॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এর মাসিক সভা সোমবার (১৮ মে) সকালে পরিষদের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী। সভাপতির বক্তব্যে চেয়ারম্যান বলেন, কোভিড চলাকালীন সময়ে স্বাস্থ্য বিভাগ বিচক্ষণতার সঙ্গে কাজ করায় রাঙ্গামাটি জেলার মৃত্যুহার এবং ক্ষয়ক্ষতি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে। কাজের প্রতি সদিচ্ছা এবং নিষ্ঠা থাকলে যেকোন কাজে সফল হওয়া যায় তার উদাহরণ স্বাস্থ্য বিভাগ। তিনি বলেন, একইভাবে এলাকার উন্নয়ন কাজে সকলের সদিচ্ছা ও সহযোগিতা থাকলে সকল বিভাগের কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। পরিষদ এবং হস্তান্তরিত বিভাগের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশাসনিক সংক্রান্ত যেসমস্ত সমস্যা আছে তা সমঝোতার মাধ্যমে কাটিয়ে উঠে সরকারের প্রত্যাশিত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্যবৃন্দ যথাক্রমে সদস্য ঝর্ণা খীসা, সদস্য দিপ্তীময় তালুকদার, সদস্য অংসুই ছাইন চৌধুরী, সদস্য সবির কুমার চাকমা, সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া, সদস্য নিউচিং মারমা, সদস্য ইলিপন চাকমা, সদস্য প্রিয় নন্দ চাকমা, সদস্য বিপুল ত্রিপুরা, সদস্য মোঃ আব্দুর রহিম, সদস্য মোসাম্মৎ আছমা বেগম, সদস্য প্রবর্তক চাকমা, সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম দে, স্বাস্থ্য প্রকৌশলের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ অলিউর রহমান, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ, সমাজসেবা বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ ওমর ফারুক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ শাহজাহান, জেলা সমবায় উপসহকারি নিবন্ধক কেফায়েত উল্লাহ খান, জেলা তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা পরেশ চন্দ্র চাকমা, পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া, হাস প্রজনন খামারের উপসহকারী প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আবু তাহের, ক্ষুদ্র নৃগোষ্টির সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট এর কালচারাল অফিসার শোভিত চাকমা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্ত্ াডা: বরুন কুমার দত্ত, সরকারী মুরগী প্রজনন ও উন্নয়ন খামার এর ব্যবস্থাপক ডাঃ পলি রাণী ঘোষ, সহকারী ব্যবস্থাপক বিসিক এজিএম মোঃ ইসমাইল হোসেন, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সহকারি পরিচালক ডা: বেবী ত্রিপুরা, সহকারি পরিচালক বিএডিসি মোঃ লুৎফর রহমান, আরপিটিআই ট্রেইনার লিপি চাকমা, জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারি পরিচালক অনুতোষ চাকমা, সহকারী পরিচালক সরকারী গণগ্রন্থাগার সুনীলময় চাকমা, সিনিয়র সহকারী পরিচালক শুকর উন্নয়ন খামার কুসুম চাকমা, উপপরিচালক জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র ডা: তুষার কান্তি চাকমা, ভেটেরিনারী অফিসার জেলা ভেটেনারী হাসপাতাল ডা: মো: নাজমুল হক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক তপন কুমার পাল, পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়ুয়া, জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুনেন্দু ত্রিপুরা, সহকারি প্রকৌশলী উজ্জল কান্তি দেওয়ান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মনতোষ চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাগণ স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের কাজের অগ্রগতি তুলে ধরেন।
॥ লংগদু প্রতিনিধি ॥ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদু্যুৎ এই শ্লোগানকে বাস্তবায়নে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সেই মোতাবেক আমরা ধাপে ধাপে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। পার্বত্যাঞ্চলে যে সব এলাকায় আগামী ৫-১০ বছরেও বিদু্যুৎ যাওয়ার সম্ভাবনা নাই ঐসব এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে ঘরে সোলার প্যানেল দিয়ে সৌর বিদু্যুৎ পৌছে যাবে।
বুধবার (১৮মে) সকালে রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার বগাচতর ইউপি কার্যালয়ে সোলার প্যানেল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিখিল কুমার চাকমা এসব কথাগুলো বলেন।
লংগদু উপজেলার বগাচতর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদু্যুৎ সরবরাহ শীর্ষক প্রকল্পের (২য় পর্যায়ে) আওতায় ৭৪০ পরিবারকে ১০০ ওয়ার্ড সোলার প্যানেল ও ১২ ভোল্টের একটি করে ব্যাটারি প্রদান করা হয়।
সোলার প্যানেল বিতরণ অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড উপসচিব সদস্য বাস্তবায়ন ও প্রকল্প পরিচালক মো. হারুন অর-রশিদ এতে সভাপতিত্ব করেন।
এসময় উস্থিত ছিলেন, বগাচতর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বশর, সাবেক বগাচতর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দসহ জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণ।
প্রধান অতিথি নিখিল কুমার চাকমা বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, এই সোলার প্যানেল সম্পূর্ণ বিনামূল্য বিতরণ করা হচ্ছে। সোলার সিষ্টেমের জন্য কারো সাথে কোন ধরনের আর্থিক লেনদেন করবেন না। এই সুবিধায় অত্র এলাকা সমূহের মান উন্নয়ন হবে। শিক্ষার্থীদের লেখা পড়া করতে সহজ হবে, সমাজ পরিবর্তন হবে। তিনি আরো বলেন, আমি চেষ্টা করবো বগচতর ইপির রাস্তা, ব্রীজ সংস্কার কাজ করতে। বগাচতর ইউপির প্রায় পর্যায় ক্রমে ৯শ পরিবারের তালিকা আছে সবাইকে দেওয়া হবে।
॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারে অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ না করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তাঁর সরকার কক্সবাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র্য অটুট রেখে এর সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করা হবে। সে জন্য আমি সবাইকে বিশেষ করে কক্সবাজারবাসীকে অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ না করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রী বুধবার (১৮ মে) সকালে কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের নব-নির্মিত পরিবেশ-বান্ধব বহুতল ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি’র ভাষণে এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কক্সবাজারের বীর মুক্তিযোদ্ধা মাঠে আয়োজিত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে আশপাশের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিশ্চিত করার লক্ষে ইতোমধ্যে একটি মাস্টার প্লান তৈরি করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের বিশাল সমুদ্র সীমায় পর্যটনের ক্ষেত্র আরো প্রসারিত করার মাধ্যমে এই জায়গাটাকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করার উদ্যোগ আমরা নিতে যাচ্ছি। তাছাড়া যেহেতু এটা আন্তর্জাতিক এয়ার রুটে পড়ে, তাই কক্সবাজার বিমানবন্দরকে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিমান বন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠায় সরকারের কাজ চলমান রয়েছে।
এই বিমানবন্দর যখন সম্পূর্ণ হবে তখন পশ্চিমা দেশগুলো থেকে প্রাচ্যে যাতায়াতকারী বিমানগুলো এখান থেকে রিফুয়েলিং করার মাধ্যমে এটি একটি রিফুয়েলিং কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, রিফুয়েলিংয়ে বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন সময়ে অগ্রাধিকার পায়। এক সময় হংকং ছিল, এর পর থাইল্যান্ড অথবা সিঙ্গাপুর এখন দুবাই। কিন্তু এখন কক্সবাজারই হবে আন্তর্জাতিক আকাশ পথে রিফুয়েলিং এর একটা কেন্দ্র।
পাশাপাশি এখানে তাঁর সরকার ক্রিকেট ষ্টেডিয়াম করেছে, ফুটবল ষ্টেডিয়ামও করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক খেলাধূলা আয়োজনের সব ধরনের ব্যবস্থা এখানে থাকবে। মেরিন ড্রাইভ যেটি কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত করা হয়েছে সেটা একেবারে চট্টগ্রাম পর্যন্ত করা হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার বক্তৃতা করেন। কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ স্বাগত বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের কর্মকান্ড এবং নব-নির্মিত ভবনের ওপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সরকার প্রধান বলেন, তাঁর সরকার ইতোমধ্যে কক্সবাজারে অনেকগুলো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এরমধ্যে মহেশখালী, কুতুবদিয়া, সোনাদিয়া, শাহপরীর দ্বীপ, সেন্ট মার্টিনসহ বিভিন্ন দ্বীপাঞ্চলের উন্নয়ন উল্লেখযোগ্য।
তিনি বলেন, আজকে মহেশখালীতে গভীর সমুদ্র বন্দর যেমন তৈরি হচ্ছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হচ্ছে এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে ওঠায় বিনিয়োগ হচ্ছে। একে একটি ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড’ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এই মহেশখালীর উন্নয়ন দেশীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিস্ময়ের সৃষ্টি করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
পাশাপাশি টেকনাফে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে এর সমুদ্র সৈকতও যাতে আন্তর্জাতিক মানের হয় সে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
অতীতে জাতির পিতার সঙ্গে কক্সবাজার সফরকালে যোগাযোগ ব্যবস্থার দুরাবস্থার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি অনুযায়ী দোহাজারি থেকে গুনধুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ এবং চমৎকার একটি রেলস্টেশন নির্মাণের কাজও এগিয়ে চলেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের ন্যায় কক্সবাজার অবধি হাইওয়ের কাজও চলছে। পাশাপাশি সিলেট থেকে কক্সবাজার সরাসরি বিমান চলাচল চালু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আমাদের অন্যান্য অঞ্চল যেমন বরিশাল, রাজশাহী এবং সৈয়দপুরসহ যতগুলো বিমানবন্দর রয়েছে সেখান থেকে কক্সবাজারের সঙ্গে সরাসরি বিমান চলাচল চালুর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে ইতোমধ্যেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, কক্সবাজারে একটি বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয় স্থাপনের অনুমোদন সরকার দিয়েছে। সেখানে একটি মেডিক্যাল কলেজ করা হয়েছে, হাসপাতাল স্থাপনের পাশাপাশি উন্নতমানের কনভেনশন সেন্টার এই কক্সবাজারেই করা হবে। যাতে যে কোন ধরনের সেমিনার-সিম্পোজিয়াম সেখানে আয়োজনের পাশাপাশি পর্যটকদের জন্যও আকর্ষণীয় হয়।
কক্সবাজারে ‘সি এ্যাকুরিয়াম’ প্রতিষ্ঠার কথা পুনরোল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, এদেশে এ ধরনের এ্যাকুরিয়াম পরিচালনায় দক্ষ জনবলের অভাব থাকায় তাঁর সরকার এ ব্যাপারেও কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি এ সময় ’৯১ সালের ঘূর্ণি দুর্গতদের কক্সবাজার খুরুশকুলে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় বহুতল ফ্ল্যাট বাড়ি নির্মাণ করে দেয়ার কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, এই ফ্ল্যাটের অধিবাসীরা অধিকাংশই মৎসজীবী হওয়ার কারণে সেখানে একটি দৃষ্টিনন্দন আধুনিক শুটকির হাট করে দেয়ার পাশাপাশি সেখানকার সি-বীচ উন্নয়নেরও পদক্ষেপ নেয়া হবে।
যে সব দেশে বরফ পড়ে সে সব দেশে বরফ গলানোর জন্য অপরিশোধিত লবণের ব্যবহার হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী লবণের উৎপাদন বাড়ানো এবং এ অঞ্চলের লবণ চাষিদের জন্য আরো সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে লবণ উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তারও উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, চিংড়ি চাষিদের জন্য তাঁর সরকার সেখানে চিংড়ির পোনা উৎপাদনের যেমন ব্যবস্থা নিয়েছে তেমনি যশোর থেকে উৎপাদিত চিংড়ির পোনা হেলিকপ্টার বা বিমানে কক্সবাজারে পাঠানোর উদ্যোগও সরকার নিয়েছে।
প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই দেশের সার্বিক উন্নয়ন তাঁর সরকারের একমাত্র লক্ষ্য উল্লেখ করে জাতির পিতা কন্যা বলেন, সমুদ্র, পাহাড় এবং সবুজে ঘেরা সমতল ভূমির এই চমৎকার ভূখন্ডকে জাতির পিতা আমাদেরকে উপহার দিয়ে গেছেন। কাজেই একে আরো উন্নত-সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি এর প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সম্পদ রক্ষা করা একান্ত ভাবেই জরুরি।
তিনি এ সময় দেশের একমাত্র কোরাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষার সঙ্গে দ্বীপটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও একান্তভাবে অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেন।
কক্সবাজারে সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন স্থাপনসহ কক্সবাজার থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম পর্যন্ত স্থল সীমানা রক্ষায় বর্ডার গার্ডের জন্য নতুন নতুন ‘বিওপি’ প্রতিষ্ঠা এবং যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে তাঁর সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
পর্যটকদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র যেন অটুট থাকে সে দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃর্পক্ষকে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বিশেষকরে লাল কাঁকড়া, কাছিম এবং অন্যান্য সামুদ্রিক জীবের বিচরণ ও প্রজনন ক্ষেত্র এবং সামুক-ঝিনুক, লতা-গুল্ম প্রভৃতির সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহবান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গোটা কক্সবাজার ঘিরেই আমাদের অনেক অনেক উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে সে জন্যই ‘কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃর্পক্ষ’ করে দিয়েছি। কাজেই পর্যটনকে আকর্ষণীয় করতে আজকাল অনেক ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়, সে সব ব্যবস্থাও আমরা ধীরে ধীরে নেব। কারণ, বাংলাদেশে বিশ্বে সবচেয়ে সুন্দর এবং উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠুক সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
তাঁর সরকার ইতোমধ্যেই করোনাকালিন অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি কাজে লাগিয়ে উৎপাদন বাড়াতে দেশবাসীর প্রতি তাঁর আহবান পুণর্ব্যক্ত করেন।
কক্সবাজার সমুদ্র তট রক্ষায় জাতির পিতার ঝাউবন সৃষ্টির প্রসঙ্গ টেনে এর চারদিকে ঝাউবনের সবুজ বেষ্টনি গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
আসছে আষাঢ় মাসে তাঁর দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের দেশব্যাপী অনুষ্ঠেয় বৃক্ষরোপন কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পুরোটাই যদি আমরা ঝাউবন দিয়ে ঢেকে দিতে পারি তাহলে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। কাজেই প্রতিবছরই সবাই মিলে এ রকম ঝাউবন তৈরি বা ম্যানগ্রোভ বৃক্ষরোপনের উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানান তিনি।
চট্টগ্রাম ব্যুরো :: চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জি: মোশাররফ হোসেন এম.পি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানে দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। এই সাফল্য শেখ হাসিনার, এই সাফল্য আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। তৃণমূল আওয়ামী লীগের ঐক্য ধরে রাখা গেলে শেখ হাসিনার সমাদৃত ও প্রশংসিত অর্জনগুলোর কারণে আওয়ামী লীগের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। তৃণমূল ঐক্যবদ্ধ না হলে ২০০১ সারের চেয়েও খারাপ পরিণতি আমাদের জন্য অপেক্ষা করবে। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি এখন থেকে নিতে হবে। তূণমূল আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী সংগঠন থাকলে কেউ আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে পারবেনা, আগামী নির্বাচনে আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। আজ ১৪ মে ২০২২ (শনিবার) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম নগরির জিইসি কনভেনশনর সেন্টারে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এম.পি বলেন, বিএনপি সরকার দূর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। যথেষ্ট দূর্নীতি করেছিল বিএনপি কিন্তু ১/১১ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকার সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার করেছিল শেখ হাসিনাকে। খাদ্য ঘাটতির বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ। বিদ্যুতের উৎপাদন বেড়েছে অনেকাংশে। উন্নয়নের যে ধারা দেখা যাচ্ছে তাতে বিশ্লেষকরা বলছেন শীঘ্রই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। তাই এই দেশে শেখ হাসিনার সরকার বার বার দরকার।
বিশেষ অতিথি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাসান মাহমুদ এম.পি বলেন, শ্রীলঙ্কার নেতারা এখন যেভাবে পালাচ্ছে, বিএনপির নেতারা সেভাবে আগেই পালিয়ে গেছে। তারেক রহমান ‘আমি আর রাজনীতি করবো না’ মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে গেছেন। ঢাকায় তাদের নেতা মাহবুবুর রহমানকে দলের নেতাকর্মীরা ধাওয়া করেছিল। ৮০ সালে জিয়াউর রহমান যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যান তখন তাকেও জুতা নিক্ষেপ করেছিল। এখন নিজেরা কীভাবে পালাবেন সেটির পথ খুঁজুন। তিনি বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভীসহ বিএনপি নেতারা পদ্মা নদীর ওপারে কীভাবে যাবেন- তা দেখার অপেক্ষায় আছি। তারা কি গাড়িতে চড়ে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যাবেন, নাকি আওয়ামী লীগের নৌকায় চড়ে ওপারে যাবেন।
তিনি বলেন, তৃণমূল হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রাণ। জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলের নেতারাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রেখেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে নানা সমস্যা নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে বাংলাদেশ আ.লীগ। অনেক নেতা দ্বিধান্বিত ও বিচলিত হয়েছেন, অনেক নেতা দল ত্যাগ করেছেন, মূল নেতৃত্বের সঙ্গে বেঈমানি করেছেন। কিন্তু তৃণমূল কখনো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে বেঈমানি করেনি।
বিশেষ বক্তা চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি বলেন, তৃণমূলে নেতা-কর্মীরা হচ্ছে সংগঠনের প্রাণ, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বিশ্বস্থ, শেখ হাসিনার বিশ্বাস রয়েছে এই তৃণমূলের উপর। তৃণমূলের ঐক্যের কারনে শেখ হাসিনা অতীতে বহু বিপদ সঙ্কুল পথ পেরিয়েছে। ঐক্যবদ্ধ থাকলে আওয়ামী লীগকে কেউ পরাজিত করতে পারবে না। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা অহেতুক সমালোচনা করবেন না। দল-নৌকা আমাদের, নৌকাকে জিততেই হবে। শেখ হাসিনা মানে উন্নয়ন, অগ্রগতি, শেখ হাসিনা থাকলেই দেশ ভাল থাকবে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, প্রতিনিধি সভা মূলত ঐক্যের সমাবেশ। আমরা এমপি ও দলীয় নেতা-কর্মীরা মিলে যদি সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন জনগণের মাঝে সঠিকভাবে প্রচার করতে পারি এবং জোট সরকার আমলের চিত্রগুলো তুলে ধরা গেলে আগামী নির্বাচনে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৬টি আসন আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে উপহার দিতে পারব। তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দলের সকল স্তরে ঐক্য সুদৃঢ় করার আহবান জানান।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ধারাবাহিকভাবে পর পর তিনবার দেশের শাসনভার গ্রহণ করে আজ জনগণকে সেবা ও দেশের কল্যাণ করে যাচ্ছেন। আজকে আমি মনে করি বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী এমন একটি দল, যে দলের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা এনেছিলেন। শুধু তাই নয় বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর তাঁর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানুষের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের মত দেশের মানুষের সেবা দিয়েছে এমন কোন দল নেই।
আওয়ামী লীগের অর্থ পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি বলেন, দেশ যখন স্বাধীন হয়, তখন পাকিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে ৭০ গুণ ধনী ছিল। আজকে বাংলাদেশের এক টাকা সমান পাকিস্তানের দুই রূপির চেয়ে বেশি। শ্রীলংকার বৈদেশিক রিজার্ভ ৫০ মিলিয়ন, পাকিস্তানের বৈদেশিক রিজার্ভ ১০.৫ বিলিয়ন, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের বৈদেশিক রিজার্ভ যোগ করলে ১১ বিলিয়ন, এর মধ্যে বাংলাদেশে বৈদেশিক রিজার্ভ হচ্ছে ৪১ বিলিয়নের বেশি। অর্থাৎ শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের চেয়ে চার গুণ বৈদেশিক রিজার্ভ রয়েছে। যা দিয়ে ৬ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সক্ষমতা রয়েছে। আজকে আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই বাংলাদেশ কখনও পাকিস্তান বা শ্রীলংকা হবে না।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি, আওয়ামী লীগের ধর্ম সম্পাদক এড: সিরাজুল মোস্তফা, নজরুল ইসলাম চৌধুরী এম.পি, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এম.পি এবং ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিবৃন্দ।
উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, সহ-সভাপতি আবুল কালাম চৌধুরী, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইদ্রিস, সহ-সভাপতি চেয়ারম্যান মো: হাবিবুর রহমান, সহ-সভাপতি এড: এ কে এম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সহ-সভাপতি এম এ সাঈদ, এস এম আবুল কালাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাজাদা মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এড: জহির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোছলেহ উদ্দিন মনসুর, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড: মির্জা কছির উদ্দিন, আবু সুফিয়ান, শ্রম সম্পাদক খোরশেদ আলম, দপ্তর সম্পাদক আলহাজ্ব আবু জাফর, প্রচার সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী, কৃষি সম্পাদক এড: আবদুর রশিদ, শিক্ষা সম্পাদক বোরহান উদ্দিন এমরান, বন বিষয়ক সম্পাদক এড: মুজিবুল হক, ক্রীড়া সম্পাদক গোলাম ফারুক ডলার, তথ্য সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন, কোষাধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান সিআইপি, ধর্ম সম্পাদক আবদুল হান্নান চৌধুরী মঞ্জু, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো: নাছির, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতিন, মহিলা সম্পাদিকা এড: কামরুন নাহার, স্বাস্থ্য সম্পদক ডা: তিমির বরণ চৌধুরী, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিজয় কুমার বড়ুয়া, সাতকানিয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল মোতালেব সিআইপি, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য নুরুল আলম, দেবব্রত দাশ, মোজাম্মেল হক, সাবেক চেয়ারম্যান নাছির আহমদ, মো: মুছা, মোস্তাক আহমদ আঙ্গুর, ওমর ফারুক, আয়ুব আলী, মাহবুবুর রহমান সিবলী, সৈয়দুল মোস্তফা চৌধুরী রাজু, এ কে আজাদ, আনোয়ার কামাল, ছিদ্দিক আহমদ বি.কম, সেলিম নবী, লোহাগাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি খোরশেদ আলম, সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন হিরু, আনোয়ারা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক এম এ মালেক, সাতকানিয়া সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন, বোয়ালখালী আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আ ক ম সামশুজ্জামান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, চন্দনাইশ উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবু আহমদ জুনু, কর্নফুলী আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী রনি, চন্দনাইশ পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমান খোকা, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগ সভাপতি আ ম ম টিপু সুলতান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক পার্থ সারথী চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবনা, দক্ষিণ জেলা শ্রমিক লীগ সভাপতি আবদুল হাকিম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মো: গালিব সাদলী, বোয়ালখালী পৌরসভা মেয়র জহুরুল ইসলাম জহুর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা কৃষকলীগ সভাপতি আতিকুর রহমান চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এস এম বোরহান উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো: আবু তাহের প্রমুখ।
প্রতিনিধি সমাবেশে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটি, পৌরসভা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামী লীগের প্রতিটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম অফিস :: আড্ডা, গান ও স্মৃতিচারণায় সবাই ফিরে গিয়েছিলেন ফেলে আসা সোনালী দিনে। কলেজ জীবনের শিক্ষক ও সতীর্থদের কাছে পেয়ে জড়িয়েছেন আলিঙ্গনে।
ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কলেজের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরা পুনর্মিলন অনুষ্ঠানের দিনটি পার করেছেন এভাবেই।
শুক্রবার (১৩ মে) চট্টগ্রাম কলেজ প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পুনর্মিলন-২০২২ এর আয়োজন করা হয় নগরের নেভি কনভেনশন সেন্টারে। সেখানে কলেজের প্রশাসনিক ভবন, রেড বিল্ডিংসহ বিভিন্ন ভবনের ছবি প্রদর্শন করা হয়। এসব ছবির সামনে সাবেক শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে ছবি তুলেন, আড্ডায় মাতেন।
সকাল ৯টায় পুনর্মিলনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী অধ্যাপক চিত্ত প্রসাদ তালুকদার (৯৮)। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী আহমদ কায়কাউস। জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এসময় সবাই দাঁড়িয়ে সম্মান জানান।
এরপর পুনর্মিলনী আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী আলী আহমদ ও সদস্য সচিব এস এম আবু তৈয়ব বক্তব্য দেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সমন্বয়ক একরামুল করিম। অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ স্মারক বক্তৃতা দেন চট্টগ্রাম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল হাসান।
এরপর শুরু হয় স্মৃতিচারণ পর্ব। বক্তব্য দেন কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইসমাইল খান, সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য সরওয়ার জামাল নিজাম, একে খান গ্রুপের সালাউদ্দিন কাশেম খান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. আবদুল করিম, সাবেক সচিব মো. নাসির উদ্দিন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহফুজা আখতার, দৈনিক পূর্বকোণ চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন চৌধুরী, লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়া প্রমুখ।
স্মৃতিচারণায় একে খান ফাউন্ডেশনের নামে চট্টগ্রাম কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি চালুর ঘোষণা দেন সালাউদ্দিন কাশেম খান।
অধ্যাপক চিত্ত প্রসাদ তালুকদার বলেন, ১৯৪২ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত আমি চট্টগ্রাম কলেজে পড়েছি। আমাদের সময়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের ভালোবাসা পেয়েছি। আমার বন্ধুদের কাউকে আজ আর দেখি না। ছাত্রদের অনেককেই দেখলাম, খুব ভালো লাগছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু সিকান্দার খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মোহিত উল আলম, বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক হাসিনা জাকারিয়া বেলা, অধ্যক্ষ আনোয়ারা আলম, আইনজীবী আবুল হাশেম, ডা. শেখ শফিউল আজম প্রমুখ।
স্মৃতিচারণা শেষে মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর প্রায় ২ হাজার ২০০ প্রাক্তনী যোগ দেন কৌতুক পরিবেশন, কুইজ প্রতিযোগিতা, কবিতা পাঠ ও গল্প বলা, কলেজ বন্ধুদের পরিবেশনায় গানের অনুষ্ঠানে। সন্ধ্যায় অতিথি শিল্পীদের সঙ্গে গানে গলা মিলিয়ে সবাই ফিরে যান ফেলে আসা দিনগুলোর কাছে।
পুনর্মিলন অনুষ্ঠান উদযাপন প্রচার উপ-কমিটির সদস্য সচিব সাংবাদিক শিমুল নজরুল জানান, দেশের নানা প্রান্ত থেকে এসেছিলেন সাবেক শিক্ষার্থীরা। কেউ এসেছেন বিদেশ থেকেও। সঙ্গে ছিল সন্তানরা। র্যাফেল ড্র-তে শেষ হয় এই আয়োজন।
॥ কাপ্তাই প্রতিনিধি ॥ কাপ্তাইয়ের ২নং রাইখালী ইউনিয়ন এর ১নং ওয়ার্ডের দূর্গম সীতাপাহাড় মারমা পাড়ায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় স্থানীয় দোকানদার থোয়াই চাই মারমা (৫৩) ও তাঁর সহধর্মিণী চিংঞো মারমা (৪০) গুরুতর আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১২ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এই ঘটনা ঘটে বলে জানান, আহত দম্পতির ছেলে সুইহ্লা চিং মারমা। তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ৬ জনের একটি সন্ত্রাসী দল অস্ত্র এবং লাঠি নিয়ে এসে আমাদের দোকানে বাবা এবং মা’কে লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করে চলে যান। সন্ত্রাসীরা সকলে সবুজ পোশাক পরিহিত ছিল বলে জানান সুইহ্লা চিং মারমা।
পরে তাঁর পরিবারের সদস্যরা আহত দুই জনকে রাত ৯টায় চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ রাজীব শর্মা জানান, গুরুতর আহত থোয়াই চাই মারমার বুকের পাজরের হাড় ভাঙ্গছে এবং বাম হাতে ক্ষত রয়েছে। এছাড়া তাঁর সহধর্মিণী কোমরে আঘাত পেয়েছে।
রাইখালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ সেলিম জানান, আমাকে ঘটনাটি তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে। তবে কারা মেরেছে সেই বিষয়ে অবগত নই।
চন্দ্রঘোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, ঘটনা শুনার পর চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালে পুলিশ গিয়েছে। এই বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেন নাই। অভিযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ওসি জানান।
॥ রাহুল বড়ুয়া ছোটন, বান্দরবান ॥ জাতীয় গণমাধ ্যম ইন্স টি টিউট এর আয়োজনে বান্দরবানে শিশু ও নারী উন্নয় ণে সচেতনতামূলক যোগা যোগ কার্যক্রম প্রকল্প (৫ম পর্যায়) আওতায় ৩দিনব ্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার ২য় দিনে ক্ষেত্র অনুশীলনের সাথে জীবনের জন্য তথ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৩ মে ) সকা লে বান্দরবান প্রেসক্লা বের হল রুমে ২য় দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অনু ষ্ঠিত হয়। এসময় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় জাতীয় গণমাধ ্যম ইন স্ট্রি টিউট এর পরিচালক (প্রশিক্ষণ প্রকৌশল) ও সহকারি প্রকল্প পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলাম, উপপরিচালক (প্রশাসন) মোঃ সোহেল রানা, সহকারী পরিচালক (বেতার প্রকৌ. প্রশি) মোঃ নাফিস আহম্মেদ, জাতীয় গণমাধ ্যম ইন্স টি টিউট এর উপ-পরিচালক (চলচ্চিত্র) মো.সোহেল পারভেজ, জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হান্নান, বান্দরবান প্রেসক্লা বের সভাপ তি ম নিরুল ইসলাম মনু, সাধারণ সম্পাদক মিনারুল হকসহ বান্দরবানের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় ২য় দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় শিশু ও নারীর উন্নয়ন, শিশু ও নারীর স্বাস্থ্য এবং বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন প্রশিক্ষকেরা।
৩দিন ব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বান্দরবানের ২৩জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করছে আর আগামী ১৪ মে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার শেষ হবে।
॥ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ॥ বুদ্ধ ধর্ম সংঘ” এই তিনটি প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ত্রি-স্মৃতি বিজরিত শুভ মহান বৌদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন উপলক্ষে ফ্রি চিকিৎসা সেবা কর্মসূচি ও চাকমা জাতির বর্ণমালা পরিচয় ও মাতৃভাষা শিক্ষার ভ্রাম্যমান কর্মসূচি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার(১৩মে) দুপুরে পানছড়ি উপজেলার জ্যোতির্ময় কার্বারী (তালতলী) পাড়ায় আর্য্যমিত্র বৌদ্ধ বিহারের এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এ সময় আর্য্যমিত্র বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত সুদর্শী স্থবিরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অন্যতম সদস্য শতরুপা চাকমা। এ কর্মসূচি উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শতরুপা চাকমা বলেন, বুদ্ধদেবের মতে মানুষের দুঃখ-কষ্টের মূল কারণ হলো অজ্ঞতা ও আসক্তি। অজ্ঞতা বা জ্ঞানের অভাবহেতু এবং পার্থিব বস্তুর ওপর আসক্তির ফলে মানুষের পুনর্জন্মেও দুঃখকষ্টের শেষ হয় না। মানুষ নিজ কর্মফল অনুসারে বারবার জন্ম লাভ করে এবং কৃতকর্মের ফল ভোগ করে। সুতরাং ‘নির্বাণলাভ’ বা পুনর্জন্ম থেকে নিষ্কৃতি লাভই মানুষের প্রধান এবং চরম উদ্দেশ্য হওয়া প্রয়োজন। সৎকর্মের দ্বারা জ্ঞান অর্জন করে আত্মার উন্নতিসাধন করলেই এই নির্বাণ লাভ সম্ভব।তৃষার অবসান এবং আত্মার উন্নতি সাধনের জন্য বুদ্ধদেব ‘অষ্টাঙ্গিক মার্গের নির্দেশ দিয়েছেন, যথা-সৎ সংকল্প, সৎ বাক্য, সৎ কর্ম, সৎ চেষ্টা, সং স্মৃতি, সম্যক দৃষ্টি, সৎ জীবন ও সম্যক সমাধি।
এ চিকিৎসা সেবা কর্মসূচি উপলক্ষে বিনামূল্যে হৃদরোগ, মেডিসিন, ব্রেইন ও স্নায়ুরোগ মাথা ব্যথা, স্ট্রোক, প্যারালাইসিস ও খিঁচুনি, গাইনি ও শিশুরোগসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। এছাড়াও চিকিৎসা সেবা ও উপদেশ প্রদান, বিনামূল্যে ডায়াবেটিস পরীক্ষা এবং রোগীদের ফলোআপ ভিজিট করা হয়।
এ সময় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা টিমের নেতৃত্বে ছিলেন, খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক অফিসার ডা. রিপল বাপ্পি চাকমা, ডা. অর্ণব চাকমা, ডা. দীপা ত্রিপুরা, কমলছড়ি আম্রকানন বৌদ্ধ বিহারের ভিক্ষু সুমনালংকার মহাথের, খবংপড়িয়া দশবল বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ও সাবেক পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি অগ্রজ্যোতি মহাথের প্রমুখ।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দেশের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে রাঙ্গামাটিতে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় বৌদ্ধ বিহার ও শাখা বন বিহারগুলোতে শুভ বুদ্ধ পর্ণিমা উপলক্ষে শহরে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ এই পূর্ণিমায় জন্মগ্রহণ, বুদ্ধত্ব লাভ এবং মহাপরিনির্বাণ লাভ করায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
শুক্রবার (১৩ মে) সকালে বৌদ্ধ ধর্র্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, রাঙ্গামাটি ও পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশ’র উদ্যোগে রাঙ্গামাটি পৌর এলাকার বিভিন্ন বিহারের অধ্যক্ষ ও দায়ক দায়িকাদের অংশ গ্রহনে জেলার জিমন্যাসিয়াম হতে বনরূপার মৈত্রী বিহার পর্যন্ত বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষে ধর্মীয় আলোচনা সভায় মিলিত হয়। এতে রঙ-বেরঙের বৌদ্ধ পতাকা হাতে নিয়ে পুণ্যার্থী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী ও পুরুষ অংশ নেন।
এর আগে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ফিতা কেটে মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা ও পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশের সভাপতি শুদ্ধালংকার মহাথের। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট রাঙ্গামাটির ট্রাস্টি জয় সেন তঞ্চঙ্গ্যা, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দূর্গেশ্বর চাকমাসহ শহরের বিভিন্ন বিহারের বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘ ও দায়ক দায়িকারা।
এ সময় বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুরা এই বুদ্ধ পূর্ণিমার মধ্যদিয়ে সকল প্রকার লোভ, হিংসা, মোহ সংঘাতসহ যাবতীয় খারাপ কাজ পরিহার করে সৎ পথে চলতে ও মৈত্রীপূর্ণ মনোভাব নিয়ে একে অপরে সুখে-শান্তিতে বসবাস করার হিতোপদেশ প্রদান করেন।
এছাড়াও অন্যান্য বৌদ্ধ বিহারগুলোতে প্রদীপ প্রজ্বলন, শান্তি ও মঙ্গল শোভাযাত্রা, ধর্মীয় আলোচনা সভা, সমবেত প্রার্থনা, আলোচনা সভা ও বুদ্ধ পূজা, পিন্ডদান, প্রাতঃরাশ, পঞ্চশীল গ্রহণ, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, বুদ্ধমূর্তি দান, প্রদীপ পূজাসহ দিনব্যাপী কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এসময় পৃথিবীর মানব জাতির শান্তি ও মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
চট্টগ্রাম: নগরের ফয়’স লেকে এমিউজমেন্ট পার্ক এবং সি ওয়ার্ল্ড গত দুই বছরে চারটি ঈদ আর দুটি পহেলা বৈশাখে বন্ধ ছিল করোনা মহামারীর কারণে। এবছর সেই অবস্থা নেই।
শিশুদের জন্য যোগ হয়েছে টয় ট্রেন। রাইডগুলোতে লেগেছে নতুন রঙ। মেরি গো রাউন্ডের ঘোড়াগুলোর বাহারি রঙে নজর কাড়ছে সবার। লেকের ধারে ওয়াকওয়েতে ফুটে উঠেছে রঙিন নকশা। নৌভ্রমণের জন্য আছে ১০টি নৌযান।
কনকর্ডের উপ-ব্যবস্থাপক (মার্কেটিং) বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ঈদের পরদিন থেকে সাতদিনে মোট ৩৫-৪০ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হবে বলে আশা করছি। ঈদে থাকছে ডিজে শো। গত দুইবছর মহামারীর কারণে মানুষ ঈদে কোথাও বেড়াতে পারেনি। আমরা প্রস্তুত দর্শনার্থীদের বরণ করে নিতে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ভ্রমণ পিপাসুরা রিসোর্ট ও বাংলো বুকিং দিয়েছেন।
এই বিনোদন কেন্দ্রের পাশে জেলা প্রশাসন পরিচালিত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা মানুষের বিনোদনের বিশেষ আকর্ষণ। সেখানেও ঈদের সময় চার-পাঁচদিনে ৬০-৭০ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হবে বলে আশা করছেন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ।
কাজীর দেউড়ির শিশু পার্কের রাইডগুলোতেও লেগেছে নতুন রঙ। পার্ক পরিচালনাকারী ওয়ান্ডার ল্যান্ডের জিএম মো. নাছির উদ্দিন জানান, গত দুই বছরের মধ্যে প্রায় এক বছর পার্ক বন্ধ ছিল। এবার ঈদে জনসমাগম হলে আমরা ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবো।
নগরের বহদ্দারহাট স্বাধীনতা কমপ্লেক্স পরিচালনাকারী ওয়েল এন্টারপ্রাইজের জিএম মো. আলী জনি বলেন, ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের স্বাগত জানাতে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত। এখানে সব রাইড সংস্কার করা হয়েছে।
এছাড়াও কর্ণফুলী নদীর তীর, কাট্টলী সৈকত, সিআরবি, ওয়ার সিমেট্রিতেও ভিড় হবে ঈদের ছুটিতে।
ঈদের ছুটিতে সবচেয়ে বেশি মানুষ আসেন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এবার দর্শনার্থীদের চাপ থাকবে। তাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব বিনোদন কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশ সদস্যরাও টহলে থাকবেন।