চট্টগ্রাম ব্যুরো :: অবিভক্ত ভারতবর্ষের অসাম্প্রদায়িক মননের মনীষী, বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব, প্রখ্যাত সাহিত্যিক, সাংবাদিকতার পথিকৃৎ, শিক্ষা বিস্তারের অগ্রদূত, মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী’র ৭২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভা অদ্য ২৪ অক্টোবর কদম মোবারক মুসলিম এতিমখানা’র উদ্যোগে মোমিন রোডস্থ এতিমখানা প্রাঙ্গণে কদম মোবারক এতিমখানার সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের প্রেসিডেন্ট (ইনচার্জ) লায়ন সৈয়দ মোরশেদ হোসেন’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এসডিজি ইয়ুথ ফোরাম’র সভাপতি নোমান উল্লাহ বাহার’র সঞ্চালনায় সভায় মূখ্য আলোচক ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস গবেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষাবিদ শামসুদ্দিন শিশির, অধ্যক্ষ ড. মোঃ সানাউল্লাহ, কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদের খতীব অধ্যক্ষ আল্লামা বদিউল আলম রিজভী, কদম মোবারক মুসলিম এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক আবুল কাশেম, ইসলামাবাদীর দৌহিত্র ও যুব উদ্যোক্তা এ.এম.এস. ইসলামাবাদী গাজী, কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদের মতোয়াল্লী মোহাম্মদ আজাদুল্লাহ খান, এতিমখানা পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, লেখক নেছার আহমেদ খান, সংগঠক বোরহান উদ্দিন গিফারী, হাফেজ মাওলানা ইকরাম হোসেন, মিনহাজুর রহমান শিহাব প্রমুখ। সভায় ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন ও সোচ্চার। চট্টগ্রামের যেসব মনীষী তাঁদের অলোকসামান্য প্রতিভার ছটায় নিখিল বঙ্গদেশকে উদ্ভাসিত করে তুলেছিলেন, যাঁরা কলকাতাকে কেন্দ্র করে ব্রিটিশ-বাংলা ও বার্মার স্থানে স্থানে সাময়িক কর্মস্থল স্থাপন ও পরিভ্রমণ করে জাতিকে জাগানোর প্রায় অসম্ভব সাধনায় লিপ্ত হয়েছিলেন, মাওলানা ইসলামাবাদী তাঁদের মধ্যে সর্বাগ্রগণ্য। সাহিত্য, সাংবাদিকতা, শিক্ষকতা, সমাজসংস্কার, ধর্মপ্রচার, রাজনীতি, আইনসভা যখন যেদিকে তিনি তাঁর প্রতিভা কর্ষণ করেছেন, মুঠো মুঠো ফসলে যেন তাঁর গোলা ভরে উঠেছে। এমনই বিচিত্র পথে বিপুল সৃজনপ্রসূ হয়েছিল তাঁর যুগন্ধর প্রতিভা। মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী ছিলেন মানবতাবাদে উজ্জীবিত, অহিংস মতবাদের ধারক, সুশিক্ষার প্রসারে দক্ষ এক পুরোধা ব্যক্তিত্ব, উদার চিন্তার ইসলামি চিন্তাবিদ ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার মনীষী। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও আর্থসামাজিক উন্নয়নসহ স্বাধীনতা সংগ্রামের অতন্দ্র প্রহরী এবং বিপ্লবীও ছিলেন তিনি। বক্তারা বলেন, মাওলানা ইসলামাবাদী ছিলেন একজন ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ, গোঁড়ামিমুক্ত ধর্মীয় নেতা, নিরলস কর্মী, অসাধারণ পান্ডিত্যের অধিকারী, অনন্য সমাজ সংস্কারক, শিক্ষা সম্প্রসারণের অগ্রদূত এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, দাতা ও সমন্বয়কারী। নিজের ভোগ-বিলাস পরিহার করে দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করে পরহিতব্রতে স্বীয় জীবন নিঃস্বার্থভাবে বিলিয়ে দিয়েছেন যা সকলের জন্য অনুসরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবে। প্রখ্যাত আলেম হওয়ার পাশাপাশি তিনি ছিলেন যুক্তিবাদি, বিজ্ঞানমনষ্ক ও সমাজনিবিষ্ট জনসেবক। বক্তারা আরো বলেন, স্বকীয় সাধনা, চিন্তা, ত্যাগী জীবন সংগ্রাম ও ইতিবাচক কর্মযজ্ঞের ফলশ্রুতিতে মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী ভারতবর্ষের ইতিহাসে অনন্য মর্যাদায় সমাসীন হয়েছেন। তিনি উপমহাদেশে অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ দর্শনের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবেন ।
উল্লেখ্য, ২৪ অক্টোবর মাওলানা ইসলামাবাদীর মৃত্যুবার্ষিকীতে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান আলোচনা সভার আয়োজন করে। এছাড়া তার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পন, জেয়ারত, দোয়া মাহফিল ও তবারুক বিতরণের মাধ্যমে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি সম্পন্ন হয়।
বান্দরবান প্রতিনিধি ॥ বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির সীমান্তর্বতী বিভিন্ন দুর্গম এলাকা থেকে নতুন জঙ্গি সংগঠন “ জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ” ৭ জন এবং পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের ৩ জনসহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে র ্যাব। এ সময় তদের কাছ থেকে বিপুল অস্ত্র , গোলাবারুদ ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার (২১ অক্টোবর) বান্দরবানের মেঘলা এলাকায় র্যাব-১৫ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রেস ব্রিফিংকালে র ্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এই তথ্য নিশ্চিত করেন । তিনি বলেন, সম্প্রতি নতুন জঙ্গি সংগঠন “ জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার’র ” শীর্ষ নেতাদের ধরতে পাহাড়ে অভিযান শুরু হয়। সম্প্রতি জঙ্গিবাদে জড়িয়ে নতুন করে কথিত হিজরতের নামে ঘরছাড়া তরুণরা জামাতুল আনসারের হয়ে পাহাড়ি এলাকার আস্তানায় আশ্রয় নেয়। এসব আস্তানায় হিজরত করা তরুণদের ভারি অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
তিনি আরো জানান , উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বেচ্ছায় হিজরতের নামে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হওয়া বিভিন্ন জেলার ৫০ তরুণের তথ্য পায় র্যাব, তাদের মধ্যে ৩৮ জনের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা প্রকাশ করা হয়। বান্দরবানের সীমান্তবর্তী সীমান্তঘেঁষা দুর্গম পাহাড়ে বাড়িছাড়া কিছু তরুণ জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, নতুন এ জঙ্গি সংগঠনকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট’ (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে টানা অভিযান চালিয়ে বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ৭জন এবং পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের ৩ জনসহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করে র ্যাব। এ সময় তদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ৯টি বন্ধুক, ৫০ রাউন্ড গুলি , ৬২টি কার্তুজ কেইস, ১টিওয়াকটকি, হাত বোমা ৬টি, মানচিত্র ও বিভিন্ন ধরনের পোশাক।
পার্বত্য এলাকায় সাধারণ জনগণের উন্নয়ন ব্যাহত ও শান্তি শৃংঙ্খলা ভঙ্গে যারা জড়িত থাকবে এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করবে সেই ধরণের সকল সংগঠন ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান র ্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো :: ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) দ্বি–বার্ষিক নির্বাচনের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছেন সিইউজে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেমুল হক।
সোমবার (১০ অক্টোবর) রাতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে সিইউজের দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভার মুলতবি সভায় তিনি ফলাফল ঘোষণা করেন।
উৎসবমুখর পরিবেশে ফুল দিয়ে বরণ করা হয় বিজয়ীদের।
বৃহষ্পতিবার (৬ অক্টোবর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সাধারণ সভার প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হেলাল উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মুলতবি সভায় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নিজাম উদ্দিন আহমদ, নুরুল আমিন, মোরশেদ আলম, কামাল পারভেজ। সিইউজের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, নবনির্বাচিত সভাপতি তপন চক্রবর্তী, সভাপতি প্রার্থীদের পক্ষে আসিফ সিরাজ, সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম প্রমুখ।
শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি শহীদুল আলম।
বক্তারা ঐতিহ্যবাহী সিইউজের গৌরব অক্ষুণ্ন রেখে সাংবাদিকদের পেশাগত মর্যাদা, নিরাপত্তা ও অধিকার আদায়ের সংগ্রাম এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলানিউজের ডেপুটি এডিটর তপন চক্রবর্তী। পুনরায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন দেশ রূপান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার ম. শামসুল ইসলাম।
সভাপতি পদে তপন চক্রবর্তী পেয়েছেন ১৭৬ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোস্তাক আহমদ পেয়েছেন ১০৫ ভোট।
সিনিয়র সহ সভাপতি ২৩৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন রুবেল খান। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রতন কান্তি দেবাশীষ পেয়েছেন ১৩২ ভোট।
সহ সভাপতি পদে ১৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন অনিন্দ্য টিটো। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শামসুল হুদা মিন্টু পেয়েছেন ১৭২ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক পদে ম. শামসুল ইসলাম ১৯২ ভোট পেয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সবুর শুভ পেয়েছেন ১২২ ভোট।
যুগ্ম সম্পাদক পদে ১৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সাইদুল ইসলাম। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আরিচ আহমেদ পেয়েছেন ১৩৬ ভোট।
অর্থ সম্পাদক পদে ১৮৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মুজাহিদুল ইসলাম। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সৌমেন ধর পেয়েছেন ১৭৭ ভোট।
সাংগঠনিক সম্পাদক ১৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মহরম হোসাইন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সুবল বড়ুয়া পেয়েছেন ১২৯ ভোট।
প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ২২৯ ভোট পেয়ে সরওয়ার কামাল নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মিজান ইউসুফ পেয়েছেন ১২৯ ভোট।
নির্বাহী সদস্য পদে আলাউদ্দিন হোসেন দুলাল ২০৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিশু রায় চৌধুরী পেয়েছেন ১৫১ ভোট।
ঢাকা: নবনিযুক্ত মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন বিশেষায়িত বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সংস্কারের কোনো প্রশ্নই আসে না বললেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন বাহিনীটি সবসময়ই সংস্কারের মধ্যে আছে। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এলিট ফোর্সটিতে যারা অপরাধ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তাদের অনেকে জেলে আছেন।
রোববার (২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁওয়ে মানব পাচার নিয়ে (লঞ্চিং অব দ্যা ফার্স্ট ন্যাশনাল স্টাডি অন ট্রাফিকিং ইন প্রিজনস ইন বাংলাদেশ) আয়োজিত গবেষণা প্রতিবেদন উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ দাবি করেন মন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এলিট ফোর্স র্যাবকে আমরা দায়িত্ব দিয়ে থাকি। বাহিনীটি সে নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করে। যদি কেউ ভুল করেন, আমাদের কাছে যে রিপোর্ট আসে; আমরা সেগুলো স্টাডি করি। কারও যদি এখানে ইনভলভম্যান্ট থাকে সেটিও আমরা দেখছি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমাদের কাছে যে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে, সেগুলো আমরা প্রতিনিয়ত যাচাই করে দেখছি। সেখানে যদি কোনো ভুল থাকে তাও দেখা হবে।
র্যাব সংস্কার ও জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান কি? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, র্যাব যখন তৈরি হয়, তাদের ট্রেনিং ইউএসএ দিয়েছে। কাজেই আমরা মনে করি র্যাব যদি কোনো ভুল করে থাকে তবে সেগুলোও আমরা দেখছি। র্যাব বা পুলিশ যারাই অপরাধযোগ্য কাজ করছে তারা কিন্তু শাস্তির বাইরে যায়নি। এখনও অনেক পুলিশ ও র্যাব সদস্য জেল খাটছে। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। আমাদের জানতে হবে তারা অন্যায়টা কি করছে। আর সংস্কারের কথা বলতে র্যাব সবসময় সংস্কারের মধ্যেই আছে। আমরা সবকিছু আধুনিক করছি। যেটা প্রয?োজন সেটাই দিচ্ছি।
এর আগে মানব পাচার নিয়ে আয়োজিত গবেষণা প্রতিবেদন উন্মোচন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানব পাচার বিশ্বব্যাপী সমস্যা। ভুক্তভোগীদের যারা পাচার করেছে তাদের শাস্তির মুখোমুখি এনে এ সমস্যার সমাধান করতে চাই।
২০১২ সালে আইন তৈরি করা হয়েছে। কমিটিও গঠন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
চট্টগ্রাম ব্যুরো :: বাড়তি দামে যন্ত্রপাতি কিনে ৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা একটি মামলায় চট্টগ্রামের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সরফরাজ খান চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (২৮ আগস্ট) সকালে মহানগর দায়রা জজ ও স্পেশাল জজ ডা. বেগম জেবুননেছার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করা হয়।
আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মহানগর পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, একটি এমআরআই মেশিনের বাজারমূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা হলেও চট্টগ্রাম জেনালের হাসপাতাল সেটি কিনে ৬ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকায়। একইভাবে চারটি কালার ডপলার কেনা হয় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকায়। যদিও এই মেশিনের দাম মাত্র ৯৮ লাখ টাকা। এভাবে বাজার মূল্যের চেয়ে দুই-তিনগুণ বেশি দাম দেখিয়ে মোট ৯ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকা সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর সাতজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন দুদক সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম ১-এর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. মো. আব্দুর রব, জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থোপেডিক সার্জারি) ডা. মো. মইন উদ্দিন মজুমদার, সিনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) ডা. বিজন কুমার নাথ, যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. জাহের উদ্দিন সরকার, মেসার্স আহম্মদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মুন্সী ফারুক হোসেন এবং এএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আফতাব আহমেদ।
২০১৪ সালে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জন্য যন্ত্রপাতি কেনার ক্ষেত্রে এ দুর্নীতি হয়েছিল বলে মামলার এজাহারে লেখা রয়েছে। ডা. সরফরাজ খান চৌধুরী চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জনের পাশাপাশি ওই সময় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবার পাশাপাশি সকলকে সঞ্চয় করার এবং দেশব্যাপী খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে যে কোন সংকট মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মহামারি করোনা ভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মূদ্রাস্ফীতির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা, বিদ্যুতের অভাব এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের শুরু থেকেই সর্তক থাকতে হবে। আমরা যদি সাবধানে এগিয়ে যাই, ইনশাআল্লাহ আমাদের কোন সমস্যা হবে না, এটা আমার বিশ্বাস।’
প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সকালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি’র ভাষণে এ কথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা সেনানিবাসের পিজিআর সদর দপ্তরের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
সরকার প্রধান বলেন, চলমান করোনা ভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, গ্রেট ব্রিটেনের মতো উন্নত দেশগুলোসহ বিশ্বব্যাপী মূদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি কয়লা না পাওয়া এবং গ্যাস ও ডিজেলের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী উপাদানের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির কারণে সেখানেও এখন বিদ্যুতের তীব্র সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, যুদ্ধের কারণে নিয়মিত জাহাজ চলাচল না করায় বিশ্ব বর্তমানে পরিবহন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, পরিবহন ব্যয় অত্যাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত জ্বালানির ব্যবহার কমাতে এলাকাভিত্তিক নির্দিষ্ট সময়ের লোডশেডিং করে বিদ্যুতের ব্যবহার কিছুটা কমানো যায় কি-না সে চিন্তাও করছেন তিনি। তবে সে ক্ষেত্রে আকস্মিক নয়, মানুষকে প্রস্তুত থাকার সময়টা দিয়েই তা করা যেতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিদ্যুতের ব্যাপারে আমাদের শুধু সাশ্রয়ীই হলে চলবে না। আমি যেমন চিন্তাও করেছি কিছুটা সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন একটু কমিয়ে দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে উপাদানগুলো সেগুলো যেন আমরা কম ব্যয় করতে পারি।’
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দেশবাসী প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং প্রত্যক্ষ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন বিশ^ পরিস্থিতির কারণে সংকট উত্তরণে এলাকা ভিত্তিক কিছুটা লোডশেডিং চলতে পারে।
সরকার প্রধান বলেন, ‘এখন আমরা একটা সুনির্দিষ্ট সময় যদি ধরে দেই যে একেক এলাকাভিত্তিক কিছুক্ষণের জন্য সেখানে বিদ্যুতের কিছুটা লোডশেডিং হবে, হঠাৎ যাবে হঠাৎ আসবে না, মানুষ প্রস্তুতি নিতে পারবে। সেভাবেই আমাদের কিছু কিছু পদক্ষেপ এখন থেকেই যদি আমরা নেই তাহলে আগামী দিনে যে আরো সমস্যাটা দেখা দিতে পারে সে পরিস্থিতি থেকে আমরা নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারবো।’
‘অনেক উন্নত দেশে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে,’ উল্লেখ করে তিনি দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি এবং জলাশয়কে কাজে লাগানোর মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ব্যক্তি থেকে প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সকলের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আরও যোগ করেন, ‘সে ক্ষেত্রে, আমরা যদি সাশ্রয়ী হয়ে উঠি এবং আমাদের সঞ্চয় বাড়াতে পারি তাহলে যে কোনও পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারবো।’
সরকার প্রধান বলেন, তাঁর সরকার প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে এবং দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে প্রতিটি গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষকে ঘর-বাড়ি করে দিচ্ছে।
ঢাকা : পবিত্র ঈদুল আজহার আগে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল চালু না হওয়ার আভাস দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে রোববার (৩ জুলাই) ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
ঈদের আগে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চালু হচ্ছে কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা নিয়ে উনারা (কর্তৃপক্ষ) কাজ করছেন। পদ্মা সেতুতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সসহ ক্যামেরা বসবে। স্পিডগানও বসানো হচ্ছে। এগুলো বসলে তারপর উনারা কম্পোর্ট অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন, কী করা যায়।
এটা কী ঈদের আগে হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদের আগে হওয়া খুব ডিফিকাল্ট। আমার মনে হচ্ছে, ঈদের আগে মনে হয় না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৫ জুন দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা সেতু উদ্বোধন করে। উদ্বোধনের পরদিন থেকে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। কিন্তু দুর্ঘটনায় ওইদিন দুই মোটরসাইকেল আরোহী মারা যায়। পরে ২৭ জুন থেকে েপদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সারা দেশের সাংবাদিকদের জন্য একটা ডাটাবেজ তৈরি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রকৃত সাংবাদিকদের ভুয়া ও অপসাংবাদিকতা থেকে নিরাপদে রাখা। সাংবাদিকতার নামে অনেকে নানা অপকর্মে জড়িয়ে যাচ্ছে এমন খবরও গোচরে আসে। তাদের সম্পর্কে জনমনে নানা প্রশ্ন। জনগণ তাদেরকে ‘সাংঘাতিক’ও বলছেন। তাই সাংঘাতিক না হয়ে সঠিক ও সত্যনিষ্ঠ তথ্য তুলে ধরে প্রকৃত সাংবাদিক হিসাবে ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানান তিনি। শনিবার (৪ জুন) সকালে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস কাউন্সিলের উদ্যোগে আয়োজিত প্রেস কাউন্সিল আইন ও তথ্য প্রযুক্তি আইন বিষয়ক রাঙ্গামাটিতে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের নিয়ে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জনাবে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আল মামুন মিয়ার সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব মোঃ শাহালমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জাহিদুল ইসলাম, রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের প্রাক্তণ সভাপতি ও দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক আলহাজ্ব এ কে এম মকছুদ আহমেদ, রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সাধারন সম্পাদক আনোয়ার আল হক, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা, সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি নন্দন দেবনাথ প্রমূখ।
বিচারপতি আরো বলেন, সাংবাদিকরা সরকারের পরিপূরক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান সাংবাদিকদের সম্মান করতেন। যে কারণে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় ১৯৭৪ সালে প্রেস কাউন্সিল আইন বাস্তবায়ন করেন। সে লক্ষ বাস্তবায়নের জন্য প্রেস কাউন্সিল কাজ করছে। আর সাংবাদিকরা কাজ করলে দেশ এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আরো বলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হলে বা গ্রেফতার করার আগে প্রেস কাউন্সিলের সাথে কথা বলতে হবে। অন্যায়ভাবে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানী করা হলে প্রয়োজনে প্রেস কাউন্সিল আইনি সহায়তা দিবে।
তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে সাংবাদিকতার অপব্যহার হচ্ছে। তাদের অনেকে সাংঘাতিক কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের মান রক্ষা করতে হলে নিয়ন্ত্রনের প্রয়োজন আছে। সাংবাদিকতা পেশার সম্মান এখন আগের মতো নেই। প্রেস কাউন্সিল সাংবাদিকতার মানোন্নয়নের জন্য কাজ করছে। সাংবাদিকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নূন্যতম গ্রাজ্যুয়েশ থাকতে হবে। তবে তা পাচঁ বছর আগে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে নয় বলে তিনি জানান।
এ সময় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম তথ্য প্রযুক্তি আইনের কথা উল্লেখ করে আরো বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যাবহার ও অনলাইন পোর্টালের দৌরাত্ব কমাতে তথ্য প্রযুক্তি আইনের প্রয়োজন আছে। তবে এ আইনে আসামীকে জামিন দেয়া যাবে না যে বিধান আছে তার সাথে দ্বিমত করে তিনি বলেন, এটি সংশোধন করা প্রয়োজন। একই সাথে তথ্যমন্ত্রীর দেয়া ঘোষণা “এ আইনে সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা যাবে না” তা বাস্তবায়নেরও আহবান জানান প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান।
কর্মশালায় রাঙ্গামাটিতে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ৪২ জন সাংবাদিক অংশগ্রহন করেন।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ‘শেষ বয়সে এসে এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি। এই প্রাপ্তি আমার ৫২ বছরের সাংবাদিকতার জীবনের সব দুঃখ-কষ্ট দূর করে দিয়েছে।’ আর দেশের অন্যতম বৃহৎ এ শিল্প প্রতিষ্ঠান যেমন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তেমনি গণমাধ্যমেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। যা গণমাধ্যমে অনন্যা দৃষ্টি স্থাপন করেছে।
তৃণমূল সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ঢাকায় বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাডওয়ার্ড পাওয়ার পর এই অনুভূতি প্রকাশ করেছেন রাঙ্গামাটি জেলার প্রবীণ সাংবাদিক পার্বত্য চট্টগ্রাম সাংবাদিকতার পথিকৃৎ ও দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক আলহাজ্ব এ কে এম মকছুদ আহমেদ।
রবিবার (৩০ মে) দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ আয়োাজিত ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ‘বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২১’-এ খ্যাতিমান সাংবাদিক হিসেবে এ কে এম মকছুদ আহমেদ রাঙ্গামাটি জেলা থেকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
তিনি পেয়েছেন এক লাখ টাকা, ক্রেস্ট, সম্মাননা পত্র ও উত্তরীয়। অনুষ্ঠানে ৬৪ জেলার ৬৪ জন প্রবীণ সাংবাদিক ছাড়াও ১১ জন সাংবাদিককে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
প্রবীণ এ সাংবাদিক তার অনুভূতি প্রকাশ করে আরো বলেন, ‘জীবনে অনেক প্রোগ্রামে গেছি। অনেক পুরষ্কার অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছি। কিন্তু জীবনের এই শেষ সময়ে এসে বসুন্ধরা গ্রুপ যেভাবে আমাদের মফস্বলের সাংবাদিকদের সম্মানিত করল, তা সত্যিই বিরল।’
এ কে এম মকছুদ আহমেদ বলেন, ‘জীবনের সব পাওয়া না পাওয়া এই সম্মাননার মাধ্যমে পূরণ হয়ে গেছে। আর কোনো পাওয়ার নেই এই শেষ সময়ে। তবে খুব করে চাইব যেন এই আয়োজনটা সব সময় চালু রাখা হয়।’
তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২১’- পাওয়ার এই স্বীকৃতি পার্বত্য চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের উৎসাহিত করবে। বিশেষ করে পাহাড়ে নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকরা সাংবাদিকতায় অবদান রাখতে সচেস্ট হবে। তিনি বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, সাংবাদিকতা জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এই সম্মাননা আমাকে নতুন করে বাঁচতে অনুপ্রাণিত করবে। তিনি বলেন, তাঁরা যেন এই মহৎ ধারা অব্যাহত রাখেন, তাহলে এই পেশায় সুস্থ ধারার মানুষ এগিয়ে আসবে।
অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধান অতিথি ছিলেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক এবং বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২১ এর জুরিবোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রহমান। সভায় সভাপতিত্ব করেন, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর।
চট্টগ্রাম বিভাগের গুণী সাংবাদিকরা হলেন: চট্টগ্রাম জেলা থেকে নাছির উদ্দিন চৌধুরী, কুমিল্লার আবুল হাসানাত বাবুল, ফেনীর ওছমান হারুন মাহমুদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোঃ আরজু মিয়া, রাঙ্গামাটির এ কে এম মকছুদ আহমেদ, নোয়াখালীর একেএম জুবায়ের, চাঁদপুরের গোলাম কিবরিয়া, লক্ষীপুরের হোসাইন আহমেদ হেলাল, কক্সবাজারের প্রিয়তোষ পাল পিন্টু, খাগড়াছড়ির তরুণ কুমার ভট্টাচার্য ও বান্দরবানের প্রিয়দর্শী বড়ুয়া।
এ কে এম মকছুদ আহমেদের জীবনীঃ- আলহাজ্ব এ,কে,এম মকছুদ আহমেদ। পিতার মৃত মো. জামাল উল্লাহ, মাতা-জমিলা খাতুন। ১৯৪৫ সালের ১০জুলাই চট্টগ্রাম মীরসরাই উপজেলা উত্তর মগাদিয়া ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে একই ইউনিয়নের আবু তোরাব উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৬৮সালে রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ থেকে এইচ এস সি পাস করেন। এর পর ১৯৬৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রামস্থ দৈনিক আজাদীর রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি হিসাবে সাংবাদিকতা জীবনের শুরু হয়। ১৯৭৩ দৈনিক জনপদ জেলা সংবাদদাতা, ১৯৭৪ দৈনিক পূর্বদেশ, বার্তা সংস্থা এনাতে, ১৯৭৪-৭৭ এবং ১৯৭৯-৮৬ বাসসে কর্মরত ছিলাম, ১৯৭৬ সন থেকে ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত দৈনিক ইত্তেফাকের রাঙ্গামাটি সংবাদদাতা হিসাবে কর্মরত ছিলেন। দৈনিক ইত্তেফাক (১৯৭৮ইং থেকে) বর্তমানে জেলা প্রতিনিধি দৈনিক ইত্তেফাক। ১৯৮৬-৮৯ পর্যন্ত দৈনিক ইত্তেফাক সংবাদদাতার পাশাপাশি নিউ নেশন এর জেলা সংবাদদাতা হিসাবে কাজ করেছিলেন। ১৯৯২-৯৩ দি টেলিগ্রাফ পত্রিকায়, সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ থেকে জানুয়ারী ২০০১ পর্যন্ত দি ডেইলী ইন্ডিপেনডেন্ট এর রাঙ্গামাটি জেলা সংবাদদাতা এবং ১৯৮৩-১৯৯৮ইং পর্যন্ত বিবিসির জন্য কাজ করেছিলেন। চট্টগ্রাম এবং পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিশ্বের নিকট পরিচিত করে তুলতে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন।
জেলা সংবাদদাতাঃ-জেলা সংবাদদাতা বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম ১৯৯৫ সাল হতে ও রাঙ্গামাটি কেন্দ্রে ২০০৭ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ বেতার রাঙ্গামাটি বার্তা বিভাগের জেলা সংবাদদাতা হিসাবে নিয়োজিত ছিলেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিঃ এর ২০১৪ সাল পর্যন্ত কর্মরত এবং জুন ২০০৫ থেকে নিউ নেশানের ২০০৮ পর্যন্ত জেলা সংবাদদাতা হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
প্রকাশকঃ- চাক্মা-মারমা কথোপকথন (জুভাপদ) (১৯৭৭), নোয়ারাম চাক্মা প্রণীত গোজেন লামা (১৯৭৭), পরিবার পরিকল্পনা প্রাথমিক গান (১৯৭৭) অধীর কান্তি বড়ুয়া প্রণীত প্রাথমিক বৌদ্ধ ধর্ম শিক্ষা, ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম (শ্রেণীর পাঠ্য) হাবিবুর রহমান মজুমদারের রাঙ্গামাটির ভাবনা (কবিতার বই), নন্দলাল শর্মার পার্বত্য চট্টগ্রামের সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা। সৈয়দ ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদের শিক্ষা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ, করমালী। এ্যাডভোকেট প্রতিম রায় পাম্পুর পার্বত্য আইন তত্ত্বেও প্রয়োগে। ত্রিপুরা ভাষার বর্ণমালা-মহেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (২০০২), আকাশে হেলান দিয়ে-নন্দলাল শর্মা (২০০৩)। পরিবেশক জেলা প্রশাসক কর্তৃক সম্পাদিত রাঙ্গামাটি বৈচিত্রের ঐকতান (২০০৫)। স্বত্বাধিকারী রাঙ্গামাটি প্রকাশনী।
সম্মাননা ও পদক ঃ- মুক্তিযুদ্ধের বিজয় রজত জয়ন্তী, রাঙ্গামাটি রোটার্যাক্ট ক্লাব ও চট্টগ্রাম ডাউন টাউন (১৯৯৫), পরিবার পরিকল্পনা প্রচার সপ্তাহ এফপিএবি (১৯৯৫), সুধীজন ও গুনীজন সংবর্ধনা খেলাঘর আসর (১৯৯৬), ফুলকঁড়ির আসর ১৯৯৯, শিল্পী নিকুঞ্জ-সাংবাদিকতায় অবদান-২০০১, ১৯৯০সনে “আমেরিকান বায়োগ্রাফিক্যাল ইনষ্টিটিউট এর পৃথিবীর পাঁচ হাজার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব নামক” বইতে জীবন বৃত্তান্ত স্থান পেয়েছে।
সম্পাদক প্রকাশকঃ-বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সর্বপ্রথম ও তৎকালীন একমাত্র সংবাদপত্র সাপ্তাহিক বনভূমি (১৯৭৮ইং) দৈনিক গিরিদর্পণ (১৯৮৩ ইং) বর্তমানে তিন পার্বত্য জেলার সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক সংবাদপত্র যার বয়স বর্তমানে ৩৯ বছর পূর্ণ করে ৪০ শে পা রেখেছে।