চট্টগ্রাম ব্যুরো :: আগামী ১ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি।
বুধবার (২৫ মে) দুপুরে নগরের কাজীর দেউড়ির ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযান অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১ অক্টোবর আগে নগর আওয়ামী লীগের ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের মূল শক্তি ক্ষমতা নয়, আওয়ামী লীগের মূল শক্তি জনগণ। সংগঠনকে নতুনভাবে সাজানো হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে হবে। আওয়ামী লীগের মাধ্যমে এই দেশের পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশকে দরিদ্র দেশ থেকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করেছে আওয়ামী লীগ। দেশের সকল উন্নয়নের সঙ্গে আওয়ামী লীগ জড়িত। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে আগামী ৩১ সালে মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রে উন্নীত হবে।
সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বিএনপি বাধা দিতে প্রস্তুত মন্তব্য করে মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, ১২ বছরে বার বার আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার অপচেষ্টা করেছে। সবকিছু মোকাবিলা করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি বার বার মিথ্যাচার করেছে। বিএনপি দেশের উন্নয়ন চায় না। বেগম খালেদা জিয়া জিএসপি সুবিধা বাতিলের জন্য চিঠি দিয়েছিলেন। ২০২০ সালে বিএনপি র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য লবিস্ট নিয়োগ করেছিল, যাতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়।
মঙ্গলবার ঢাকায় ছাত্রদল-ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপিকে দায়ী করে হানিফ বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিদিন প্রেসক্লাবে বিএনপি মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। সেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অসম্মান করে বক্তব্য দেওয়া হয়। দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দলের সঙ্গে মুনাফিকি করবেন না, পদ-বাণিজ্য করবেন না। যোগ্য লোককে মাঠ থেকে খুঁজে নিয়ে আসতে হবে। সুবিধাভোগিরা সবসময় আশেপাশে ঘুরবে, তাই সতর্ক থাকতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক, সাবেক চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপি, হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, বেগম ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় সম্পাদক বেগম ফরিদুনন্নাহার লাইলী, কেন্দ্রীয় উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।
॥ বান্দরবান প্রতিনিধি ॥ মায়ানমার থে কে চোরাকারবারীরা বান্দরবা নের আলীকদম দি য়ে ট্রা কে ক রে পাঁচারকা লে ৪০ টি গরু আটক ক রে ছে আলীকদ ম ব ্যাটা লিয় নের ৫৭ বি জি বি। মঙ্গলবার (২৩ মে) রাত ২টায় আলীকদম সীমান্তের পোয়ামুহুড়ি-আলীকদম সড়ক থে কে এসব গরু আটক করা হয়।
বি জিবি জানায়, মায়ানমার হতে আলীকদ মের সীমান্ত প থে ট্রাক দি য়ে অবৈধভাবে গরু আনা হচ্ছে। গোপন সংবা দে বিষয়টি জান তে পে রে আলীকদম ব্যাটালিয়ন (৫৭ বিজিবি) এর অধিনায়ক মঙ্গলবার (২৩ মে) রাত এগারোটায় দ্রুত আলীকদমের দক্ষিনে সাত কি:মি: দূরে একটি চেকপোষ্ট স্থাপন করেন। গরু চোরাকারবারিরা বিষয়টি জানতে পে রে ট্রাক থে কে গরু না মি য়ে বিকল্প রাস্তায় গভীর জঙ্গল দি য়ে গরু গুলো নি য়ে যে তে চাই লে অধিনায়কের নেতৃত্বে বিজিবির টহল দল জঙ্গলের ভেতর থে কে রাত ২টার সময় ৪০ টি গরু আটক ক রে।
আলীকদম ব ্যাটা লিয় ন (৫৭ বি জি বি) এর অ ধিনায়ক লে: ক র্ণেল ইফ তেখার হো সেন জানান, আটককৃত ৪০টি গরু বুধবার (২৪ মে) বান্দরবান কাস্টমসের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চল ছে। সীমান্ত প থে অবৈধভা বে দ্রব্যসামগ্রী পাঁচার হওয়ার ব্যাপারে বান্দরবানের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা সতর্ক এবং ভবিষ্যতে বিজিবির এ ধরণের অপারেশন অব্যাহত থাকবে ব লেও জানান তি নি।
॥॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ পার্বত্য চট্টগ্রাম-বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় তিন পার্বত্য জেলায় রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে একটি মহাপরিকল্পনা (মাস্টার প্ল্যান) গ্রহণ করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ মে) কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মো. দবিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে একথা জানানো হয়।
সভায় জানানো হয়, গৃহীত মহাপরিকল্পনার আওতায় তিন পার্বত্য জেলায় রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। কমিটির সদস্য পার্বত্য চট্টগ্রাম-বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং, এ.বি.এম ফজলে করিম চৌধুরী, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এবং বাসন্তী চাকমা সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সভায় কাপ্তাই লেককে মাছ চাষের জন্য অধিক উপযোগী করে গড়ে তোলা, জনগণের যাতাযাত সুবিধা এবং পর্যটন শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে তিন পার্বত্য জেলায় রেল লাইন স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
এছাড়া, পার্বত্য জেলার যে কোন উপযুক্ত স্থানে ছোট পরিসরে একটি বিমান বন্দর নির্মাণ, তিন পার্বত্য জেলায় হাউজিং প্রকল্প গ্রহণসহ জেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কমিটি বিস্তারিত আলোচনা করে। সভায় ১ম বৈঠক হতে ৩য় বৈঠক পর্যন্ত গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়।
সভায় তিন পার্বত্য জেলার যে সমস্ত জমি ব্যক্তি পর্যায়ে বনায়ন করার জন্য লিজ দেওয়া হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত বনায়ন করা হয়নি, সেই লিজকৃত জমির বর্তমান অবস্থা কমিটিকে অবহিত করার জন্য আগামী বৈঠকে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদেরকে উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়।
কমিটি তিন পার্বত্য জেলায় সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারিদের জন্য বাসভবন/কোয়ার্টার নির্মাণ এবং পরিকল্পিত হাউজিং এর প্রকল্প গ্রহণসহ পার্বত্য জেলায় বিদ্যুতায়নের ওপর গুরুত্বরোপ করে। পার্বত্য জেলাসমূহকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জোর সুপারিশ করে।
সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন সংস্থা প্রধানসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
॥ মিল্টন বাহাদুর ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পার্বত্য শান্তিচুক্তির প্রতিটি শব্দ ও ওয়াদা অক্ষর অক্ষরে পূরণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি। তিনি বলেন, ভূমি জটিলতার সমস্যা ছাড়া পাহাড়ী এলাকার সব সমস্যা সমাধান করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। কি নেই আজ রাঙ্গামাটিতে, সবই আছে। ভূমি সমস্যার সমাধান হলে সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের উপর আস্থা রাখুন। শেখ হাসিনার উপর আস্থা রাখুন। হানাহানি মারা মারি রক্তপাত এই পাহাড়ে আর চাই না। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করুন।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, পাহাড়ে আপনার অনেক ঝুঁকি নিয়ে আওয়ামীলীগকে গড়ে তুলেছেন। জীবনের অনেক ঝুঁকি নিয়ে আপনারদের এগিয়ে যেতে হয়েছে। এখনো ঝুঁকি আছে। এখনো সংঘাতে রক্তপাত মাঝে মাঝে আমরা দেখতে পায়। এই রক্তপাত বন্ধ করতে হবে। পাহাড়ী-বাঙ্গালী সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।
এসময় তিনি আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আগামী বছর নির্বাচন। অন্তর কলহ থেকে আপনারা নিজেদের বিরত রাখুন। অন্তর কলহ আপন ঘরে যার শক্রু, তার শক্রুতা করার জন্য বাইরের শক্রুর দরকার নেই। দুঃসময়ের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করুন, যারা এক সময় একটি সাথে পার্টি করেছে। ঘরের কহল নিজেরা বসে সমাধান করুন, আলাপ আলোচনা করুন। কোন অবস্থাতে আওয়ামীলীগের মধ্যে অন্তর দন্দ্ব-অন্তর কলহ এগুলো সমাধান করতে হবে বলে সবার প্রতি অনুরোধ জানান এবং আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিজয় ধরে রাখতে দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।
তিনি মঙ্গলবার (২৪ মে) সকালে রাঙ্গামাটির জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের ভ্যাচুয়ালী যোগদিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক ও সেতু মন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি এইসব কথা বলেন।
রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিষ্টিটিউট প্রাঙ্গনে রাঙ্গামাটি জেলা সভাপতি দীপংকর তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, কেন্দ্রীয় ধর্ম বিসয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খাঁন এমপি, কেন্দ্রীয় উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম, তিন পার্বত্য জেলার মহিলা সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের শুভ সূচনা করা হয়।
এসময় বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি আরো বলেন, পদ্মা সেতুর ব্যায় নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল অন্ধকারে ঢিল ছুড়ছেন। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে গিয়েছে, জুনে উদ্বোধন হবে। পদ্মাসেতু নিয়ে সারা বাংলার মানুষ যখন আনন্দে উচ্ছাসিত সে সময় শুধুমাত্র বিএনপি ও মির্জা ফখরুলের বুকে ব্যাথা বিষ জ¦ালা ছড়িয়েছে। এই বিষ জ্বালায় তারা আজ দিশেহারা। আজ মানুষের মুখে সুখের হাসি আর বিএনপি’র মুখে শ্রাবনের আকাশের সব কালো মেঘ। আজ বিএনপি মুখ ঢেকে ফেলেছে।
সম্মেলনে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, এখন যত কথাই বলুক, আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে অংশ নেবে। সরকার প্রধান শেখ হাসিনা থাকবে আর স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং বিএনপি যে আস্ফালণ করছে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকতে সেই পরিস্থিতি কখনোই সৃষ্টি হবে না।
এসময় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ এমপি বলেন, জামায়াত-বিএনপি পাকিস্তানের মদদে পরিচালিত বিধায় বাংলাদেশের অর্জন-অগ্রগতি তাদের পছন্দ হয় না। তারা শেখ হাসিনাকে দু’চোখে দেখতে পারে না। তিনি আরো বলেন, ইদানিং দেখা যাচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীরা বেফাঁস ও লাগামহীন কথাবার্তা বলছে। আপনাদের হুঁশিয়ার দিয়ে বলতে চাই, এভাবে কথা বলতে থাকলে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা আপনাদেরকে মাঠেই প্রতিহত করবে।
এদিকে বিকালে সম্মেলনকে ঘিরে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এবারের জেলা কাউন্সিলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুটি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কাউন্সিলে সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি দীপংকর তালুকদার এবং তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান সহ-সভাপতি হাজী মোঃ কামাল উদ্দিন।
রাঙ্গামাটির কাউন্সিলে আবারো আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার, সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বর নির্বাচিত
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে আবারো সভাপতি হয়েছেন দীপংকর তালুকদার এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে পুনঃনির্বাচিত হাজী মুছা মাতব্বর।
মঙ্গলবার (২৪ মে) বিকেলে সভাপতি পদে ভোট না হলেও তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে সাধারণ সম্পাদক পদকে ঘিরে। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বরের বিরুদ্ধে হাজী কামাল উদ্দিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেন। অবশেষে গোপন ব্যালেট পেপারের মাধ্যমে নির্ধারিত হয় জয় পরাজয়।
কাউন্সিলরদের ভোট গণনা শেষে জানা যায়, ১৩৮ ভোট পেয়েছেন মুছা মাতব্বর এবং ১০২ ভোট পেয়েছেন হাজী কামাল উদ্দিন। ৩৬ ভোটে জয় পেয়েছেন হাজী মুছা মাতব্বর পুনরায় সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে, রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে ছিলো উত্তাপ। নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ জনতা পর্যন্ত। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মাঝে ঘুরেফিরে একটাই আলোচনা, কারা আসছে নতুন নেতৃত্বে। বিশেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়েই সবার আগ্রহ।
কারণ ১৯৯৬ সাল থেকে সভাপতির দায়িত্ব পালন করা বর্তমান সভাপতি ও সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারের বিপরীতে সভাপতি পদে মাঠে মেনেছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান ও সহ সভাপতি নিখিল কুমার চাকমা। আর সাধারন সম্পাদক পদে লড়েছেন বর্তমান সাধারন সম্পাদক হাজী মোঃ মুছা এবং সাবেক সাধারন সম্পাদক হাজী কামাল উদ্দিন। পরবর্তীতে সভাপতি পদ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান ও সহ সভাপতি নিখিল কুমার চাকমা সড়ে দাঁড়ালে সম্পাদক পদটিকে ঘিরে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়।
দলটি একদিকে পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী এবং অন্যদিকে সরকার ক্ষমতায়। তাই সম্মেলনকে ঘিরে বেশ সরগরম ছিলো চারদিক। কারা নতুন নেতৃত্বে আসলে জেলা আওয়ামী লীগ আরও শক্তিশালী হবে এসব নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। পরিশেষে সকল বিশ্লেষণকে ছাপিয়ে আবারো জয়ের মুকুট পড়লেন বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
চট্টগ্রাম অফিস :: ‘প্রশিক্ষিত জনবল ও নিরাপদ জলযান, নৌ নিরাপত্তায় রাখবে অবদান’ প্রতিপাদ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে শুরু হয়েছে নৌ-নিরাপত্তা সপ্তাহ। নিরাপদ ও দুর্ঘটনামুক্ত নৌ পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সবার সচেতনতা সৃষ্টিই এ সপ্তাহ উদযাপনের মূল লক্ষ্য।
রোববার (২২ মে) সকালে বন্দর ভবনের সামনে নৌ-নিরাপত্তা সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বন্দরের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমডোর মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।
সহকারী হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন মো. মুস্তাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম।
বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার দেশে নৌ-শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। নিরাপদ নৌযান নির্মাণ ও নৌযানে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করে নৌপথের নিরাপত্তা বিধানে আস্থা ফিরেছে। দেশের অর্থনীতির ঈর্ষণীয় উন্নয়নে নৌপরিবহনের গুরুত্ব অপরিসীম। নৌপথ সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব। নৌপথ দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি।
জাহাজগুলোতে পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট, নৌ-রুটে পর্যাপ্ত বয়া বাতি স্থাপন ও ক্রুদের প্রশিক্ষণের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখতে হবে।
তারা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের শক্তিশালী নৌ-বহর দক্ষতার সঙ্গে শিপিং সার্ভিস, পাইলটিং, হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভে, সমুদ্রে উদ্ধারকাজ ও পরিবেশ দূষণ রোধে ভূমিকা রাখছে।
॥ ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই ॥ আওয়ামীলীগ সরকার আমলেই পাহাড়ের মানুষ উন্নয়ন দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর (উশৈসিং) এমপি। তিনি বলেন, পার্বত্য চুক্তি ফলে পাহাড়ে যেমন শান্তির সুবাতাস দেখছে তেমনী পাহাড়ের প্রতিটি এলাকায় উন্নয়ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে মানুষ শান্তি দিন অতিবাহিত করছে। শনিবার (২১ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় কাপ্তাই উপজেলার ২নং রাইখালী ইউনিয়নের বড়খোলা পাড়ায় বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের উদ্বোধন এবং কৃষি উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে রাঙ্গামাটি-বান্দরবান সড়ক হতে বড়খোলা পাড়া পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প উদ্বোধন, বড়খোলা পাড়া বৌদ্ধ শাসন রক্ষিত বৌদ্ধ বিহারের চেরাংঘর উদ্বোধন, বড়খোলা পাড়া রাইখালী ছড়ার উপর নব নির্মিত সেতু নির্মাণের উদ্বোধন, বড়খোলাপাড়া সেচনালা নির্মাণ এবং কৃষি উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
ডংনালা শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারের বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত সুরিয়া মহাথের এর সভাপতিত্বে এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, জেলা পরিষদ সদস্য অংসুইছাইন চৌধুরী ও সদস্য দীপ্তিময় তালুকদার কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুল হক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান, কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রওশন আরা রব, উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা, সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য প্রকৌশলী থোয়াইচিং মারমাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুজনীয় ভিক্ষু সংঘ এবং গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর (উশৈসিং) এমপি আরো বলেন, বর্তমান সরকার পাহাড়ের মানুষ তথা তৃণমূলের মানুষের উন্নতির কথা সবসময় ভাবেন। যার কারণে পাহাড়ে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকান্ড ত্বরান্বিত করা হচ্ছে। পাহাড়ের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ও শহরের মানুষের মতো সমান সুযোগের জন্য সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে। তাই এইসব উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে সম্মেলিত ভাবে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
উদ্বোধনী অনুষ্টানে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেন, পাহাড়ের মানুষের আর্থ-সামাজিক ও অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতার কারণে বোর্ডের কাজের পরিধি অনেকাংশে যেমন বেড়েছে তেমনি পাহাড়ের মানুষও এর সুফল ভোগ করছে। ভবিষ্যতেও এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এর মাসিক সভা সোমবার (১৮ মে) সকালে পরিষদের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী। সভাপতির বক্তব্যে চেয়ারম্যান বলেন, কোভিড চলাকালীন সময়ে স্বাস্থ্য বিভাগ বিচক্ষণতার সঙ্গে কাজ করায় রাঙ্গামাটি জেলার মৃত্যুহার এবং ক্ষয়ক্ষতি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে। কাজের প্রতি সদিচ্ছা এবং নিষ্ঠা থাকলে যেকোন কাজে সফল হওয়া যায় তার উদাহরণ স্বাস্থ্য বিভাগ। তিনি বলেন, একইভাবে এলাকার উন্নয়ন কাজে সকলের সদিচ্ছা ও সহযোগিতা থাকলে সকল বিভাগের কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। পরিষদ এবং হস্তান্তরিত বিভাগের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশাসনিক সংক্রান্ত যেসমস্ত সমস্যা আছে তা সমঝোতার মাধ্যমে কাটিয়ে উঠে সরকারের প্রত্যাশিত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্যবৃন্দ যথাক্রমে সদস্য ঝর্ণা খীসা, সদস্য দিপ্তীময় তালুকদার, সদস্য অংসুই ছাইন চৌধুরী, সদস্য সবির কুমার চাকমা, সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া, সদস্য নিউচিং মারমা, সদস্য ইলিপন চাকমা, সদস্য প্রিয় নন্দ চাকমা, সদস্য বিপুল ত্রিপুরা, সদস্য মোঃ আব্দুর রহিম, সদস্য মোসাম্মৎ আছমা বেগম, সদস্য প্রবর্তক চাকমা, সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম দে, স্বাস্থ্য প্রকৌশলের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ অলিউর রহমান, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ, সমাজসেবা বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ ওমর ফারুক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ শাহজাহান, জেলা সমবায় উপসহকারি নিবন্ধক কেফায়েত উল্লাহ খান, জেলা তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা পরেশ চন্দ্র চাকমা, পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া, হাস প্রজনন খামারের উপসহকারী প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আবু তাহের, ক্ষুদ্র নৃগোষ্টির সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট এর কালচারাল অফিসার শোভিত চাকমা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্ত্ াডা: বরুন কুমার দত্ত, সরকারী মুরগী প্রজনন ও উন্নয়ন খামার এর ব্যবস্থাপক ডাঃ পলি রাণী ঘোষ, সহকারী ব্যবস্থাপক বিসিক এজিএম মোঃ ইসমাইল হোসেন, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সহকারি পরিচালক ডা: বেবী ত্রিপুরা, সহকারি পরিচালক বিএডিসি মোঃ লুৎফর রহমান, আরপিটিআই ট্রেইনার লিপি চাকমা, জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারি পরিচালক অনুতোষ চাকমা, সহকারী পরিচালক সরকারী গণগ্রন্থাগার সুনীলময় চাকমা, সিনিয়র সহকারী পরিচালক শুকর উন্নয়ন খামার কুসুম চাকমা, উপপরিচালক জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র ডা: তুষার কান্তি চাকমা, ভেটেরিনারী অফিসার জেলা ভেটেনারী হাসপাতাল ডা: মো: নাজমুল হক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক তপন কুমার পাল, পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়ুয়া, জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুনেন্দু ত্রিপুরা, সহকারি প্রকৌশলী উজ্জল কান্তি দেওয়ান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মনতোষ চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাগণ স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের কাজের অগ্রগতি তুলে ধরেন।
॥ লংগদু প্রতিনিধি ॥ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদু্যুৎ এই শ্লোগানকে বাস্তবায়নে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সেই মোতাবেক আমরা ধাপে ধাপে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। পার্বত্যাঞ্চলে যে সব এলাকায় আগামী ৫-১০ বছরেও বিদু্যুৎ যাওয়ার সম্ভাবনা নাই ঐসব এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে ঘরে সোলার প্যানেল দিয়ে সৌর বিদু্যুৎ পৌছে যাবে।
বুধবার (১৮মে) সকালে রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার বগাচতর ইউপি কার্যালয়ে সোলার প্যানেল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিখিল কুমার চাকমা এসব কথাগুলো বলেন।
লংগদু উপজেলার বগাচতর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদু্যুৎ সরবরাহ শীর্ষক প্রকল্পের (২য় পর্যায়ে) আওতায় ৭৪০ পরিবারকে ১০০ ওয়ার্ড সোলার প্যানেল ও ১২ ভোল্টের একটি করে ব্যাটারি প্রদান করা হয়।
সোলার প্যানেল বিতরণ অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড উপসচিব সদস্য বাস্তবায়ন ও প্রকল্প পরিচালক মো. হারুন অর-রশিদ এতে সভাপতিত্ব করেন।
এসময় উস্থিত ছিলেন, বগাচতর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বশর, সাবেক বগাচতর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দসহ জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণ।
প্রধান অতিথি নিখিল কুমার চাকমা বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, এই সোলার প্যানেল সম্পূর্ণ বিনামূল্য বিতরণ করা হচ্ছে। সোলার সিষ্টেমের জন্য কারো সাথে কোন ধরনের আর্থিক লেনদেন করবেন না। এই সুবিধায় অত্র এলাকা সমূহের মান উন্নয়ন হবে। শিক্ষার্থীদের লেখা পড়া করতে সহজ হবে, সমাজ পরিবর্তন হবে। তিনি আরো বলেন, আমি চেষ্টা করবো বগচতর ইপির রাস্তা, ব্রীজ সংস্কার কাজ করতে। বগাচতর ইউপির প্রায় পর্যায় ক্রমে ৯শ পরিবারের তালিকা আছে সবাইকে দেওয়া হবে।
॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারে অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ না করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তাঁর সরকার কক্সবাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র্য অটুট রেখে এর সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করা হবে। সে জন্য আমি সবাইকে বিশেষ করে কক্সবাজারবাসীকে অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ না করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রী বুধবার (১৮ মে) সকালে কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের নব-নির্মিত পরিবেশ-বান্ধব বহুতল ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি’র ভাষণে এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কক্সবাজারের বীর মুক্তিযোদ্ধা মাঠে আয়োজিত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে আশপাশের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিশ্চিত করার লক্ষে ইতোমধ্যে একটি মাস্টার প্লান তৈরি করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের বিশাল সমুদ্র সীমায় পর্যটনের ক্ষেত্র আরো প্রসারিত করার মাধ্যমে এই জায়গাটাকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করার উদ্যোগ আমরা নিতে যাচ্ছি। তাছাড়া যেহেতু এটা আন্তর্জাতিক এয়ার রুটে পড়ে, তাই কক্সবাজার বিমানবন্দরকে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিমান বন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠায় সরকারের কাজ চলমান রয়েছে।
এই বিমানবন্দর যখন সম্পূর্ণ হবে তখন পশ্চিমা দেশগুলো থেকে প্রাচ্যে যাতায়াতকারী বিমানগুলো এখান থেকে রিফুয়েলিং করার মাধ্যমে এটি একটি রিফুয়েলিং কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, রিফুয়েলিংয়ে বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন সময়ে অগ্রাধিকার পায়। এক সময় হংকং ছিল, এর পর থাইল্যান্ড অথবা সিঙ্গাপুর এখন দুবাই। কিন্তু এখন কক্সবাজারই হবে আন্তর্জাতিক আকাশ পথে রিফুয়েলিং এর একটা কেন্দ্র।
পাশাপাশি এখানে তাঁর সরকার ক্রিকেট ষ্টেডিয়াম করেছে, ফুটবল ষ্টেডিয়ামও করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক খেলাধূলা আয়োজনের সব ধরনের ব্যবস্থা এখানে থাকবে। মেরিন ড্রাইভ যেটি কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত করা হয়েছে সেটা একেবারে চট্টগ্রাম পর্যন্ত করা হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার বক্তৃতা করেন। কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ স্বাগত বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের কর্মকান্ড এবং নব-নির্মিত ভবনের ওপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সরকার প্রধান বলেন, তাঁর সরকার ইতোমধ্যে কক্সবাজারে অনেকগুলো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এরমধ্যে মহেশখালী, কুতুবদিয়া, সোনাদিয়া, শাহপরীর দ্বীপ, সেন্ট মার্টিনসহ বিভিন্ন দ্বীপাঞ্চলের উন্নয়ন উল্লেখযোগ্য।
তিনি বলেন, আজকে মহেশখালীতে গভীর সমুদ্র বন্দর যেমন তৈরি হচ্ছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হচ্ছে এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে ওঠায় বিনিয়োগ হচ্ছে। একে একটি ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড’ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এই মহেশখালীর উন্নয়ন দেশীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিস্ময়ের সৃষ্টি করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
পাশাপাশি টেকনাফে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে এর সমুদ্র সৈকতও যাতে আন্তর্জাতিক মানের হয় সে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
অতীতে জাতির পিতার সঙ্গে কক্সবাজার সফরকালে যোগাযোগ ব্যবস্থার দুরাবস্থার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি অনুযায়ী দোহাজারি থেকে গুনধুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ এবং চমৎকার একটি রেলস্টেশন নির্মাণের কাজও এগিয়ে চলেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের ন্যায় কক্সবাজার অবধি হাইওয়ের কাজও চলছে। পাশাপাশি সিলেট থেকে কক্সবাজার সরাসরি বিমান চলাচল চালু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আমাদের অন্যান্য অঞ্চল যেমন বরিশাল, রাজশাহী এবং সৈয়দপুরসহ যতগুলো বিমানবন্দর রয়েছে সেখান থেকে কক্সবাজারের সঙ্গে সরাসরি বিমান চলাচল চালুর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে ইতোমধ্যেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, কক্সবাজারে একটি বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয় স্থাপনের অনুমোদন সরকার দিয়েছে। সেখানে একটি মেডিক্যাল কলেজ করা হয়েছে, হাসপাতাল স্থাপনের পাশাপাশি উন্নতমানের কনভেনশন সেন্টার এই কক্সবাজারেই করা হবে। যাতে যে কোন ধরনের সেমিনার-সিম্পোজিয়াম সেখানে আয়োজনের পাশাপাশি পর্যটকদের জন্যও আকর্ষণীয় হয়।
কক্সবাজারে ‘সি এ্যাকুরিয়াম’ প্রতিষ্ঠার কথা পুনরোল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, এদেশে এ ধরনের এ্যাকুরিয়াম পরিচালনায় দক্ষ জনবলের অভাব থাকায় তাঁর সরকার এ ব্যাপারেও কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি এ সময় ’৯১ সালের ঘূর্ণি দুর্গতদের কক্সবাজার খুরুশকুলে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় বহুতল ফ্ল্যাট বাড়ি নির্মাণ করে দেয়ার কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, এই ফ্ল্যাটের অধিবাসীরা অধিকাংশই মৎসজীবী হওয়ার কারণে সেখানে একটি দৃষ্টিনন্দন আধুনিক শুটকির হাট করে দেয়ার পাশাপাশি সেখানকার সি-বীচ উন্নয়নেরও পদক্ষেপ নেয়া হবে।
যে সব দেশে বরফ পড়ে সে সব দেশে বরফ গলানোর জন্য অপরিশোধিত লবণের ব্যবহার হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী লবণের উৎপাদন বাড়ানো এবং এ অঞ্চলের লবণ চাষিদের জন্য আরো সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে লবণ উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তারও উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, চিংড়ি চাষিদের জন্য তাঁর সরকার সেখানে চিংড়ির পোনা উৎপাদনের যেমন ব্যবস্থা নিয়েছে তেমনি যশোর থেকে উৎপাদিত চিংড়ির পোনা হেলিকপ্টার বা বিমানে কক্সবাজারে পাঠানোর উদ্যোগও সরকার নিয়েছে।
প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই দেশের সার্বিক উন্নয়ন তাঁর সরকারের একমাত্র লক্ষ্য উল্লেখ করে জাতির পিতা কন্যা বলেন, সমুদ্র, পাহাড় এবং সবুজে ঘেরা সমতল ভূমির এই চমৎকার ভূখন্ডকে জাতির পিতা আমাদেরকে উপহার দিয়ে গেছেন। কাজেই একে আরো উন্নত-সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি এর প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সম্পদ রক্ষা করা একান্ত ভাবেই জরুরি।
তিনি এ সময় দেশের একমাত্র কোরাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষার সঙ্গে দ্বীপটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও একান্তভাবে অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেন।
কক্সবাজারে সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন স্থাপনসহ কক্সবাজার থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম পর্যন্ত স্থল সীমানা রক্ষায় বর্ডার গার্ডের জন্য নতুন নতুন ‘বিওপি’ প্রতিষ্ঠা এবং যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে তাঁর সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
পর্যটকদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র যেন অটুট থাকে সে দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃর্পক্ষকে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বিশেষকরে লাল কাঁকড়া, কাছিম এবং অন্যান্য সামুদ্রিক জীবের বিচরণ ও প্রজনন ক্ষেত্র এবং সামুক-ঝিনুক, লতা-গুল্ম প্রভৃতির সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহবান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গোটা কক্সবাজার ঘিরেই আমাদের অনেক অনেক উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে সে জন্যই ‘কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃর্পক্ষ’ করে দিয়েছি। কাজেই পর্যটনকে আকর্ষণীয় করতে আজকাল অনেক ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়, সে সব ব্যবস্থাও আমরা ধীরে ধীরে নেব। কারণ, বাংলাদেশে বিশ্বে সবচেয়ে সুন্দর এবং উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠুক সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
তাঁর সরকার ইতোমধ্যেই করোনাকালিন অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি কাজে লাগিয়ে উৎপাদন বাড়াতে দেশবাসীর প্রতি তাঁর আহবান পুণর্ব্যক্ত করেন।
কক্সবাজার সমুদ্র তট রক্ষায় জাতির পিতার ঝাউবন সৃষ্টির প্রসঙ্গ টেনে এর চারদিকে ঝাউবনের সবুজ বেষ্টনি গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
আসছে আষাঢ় মাসে তাঁর দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের দেশব্যাপী অনুষ্ঠেয় বৃক্ষরোপন কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পুরোটাই যদি আমরা ঝাউবন দিয়ে ঢেকে দিতে পারি তাহলে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। কাজেই প্রতিবছরই সবাই মিলে এ রকম ঝাউবন তৈরি বা ম্যানগ্রোভ বৃক্ষরোপনের উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানান তিনি।