্বারী পাড়ায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়েছে। পরে তার দেয়া তথ্য মতে তার ঘরে রাখা দুইটি তক্ষক উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে তক্ষকসহ আটক বুদ্ধমনি চাকমা নিজেকে স্থানীয় তক্ষক ব্যবসায়ী বলে নিরাপত্তাবাহিনীর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে বলেছে, সে সহ স্থানীয় কয়েকজনের একটি সিন্ডিকেট খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা ও আশেপাশের এলাকা থেকে তক্ষক ধরে বিক্রয় করে আসছিলেন।
উদ্ধারকৃত দুইটি তক্ষকসহ আটক বুদ্ধ মনি চাকমাকে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে বলে নিরাপত্তাবাহিনী সুত্রে জানা গিয়েছে।