বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গন পাঁচ দশকের বেশি সময় তিনি শাসন করে গেছেন রাজার মত; ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক বাংলার মানুষের কাছ থেকে শেষ বিদায় নিলেন সবার শ্রদ্ধা–ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে।
বৈরী আবহাওয়া আর যানজট উপেক্ষা করে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসেছিলেন সরকারের মন্ত্রী, আমলা, রাজনীতিবিদরা। এসেছিলেন চলচ্চিত্র অঙ্গনের সেকাল-একালের সহশিল্পীরা, শিল্প-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিনিধি আর ভক্তরা। সবার হাতে ছিল শ্রদ্ধার ফুল।
বেশ কিছুদিন ধরে নিউমোনিয়াসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন ৭৫ বছর বয়সী রাজ্জাক। সোমবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে তাকে নেওয়া হয় ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে। চিকিৎসকরা সন্ধ্যায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাজ্জাকের মৃত্যুর খবর পেয়ে অনেকে ভিড় জমান ইউনাইটেড হাসপাতালে; শোক বিহ্বল অভিনেতা-অভিনেত্রীরা ছুটে যান তার বাড়ি লক্ষ্মীকুঞ্জতেও।
পাঁচশর বেশি চলচ্চিত্রের অভিনেতা আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশের মানুষের কাছে খ্যাত ছিলেন নায়করাজ নামেই। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে সাদা কালো যুগ থেকে শুরু করে রঙিন যুগ পর্যন্ত দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে গেছেন তিনি।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে ২৫ বছর প্রায় একাই টেনে নিয়ে গেছেন এই চিত্রনায়ক। শেষ দিকে অন্য চরিত্রে অভিনয় করলেও বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গন তাকে চিরসবুজ নায়ক হিসেবেই দেখে।
সোমবার রাতে রাজ্জাকের মরদেহ রাখা হয় ইউনাইটেড হাসপাতালের হিমঘরে। সেখান থেকে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে নেওয়া হয় তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল এফডিসিতে।
সকাল থেকে মুষলধারায় বৃষ্টি, এরপর প্রখর রোদম কোনো কিছুই দমাতে পারেনি রাজ্জাকভক্তদের; লোকে-লোকারণ্য ছিল বিএফডিসির প্রধান ফটক থেকে শুরু করে ভেতরের চত্বর পর্যন্ত।
চলচ্চিত্রাঙ্গনের শিল্পী-কলাকুশলীদের পাশাপাশি রাজ্জাককে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন ভক্তরারও। সকাল ১১টার দিকে প্রয়াত নায়কের মরদেহ বহনকারী গাড়ির সঙ্গে আসেন তার ছেলে চিত্রনায়ক বাপ্পারাজ ও সম্রাট।
এরপর নায়করাজের কফিনে শ্রদ্ধা জানায় তথ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবার, সিনেম্যাক্স মুভি পরিবার, বাংলাদেশ আওয়ামী সাংস্কৃতিক লীগ, বাংলাদেশ ফিল্ম ক্লাব, চলচ্চিত্র গ্রাহক সংস্থা, চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি, সিনে স্থিরচিত্র গ্রাহক সমিতি, জাসাসসহ বিভিন্ন সংগঠন।
রাজ্জাককে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম, চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক ও গীতিকার মাজহারুল আনোয়ার, অভিনেতা আলমগীর, চিত্রনায়িকা ববিতা, শাবনূর, নায়ক শাকিব খান, অভিনেতা সুব্রত, আলীরাজ, রুবেল, ফেরদৌস, আহম্মদ শরিফ, ওমর সানি, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি অভিনেতা মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক নায়ক জায়েদ খানসহ আরও অনেকে।
প্রিয় অভিনেতাকে শ্রদ্ধা জানানোর পর সেখানে তার প্রথম জানাজা হয়।
সেখানে রাজ্জাকের বড় ছেলে বাপ্পারাজ বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চান।
অভিনেত্রী ববিতা বলেন, “আমার জীবনের সবচেয়ে ব্যবসাসফল ছবি রাজ্জাকের সঙ্গে। রাজ্জাকের পর্দা উপস্থিতি, অভিব্যক্তি এখনকার নায়করা অনুসরণ করেন।”
রাজ্জাকের একসময়ের আরেক পর্দাসঙ্গী অভিনেত্রী সুচন্দা বলেন, “রাজ্জাকের নায়কের মতো রূপালী পর্দায় এসেছিলেন। তার চলে যাওয়া নায়কের মতোই হল। তিনি কখনও কারও কাছে কিছু চেয়ে ছোট হননি। রিয়েল লাইফে তিনি মহানায়ক ছিলেন।”
নায়ক আলমগীর বলেন, “আমার বলার কিছুই নাই। পিতা হারালে সন্তানের যেমন লাগে আমারও তেমন লাগছে।”
শাকিব খান বলেন, “এখনকার প্রজন্ম এবং আগামী যত প্রজন্ম আসবে তাদের কাছে নায়করাজ রাজ্জাক প্রেরণা হয়ে থাকবেন। আমরা একজন আইডল হারালাম।”
শাবনূর বলেন, “বিশ্বাস হচ্ছে না রাজ্জাক আঙ্কেল আর নেই। পর্দা থেকে পেছনের নায়ক রাজ্জাক আমার কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।”
এফডিসি থেকে বেলা সোয়া ১২টার দিকে রাজ্জাকের মরদেহ নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে সেখানে সর্বস্তরের মানুষ নায়করাজের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানায়।
প্রথমে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ নায়করাজের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ফুল দেন মন্ত্রী আসাদুজ্জাসান নূর। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ফুল দেন তার দল জাসদের পক্ষ থেকে।
রাজ্জাকের কফিনে শ্রদ্ধা জানানোর পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “বাংলা চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন তিনি। তার চলে যাওয়ায় অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। এ শূন্যস্থান কখনও পূরণ হওয়ার নয়। তিনি ঢাকাই চলচ্চিত্রের উত্তম কুমার।”
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, “রাজ্জাকের নেতৃত্বে এ দেশের চলচ্চিত্র মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি দেশের সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করছে। সেই সংস্কৃতির আশ্রয়ে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছেন।”
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদু্জ্জামান নূর অভিনেতা আবদুর রাজ্জাককে ‘প্রধান স্থপতি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “বাংলা ছবির নির্মাণের ইতিহাস দেখলে বলতে হয়, যে ব্যক্তির ওপর দাঁড়িয়ে বাংলা চলচ্চিত্র দাঁড়িয়েছিল তিনি রাজ্জাক। নিজের দক্ষতা, নিজের গুণে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। তিনি আমাদের অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছেন। আজ বাংলা চলচ্চিত্রের প্রধান স্থপতি চলে গেলেন।”
বিএনপির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গাজী মাজহারুল আনোয়ার, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। পরে তিনি প্রয়াত এই নায়ক সম্পর্কে বলেন, “৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজ্জাক ছিল আমার প্রিয় বন্ধু। চলচ্চিত্র অঙ্গনে তার মতো সংস্কৃতিমনা মানুষ কমই দেখেছি। তার সঙ্গে যে কত স্মৃতির অধ্যায়। তিনি ছিলেন নিষ্ঠাবান ও পরিশ্রমী মানুষ।”
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, অভিনেত্রী রোজিনা, চিত্রনায়ক শাকিব খান, চিত্রনায়ক জাভেদ, অভিনেত্রী জয়া আহসান।
শ্রদ্ধা নিবেদন করে তারা অনেকেই জানালেন তাদের প্রতিক্রিয়া।
অভিনেত্রী রোজিনা বলেন, “আমার জীবনের প্রথম ছবি ‘আয়না’তে নায়ক হিসেবে পেয়েছিলাম রাজ্জাক ভাইকে। তার সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে তখন আমার হাত-পা কাঁপছিল। সেটা বুঝে তিনি আমাকে সাহস দিয়ে বললেন, ‘তোমার অভিনয় ভালো হচ্ছে।’ অভিনয়ের অনেক কিছু শিখেছি তার কাছ থেকে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে তিনি নিজেই ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠান।”
অভিনেত্রী জয়া আহসান বলেন, “ইউনিটে অন্য সবাই যখন দাঁড়াত আর উনি যখন দাঁড়াতেন, তখন ক্লাসিফিকেশনটা খুব ভালো মত বোঝা যেত। উনার বাচনভঙ্গি থেকে শুরু করে সবকিছু এত মার্জিত ছিল! এরকম পারফেক্ট একটা মানুষকে হিরো হিসেবে দেখি না এখনো। যাবার সময় হলে তো সবাই যায়, কিন্তু আমাদের এখানে তো একটা জায়গা ফাঁকা হয়ে গেলে পূরণ হতে অনেক সময় লাগে, তার চলে যাওয়ায় এই জায়গাটা আর কখনো হয়ত পূরণ হবে না।”
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও রাজ্জাকের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়।
শ্রদ্ধা জানায় বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, অভিনয় শিল্পী সংঘ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, স্মৃতি ৭১, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, এনটিভি, গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ, ঋষিজ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, বাংলাদেশ টেলিভিশন, ওয়ার্কার্স পার্টি, দৃষ্টিপাত নাট্য সংসদ, মুক্তধারা সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, বাংলাদেশ বাউল একাডেমি ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ যুব সমিতি, সুবচন নাট্য সংসদ, দনিয়া সাংস্কৃতিক জোট, ডিরেক্টরস গিল্ড, দেশ টিভি, প্রজন্ম ৭১, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিসহ আরও অনেক সংগঠন।
নায়ক রাজ্জাক যে বর্তমান প্রজন্মের কাছেও ‘নায়করাজ’ তার প্রমাণ মিলল শহীদ মিনারে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসা তরুণদের ভিড় দেখে।
রাজ্জাক ভক্তদের তিনটি সারি শহীদ মিনার থেকে গিয়ে ঠেকে ঢাকা মেডিকেলের বহির্বিভাগের গেটে। এই লাইনে তরুণদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।
রাজ্জাককে কতটুকু চেনেন জানতে চাইলে তাদের একজন নুসরাত রহমান বর্ণা বলেন, “টিভিতে একবার রংবাজ ছবিটা হচ্ছিল। রাজ্জাক স্যারকে তো এমনিতেই চিনতাম, কিন্তু রংবাজ ছবিতে তাকে একদম অন্যভাবে দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এত সুদর্শন নায়ক বাংলাদেশে আর নেই।”
সানিয়া সাফা বলেন, “নায়ক রাজ্জাকের সিনেমার পাগল আমার আম্মা। ইউটিউবে যে কয়টা পাই আম্মাকে ছেড়ে দেই দেখার জন্য, আমি নিজেও দেখি। আম্মা অসুস্থ, তাই আমাকে পাঠিয়েছেন তার পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে যেতে। আমি নিজেও একজন ভক্ত উনার।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যার ছাত্র ওয়ালিউল্লাহ নোমান খান ও তার কয়েকজন বন্ধু এসেছিলেন নায়করাজের মৃতদেহ দেখতে আর শেষ শ্রদ্ধা জানাতে।
নোমান বলেন, “ক্যাম্পাসে কত রাত কাটাই নীল আকাশের নিচে গানটা গেয়ে! যখনই গাই নায়ক রাজ্জাকের সুন্দর চেহারাটা আমার চোখে ভাসে। আর রংবাজ ছবিতে তার অভিনয় আর অ্যাপিয়ারেন্স কোনোদিন ভুলব না।”
বাবাকে নিয়ে বকশীবাজার থেকে এসেছিলেন বোরহানউদ্দীন কলেজের ছাত্র সমরেশ কুমার মজুমদার। জানালেন তার বাবা রাজ্জাকের মৃত্যু সংবাদে গতকাল থেকে মন খারাপ করে আছেন। তার নিজেরও মন খারাপ, কারণ তিনিও প্রয়াত নায়কের ভক্ত।
“আমি তার কমপক্ষে ৬০-৭০টা সিনেমা দেখেছি। প্রতিটা ছবিতে মুগ্ধ করেছেন। তার চোখ দুটো আমার খুব প্রিয়।”
গাড়ী মেরামত কারখানায় কাজ করা সবুজ শিকদার কাজের ফাঁকেই চলে এসেছেন নায়করাজকে শেষবারের মতো দেখতে।
তিনি বলেন, “দেশে থাকতে উনার অশিক্ষিত সিনেমাটা দেখছি। আরো দেখতে মন চাইত। ঢাকায় আইসা ইন্টারনেট শিখার পর অনেক ছবিই দেখছি। এখনকার সবার চাইতে তারেই ভালো লাগে আমার।”
“আমার কাছে মনে হয় সালমান শাহ ছাড়া নায়ক রাজ্জাককে ছাড়িয়ে যাওয়ার মত আর কোনো নায়ক বাংলাদেশে নেই। এত বছর পরও তার ওরা এগার জন, জীবন থেকে নেয়া, রংবাজ, লাইলি মজনু এসব ছবির ধারেকাছে কারো সিনেমা নাই,” বললেন শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসা তরুণ ব্যাংকার রাসেল আহমেদ।
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর কফিন নিয়ে যাওয়া হয় গুলশানের আজাদ মসজিদে। সেখানে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে শায়িত হবেন নায়করাজ রাজ্জাক।
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক আর নেই। ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার বিকালে তার মৃত্যু হয় বলে বাংলাদেশ পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার জানান।
রাজ্জাকের বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে নিউমোনিয়াসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। ইউনাইটেড হাসপাতালের কাস্টমার কেয়ারের ইনচার্জ উজ্জ্বল জানান, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের পর ৫টা ২০ মিনিটে হাসপাতালে আনা হয় রাজ্জাককে। তখন তার পালস পাওয়া যাচ্ছিল না। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করেন। ৬টা ১৫ মিনিটের দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
রাজ্জাক স্ত্রী লক্ষ্মী (খায়রুন নেসা), তিন ছেলে বাপ্পারাজ, বাপ্পি ও সম্রাট এবং দুই মেয়ে শম্পা ও ময়নাকে রেখে গেছেন। তার ছেলেরাও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
পাঁচশর বেশি চলচ্চিত্রের অভিনেতা আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশের মানুষের কাছে নায়করাজ নামেই খ্যাত ছিলেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে সাদা কালো যুগ থেকে শুরু করে রঙিন যুগ পর্যন্ত দাপটের সঙ্গে ছিলেন রাজ্জাক।
রাজ্জাকের জন্ম ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি অবিভক্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়। শৈশবেই তিনি বাবা-মাকে হারান।
অভিনেতা হওয়ার মানসে ১৯৬১ সালে কলকাতা থেকে মুম্বাই পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি; সেখানে সফল না হয়ে ফিরেছিলেন টালিগঞ্জে।
কলকাতায়ও পরিস্থিতি অনুকূলে না হওয়ায় ১৯৬৪ সালে ঢাকায় চলে আসেন রাজ্জাক। প্রথমে কাজ শুরু করেন সহকারী পরিচালক হিসেবে; এর মধ্যেই ‘তেরো নাম্বার ফেকু ওস্তাগার লেন’ চলচ্চিত্রে ছোট একটি ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। ‘ডাকবাবু’, উর্দু ছবি ‘আখেরি স্টেশন’সহ কয়েকটি চলচ্চিত্রে ছোট ছোট ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি।
এক সময় জহির রায়হানের নজরে পড়েন রাজ্জাক। তিনি ‘বেহুলা’য় লখিন্দরের ভূমিকায় অভিনয়ের সুযোগ দিলেন রাজ্জাককে, সুচন্দার বিপরীতে। ‘বেহুলা’ ব্যবসাসফল হওয়ায় আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি রাজ্জাককে।
সুদর্শন রাজ্জাক সুচন্দার পর কবরী, ববিতা, শাবানাসহ তখনকার প্রায় সব অভিনেত্রীকে নিয়ে একের পর এক ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র দেন ঢালিউডকে। এর মধ্যে রাজ্জাক-কবরী জুটি ছিল ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়।
রাজ্জাকের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘আনোয়ারা’, ‘সুয়োরাণী-দুয়োরাণী’, ‘দুই ভাই’, ‘মনের মতো বউ’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘ময়নামতি’, ‘ক খ গ ঘ ঙ’, ‘বেঈমান’।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ‘রংবাজ’ দিয়ে বাংলাদেশে অ্যাকশনধর্মী চলচ্চিত্রের সূচনাও ঘটান রাজ্জাক।
‘আলোর মিছিল’, ‘পিচ ঢালা পথ’, ‘স্বরলিপি’, ‘কি যে করি’, ‘টাকা আনা পাই’, ‘অনন্ত প্রেম’, ‘বাঁদী থেকে বেগম’, ‘আনার কলি’, ‘বাজিমাত’, ‘লাইলি মজনু’, ‘নাতবউ’, ‘মধুমিলন’, ‘অবুঝ মন’, ‘সাধু শয়তান’, ‘মাটির ঘর’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘কালো গোলাপ’, ‘নাজমা’সহ অসংখ্য ব্যবসা সফল চলচ্চিত্রের নায়ক রাজ্জাক।
বদনাম, সৎ ভাই, চাপা ডাঙ্গার বউসহ ১৬টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন রাজ্জাক। অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় পুরস্কারসহ অনেক সম্মাননা। ২০১৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আসরে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন। জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করেন তিনি।
এক প্রতিভা, যিনি নিজ প্রচেষ্টা ও সাধনায় নিজেকে করেছে অলংকৃত, শ্রোতা সাধারণকে করেছে বিমোহিত। যার নাম হয়ত ভবিষ্যৎ শ্রোতাদের মাঝে আন্দোলিত হতে পারে। চট্টগ্রামবাসী যাকে নিয়ে একদিন গর্ববোধ করবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস। একদিন হয়ত যার কন্ঠে বিমোহিত হতে পারে সারা বংলার শ্রোতা সাধারণ।
তিনি প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্ম নেওয়া এক স্বপ্নবাজ তরুন – মোঃ সালাহউদ্দিন কাদের মানিক। ১৯৮৪ সালে চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানার অন্তর্গত সরল গ্রামের সম্ভান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বরকত আলী মাঝির বাড়ীর মরহুম হাজী জমির উদ্দিন এবং পশ্চিম বাঁশখালীর খ্যাতিমান জমিদার মরহুম হাজী নবাব আলী চৌধুরীর ৫ম কন্যার ৫ম সন্তান। গ্রামে যার শৈশব কৈশোর কাটে। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কৃত্বিত্বের সাথে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে একই এলাকার সরল আমিরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা সফলভাবে শেষ করে।
মাধ্যমিক পরিক্ষা সম্পন্ন করার পর চট্টগ্রাম শহরে পাড়ী জমায় উচ্চ শিক্ষা অর্জনের তাগিদে। চট্টগ্রাম কলেজ হতে ¯œাতকোত্তর এবং চট্টগ্রাম আইন কলেজ থেকে এল.এল.বি সম্পন্ন করে বর্তমানে একটি স্বনামধ্যন্য ব্যংকে অফিসার পদে কর্মরত আছে।
সালাহ উদ্দিন কাদের মানিকের গ্রামে সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানা যায়, এলাকায় তিনি মানিক নামে পরিচিত। গ্রামবাসী ও এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যাক্তিদের সাথে আলাপ কলে জানতে পাির “ছোট বেলা থেকে মানিকের গানের প্রতি অধম্য আগ্রহ ছিল। যে কোন পরিস্থিতিতে তড়িৎ নিজের ভাষার গান গাওয়ার সক্ষমতা ছোট বেলা থেকে তাঁর ছিল। এলাকার যে কোন সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মানিকের উপস্থিতি ছিল শতভাগ। যার সুবাধে বিভিন্ন সময় গান করার সুযোগ সৃষ্টি হত তার। প্রাণ ভরে শ্রোতারা উপভোগ করত মানিকের গান।
এলাকাবাসী ও বন্ধ বান্ধবের আক্ষেপ, যদি যথাযতভাবে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হত, তাহলে এতদিনে সত্যিকার অর্থে নামকরা একজন শিল্পি হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারত।”
চট্টগ্রাম শহরে পাড়ি জমানোর পর মানিক আবার গানের প্রতি মনোযোগী হয়। যার প্রচষ্টোয় অনেক সাধনার পর প্রথমবারের মত ঈদুল ফিতরে নিজের কথা ও সূরে ৫টি গান জনপ্রিয় অনলাইন ভিডিও মাধ্যম ইউটিইবে প্রকাশ পায়। গান গুলো যথাক্রমে:
১) আমার ভাগ্য চাকা ঘুরছে
২) ও মাইয়্য
৩) তুমি এতো বিবেকহীনা
৪) দেখো সুখের পাখি
৫) সন্ধ্যবেলায় সাগর পাড়ে।
গানের বিষয়ে তাঁহার সাধনা ও সফলতা নিয়ে তরুন শিল্পি মানিকের সাথে একান্ত আলাপ কালে বলেন, “ গানের প্রতি একটি টান ছোট বেলা থেকে আমার ছিল। যে কোন ধরেন গানের শব্দ আমার কানে পৌছলে আমি যেন ঐ সুরে হারিয়ে যেতাম। প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্ম নেওয়ায় যথাযথ সুযোগ সুবিধা না পাওয়ায় সেভাবে আর নিজেকে গড়ে তুলতে পারিনি। যখন মাধ্যমিক পরিক্ষা শেষে চট্টগ্রাম শহরে পাড়ি জমাই, তখন থেকে আমি মনে প্রাণে চেষ্টা করতে থাকি গান নিয়ে কিছু একটা করার।
বিভিন্ন গানের অনুষ্টানে যাতায়তের সুবাধে অনেকের সাথে আস্তে আস্তে পরিচিত হই। তাদেও সাথে আলাপ করে এটি বুঝতে পারি- একজন উস্তাদ ছাড়া সামনে এগুনোর সুযোগ নেই। তাই একজন মনের মত উস্তাদ খুজতে আরম্ভ করি। অবশেষে পেয়ে যায় এক স্বনাম ধন্য উস্তাদ, যার হাতে প্রথম কোন গানে ভিন্ন মাত্রা যোগ করলাম। তিনি হচ্ছে বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মিউজিশিয়ান উস্তাদ সৈয়দুল হক। যার হাতে দীর্ঘ ৭ বৎসর ধরে গানের তালিম নিচ্ছি এবং পাশাপাশি খ্যাতিমান শিল্পি চট্টগ্রাম বাঁশখালীতে জন্ম নেওয়া ফকির সাহাবউদ্দিন এর নিকট তালিম নিচ্ছি। যদিও বা গ্রামে থাকাকালিন কিছুদিনের জন্য উস্তাদ জিতেন্দ্র লাল এর কাছে তালিম নিয়েছিলাম।
যদিও ছোট বেলা থেকে গান গাওয়ার চেষ্টা করতাম। কিন্তু ২০০১ সাল হতে মূলত গান নিয়ে চুড়ান্ত ভাবে ভাবতে আরম্ভ করি। তখন থেকে আমি বেশ কয়েকটি গান নিজে নিজে রচনা করি।
দীর্ঘ প্রচেষ্টা পর গানগুলোতে নিজেই সূর দিয়ে নিজের কন্ঠে রেকর্ড করাতে সক্ষম হই। যা এই ঈদুল ফিতরে জনপ্রিয় অনলাইন ভিডিও মাধ্যম ইউটিউবে প্রকাশ করি।
গানগুলো প্রকাশ হওয়ার পর শ্রোতাসাধরনের যথেষ্ট সাড়া পাই। শ্রোতাদের উচ্ছাসিত আবেগ আমাকে আরো বেশী অনুপ্রেরণা দেয়। যার ফলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি- আগামী ঈদুল আযহায় গানগুলোকে নতুন আঙ্গিকে মিউজিক ভিডিওর মাধ্যমে শ্রোতা সাধারণকে পৌছে দিব। সবার কাছে দোয়া কামনা করছি।”
পরিশেষে বলতে হয়, বাংলাদেশের সংগীত অংগনে নিজের কথা ও সূর এবং কন্ঠে গান করা শিল্পির ক্ষুদ্র তালিকায় হয়ত আরেকটি নাম রেকর্ড হতে চলছে।
সোমবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।
আওয়ামী লীগের সামশুল হক চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে দেওয়া মন্ত্রী জানান, ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ওই বিদেশিরা বাংলাদেশ ভ্রমণ করেন।
এর মধ্যে ২০১৩ সালে সবচেয়ে কম বিদেশি বাংলাদেশে এসেছেন। ওই বছর দুই লাখ ৭৭ হাজার ৫৯৬ জন বাংলাদেশ ভ্রমণ করেন।
আর ২০১৫ সালে সবচেয়ে বেশি- ৬ লাখ ৪৩ হাজার ৯৪ জন বিদেশি পর্যটক বাংলাদেশ ভ্রমণ করেন।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, “সারাদেশের অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আট হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণের একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যানুপাতে প্রতি জেলা/উপজেলায় বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে।
খোরশেদ আরা হকের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ‘প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা’ নির্ণয়ের জন্য ৪৭০টি যাচাই-বাছাই কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটি নির্দেশিকার আলোকে যাচাই-বাছাই করছে। তাদের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে নামের গেজেট প্রকাশ এবং সনদ প্রদান করা হবে।
উম্মে রাজিয়া কাজলের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশের জন্য একটি ঘৃণাস্তম্ভ তৈরির পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।”
জাতীয় পার্টির এ কে এম মাঈদুল ইসলামের প্রশ্নে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন জানান, সারাদেশে বর্তমানে ছয় হাজার ৭৪০টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণ ও নবয়ন করেছে চার হাজার ৯৯০টি। ছাড়পত্রবিহিন ইটভাটার সংখ্যা এক হাজার ৭৫০টি।
এম আবদুল লতিফের প্রশ্নে ভূমি মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ জানান, সরকারের বিগত ও চলতি মেয়াদে ১৮ হাজার ২৭টি ভূমিহীন পরিবারের জন্য ৯৯ হাজার ৯৩১ দশমিক ৬২ একর খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে।
একই সাংসদের আরেক প্রশ্নে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে সারাদেশে ছয় হাজার ৬৮ দশমিক ৪৭ একর পরিত্যক্ত সম্পত্তি রয়েছে।
‘গডফাদার ট্রিলজি’র জনক ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার ‘অ্যাপোকালিপ্স নাউ’ ১৯৭৯ সালে জেতে পাম দ’র। ভিয়েতনাম যুদ্ধের পটভূমিতে এই সিনেমার গল্পে দেখা যায় ক্যাপ্টেন উইলার্ড (মার্টিন শিন) নামের একজন যুদ্ধ নায়ককে পাঠানো হয় কম্বোডিয়ায় এক কর্নেলকে (মার্লোন ব্র্যান্ডো) হত্যা করার জন্য, যিনি ওই এলাকায় ঈশ্বরের মতো আধিপত্য নিয়ে থাকেন।
উৎসবের আগে সিনেমাটিকে কানে প্রদর্শন করবেন কিনা- এই নিয়েই সংশয়ে ছিলেন কপোলা। কিন্তু শেষমেশ প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল তার প্রমাণ মেলে স্বর্ণপাম জেতার পর।
২. দ্য লেপার্ড
১৯৬৩ সালে স্বর্ণপাম জেতা এই সিনেমাটি আবারও খ্যাতির আলোয় উঠে আছে ২০১০ সালে কানে এটিকে ফের প্রদর্শনের পর। ইতালীয় নির্মাতা লুসিনো ভিসকন্তির নির্মিত সিনেমাটি গল্প বলে ১৮৬০ সালের সিসিলি বিদ্রোহের সময়কার এক পরিবারের কথা, যারা বৈরি পরিবেশেও নিজেদের আভিজাত্য বজায় রাখার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যায়। অস্কারজয়ী নির্মাতা মার্টিন স্করসেজি এই সিনেমা সম্পর্কে বলেছেন, এটি তার জীবনের দেখা অন্যতম সেরা সিনেমা।
৩. ট্যাক্সি ড্রাইভার
১৯৭৬ সালের কাল্ট ক্লাসিক ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’-এর জয়যাত্রার শুরু কান চলচ্চিত্র উৎসবে স্বর্ণপাম জেতার মাধ্যমেই। ভিয়েতনাম যুদ্ধ ফেরত এক মানসিক ভারসাম্যহীন সৈনিক, সত্তর দশকের শেষে যে উপার্জন করতো শহরের রাস্তায় ট্যাক্সি চালিয়ে- ট্র্যাভিস বিকেল নামের এমন এক চরিত্রে অভিনয় করে রবার্ট ডি নিরো অর্জন করেন বিশ্বজোড়া খ্যাতি। আয়নার দিকে তাকিয়ে ট্র্যাভিসের ‘আর ইউ টকিন টু মি?’ সংলাপটি এখনও থ্রিলার প্রেমীদের মুখে মুখে ফেরে। এই সিনেমায় ১২ বছর বয়সী এক যৌনকর্মীর ভূমিকায় অভিনয় করে রূপালি পর্দায় অভিষেক ঘটে আরেক বিখ্যাত অভিনেত্রী জোডি ফস্টারের।
৪. পাল্প ফিকশন
১৯৯৪ সালে ‘ফরেস্ট গাম্প’ কিংবা ‘শশ্যাঙ্ক রিডেম্পশন’-এর মতো বিখ্যাত সিনেমা থাকলেও কুয়েন্টিন ট্যারেন্টিনোর ‘পাল্প ফিকশন’য়ের জনপ্রিয়তা পৌঁছে যায় আলাদা একটি যায়গায়। উমা থারম্যান, জন ট্রাভোল্টা, স্যামুয়েল এল জ্যাকসন এবং ব্রুস উইলিসদের মতো হেভিওয়েট তারকাদের একই ফ্রেমে বেঁধে ডার্ক হিউমার সৃষ্টির কাজটি যে ট্যারেন্টিনো খুব ভালোভাবেই পেরেছিলেন, তার স্বীকৃতি মিলেছিল কানে সিনেমাটির স্বর্ণপাম জেতার মাধ্যমে।
৫. দ্য ওয়েজেস অফ ফিয়ার
১৯৫৩ সালে হেনরি জর্জেস ক্লুজোর এই সিনেমাটি কানে প্রদর্শনের সঙ্গে সঙ্গেই হইচই পড়ে যায়, কারণ সিনেমার প্রতিটি দৃশ্যই ছিল রোমাঞ্চে ভরপুর। দক্ষিণ আমেরিকার এক প্রত্যন্ত গ্রামে চারজন লোকের শক্তিশালী বিস্ফোরক নাইট্রোগ্লিসারিন বহন করে নিয়ে যাওয়ার গল্পটিকে অভিহিত করা হয় সেসময়ের অন্যতম সফল থ্রিলার হিসেবে। দুই ঘন্টা ১১ মিনিটের এই সিনেমা জিতে নেয় সেবারের স্বর্ণপাম।
এফডিসিতে শিল্পী সমিতিতে তখন নতুন করে ভোট গণনা চলছিল। নির্বাচন কমিশনার ও আপিল বোর্ড সদস্যদের সঙ্গে সেখানে ছিলেন একসময়ের দাপুটে নায়ক-নায়িকা এবং এবারের নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী ওমর সানী ও কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য মৌসুমী। বাইরে সহশিল্পীদের অপেক্ষা। গণমাধ্যমের সঙ্গে যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে বেরিয়ে পড়ার সময় কান্নার শব্দ শোনা যায়। সহশিল্পীরা শুরুতে ওমর সানীকে ঘিরে ধরে কান্নাকাটি করতে থাকেন। সবাইকে নিজের মতো করে সান্ত্বনা দিয়ে গাড়ির দিকে এগিয়ে যান সানী। এরপর মৌসুমী বের হলে তাঁকেও ঘিরে ধরেন অনেক সহশিল্পী।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে এভাবেই মৌসুমী ও ওমর সানীকে এফডিসি থেকে বিদায় জানায় সহশিল্পীদের একটা অংশ।
মৌসুমী ও ওমর সানীকে জড়িয়ে ধরে যাঁদের সবচেয়ে বেশি কাঁদতে দেখা গেছে, তাঁদের মধ্য আছেন কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচিত কমল ও কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য জেসমিন। তাঁদের দাবি, সভাপতি পদে ওমর সানীকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিল্পীদের কাছে তিনি যতটা জনপ্রিয়, তাঁর হারার কোনো কথা না।
মৌসুমী-ওমর সানী দম্পতি তাঁদের সবাইকে বুকে টেনে সান্ত্বনা দেন। মন দিয়ে সবাইকে কাজ করে যেতে বলেন।
মৌসুমী বলেন, ‘আমি আসলে ওদের এমন আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ দেখে কী বলব বুঝতে পারছি না। এটাই আসলে আমাদের শিল্পীসমাজ। এমন একটা পরিবেশ-পরিস্থিতি আজ তৈরি হবে, এটা বুঝতে পারিনি। সব শিল্পীকে ভালোবাসি ও শ্রদ্ধা করি।’
সহশিল্পীদের কাছ থেকে এমন ভালোবাসা পেয়ে ওমর সানীও চোখের পানি আটকাতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘এখনো কেউ মানতেই চায় না আমি হেরেছি। তারা হাউমাউ করে কান্নাকাটি করছে। শিল্পীরা আমাকে যে এভাবে ভালোবেসেছে, এটাই আমার জন্য সবচেয়ে বড় বিজয়। আমি শুধু এটুকু বলব, আমার পুরো অভিনয়জীবনে এমন নির্বাচন দেখিনি।’
বান্দরবনে |আলিকদমের মুরং কমপ্লেক্স
আফরিন জামান লিনা:অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম। এই অঞ্চলে না গেলে বোঝাই যায় না কত অপরুপ সৌন্দর্যে সেজে আছে আমাদের জন্মভুমি।কবির ভাষায় সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি, এত টুকুন মিথ্যা কবি বলেন নাই। এই মাসের মাঝামাঝি আমি ছিলাম এই রুপ সম্রাজ্ঞের বিপুল ভান্ডারের রাজ্যে। হ্যা পার্বত্য চট্টগ্রামে। চিটাগং হিল ট্র্যাক্ট সংক্ষেপে সি এইচ টি। এটা নিয়ে দ্বিতীয়বার আমার এই অঞ্চলে ভ্রমন করা। নিজের লেখালেখির উৎসাহ আর এই বাংলার রুপকে অতি নিকট থেকে দেখার লোভ আবারো নিয়ে গিয়েছিল আমাকে সি এইচ টি তে। বলতে পারেন নিজের গবেষনার খনি খোজার লোভেও চলে যাওয়া সমতল থেকে শত শত মাইল উঁচুতে।
গত ডিসেম্বরে সিএইচটি থেকে ফিরে এসে আমি লিখেছিলাম বান্দরবনে মুরং জনগোষ্ঠীর জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রয়োজন। তখনো আমি জানিনা বান্দরবন জেলার অন্তর্গত আলিকদম উপজেলাতে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর করা মুরং কমপ্লেক্স। বান্দরবান ব্রিগেড এবং আলিকদম জোনের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে এখানে আবাসিক ভাবে রয়েছে ১১৭ জন শিক্ষার্থি। যার ভেতরে ৫০ জন মেয়ে এবং ৬৭ জন ছেলে। আমরা কথায় কথায় আমার দেশের এই অতন্দ্র প্রহরীদের ধিক্কার সহকারে কথা বলি। পার্বত্য চট্টগ্রাম বলতেই আগেই এক ঘা দিয়ে গাল দিয়ে উঠে আমাদের সুশীল সমাজ। তাদের মতে ওখানে সেনাবাহিনী ঘাস কাটে। যদিও পাহাড়ি ঘাস কেটে সুপ্রশস্ত রাস্তা বা মনোহর স্থাপনা সবই এই গাল খাওয়া পার্টিদেরই করা। যা শুধু এই অঞ্চলে গিয়ে একটু সুনজরে তাকালেই দেখতে পাওয়া যায়। মুরং কমপ্লেক্সের কথা জানার পর এবার আমি ছুটে যাই আলিকদমে।বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত বান্দরবান জেলার অন্তর্গত আলিকদম একটি উপজেলা। এই উপজেলার দক্ষিনে রয়েছে মায়ানমার। উত্তরে লামা, পূর্বে থানচি,এবং পশ্চিমে নাইক্ষ্যাংছড়ি উপজেলা।
পারতপক্ষে “আলোহক্যডং” থেকে আলীকদম নামের উৎপত্তি। বোমাং সার্কেল চীফের নথি পত্র ও১৯৬৩ সালের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার কর্তৃক আকা মানচিত্রে আলোহক্যডং নামের সত্যতাপাওয়া যায়। বিশিষ্ট সাংবাদিক ও গবেষক আতিকুর রহমান এর মতে আলী পাহাড়ের সাথে সঙ্গতি শীলনাম হল আলীকদম। তাছাড়া কথিত আছে যে ৩৬০ আওলিয়া এ উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারের জন্যএসেছিলেন। তাদের মধ্যে আলী নামে কোন এক সাধক এতদঞ্চলে আসেন। উনার পদধুলিতে ধন্য হয়ে এএলাকার নাম করণ হয় আলীকদম। পূর্ববর্তী সময়ে এটি লামার একটি ইউনিয়ন ছিল। ১৯৮২সালেবাংলাদেশ সরকার প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণের ফলে একে উপজেলায় অধিষ্ঠিত হয়।৬৩৬ টি গ্রাম বাপাড়ার সমন্বয়ে আলীকদম উপজেলায় আলীকদম সদর ও চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের আওতায় ৪ টি ইউনিয়নপরিষদ ।আলীকদম সদর,চৈক্ষ্যং,নয়াপাড়া,কুরুকপাতা। আর এই আলিকদম সদরেই রয়েছে মুরং কমপ্লেক্স। ২০০৮ সালের ১৫ই জুলাই ৩৫ জন শিক্ষার্থি নিয়ে আলিকদম জোনের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদের হাত ধরে মুরং কপ্লেক্সের জন্ম।যেখানে এখন রয়েছে ১১৭ জন ছাত্রছাত্রী। এখান থেকে এস এস সি পাস করে মুরং ছেলেমেয়েরা চলে যাচ্ছে সমাজের নানা স্তরে। কেউ উচ্চতর পড়াশোনা কেউ চাকুরী কেউ ব্যাবসা। পার্বত্য অঞ্চলের মুরংদের শিক্ষার নিম্ন অবস্থানের জায়গা থেকে তুলে আনার এই প্রচেষ্টাকে স্বাগত না জানানোর কোন কারন থাকতে পারে বলে মনে করা উচিৎ নয়। অথছ স্বাগত দূরে থাক এই অঞ্চলের একটা বড় অংশ এই কার্যক্রম সম্পর্কে জানেই না। জানবেই বা কি করে এখানে যে প্রচার করার কেউই নেই। যেসব সুশীল সমাজ এই অঞ্চল নিয়ে কাজ করছেন তারা এই সকল অবাঞ্ছিত মানুষদের জন্য না কথা বলে কথা বলছেন যাদের হয়ে বা যে বিষয়গুলি নিয়ে তা এই পাহাড়ের সরল মানুষগুলির কতখানি প্রয়োজনে আসছে এটাও একটু খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
যারা খুব দর্পের সাথে বলছেন সেনাবাহিনীর এখানে কি কাজ? তাদের বলি আপনারা দয়া করা সেনাবাহিনীর এই মাছি মারার দায়িত্বটা নিন। যে ছেলেটা ২০/২১ বছরের তরুন ল্যাফটেন্যান্ট সে তার পরিবার,সমাজ,চাকচিক্যময় কর্মস্থল ছেড়ে এখানে এসে আসলে বসে কি করছে!!!!!!! এই অভিজ্ঞতাটা আপনাদেরো থাকা উচিৎ। যেই অঞ্চলে বিদ্যুৎ নেই,প্রযুক্তির ছোয়া নেই সেই ধরনের একটা পাহাড়ের উপরে একটা ক্যাম্প করে ওরা আসলে কেন থাকছে?? ঐ ক্যাম্পের পাস দিয়ে যেই সুপ্রশস্ত রাস্তা চলে গেছে আপনাদের পৌঁছানোর জন্য সেই রাস্তা করার দায় কি ওর???? যেই অঞ্চলে বিদ্যুৎ নেই সেখানে বিদ্যুতের খাম্বা বসানোর দায়িত্ব কি ওর??? যে এলাকায় মেডিকেল সেবা নেই সেই এলাকায় ঔষধ পৌছে দেবার দায়িত্ব কি শুধুই ওর??? আপনারা কেন রাজধানীর বুকে এসির হাওয়াতে বসে ওদের গাইল দিচ্ছেন??? আপনারাই তো এই পাহাড়ের সরল মানুষগুলির ভালবাসার গঙ্গা। আসুন না ওদের কাছে। থাকুন ওদের সাথে মিশে। আপনাদের কন্ঠগুলি কেন ওদের শিক্ষা নিয়ে হয়না??? কেন ওদের সামাজিক অবস্থান নিয়ে হয়না??? যখন একটা পাহাড়ি মেয়ে তার পৈত্রিক সম্পত্তিকে বেদখল হয়ে যাবার জন্য কেঁদে ফিরে কেন আপনাদের কন্ঠ তাদের জন্য কথা বলেনা??? কেন মুকুল চাকমা অপহৃত হবার পরে তার মেয়ে নমিশা চাকমা বা মনিশা চাকমার জন্য আপনারা কথা বলেন না? মুকুল চাকমা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সদস্য ছিল তাই????? কোথায় নমিশা??? কেন মানবাধিকার এখানে নিশ্চুপ??? কথা বলতে জানেন, প্রতিবাদ করতেও জানেন,আপনারাই এইগুলির অধিপতি, তাহলে আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গি এত পক্ষপাতিত্য কেন???? সেনাবাহিনীর কোন সদস্য ঐ অঞ্চল কিনে নিয়ে বসে নেই। ওরা মাসে সেই বেতনই পায় যেই বেতন সমতলের সৈন্যরা পায়।তাহলে আপনারাই বলুন কিসের লোভে ওরা ঐ দুর্গম অঞ্চলে পড়ে থাকে??? আমার লেখার উদ্দেশ্য কোন বাহিনীকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া নয় কারন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দিকে যারা কাঁদা ছুড়ে দিচ্ছেন তারা হয়ত নিজেরাই বুঝে না কাঁদাটা ঘুরে তাদের গায়েই এসে লাগছে কারন দেশটা আমাদের সবার। আমার দেশের অহংকার আমার দেশের সম্মানকে কাঁদা লেপন করার মহৎ উদ্দেশ্য গ্রহনকারীরা কতখানি দেশপ্রেমিক এটাও দেখার বিষয়। পার্বত্য অঞ্চলে কাজ করতে গিয়ে পাহাড়ের সরল মানুষগুলির আচরন শুধু কাছেই টানেনা ওদেরকে নিয়ে ভাবায়। তবে বিষয়টা হচ্ছে সেই ভাবনাটাকে কে কোন ভাবে ব্যবহার করছে। আমরা কেন ওদের শিক্ষা নিয়ে লড়াই করিনা। আমি শুধু যদি এক আলিকদমের শিক্ষার সমিকরন দাড় করাই তাতেই বোঝা যাবে ঐ অঞ্চলের শিক্ষার হার সমতল থেকে কতখানি নিচেয় আছে। পার্বত্য আলীকদম উপজেলায় স্বাধীনতা পূর্ববর্তী কাল থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার সূচনা হয়। ১৯৬০ সালে ‘আলীকদম প্রাথমিক বিদ্যালয়’ বর্তমান আলীকদম আদর্শ সরকারিপ্রাথমিক বিদ্যালয়’টির গোড়াপত্তন ঘটেছিল। এ উপজেলা শিক্ষাক্ষেত্রে খুবই অনগ্রসর জনপদ। আধুনিকবিশ্বে বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির চরম উৎকর্ষর এ যুগে শিক্ষিত সমাজ সৃষ্টি না হলে দারিদ্র বিমোচন থেকেশুরু করে কোন পরিকল্পনা প্রণয়ন, উন্নয়ন বাস্তবায়ন, সংস্কৃতি ও শিল্প-সাহিত্য চর্চাকে এগিয়ে নেওয়াঅসম্ভব। অথচ এখানে একটি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, একটি বেসরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও একটিদাখিল মাদরাসা রয়েছে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে। বাস্তবতার নিরিখে বলতে হয়, এসবশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমুহের লেখাপড়ার মান ও পরিবেশ কাঙ্খিতমানের নয়। দু:খজনক হলেও সত্য যে,এতদাঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার জন্য কলেজ না থাকায় দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীরা অধিকন্তু উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। তবে আশার কথা যে, আলীকদম জোনের সাবেক অধিনায়ক লেঃ কর্ণেলআবুল কালাম আজাদ, পিএসসি, এলএসসি’র উৎসাহ-উদ্দীপনায় স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের দাবীর প্রেক্ষিতে‘আলীকদম মৈত্রী জুনিয়র হাইস্কুল (প্রস্তাবিত স্কুল এন্ড কলেজ)’ নামে আরো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরগোড়াপত্তন হয়েছে। আর সেখানেই যোগ হয়েছে মুরং কমপ্লেক্স। নিদৃষ্ট একটি পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীকে টেনে তুলে আনার একটা মহতী উদ্যোগ। যে জাতির শিক্ষার অবস্থা এমন তাদেরকে আপনারা শিক্ষার আলোর জন্য লড়াই করতে না শিখিয়ে কোন অধিকার আদায় করতে শেখাচ্ছেন??? আপনাদের অধিকার আদায়ের লড়াইকি পাহাড়ের সাধারন জনগোষ্ঠীর জন্য না নিদৃষ্ট গুটি সংখ্যক অস্ত্রধারীদের উস্কে দেবার জন্য??? আন্দোলনের ইস্যুগুলি একবার নিজেরাই খতিয়ে দেখুন। ৩০ লক্ষ প্রানের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা, এই বাংলাদেশ। একটি সোনার বাংলার গড়ার আশায় হায়েনাদের মুখ থেকে যে দেশকে আমরা ছিনিয়ে এনেছিলাম সেই স্বাধীন বাংলার সোনার রাজ্যের মানুষগুলিই অন্ধকারে পড়ে আছে। তাই বলছি নিদৃষ্ট একটি বাহিনীকে নিজেদের প্রতিহিংসার আগুনে পোড়ানোর চেষ্টা না করে আসুন সবাই মিলে ওদের শিক্ষার আলোতে আনার চেষ্টা করি। মুরং কমপ্লেক্সের মত আরো কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলি, হোক সেটা সেনাবাহিনীর হোক ব্যাক্তিমালিকানার,হোক সরকারী, হোক আধা সরকারী। ঐ এলাকায় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার জন্য লড়াই করুন দেখুন এই মহতি কাজে অন্তরায় কারা হয়ে দাঁড়ায়।
পার্বত্য অঞ্চলের প্রতিটা উপজেলা প্রতিটা থানায় স্কুল হোক,আর কমপ্লেক্সই হোক ওদেরকে প্রাথমিক শিক্ষার ব্যাবস্থা করিয়ে দেবার জন্য সরকারের সূদৃষ্টি কামনা করছি। আর সুশিলদেরকে আবারো বলছি ওদেরকে আলোতে আসতে উৎসাহ দিন ওরা শিক্ষিত জাতি হয়ে উঠুক এরপর ওরাই সিদ্ধান্ত নিবে ওরা কি হতে চায় বাংলাদেশের সুনাগরিক না অন্য কিছু। আপনারা কতজন সাধারন পাহাড়িদের মতামত নিয়েছেন আমি জানিনা তবে এটা নিশ্চিত শতকারা ৯০ ভাগ সাধারন মানুষ চায় সুনাগরিক হতে। যারা ঘরে বসে সমালোচনায় বিভোর তাদেরকে আহ্বান করব একবার আলিকদম যান। দেখে আসুন মুরং কমপ্লেক্স। আমি যখন ওদের কাছে যাই ওদেরকে এক সারিতে দাড় করিয়ে গাওয়াই আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি,সে সুখের অনুভুতি বোঝাতে পারব না। শুধুই মনে হচ্ছিল এই সোনার বাংলাই তো আমার বাবা সহ আমার দেশের লাখো শহিদের রক্ত চেয়েছিল।আপনারা যারা আজ ঐ অঞ্চলের সরল মানুষ গুলিকে আলাদা করে দেখার কথা ভাবছেন তাদেরকে মনে করিয়ে দেই বঙ্গবন্ধু যেই সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালীর জন্য স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগোষ্ঠী কিন্তু তাদের বাইরে ছিলনা। ঐ অঞ্চলেও মুক্তি যুদ্ধ হয়েছে, ঐ জায়গাকেও এই দেশের মানুষ প্রানের বিনিময়ে স্বাধীন করেছে। যার জলন্ত প্রমান বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ। যার সমাধি ঐ অঞ্চলেই আছে। সুতারাং আমার দেশের একটা অংশকে নিয়ে কারোরই কোন অপরাজনীতি করার অধিকার নেই। ঐ অঞ্চলের প্রতিটা মানুষকে সেই অধিকারের জন্য লড়াই করতে শেখান উচিৎ যে অধিকার এদেশের সমতলের বাকি জনগোষ্ঠী গুলো পাচ্ছে।
একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ডলি সায়ন্তনী। অডিও ক্যাসেটের যুগে তার অসংখ্য গানের অ্যালবাম প্রকাশ পেয়েছে। বর্তমানে অ্যালবাম প্রকাশ থেকে দূরে রয়েছেন ডলি। কিন্তু গানের সঙ্গেই আছেন তিনি। নতুন করে প্রত্যাবর্তনের কথাও ভাবছেন।
কেমন কাটছে দিনকাল? এমন প্রশ্নের জবাবে ডলি সায়ন্তনী বলেন, ‘এইতো বেশ ভালো আছি। গান নিয়েই দিন কাটছে। আর আমার মেয়েদেরও সময় দিচ্ছি। পরিবার ও গান নিয়েই মূল ব্যস্ততা।’
অ্যালবাম থেকে দূরে থাকলেও অন্যশিল্পীরা স্টেজ শো নিয়ে মেতে আছেন। কিন্তু ডলি বললেন, ‘খুব বেশি স্টেজে গাচ্ছি তা কিন্তু না। তবে বড় মাপের শো-গুলোতে অংশ নেয়ার চেষ্টা করি আমি। গত কয়েক মাস ধরে ব্যাস্ততাটা একটু বেশি। বর্ষার মৌসুম চলে আসছে। তখনতো আর শো আয়োজন হবে না। তাই এখন একটু কষ্ট হলেও টানা শো করতে হচ্ছে। গত কয়েকদিনে দিনাজপুর, চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে শো করেছি।’
ডলি সায়ন্তনী বলেন, ‘যেহেতু আমি শিল্পী, তাই গান গাওয়াটাই আমার কাজ। ফলে স্টেজ শোর পাশাপাশি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলেও লাইভ করছি। আবার শুটিংও থাকে নিয়মিত। এইসব নিয়েই আসলে ব্যস্ততায় কাটছে সময়।’
এদিকে ডলি সায়ন্তনী টুকটাক চলচ্চিত্রের গানেও কণ্ঠ দিচ্ছেন। সর্বশেষ নাদের চৌধুরী পরিচালিত ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’ ছবিতে ‘মনের মধ্যে’ শীর্ষক একটি গান গেয়েছেন। মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের কথায় এ গানটির সুর ও সংগীত করেছেন ফরিদ আহমেদ।
গত বছর প্রকাশ হয়েছিলো ডলি সায়ন্তনীর একক অ্যালবাম ‘একলা হবি’। এর দু’টি গানের মিউজিক ভিডিও প্রকাশ করতে যাচ্ছেন এই তারকা। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে জানাবেন তিনি।
ডলি সায়ন্তনী বলেন, ‘নতুন গানের কাজ চলছে। বেশ কিছু গানের রেকর্ডিং হবে সামনে। তবে অ্যালবাম আকারে করব নাকি ভিডিও আকারে একটি করে গান প্রকাশ করবো তা এখনও ঠিক করিনি। এ বছর শ্রোতারা বেশ কিছু নতুন গানে আমাকে পাবেন এতটুকু বলতে পারি।’
এখন অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা প্রসঙ্গে ডলি সায়ন্তনী বলেন, ‘আসলে খুব খারাপ অবস্থা থাকার কারণেই আমি বিরতি নিয়েছিলাম। এখন অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা ভালোই বলা চলে। পুরনো অনেকেই ফিরছেন। আমিতো ভেবেছিলাম আর হয়তো আগের অবস্থায় ফিরবে না ইন্ডাস্ট্রি। সেটা হয়তো এখনও হয়নি। তবে অবস্থার কিছুটা হলেও উন্নতি হয়েছে। এখন অনেক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানই বিনিয়োগ করছে। পুরোনো কোম্পানিগুলো ফিরছে। নতুন কোম্পানি আসছে। এটা অডিও ইন্ডাস্ট্রির জন্য সুখবর। এখন সিডির বদলে ডিজিটাল মাধ্যমে শ্রোতারা গান বেশি শুনছেন। এটা সময়ের চাহিদা। সারা বিশ্বেই এমনটা হচ্ছে। আশা করছি সবাই মিলে আগের মতো করে কাজ করতে পারব।
বলিউড ছবির দাপুটে অভিনেতা ইরফান খান। শুধু ভারতই নয়, অভিনয় দক্ষতা দিয়ে এরই মধ্যে সারা বিশ্বের দর্শকদের হৃদয় জয় করেছেন তিনি। বলিউড ছাড়িয়ে হলিউডের বড় বড় ছবিতেও নিজের অভিনয় কারিশমা দেখিয়েছেন। এরইমধ্যে বিভিন্ন চরিত্র নিয়ে দর্শকদের সামনে হাজির হয়েছেন এ গুণী অভিনেতা। তবে তাকে যদি শাড়ি পরিহিত অবস্থায় দেখা যায় কেমন হবে ব্যাপারটা? ঠিক এমনটাই ঘটেছে। বর্তমানে সাকেট চৌধুরী পরিচালিত ‘হিন্দি মিডিয়াম’ ছবির দৃশ্যধারণের কাজ শুরু করেছেন ইরফান খান। ছবিতে একজন শাড়ির দোকানের মালিকের চরিত্রে দেখা যাবে তাকে। এজন্য ছবির কয়েকটি দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে নিজের শরীরে শাড়ি জড়িয়েছেন তিনি। এরইমধ্যে ইরফানের এ শাড়ি পরা ছবিটি নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেছে। সাকেট চৌধুরী পরিচালিত ‘হিন্দি মিডিয়াম’-এ ইরফানের পাশাপাশি অভিনয় করছেন সাবা কামার, অমৃতা সিং, যশপাল শর্মা, বিজয়কুমার দগরা প্রমুখ। আগামী ১২ই মে মুক্তি পাবে ছবিটি।
অনেকদিন ধরেই বলিউডে নেই সাবেক বিশ্ব সুন্দরী ও বলিউড অভিনেত্রী সুস্মিতা সেন। সবশেষ ২০১৫ সালে ‘নির্বাক’ ছবিতে দেখা গেছে বলিউডের এই অভিনেত্রীকে। এরপর থেকে অনেকটাই আড়ালে চলে গেছেন। শেষবারের বিশ্ব সুন্দরীর বিচারক হিসেবে অবশ্য তাকে পাওয়া গেছে। কিন্তু টিভি পর্দা কিংবা চলচ্চিত্রে একেবারেই নেই সুস্মিতা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তাকে তেমন একটা পাওয়া যায় না। তবে এবার আড়াল ভাঙলেন এ অভিনেত্রী। তাও আবার মেয়েকে নিয়ে। গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে নিজের নাচের একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন সুস্মিতা। ওই ভিডিওতে ছোট মেয়ে আলিশা ছিল তার সঙ্গে। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করার পরপরই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটিতে দারুণ ভঙ্গিমায় ও খোলামেলাম পোশাকে মজা করে মেয়ের সঙ্গে নাচতে দেখা যায় সুস্মিতাকে। এ ভিডিওর বিপরীতে ভক্তরা সুস্মিতা ও তার মেয়ের এই ভিডিওর প্রশংসায় ছিল পঞ্চমুখ।