মঙ্গলবারের ওই ধ্বংসযজ্ঞের পর বুধবার দেশটির প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন। তিনি চার সন্তান হারানো এক পরিবারসহ প্রিয়জন হারানো অনেক পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাদের সান্ত্বনা ও সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
“আপনারা একা নন, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আমাদের পক্ষে যা যা করা সম্ভব সব করবো আমরা,” শোকগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন তিনি।
বুধবার রাতে কোয়াজুলু-নাটালের কোঅপারেটিভ গভর্নেন্স বিভাগ এক বিবৃতিতে বলেছে, মৃতের সংখ্যা ৩০৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ ফের সচল হয়েছে এবং আবর্জনা অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে রামাফোসা বলেছেন, “আমাদের দেখা অন্যতম বড় দুর্যোগের মোকাবেলা করছেন আপনারা। এতদিন আমরা ভাবতাম, এসব ঘটনা মোজাম্বিক বা জিম্বাবুয়ের মতো অন্য দেশগুলেোতেই শুধু ঘটে।”
দক্ষিণ আফ্রিকার উত্তরের প্রতিবেশী মোজাম্বিক গত দশকে একের পর এক প্রলয়ঙ্করী বন্যার শিকার হয়েছে। গত মাসেও দেশটিতে বন্যা, ভূমিধসে ৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
বন্যায় সন্তান হরানো মেরি সোকেলা রয়টার্সকে জানান, সোমবার রাতে যখন তাদের এলাকাটি ডুবে যায় তখন ছাদে বজ্রপাতের মতো প্রবল শব্দ শুনতে পান তিনি, এরপরই তার বাড়ির দেয়ালগুলো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়।
“আমার প্রতিবেশীরা আমাকে সাহায্য করার চেষ্টা করে, এতে দুই ঘণ্টা লেগে যায়। দুই ঘণ্টা পর আমি বাঁচলেও আমার সন্তানটি মারা যায়,” বলেন তিনি।
রামাফোসার জলবায়ু কমিশনের একজন কমিশনার এবং সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল রাইটসের প্রধান মেলিসা ফৌরি রয়টার্সকে বলেন, “এগুলোর কোনোটাই আশ্চর্যজনক না, কিন্তু পুরোপুরি ধ্বংসাত্মক। কতো মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, ভাবতে পারেন? রাস্তা, বন্দর…ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।”
“দক্ষিণ আফ্রিকায় আমরা এখনও জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসা নিয়ে আলাপ করছি যেন এটা ইচ্ছিক। আমাদের অবশ্যই তা বন্ধ করতে হবে আর যে জলবায়ু পরিবর্তনের মুখোমুখি হয়েছি তার জন্য প্রস্তুতি শুরু করতে হবে।”
দক্ষিণ আফ্রিকার মণ্ড ও কাগজ প্রস্তুতকারক সাপ্পি বুধবার জানিয়েছে, বন্যার কারণে তাদের কর্মীরা কাজে আসতে পারছে না, মালামাল সরবরাহেও বিঘ্ন ঘটেছে, এতে তিনটি কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
মঙ্গলবার ডারবান বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বুধবার ধীরে ধীরে কার্যক্রম আবার শুরু করা হয়েছে বলে দেশটির সরকারি উদ্যোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
ঢাকা: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি (পিজিএ) ভলকান বজকিরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। নিউইয়র্কে ভলকান বজকিরের দফতরে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কোভিড-১৯ এর টিকা সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো উঠে আসে। মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ সেশন আহ্বান করার জন্য পিজিএকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বুধবার (১৬ জুন) জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিনকে গ্লোবাল পাবলিক গুড হিসেবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক্ষেত্রে সবার অধিকার নিশ্চিতে তার অফিসকে ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ জানান। রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য পিজিএকে আমন্ত্রণ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সাধারণ পরিষদের সভাপতি ভলকান বজকির রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের মানবিক ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান। এছাড়া জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যুতে তার অফিসকে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশ, ভূ-বেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ এবং উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর উচ্চ প্রতিনিধি ও আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ফেকিতা মোইলোয়া কাটোয়াউতয়কামানুর সঙ্গেও সাক্ষাত করেন।
অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে তারা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর টেকসই ও অপ্রত্যাবর্তনযোগ্য উত্তরণ বিষয় নিয়ে কথা বলেন। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত এলডিসি-৫ কনফারেন্সের প্রস্তুতিমূলক কমিটির কো-চেয়ার হিসেবে একটি সাহসী ও উচ্চাকাঙ্খী ফলাফল অর্জনে বাংলাদেশ সব অংশীজনদের সঙ্গে কাজ করে যাবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরো জোরদার করতে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে অনুষ্ঠিত শীর্ষ বৈঠকে মৎস্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছে।
রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম মোহামেদ সলিহ’র উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে এই সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়।
স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের প্রেস বিফ্রিং করেন।
স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকগুলো হচ্ছে-সমন্বিত সহযোগিতার লক্ষ্যে যৌথ কমিশন (জেসিসি), দ্বিপাক্ষিক ফরেন অফিস কনসালটেশনের (এফওসি) ওপর সমঝোতা স্মারক, মৎস্য ও সামুদ্রিক মৎস্য আহরনের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক এবং ২০২২-২০২৫ পর্যন্ত সাংস্কৃতিক বিনিময়ে জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মালদ্বীপের পক্ষে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম মোহামেদ সলিহ্র নেতৃত্বে দু’পক্ষের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি হয়।
পারস্পারিক সহযোগিতার জন্য যৌথ কমিশনের (জেসিসি) বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ্ শহিদ।
দ্বিপাক্ষিক ফরেন অফিস কনসাল্টিংয়ের (এফওসি) জন্য সমঝোতা স্বারকে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও মালদ্বীপের পররাষ্ট্র সচিব আব্দুল গফুর মোহাম্মদ।
মৎস্য ও সামুদ্রিক মৎস্য আহরনের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ও মালদ্বীপের অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রী ফাইয়াজ ইসমাইল।
পাশাপাশি, ২০২২-২০২৫ পর্যন্ত সাংস্কৃতিক কর্মসূচি বিনিময়ের (সিইপি) জন্য একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ শহিদ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট গতকাল বুধবার সকালে ঢাকায় আসেন।
এ সময় সলিহ্র সহধর্মিনী, মালদ্বীপের ফার্স্ট লেডি ম্যাডাম ফাজনা আহমেদ তার সাথে ছিলেন।
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ ফেনী নদীতে নির্মিত ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুম ও বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়কে যুক্ত করা বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই সেতু দুই দেশের পর্যটন ও বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র আজ বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। আজ মঙ্গলবার (৯ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সেতুর উদ্বোধন করেন মোদি।
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ২০১৭ সালে আপনারা ত্রিপুরার উন্নয়নে দ্বিগুন মনোযোহী হন। আর এর ফলে যে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তা আজ আপনাদের সামনেই। যেখানে ঘুষ-দুর্নীতি ছাড়া কোনো কাজ হতো না, তা এখন সহজেই হচ্ছে। যেখানে কৃষকদের ফসল সরবরাহ করতে বিভিন্ন অসুবিধা হতো, সেখানে আজ কৃষকরা সরাসরি ফসল সরবরাহ করতে পারছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ত্রিপুরায় আজ যোগাযোগ তথা সড়কপথ, বিমানপথ এবং রেলপথের উন্নয়নের পাশাপাশি প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট সুবিধার মাধ্যমে জনগণের জীবনকে আরও সহজ করে তুলছে। সেই সঙ্গে তাদের অর্থনৈতিক দিকেরও উন্নয়ন হচ্ছে।’
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার এই সেতু পর্যটন ও বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র হবে এমন আশা ব্যক্ত করে মোদি বলেন, ‘এই সেতুর ফলে ত্রিপুরার তথা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধন একদিকে যেমন সমৃদ্ধির পথে আছে, তেমনি দুই দেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে। দুই দেশের অর্থনৈতিক বন্ধনও সুদৃঢ় হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নির্মিত এই মৈত্রী সেতুর কারণে পণ্য পরিবহন এবং পর্যটন খাত আরও উন্নত হবে। ফলে, পণ্য পরিবহনের জন্য এখন আর আপনাদের শুধু সড়ক পথের ওপর ভরসা করে বসে থাকতে হবে না, বাংলাদেশের সড়ক, নদী ও সমুদ্র পথেও সুবিধা পাবে এই রাজ্য।
মোদির বক্তব্য দেওয়ার আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফেনী নদীতে নির্মিত বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে শুধু বন্ধুত্বের বন্ধন নয় বরং দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে বাড়াতেও অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ফেনী নদী। সেতুটি বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্য বাড়াতে আরও সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই সেতুর মাধ্যমে সরাসরি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে যুক্ত হবে ত্রিপুরা। ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েস অ্যান্ড ইনফ্রাস্টাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তানিশ চন্দ্র আগারভাগ ইনপাকন প্রাইভেট লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে ৮২.৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে রামগড়ের মহামুনিতে ২৮৬ একর জমির উপর ‘মৈত্রী সেতু’ নির্মিত হয়েছে।
সেতুর ভারতীয় প্রকৌশলী মতিউর রহমান জানিয়েছেন, গত ১৩ জানুয়ারি সেতুর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়। এ সেতুর মোট পিলার ১২ টি। এরমধ্যে বাংলাদেশ অংশে নির্মাণ ৮ টি ও ভারতের অংশে ৪টি। সেতু থেকে ২৪০ মিটার এপ্রোচ রোড নির্মাণ করে রামগড়-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের সঙ্গে এবং ওপারে সেতু থেকে প্রায় ১২০০ মিটার এপ্রোচ রাস্তা নবীনপাড়া-ঠাকুরপল্লী হয়ে সাব্রুম-আগরতলা জাতীয় সড়কে যুক্ত হয়েছে। আন্কর্জাতিক মানের দুই লেনের এ সেতুর দুই পাশে রয়েছে ফুটওয়ে।
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ ফেনী নদীতে নির্মিত ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুম ও বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়কে যুক্ত করা বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
মঙ্গলবার (৯ মার্চ) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সেতুর উদ্বোধন করেন তিনি। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ফেনী নদী। সেতুটি বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্য বাড়াতে আরও সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই সেতুর মাধ্যমে সরাসরি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে যুক্ত হবে ত্রিপুরা। ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েস অ্যান্ড ইনফ্রাস্টাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তানিশ চন্দ্র আগারভাগ ইনপাকন প্রাইভেট লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে ৮২.৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে রামগড়ের মহামুনিতে ২৮৬ একর জমির ওপর ‘মৈত্রী সেতু’ নির্মিত হয়েছে।
সেতুর ভারতীয় প্রকৌশলী মতিউর রহমান জানিয়েছেন, গত ১৩ জানুয়ারি সেতুর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়। এ সেতুর মোট পিলার ১২ টি। এরমধ্যে বাংলাদেশ অংশে নির্মাণ ৮ টি ও ভারতের অংশে ৪টি। সেতু থেকে ২৪০ মিটার এপ্রোচ রোড নির্মাণ করে রামগড়-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কে সাথে এবং ওপারে সেতু থেকে প্রায় ১২০০ মিটার এপ্রোচ রাস্তা নবীনপাড়া-ঠাকুরপল্লী হয়ে সাব্রুম-আগরতলা জাতীয় সড়কে যুক্ত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের দুই লেনের এ সেতুর দুপাশে রয়েছে ফুটওয়ে।
॥ রামগড় সংবাদদাতা ॥ বহুল প্রতিক্ষিত রামগড়-সাবরুম স্থল বন্দর স্থাপনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফেনী নদীর ওপর খাগড়াছড়ির রামগড় ও ত্রিপুরার সাবরুম অংশে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ এর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে কিছুদিন বন্ধ থাকার পর গত কয়েক মাস রাত-দিন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা শ্রম দিয়েছেন এর পেছনে। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষার প্রহর গুনছেন দু-দেশের জনগন।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস ভারতীয় হাইকমিশনারকে উদ্ধৃত করে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী’র যৌথভাবে সেতু উদ্বোধনের কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে উভয় দেশের হাই অফিসিয়েলস’রা বেশ কয়েকবার ঘুরে গেছেন স্থলবন্দর এলাকা। চলতি মাসের ৬ জানুয়ারী একটি জাইকা (জাপানি উন্নয়ন সংস্থা) প্রতিনিধি দল আসেন। তাঁরা মৈত্রী সেতুসহ সড়কে নির্মিয়মাণ সেতু-কালভার্ট পরিদর্শন করেন। ৩০, ডিসেম্বর ২০২০ আসেন ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার মো. জাবেদ হোসেন। তিনি ওই সময় সাংবাদিকদের বলেছেন, ফেব্রুয়ারী মাস নাগাদ সেতু উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে রামগড় স্থলবন্দরকে ঘিরে এ অঞ্চলের মানুষগুলোর মনে অর্থনৈতিক মুক্তির প্রত্যাশা জাগছে স্বাভাবিক ভাবেই। সমাজের খেঁটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত সব শ্রেণি-পেশার মানুষের আশা রামগড় স্থল বন্দরকে কেন্দ্র করে এই অঞ্চলের অধিবাসীদের অর্থনৈতিক মুক্তির পাশাপাশি সর্বত্র কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি হবে, বৈদেশিক বানিজ্যে এগিয়ে যাবে দেশ, সফল কানেক্টিভিটির মাধ্যমে যুক্ত হবে সমৃদ্ধির এক নতুন অধ্যায়। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় পাহাড়ের মানুষদের কর্মসংস্থানের সুযোগ কম। বড় কিংবা ছোট কোন ধরনেরই মিল ফ্যাক্টরি কল কারখানা না থাকায় বিপুল সংখ্যক মানুষ অত্যন্ত কায়ক্লেশে বেকার জীবন যাপন করছেন। তাই এলাকাবাসীর প্রত্যাশা এই মৈত্রি সেতু ভারতের ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের বানিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হলে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়, বানিজ্য পর্যটন এর প্রসার এবং মানুষে মানুষে সম্পর্কোন্নয়নে গোটা অঞ্চলের উপকার হবে। যে কারণে নতুন আশায় উজ্জীবিত এ সব প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ বিনিয়োগকারী-ব্যবসায়ীরা। বিশ্লেষকদের মতে, বিপুল সংখ্যক মানব সম্পদ কাজে লাগবে অযুত সম্ভাবনার এই কর্মযজ্ঞে। ওই সময় চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বানিজ্যে সবার সামনেই খুলে যাবে নতুন এক স্বর্ণালী সময়, যেন বহুবছরের প্রত্যাশিত চাওয়া। বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ আয়োজিত বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড এক্সপোর্ট ফেয়ার (বিআইটিএফ) উদ্বোধন কালে গত বছরের ২৭, অক্টোবর রোববার এ প্রসঙ্গে বলেন “চট্টগ্রাম বন্দরকে পূর্ব ভারতের কমপক্ষে পাঁচ কোটি মানুষ ব্যবহার করলে প্রচুর রাজস্ব আয় হবে। বাংলাদেশের ব্যবসা-বানিজ্য সম্প্রসারিত হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান বাড়বে। উত্তর-পূর্ব ভারতের পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য কলকাতা বন্দরে যেতে ১২শ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয় অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের দুরত্ব অনেক কম। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা গত বছর ১০ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে ‘নেইবারহুড ফাষ্ট’ ও ‘অ্যাক্ট ইষ্ট পলিসি’র প্রভার বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির বীজ নিহিত আছে প্রতিবেশী বাংলাদেশের সহযোগিতার ওপরই। ‘সেভেন সিস্টার্স’ হিসাবে পরিচিত এই অঞ্চলের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ১ সেপ্টেম্বর ’২০ ত্রিপুরার মূখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব স্থলবন্দর এলাকা পরিদর্শন করে কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্টদের তাগাদা দিয়েছিলেন।
ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাশ ১৬ জুন’২০ রামগড়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, “চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যসহ মেঘালয়, আসাম, মনিপুর মিজোরাম, নাগাল্যান্ড এবং অরুনাচল এই সাত রাজ্যের (সেভেন সিস্টার্স) সঙ্গে ব্যবসা বানিজ্য সম্প্রসারণ করতে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার বহু আগেই রামগড়-সাবরুম স্থল বন্দর স্থাপনে উদ্যোগী হয়”। আর এ বন্দর চালু হলে দুদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন দিগন্ত উম্মোচন হবে। অর্থনৈতিক ভাবে এ অঞ্চল হবে সমৃদ্ধ।”
যদিও রাজনৈতিক ও নানা আমলা তান্ত্রিক জটিলতায় এ প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন থমকে ছিল। বহু চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বর্তমান সরকারের আন্তরিক উদ্যোগে চলতি বছরেই বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে বহুকাঙ্খিত রামগড়-সাবরুম স্থলবন্দরের দৃশ্যমান সম্পূর্ণ অবকাঠামো। এ জন্য ভারত সরকার ফেনী নদীর ওপর চার লেন বিশিষ্ট আর্ন্তজাতিক মানের একটি সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ করেছে। রামগড় পৌরসভার মহামুনি ও সাবরুমের আনন্দপাড়া এলাকায় এর অবস্থান। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১১০ কোটি রুপী। বাংলাদেশ ও ভারত সরকার ইতিমধ্যে স্থলবন্দর কে ঘিরে বন্দর টার্মিনাল, গুদামঘর সহ অন্যান্য অবকাঠামো নিমার্ণে ভূমি অধিগ্রহণ কাজও চুড়ান্ত করেছে।
খাগড়াছড়ির বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সুদর্শন দত্ত ও অধ্যাপক দিলীপ চৌধুরী মনে করেন, অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে রামগড়-সাবরুম স্থল বন্দর অবশেষে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে অবশ্যই তা একটি ইতিবাচক খবর। একটা সময় ধরেই নেওয়া হয়েছিল এটা বোধহয় আর হচ্ছে না। কিন্তু ভারতীয় কর্তৃপক্ষের আগ্রহ এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতায় সফলতার দিকে এগুচ্ছে রামগড় -সাবরুম স্থল বন্দরের অগ্রযাত্রা। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রথম স্থাপিত এই বন্দরের বিশাল কর্মযজ্ঞ এ সব দরিদ্র মানুষের মুক্তির নতুন দিগন্ত উম্মোচন করবে বলে তাঁরা মনে করেন। এ বন্দর দুদেশের মানুষের জন্যই হবে আর্শীবাদ স্বরূপ। এই বিশ্বায়নের যুগে কোন দেশ কিংবা একই দেশের সব অঞ্চল কোন বিশেষ পণ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ না-ও হতে পারে। প্রাকৃতিক ও বৈষয়িক সুবিধা, উৎপাদনে বিশেষজ্ঞতা ও শ্রম বিভাগের কারণে উৎপাদিত পণ্য পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে আদানÑপ্রদানের বিষয়টি স্বাভাবিক নিয়মেই হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তো বহু আগেই বলেছেন, “পশ্চিম আজি খুলিয়াছে দ্বার, সেথা হতে সবে আনে উপহার দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে, যাবে না ফিরে-”
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রামগড় সফরকালে (জানুয়ারী ’১৮) সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, “রামগড় স্থল বন্দরের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের সংযোগ সড়ক (রামগড়-বারৈয়ারহাট পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার) উন্নয়নের কাজ বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে জাপানি উন্নয়ন সংস্থা জাইকা কর্তৃক বাস্তবায়ন করবে। এ জন্য খরচ হবে ৩ হাজার কোটি টাকা এবং সড়কটি চার লেনে উন্নিত করা হবে।” পাশাপাশি চট্টগ্রামের নাজিরহাট থেকে রামগড় স্থলবন্দর পর্যন্ত রেল লাইন সম্প্রসারণের মহাপরিকল্পনার বিষয়টি সরকারি সংশ্লিষ্ট বিভাগ গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছেন। অন্যদিকে ত্রিপুরার আগরতলা থেকে সাবরুম পর্যন্ত রেল লাইনের কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া সাবরুম-উদয়পুর-আগরতলা সড়কগুলো এ মহকুমার সঙ্গে অন্য মহকুমা ও জেলার সড়ক উন্নয়নের কাজ শেষ হয়েছে। সড়ক পথে রামগড়-চট্টগ্রাম বন্দরের দুরত্ব ৭২ কিলোমিটার এবং সাবরুম-আগরতলা ১৩৩ কিলোমিটার।
রামগড় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কারবারী ও রামগড় বাজারের ব্যবসায়ী তাপস বিশ্বাসের ভাষ্যমতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সহজ যোগাযোগ স্থাপনে ফেনী নদীর ওপর সেতু নির্মাণে ভারত দীর্ঘদিন ধরেই সচেষ্ট ছিল। এটা সম্ভব হওয়ায় ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো (সেভেন সিস্টার্স) চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ব্যবসা-বানিজ্যে গতি আনতে সক্ষম হবে বলে মনে করেন দুদেশেরই ব্যবসায়ীরা। খাগড়াছড়িসহ চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যেই রামগড় স্থল বন্দরের অগ্রগতি বিষয়ে খোঁজ খবর রাখছেন, সরেজমিন পরিদর্শনও করেছেন অনেকে। রামগড় স্থল বন্দর চালু হলে ব্যবসা-বানিজ্যসহ সব ক্ষেত্রেই অভাবনীয় উন্নয়ন ঘটবে, পুরো এলাকার চেহারাটাই পাল্টে যাবে বলে মনে করেন তাঁরা।
বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, রামগড় স্থলবন্দর বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ২৩ তম। এ জন্য রামগড়ের মহামুনিতে ১০ একর জমি অধিগ্রহনের কাজ চূড়ান্ত হয়েছে। প্রয়োজনে পরে আরও নেওয়া হবে। ৪১২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৪ দশমিক আট মিটার প্রস্থ সংযোগ সেতুটির নির্মাণ ভারত সরকার করবে। তবে মূল সেতুটির দৈর্ঘ্য হবে ১৫০ মিটার।
উল্লেখ্য, ৬ জুন ’১৫ ঢাকা সফরের সময় ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ফেনী নদীর ওপর রামগড়- সাবরুম মৈত্রী সেতু -১ এর ভিত্তি প্রস্তুর উম্মোচন করেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার হিসাবে পরিচিত ১৯২০ সালের সাবেক মহকুমা শহর খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় স্থলবন্দর স্থাপনের প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ দেড় যুগের পর নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের সময় নতুন ভাবে আলোচনায় আসে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে রামগড়ে স্থলবন্দর স্থাপনের ঘোষণা দেয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ১৯৯৬ সালের ২৮ জুলাই স্থলপথ ও অভ্যন্তরীণ জলপথে ভারত ও মায়ানমার থেকে আমদানি-রপ্তানি বা খাদ্য ছাড়করণের উদ্দেশে দেশে ১৭৬টি শুল্ক ষ্টেশনের তালিকা ঘোষণা করে।
ওই তালিকায় ৪৮ নম্বর ক্রমিকে ছিল রামগড় স্থল শুল্কষ্টেশন। শুল্ক ও বর্ণিত পদ্বতি শর্তাবলী পালন করে পণ্যের গুনাগুন, পরিমাপ, মূল্য ও শুল্ক শ্রেণী বিন্যাস সম্পর্কিত প্রত্যয়নপত্রের মাধ্যমে আমদানি করা যাবে।
প্রসঙ্গত, সরকার ঘোষিত ১৭৬টি স্থল বন্দরের বেশকিছু ইতিমধ্যে চালু হয়ে গেছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় রামগড় স্থলবন্দর স্থাপনের কাজ দীর্ঘদিন ফাইল চাপা থাকলেও ২০১০ সালে স্থলবন্দর স্থাপনের কাজে পুনরায় গতি আসে।
খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান কংজুরী চৌধুরী বলেন, রামগড়েই চালু হবে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। দীর্ঘদিন ধীরগতিতে কাজ চললেও স¤প্রতি ভারত-বাংলাদেশ উভয় পক্ষ ত্বরিত গতিতে স্থলবন্দর বাস্তবায়নের কাজ শুরু করায় ব্যবসায়ীসহ সকল মহল আশার আলো দেখছেন। সব মিলিয়ে রামগড় স্থল বন্দর পূর্নাঙ্গ ভাবে চালু হলে বিশ্বায়নের এই যুগে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি বিপুল জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে যে, বিশাল ভূমিকা রাখবে নিশ্চিত ভাবেই তা বলা যায়। আর যোগাযোগের ক্ষেত্রে সূচিত হবে এক নতুন দিগন্তের। আঞ্চলিক গন্ডি ছাপিয়ে এ যেন বিশ্বব্যাপি সেতুবন্ধনের এক পূর্বাভাস।
রোববার সকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে তাদের এ সমাবেশ হয়। সংগঠনের আহ্বায়ক ক্যাঞিং সমাবেশে বলেন, আরাকানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওই তাণ্ডবে তিন শতাধিক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ছয় শতাধিক মানুষ। ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ায় আড়াই লাখ মানুষ উদ্বাস্তু জীবন যাপন করছে।“মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সুকৌশলে এবং পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন গ্রামে ঢুকে নির্যাতন, ধর্ষণ, লুণ্ঠন গুলিবর্ষণসহ বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কোনো আইনের তোয়াক্কা না করে মানবতাবিরোধী হত্যাযজ্ঞ ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।”
বাংলাদেশে বসবাসরত রাখাইন সম্প্রদায়ের এই নেতা বলেন, মিয়ানমার সরকার আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোকে রাখাইনে ঢুকতে না দেওয়ায় সেখানে খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।
“বার্মিজ সরকারের অত্যাচার-নির্যাতন আজ থেকে নয়। সেই ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে কুখ্যাত বার্মিজ সমন্বয়ক ওয়ানের নেতৃত্বে তৎকালীন রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী জনগণকে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিলুপ্ত করার উদ্দেশ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, এমনকি কোনো ধর্মীয় স্থাপনা পর্যন্ত রেহাই পায়নি। যা আজও চলমান।
“এ জঘন্য অপরাধ এবং মানবতা লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে আমরা যদি প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন না করি, তাহলে তারা এই অমানবিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখবে।”
সমাবেশ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ক্যাঞিং বলেন, এরপরও যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে রাখাইন জনগণ পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
“মিয়ানমার রাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। আরাকান রাজ্যে সেনাবাহিনী ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, গুলিবর্ষণ, নির্যাতন ও নিপীড়ন চালাচ্ছে। গ্রামে বসতবাড়ির ওপর বিমান হামলা হচ্ছে, জাহাজ থেকে ভারী বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে, জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করার ঘটনা ঘটছে, যা আন্তর্জাতিক আইনে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের শামিল।”এই সমাবেশে যোগ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, “মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গণহত্যার ঘটনায় ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসে গাম্বিয়া যখন অভিযোগ করেছে, তখন তার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও রাখাইনে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দাবি করছে। ইনডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমার- আইআইএমএম এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক মহলের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
অন্যদের মধ্যে রাখাইন কমিউনিটি অব বাংলাদেশের সভাপতি মাং শাইরি, মুখপাত্র থং ইউ, রাখাইন স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু সে সমাবেশে বক্তব্য দেন।
॥ জগৎ দাশ ॥ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ৩০ টি অত্যাধুনিক একে-৪৭ অস্ত্র ও ৮ হাজার গোলাবারুদ সহ ৩ জন কে আটক করেছে বর্ডার সিকোরিটি ফোর্স( বিএসএফ) ২৯ সেপ্টেম্বর সোমবার সকালে এই ভয়ানক অস্ত্রের চালান আটক করা হয়েছে বলে বিএসএফের বরাত দিয়ে দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স, বিএসএফ বাংলাদেশের ত্রিপুরা-মিজোরাম আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং তাদের কাছ থেকে এ বছর সবচেয়ে বড় অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছে বলে জানায়। তাদের দাবী এসব অস্ত্রের গন্তব্য ছিলো বাংলাদেশের পাহাড়ী আঞ্চলিক সস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠি গুলো। এর আগেও বহুবার পাহাড়ের আঞ্চলিক দলের অস্ত্রের চালান আটক করে বিএসএফ। বিএসএফ আজ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানায়, এই তিন ব্যক্তি আন্তর্জাতিক অস্ত্র চোরাচালানের র্যাকেটের অংশ বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। বিএসএফ তার গোয়েন্দা শাখার মিজোরামের ফুলদুঙ্গসেয় অঞ্চলে বড় অস্ত্র পাচারের বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট তথ্য নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে এইসব অস্ত্র জদ্ব করেছে – বাংলাদেশের সাথে ভারতের আন্তর্জাতিক সীমানা থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দুরে এই অস্ত্রের চালন আটক হলো। ত্রিপুরা-মিজোরাম সীমান্তের ফুলডুংগেসি ত্রিপুরার শেষ গ্রামে মিজোরামের নম্বর প্লেট বহনকারী দুটি গাড়ি আটক করে তল্লাশির মাধ্যমে ৩ যুবক ও এসব অস্ত্র গোলাবারুদ আটক করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাহাড়ের এক নেতার দাবী এসব অস্ত্র বাংলাদেশের সীমান্ত পথ হয়ে পাহাড়ের আঞ্চলিক সস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ (প্রসিত) দলের হাতে পৌছার কথা ছিলো।
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ মহাকাশে ইতিমধ্যে ডানা মিলেছে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১। আসছে সাফল্য। বাংলাদেশ ছাড়াও বিভিন্ন দেশ এখন ব্যবহার করছে স্যাটেলাইটটি। আশা করা যাচ্ছে আগামী ৯ বছরের মধ্যেই লাভের মুখ দেখতে শুরু করবে স্যাটেলাইটটি।
তবে এখানেই থেমে নেই বাংলাদেশের মহাকাশ যাত্রা। শুরু হয়ে গেছে বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইট পাঠানোর প্রক্রিয়া। আগামী ৬ বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে চায় বাংলাদেশ সরকার। এই লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকার এর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড ২য় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ সংক্রান্ত পরিকল্পনা এবং বাজেট নির্ণয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে।
শুধু বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইটটিই নয়, ২০২৯ সালের মধ্যে আরো ২টি স্যাটেলাইট প্রেরণের পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ সরকার। ধারাবাহিক ভাবে ২০২৩ সালে ২য়, ২০২৭ সালে ৩য় এবং ২০২৯ সালে পাঠানো হবে ৪র্থ স্যাটেলাইটটি।
এদিকে বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইটের ডিজাইন এবং উৎক্ষেপণসহ কারিগরি সহায়তা দেয়ার ব্যাপারে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে ঢাকায় নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জেইন মেরিন সূক্ষ্ম। ২০২০ সালের নভেম্বরে ফ্রান্স রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ সরকার প্রধান এর সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাৎকারে এই প্রস্তাবনা দেন।
অপরদিকে বাংলাদেশের ২য় স্যাটেলাইট তৈরি রক্ষণাবেক্ষণ এবং উৎক্ষেপণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে রাশিয়া ভিত্তিক স্পেস রিসার্চ সংস্থা গ্লাভকস্মস কোম্পানি। এই লক্ষ্যে ২০১৯ সালের অক্টোবরে গ্লাভকস্মস কোম্পানির ডেপুটি ডিরেক্টর ভিতালি সেভেনভ ৬ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ স্যাটেলাইট ইঞ্জিনিয়ার দল বাংলাদেশে আসে এবং বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের সাথে বিভিন্ন ধরনের স্যাটেলাইট সম্পর্কে তথ্য প্রদান করেন।
এ সময় বাংলাদেশ এ নিযুক্ত রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ এর ২য় স্যাটেলাইট প্রেরণের ব্যাপারে ইচ্ছা প্রকাশ করে বলেন, রাশিয়া ইতিমধ্যে বাংলাদেশকে তাদের একটি স্লট ভাড়া দিয়েছে। বাংলাদেশের ভবিষ্যতের চাহিদা বিবেচনায় রাশিয়া আরও স্লট দিতে প্রস্তুত সেই সাথে বাংলাদেশকে চাহিদা অনুসারে যেকোনো ধরনের স্যাটেলাইট প্রেরণ করতে সক্ষম রাশিয়া। এ সময় রাশিয়ার স্যাটেলাইট বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশকে ভবিষ্যৎ স্যাটেলাইট তৈরিতে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো সহায়তা প্রদান, জনবল প্রশিক্ষণ, স্যাটেলাইট এর বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করন এবং স্যাটেলাইট তৈরি এবং উৎক্ষেপণ খরচ নিরূপণে পরামর্শক হিসাবেও কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার সংসদের এক প্রশ্ন উত্তর পর্বে বলেন, বাংলাদেশ সরকার তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি হিসাবে ২০২৩ সাল নাগাদ ২য় স্যাটেলাইট প্রেরণে বদ্ধপরিকর। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশে থেকে ২য় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ব্যাপারে প্রস্তাব পেয়ে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইটটি সরাসরি বাংলাদেশের উপর অবস্থান না করে কৌণিক ভাবে অবস্থান করছে তাই আমরা চাই আমাদের পরবর্তী স্যাটেলাইটটি জেনো অবশ্যই আমাদের ভৌগলিক অবস্থান অনুযায়ী কাছাকাছি থাকে। বাংলাদেশ চায় তার ২য় স্যাটেলাইট যেন অবশ্যই নিজস্ব কক্ষপথে থাকে যার মালিকানা বাংলাদেশ এর হাতে থাকবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ এর প্রথম স্যাটেলাইট ফ্রান্সের থালাস এলেনিয়া স্পেস নির্মাণ করলেও ফ্রান্স চায় বাংলাদেশ ২য় স্যাটেলাইট ফ্রান্স ভিত্তিক বৃহৎ স্যাটেলাইট উন্নয়ন এবং উৎক্ষেপণ সংস্থা এরিয়ানস্পেস নির্মাণ করুক। এরিয়ানস্পেস ইউরোপের অন্যতম বড় স্যাটেলাইট নির্মাণ সংস্থা যারা স্যাটেলাইট নির্মাণ এর পাশাপাশি উৎক্ষেপণ করে থাকে। তারা মূলত গবফরঁস ঞড় ঐবধাু স্যাটেলাইট নির্মাণ এবং উৎক্ষেপণের জন্য পরিচিত।
স্পোর্টস ডেস্ক :: পাকিস্তানে আবারও সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে ক্রিকেট। একটি আঞ্চলিক টুর্নামেন্টের ফাইনাল পণ্ড হয়ে গেছে প্রবল গোলাগুলিতে।
পাকিস্তানের দা নিউজ পত্রিকার খবর, খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের কোহাত বিভাগের ওরাকজাই জেলার দ্রাদার মামাজাই এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সেখানে একটি টুর্নামেন্টের ফাইনাল ছিল বৃহস্পতিবার। এই ঘটনায় হতাহতের খবর অবশ্য পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে প্রত্রিকাটি জানিয়েছে, ম্যাচ দেখতে বিপুল সংখ্যক দর্শক, অনেক রাজনৈতিক কর্মী ও সংবাদ কর্মী ছিলেন মাঠে। জামায়েত উলামায়ে-ই-ইসলামের স্থানীয় এক নেতা ছিলেন প্রধান অতিথি। খেলা শুরু হতে না হতেই কাছেই এক পাহাড় থেকে এলোপাতাড়ি গুলিবষর্ণ শুরু হয়। ক্রিকেটার, দর্শক সবাই দ্রুত পালিয়ে নিজেদের রক্ষা করেন।
ওরাকজাই জেলার পুলিশ কর্মকর্তা নিসার আহমেদ খান জানিয়েছেন, ওই এলাকায় সন্ত্রাসীদের উপস্থিতির খবর তাদের কাছে আছে এবং শিগগিরই কয়েকটি নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযান ওই অঞ্চলে শুরু হবে।
২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার জের ধরে দীর্ঘদিন পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ ছিল। গত কয়েক বছরে দলগুলি টুকটাক সফর করা শুরু করলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি এখনও।