রাঙ্গামাটির কাউন্সিলে আবারো আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার, সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বর নির্বাচিত
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে আবারো সভাপতি হয়েছেন দীপংকর তালুকদার এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে পুনঃনির্বাচিত হাজী মুছা মাতব্বর।
মঙ্গলবার (২৪ মে) বিকেলে সভাপতি পদে ভোট না হলেও তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে সাধারণ সম্পাদক পদকে ঘিরে। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বরের বিরুদ্ধে হাজী কামাল উদ্দিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেন। অবশেষে গোপন ব্যালেট পেপারের মাধ্যমে নির্ধারিত হয় জয় পরাজয়।
কাউন্সিলরদের ভোট গণনা শেষে জানা যায়, ১৩৮ ভোট পেয়েছেন মুছা মাতব্বর এবং ১০২ ভোট পেয়েছেন হাজী কামাল উদ্দিন। ৩৬ ভোটে জয় পেয়েছেন হাজী মুছা মাতব্বর পুনরায় সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে, রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে ছিলো উত্তাপ। নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ জনতা পর্যন্ত। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মাঝে ঘুরেফিরে একটাই আলোচনা, কারা আসছে নতুন নেতৃত্বে। বিশেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়েই সবার আগ্রহ।
কারণ ১৯৯৬ সাল থেকে সভাপতির দায়িত্ব পালন করা বর্তমান সভাপতি ও সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারের বিপরীতে সভাপতি পদে মাঠে মেনেছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান ও সহ সভাপতি নিখিল কুমার চাকমা। আর সাধারন সম্পাদক পদে লড়েছেন বর্তমান সাধারন সম্পাদক হাজী মোঃ মুছা এবং সাবেক সাধারন সম্পাদক হাজী কামাল উদ্দিন। পরবর্তীতে সভাপতি পদ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান ও সহ সভাপতি নিখিল কুমার চাকমা সড়ে দাঁড়ালে সম্পাদক পদটিকে ঘিরে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়।
দলটি একদিকে পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী এবং অন্যদিকে সরকার ক্ষমতায়। তাই সম্মেলনকে ঘিরে বেশ সরগরম ছিলো চারদিক। কারা নতুন নেতৃত্বে আসলে জেলা আওয়ামী লীগ আরও শক্তিশালী হবে এসব নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। পরিশেষে সকল বিশ্লেষণকে ছাপিয়ে আবারো জয়ের মুকুট পড়লেন বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
॥ কাপ্তাই প্রতিনিধি ॥ রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার কাপ্তাই-নৌবাহিনী সড়ক এবং কাপ্তাই-আসামবস্তী সড়কে প্রতিদিন শত শত মানুষ চলাচল করে। বিশেষ করে কাপ্তাই শহীদ মোয়াজ্জেম ঘাঁটি এবং কাপ্তাই জীবতলি সেনাবাহিনীর ৭ আর ই ব্যাটালিয়নের কারনে এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী পথচারীর সংখ্যা বেশী হয়। এইছাড়া কাপ্তাই লেক প্যারাডাইস ও লেকশোর পিকনিক স্পট ঐ এলাকায় অবস্থানের কারনে এখানে প্রচুর পর্যটকরের আগমন ঘটে। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে কাপ্তাইয়ের এই সড়কসহ বিভিন্ন পাহাড়ী এলাকাসহ লোকালয়ে বন্য হাতির উপদ্রব ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে প্রায়ই ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। কাপ্তাই বন বিভাগের তথ্য মতে গত ২ বছরে কাপ্তাইয়ে বন্য হাতির আক্রমনে পর্যটক সহ ৮ জন নিহত এবং অর্ধ শতাধিক আহত হয়েছেন। এছাড়া বন্য হাতির পাল আক্রমন করছে মানুষের বাড়িঘরে। হাতির আক্রমণের কারণে ইতিমধ্যে বাড়িঘর এবং মানুষের ক্ষেত খামারের বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হাতি-মানুষের দ্বন্দ্বের অবসানে বনবিভাগ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় কাপ্তাইয়ে শুরু হয়েছে “সোলার ফেন্সিং” নির্মাণ কাজ।
শুক্রবার (২০ মে) কাপ্তাইয়ের নৌবাহিনী সড়কের পাশে গিয়ে দেখা যায়, হাতি চলাচলের পথে সোলার ফেন্সিং নির্মাণ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে শ্রমিক ও বনবিভাগের কর্মীরা। কাপ্তাই বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলছে এই সোলার ফেন্সিং নির্মাণ কাজ। যা আগামী দুই মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সোলার ফেন্সিং সিস্টেম সম্পর্কে আরো জানা যায়, এটি এমন একটি আধুনিক প্রযুক্তি, যা দ্বারা বন্য হাতির পাল লোকালয়ে আসতে চেষ্টা করলে সোলার ফেন্সিং এর হালকা বৈদ্যুতিক শক খেয়ে তারা ফিরে যাবে, তবে এতে হাতির প্রাণহানি ঘটবেনা। কাপ্তাইয়ে সোলার ফেন্সিং নির্মাণ কাজের দায়িত্ব প্রাপ্ত সিভিল ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আকাশ জানান, এই সোলার ফেন্সিং নির্মাণে ৮ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে প্রায় ৮ শ’টি পিলার নির্মান করা হবে। এর প্রতিটি পিলার মাটির নিচে ৩ ফিট এবং উপরে ৭ফিটসহ মোট ১০ ফিট উচ্চতা হবে। বর্তমানে ৫০টি পিলারের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এবং বাকী পিলার গুলোর কাজ চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান। কাপ্তাই বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা খন্দকার মাহমুদুল হক মুরাদ জানান, কাপ্তাইয়ের গভীর জঙ্গলে রয়েছে বেশ কয়েকটি বন্য হাতির পাল। অনেক সময় খাবার না পেয়ে তারা লোকালয়ে চলে আসে এবং মানুষের ঘরবাড়ির ক্ষতিসাধন করে। তাই বন বিভাগের উদ্যোগে বন্যহাতির অভায়ারণ্য গুলো চিহ্নিত করে সেখানে বিভিন্ন কলাগাছ ও হাতির খাবার বৃদ্ধি করার পাশাপাশি, হাতি মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে এই সোলার ফেন্সিং নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। এতে বন্য হাতি লোকালয়ে আসার প্রবনতা অনেকটা কমে যাবে বলে তিনি মনে করেন। কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান জানান, ইতিমধ্যে কাপ্তাইয়ে সোলার ফেন্সিং নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। হাতি মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে এই সোলার ফেন্সিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে, কাপ্তাইয়ের বন বিভাগের সিএমসির সভাপতি কাজী মাকসুদুর রহমান বাবুল, কাপ্তাই শিল্প এলাকার বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বাবু জানান, হাতি মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে এই সোলার ফেন্সিং এর পাশাপাশি বন্য হাতির বাসস্থান কিংবা খাবার সংকট দুর করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে হবে, তাহলে সফলতা পাওয়া সম্ভব হবে বলে জানান তারা। উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে বন অদিদপ্তর কর্তৃক প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার ভূমির উপর কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্ক স্থাপন করা হয়। এখানে সেগুন, গামারী, জারুল, মেহগনিসহ বিভিন্ন প্রজাতীর গাছ রয়েছে। এছাড়া এখানে বুনো হাতি, হরিণ, বুনো বিড়ালসহ বিভিন্ন জাতের জীবজন্তু এবং নানা জাতের পাখির বিচরণ রয়েছে।
॥ ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই ॥ আওয়ামীলীগ সরকার আমলেই পাহাড়ের মানুষ উন্নয়ন দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর (উশৈসিং) এমপি। তিনি বলেন, পার্বত্য চুক্তি ফলে পাহাড়ে যেমন শান্তির সুবাতাস দেখছে তেমনী পাহাড়ের প্রতিটি এলাকায় উন্নয়ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে মানুষ শান্তি দিন অতিবাহিত করছে। শনিবার (২১ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় কাপ্তাই উপজেলার ২নং রাইখালী ইউনিয়নের বড়খোলা পাড়ায় বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের উদ্বোধন এবং কৃষি উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে রাঙ্গামাটি-বান্দরবান সড়ক হতে বড়খোলা পাড়া পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প উদ্বোধন, বড়খোলা পাড়া বৌদ্ধ শাসন রক্ষিত বৌদ্ধ বিহারের চেরাংঘর উদ্বোধন, বড়খোলা পাড়া রাইখালী ছড়ার উপর নব নির্মিত সেতু নির্মাণের উদ্বোধন, বড়খোলাপাড়া সেচনালা নির্মাণ এবং কৃষি উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
ডংনালা শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারের বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত সুরিয়া মহাথের এর সভাপতিত্বে এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, জেলা পরিষদ সদস্য অংসুইছাইন চৌধুরী ও সদস্য দীপ্তিময় তালুকদার কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুল হক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান, কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রওশন আরা রব, উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা, সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য প্রকৌশলী থোয়াইচিং মারমাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুজনীয় ভিক্ষু সংঘ এবং গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর (উশৈসিং) এমপি আরো বলেন, বর্তমান সরকার পাহাড়ের মানুষ তথা তৃণমূলের মানুষের উন্নতির কথা সবসময় ভাবেন। যার কারণে পাহাড়ে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকান্ড ত্বরান্বিত করা হচ্ছে। পাহাড়ের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ও শহরের মানুষের মতো সমান সুযোগের জন্য সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে। তাই এইসব উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে সম্মেলিত ভাবে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
উদ্বোধনী অনুষ্টানে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেন, পাহাড়ের মানুষের আর্থ-সামাজিক ও অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতার কারণে বোর্ডের কাজের পরিধি অনেকাংশে যেমন বেড়েছে তেমনি পাহাড়ের মানুষও এর সুফল ভোগ করছে। ভবিষ্যতেও এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এর মাসিক সভা সোমবার (১৮ মে) সকালে পরিষদের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী। সভাপতির বক্তব্যে চেয়ারম্যান বলেন, কোভিড চলাকালীন সময়ে স্বাস্থ্য বিভাগ বিচক্ষণতার সঙ্গে কাজ করায় রাঙ্গামাটি জেলার মৃত্যুহার এবং ক্ষয়ক্ষতি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে। কাজের প্রতি সদিচ্ছা এবং নিষ্ঠা থাকলে যেকোন কাজে সফল হওয়া যায় তার উদাহরণ স্বাস্থ্য বিভাগ। তিনি বলেন, একইভাবে এলাকার উন্নয়ন কাজে সকলের সদিচ্ছা ও সহযোগিতা থাকলে সকল বিভাগের কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। পরিষদ এবং হস্তান্তরিত বিভাগের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশাসনিক সংক্রান্ত যেসমস্ত সমস্যা আছে তা সমঝোতার মাধ্যমে কাটিয়ে উঠে সরকারের প্রত্যাশিত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্যবৃন্দ যথাক্রমে সদস্য ঝর্ণা খীসা, সদস্য দিপ্তীময় তালুকদার, সদস্য অংসুই ছাইন চৌধুরী, সদস্য সবির কুমার চাকমা, সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া, সদস্য নিউচিং মারমা, সদস্য ইলিপন চাকমা, সদস্য প্রিয় নন্দ চাকমা, সদস্য বিপুল ত্রিপুরা, সদস্য মোঃ আব্দুর রহিম, সদস্য মোসাম্মৎ আছমা বেগম, সদস্য প্রবর্তক চাকমা, সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম দে, স্বাস্থ্য প্রকৌশলের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ অলিউর রহমান, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ, সমাজসেবা বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ ওমর ফারুক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ শাহজাহান, জেলা সমবায় উপসহকারি নিবন্ধক কেফায়েত উল্লাহ খান, জেলা তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা পরেশ চন্দ্র চাকমা, পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া, হাস প্রজনন খামারের উপসহকারী প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আবু তাহের, ক্ষুদ্র নৃগোষ্টির সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট এর কালচারাল অফিসার শোভিত চাকমা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্ত্ াডা: বরুন কুমার দত্ত, সরকারী মুরগী প্রজনন ও উন্নয়ন খামার এর ব্যবস্থাপক ডাঃ পলি রাণী ঘোষ, সহকারী ব্যবস্থাপক বিসিক এজিএম মোঃ ইসমাইল হোসেন, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সহকারি পরিচালক ডা: বেবী ত্রিপুরা, সহকারি পরিচালক বিএডিসি মোঃ লুৎফর রহমান, আরপিটিআই ট্রেইনার লিপি চাকমা, জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারি পরিচালক অনুতোষ চাকমা, সহকারী পরিচালক সরকারী গণগ্রন্থাগার সুনীলময় চাকমা, সিনিয়র সহকারী পরিচালক শুকর উন্নয়ন খামার কুসুম চাকমা, উপপরিচালক জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র ডা: তুষার কান্তি চাকমা, ভেটেরিনারী অফিসার জেলা ভেটেনারী হাসপাতাল ডা: মো: নাজমুল হক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক তপন কুমার পাল, পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়ুয়া, জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুনেন্দু ত্রিপুরা, সহকারি প্রকৌশলী উজ্জল কান্তি দেওয়ান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মনতোষ চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাগণ স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের কাজের অগ্রগতি তুলে ধরেন।
॥ লংগদু প্রতিনিধি ॥ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদু্যুৎ এই শ্লোগানকে বাস্তবায়নে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সেই মোতাবেক আমরা ধাপে ধাপে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। পার্বত্যাঞ্চলে যে সব এলাকায় আগামী ৫-১০ বছরেও বিদু্যুৎ যাওয়ার সম্ভাবনা নাই ঐসব এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে ঘরে সোলার প্যানেল দিয়ে সৌর বিদু্যুৎ পৌছে যাবে।
বুধবার (১৮মে) সকালে রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার বগাচতর ইউপি কার্যালয়ে সোলার প্যানেল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিখিল কুমার চাকমা এসব কথাগুলো বলেন।
লংগদু উপজেলার বগাচতর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদু্যুৎ সরবরাহ শীর্ষক প্রকল্পের (২য় পর্যায়ে) আওতায় ৭৪০ পরিবারকে ১০০ ওয়ার্ড সোলার প্যানেল ও ১২ ভোল্টের একটি করে ব্যাটারি প্রদান করা হয়।
সোলার প্যানেল বিতরণ অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড উপসচিব সদস্য বাস্তবায়ন ও প্রকল্প পরিচালক মো. হারুন অর-রশিদ এতে সভাপতিত্ব করেন।
এসময় উস্থিত ছিলেন, বগাচতর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বশর, সাবেক বগাচতর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দসহ জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণ।
প্রধান অতিথি নিখিল কুমার চাকমা বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, এই সোলার প্যানেল সম্পূর্ণ বিনামূল্য বিতরণ করা হচ্ছে। সোলার সিষ্টেমের জন্য কারো সাথে কোন ধরনের আর্থিক লেনদেন করবেন না। এই সুবিধায় অত্র এলাকা সমূহের মান উন্নয়ন হবে। শিক্ষার্থীদের লেখা পড়া করতে সহজ হবে, সমাজ পরিবর্তন হবে। তিনি আরো বলেন, আমি চেষ্টা করবো বগচতর ইপির রাস্তা, ব্রীজ সংস্কার কাজ করতে। বগাচতর ইউপির প্রায় পর্যায় ক্রমে ৯শ পরিবারের তালিকা আছে সবাইকে দেওয়া হবে।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশে ফেরার মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ নুতন করে স্বপ্ন দেখেছিল সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে শেখ হাসিনা কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের শাসনামলে পার্বত্য চট্টগ্রামের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আর শেখ হাসিনা হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (১৭ মে) বিকেলে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় জেলা আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বর, আওয়ামী লীগ নেতা মমতাজ মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা রফিক তালুকদার, রাঙ্গামাটি জেলা যুবলীগ সভাপতি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী সহ আওয়ামী লীগের জেলা, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় দীপংকর তালুকদার এমপি বলেন, কোন দেশের সরকার প্রধান একটি অঞ্চলে একবার আসতে পারে না। অথচ বঙ্গবন্ধু এ অঞ্চলে তিনবার এসেছিলেন। তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাও এ অঞ্চলে তিনবার এসেছেন। এ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠাতা করা হয়েছে। হাজার-হাজার মাইল সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা অনেক বাঁধা-বিপত্তি অতিক্রম করে দেশে ফিরে এসেছেন। বাংলাদেশ আজ তার হাত ধরে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। দেশের প্রবৃদ্ধি বর্তমানে পাকিস্তান, ভারতে ফেলে চীনের সাথে টেক্কা দিচ্ছে।
এ সময় তিনি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারবর্গ, দেশের স্বাধীনতার জীবন উৎসর্গকারী সকল শহীদদের প্রতি দোয়া ও বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।
॥ কাপ্তাই প্রতিনিধি ॥ কাপ্তাইয়ের ২নং রাইখালী ইউনিয়ন এর ১নং ওয়ার্ডের দূর্গম সীতাপাহাড় মারমা পাড়ায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় স্থানীয় দোকানদার থোয়াই চাই মারমা (৫৩) ও তাঁর সহধর্মিণী চিংঞো মারমা (৪০) গুরুতর আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১২ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এই ঘটনা ঘটে বলে জানান, আহত দম্পতির ছেলে সুইহ্লা চিং মারমা। তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ৬ জনের একটি সন্ত্রাসী দল অস্ত্র এবং লাঠি নিয়ে এসে আমাদের দোকানে বাবা এবং মা’কে লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করে চলে যান। সন্ত্রাসীরা সকলে সবুজ পোশাক পরিহিত ছিল বলে জানান সুইহ্লা চিং মারমা।
পরে তাঁর পরিবারের সদস্যরা আহত দুই জনকে রাত ৯টায় চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ রাজীব শর্মা জানান, গুরুতর আহত থোয়াই চাই মারমার বুকের পাজরের হাড় ভাঙ্গছে এবং বাম হাতে ক্ষত রয়েছে। এছাড়া তাঁর সহধর্মিণী কোমরে আঘাত পেয়েছে।
রাইখালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ সেলিম জানান, আমাকে ঘটনাটি তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে। তবে কারা মেরেছে সেই বিষয়ে অবগত নই।
চন্দ্রঘোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, ঘটনা শুনার পর চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালে পুলিশ গিয়েছে। এই বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেন নাই। অভিযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ওসি জানান।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দেশের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে রাঙ্গামাটিতে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় বৌদ্ধ বিহার ও শাখা বন বিহারগুলোতে শুভ বুদ্ধ পর্ণিমা উপলক্ষে শহরে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ এই পূর্ণিমায় জন্মগ্রহণ, বুদ্ধত্ব লাভ এবং মহাপরিনির্বাণ লাভ করায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
শুক্রবার (১৩ মে) সকালে বৌদ্ধ ধর্র্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, রাঙ্গামাটি ও পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশ’র উদ্যোগে রাঙ্গামাটি পৌর এলাকার বিভিন্ন বিহারের অধ্যক্ষ ও দায়ক দায়িকাদের অংশ গ্রহনে জেলার জিমন্যাসিয়াম হতে বনরূপার মৈত্রী বিহার পর্যন্ত বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষে ধর্মীয় আলোচনা সভায় মিলিত হয়। এতে রঙ-বেরঙের বৌদ্ধ পতাকা হাতে নিয়ে পুণ্যার্থী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী ও পুরুষ অংশ নেন।
এর আগে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ফিতা কেটে মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা ও পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশের সভাপতি শুদ্ধালংকার মহাথের। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট রাঙ্গামাটির ট্রাস্টি জয় সেন তঞ্চঙ্গ্যা, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দূর্গেশ্বর চাকমাসহ শহরের বিভিন্ন বিহারের বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘ ও দায়ক দায়িকারা।
এ সময় বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুরা এই বুদ্ধ পূর্ণিমার মধ্যদিয়ে সকল প্রকার লোভ, হিংসা, মোহ সংঘাতসহ যাবতীয় খারাপ কাজ পরিহার করে সৎ পথে চলতে ও মৈত্রীপূর্ণ মনোভাব নিয়ে একে অপরে সুখে-শান্তিতে বসবাস করার হিতোপদেশ প্রদান করেন।
এছাড়াও অন্যান্য বৌদ্ধ বিহারগুলোতে প্রদীপ প্রজ্বলন, শান্তি ও মঙ্গল শোভাযাত্রা, ধর্মীয় আলোচনা সভা, সমবেত প্রার্থনা, আলোচনা সভা ও বুদ্ধ পূজা, পিন্ডদান, প্রাতঃরাশ, পঞ্চশীল গ্রহণ, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, বুদ্ধমূর্তি দান, প্রদীপ পূজাসহ দিনব্যাপী কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এসময় পৃথিবীর মানব জাতির শান্তি ও মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাঙ্গালীদের প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষের বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় সকল সম্প্রদায়ের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে রাঙ্গামাটি শহর। এ সময় বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষ বর্ণিল সাজে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে।
“যুক্ত করো হে সবার সঙ্গে, মুক্ত করো হে বন্ধ” এই শ্লোগানে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন ও বাংলা নববর্ষ উদ্্যাপন কমিটির উদ্যোগে আয়োজনে বর্ণিল মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন, রাঙ্গামাটি সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি।
এ সময় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেন,সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শিল্পী রানী রায়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো: মামুন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রাঙ্গামাটি জেলা ইউনিট ডেপুটি কমান্ডার ইকবাল হোসেন চৌধুরী, সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম, রানী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রনতোষ মল্লিক, বিএনপি নেতা এ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুন প্রমুখ।
এবারের শোভাযাত্রায় পাহাড়ে বসবাসরত বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সম্প্রদায়ের মানুষ নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে অংশ নেয়। শোভাযাত্রার অগ্রভাগে ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পোশাকের মধ্যদিয়ে এ অঞ্চলের পাহাড়ি জীবনধারাকে তুলে ধরা হয়। যা শোভাযাত্রাকে করেছে বৈচিত্রময়।
পরে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে রাঙ্গামাটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাঙ্গামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তেন গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা বর্ণিল সাজে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে বিভিন্ন পোশাকে সজ্জিত হয়। যেমন খুশী তেমন সাজে অংশ গ্রহণ করেন অসংখ্য ছেলে মেয়ে। শোভাযাত্রায় হাতি ঘোড়া, প্যাচাসহ বিভিন্ন জাতীয় পাখী স্থান পেয়েছে।
বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন শোভাযাত্রাতে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক সহ প্রশাসনের কর্মকর্তা সহ রাঙ্গামাটি বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ স্কুল ছাত্র ছাত্রীরা অংশ গ্রহণ করেন।
শোভাযাত্রা শেষে শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে এসো হে বৈশাখ গানের তালে তালে শুরু হয় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য নিয়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠিত হয়। পাহাড়ীদের এইচ্যা বিজু বিজু বিজু গানের তালে তানে নৃত্য নৃত্য যেন আগত দর্শদের মাতিয়ে তোলে।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ‘পরিচালনা বোর্ড’ এর ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের ২য় সভা বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১১টায় খাগড়াছড়ি ইউনিট কার্যালয়ের সম্মেলন সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব পদমর্যাদা) নিখিল কুমার চাকমা।
সভার আলোচ্য বিষয় ছিল (১) গত ২৫/০৮/২০২১খ্রি. তারিখে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভার কার্যবিবরণী পাঠ ও অনুমোদন এবং গৃহীত সিদ্ধান্তের অগ্রগতি পর্যালোচনা (২) ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহের নভেম্বর, ২০২১ পর্যন্ত সময়ের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং (৩) বিবিধ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদানের পর পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের “পরিচালনা বোর্ড” এর ২০২১-২০২২ অর্থবছরে অনুষ্ঠিত ২য় সভা। তিনি বক্তব্যের শুরুতে পার্বত্য চট্টগাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রতিনিধি, তিন পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক, বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীগণ ও বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালকগণসহ উপস্থিত সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।
সভাপতির অনুমতিক্রমে সদস্য প্রশাসন ইফতেখার আহমেদ (যুগ্মসচিব) বিগত পরিচালনা বোর্ড সভার কার্যবিবরণী পাঠ করেন এবং গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি বিস্তারিত উপস্থাপন করেন। পরবর্তীতে বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীগণ কোড নং ২২০০১১০০, ২২০০০৯০০ এর আওতাধীন প্রকল্প/স্কিম এবং পরিকল্পনা কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত বোর্ডের আওতাধীন প্রকল্পসমূহের প্রকল্প পরিচালকগণ নভেম্বর, ২০২১খ্রি. পর্যন্ত সময়ের সার্বিক বাস্তবায়ন অগ্রগতি বিবরণ তুলে ধরেন।
এছাড়া সভায় রিজার্ভ বাজার হতে জুগুলুক্যা পাহাড়/পুরানবস্তি সেতুর নাম পরিবর্তন করে “বীর মুক্তিযোদ্ধ মোজাফফর আহমদ তালুকদার সেতু” এবং আসামবস্তি হতে ব্রাক্ষনটিলা সেতুর নাম পরিবর্তন করে “বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল বাহাদুর ছেত্রী সেতু” নামে নামকরণের প্রশাসনিকভাবে অনুমোদিত বিষয়টি আলোচনা হয়। রাঙ্গামাটি শৈল বিপনী বিতানের ভাড়া আদায়ের জন্য সংশ্লিষ্ট দোকানদারদেরকে পত্র প্রেরণ এবং বকেয়া ভাড়া আদায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড তহবিল সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, উঁচুভূমি বন্দোবস্তীকরণ প্রকল্প, তিন পার্বত্য জেলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র ঘরে ঘরে সোলার বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন (বিনামূল্যে সোলার বিতরণ), পর্যটন শিল্প বিকাশে তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন ভিউ পয়েন্ট নির্মাণ ও পর্যটকদের সুবিধার জন্য রাস্তা নির্মাণ, পানি রিজার্ভার নির্মাণ, শিক্ষা সম্প্রসারণ, কৃষি, পানীয়জল সরবরাহকরণ ও যোগাযোগ খাতকে অগ্রাধিকার প্রদান, তিন পার্বত্য জেলায় হেডম্যান কার্যালয় নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক আয়োজিত শেখ রাসেল স্মৃতি নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানটি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো ব্র্যান্ডিং হিসেবে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন, প্রাকৃতিক পরিবেশের বিরুপ প্রতিক্রিয়া পরিহারের জন্য বেশি পরিমাণে বৃক্ষ রোপন এবং পাথর উত্তোলন বন্ধের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেন, প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে এবং উপকারভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন প্রকার ওভারলেপিং যেন না হয়, কোন প্রকল্পের ১ম পর্যায়ের কাজ যদি ভালোভাবে বাস্তবায়ন করা যায় ২য় পর্যায়েও যেন ভালোভাবে সমাপ্ত করা যায় এবং যে সমস্ত এলাকায় পানি সমস্যা রয়েছে সেই সব এলাকার পানি সমস্যা দূরীকরনে প্রকল্প গ্রহণ করে দ্রুত সমস্যা নিষ্পত্তি করা হবে।
তিনি আরো বলেন, তিন পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসকগণ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বোর্ড পরিবারের সদস্য তারা বিভিন্ন সময়ে বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়িত বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করে মূল্যবান পরামর্শ প্রদান করে থাকেন এতে বোর্ডের কার্যক্রম আরো ত্বরান্বিত হয়। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়িত সোলার প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগী নির্বাচনের সময় উপজলো পরিষদ এবং ইউনিয়ন পরিষদের সাথে সমন্বয় করলে কাজের ওভারলেপিং হবে না মর্মে পরামর্শ দেন।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ^াস বলেন, দুর্গম এলাকার শিক্ষা প্রসারণ করতে হবে। দেখা যায় দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীরা প্রায় ৯ কিলোমিটার পথ হেঁেট স্কুলে আসে তিনি দুটি স্কুলের কথা উল্লেখ করেন (১) শিয়াই হারুং এবং (২) বলংহামারি। এ ধরণের দুর্গম এলাকার স্কুলগুলোকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতার আহবান জানান। রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক আয়োজিত শেখ রাসেল স্মৃতি নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা প্রশংসা করে বলেন এটিকে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো ব্র্যান্ডিং হিসেবে গ্রহণ করেছে। রাঙ্গামাটি সদরে পাবলিক কলেজ স্থাপন প্রকল্পটির বিষয়ে দ্রুতত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুরোধ করেন।
বান্দরবান পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, বান্দরবান সদরে অবস্থিত জেলা স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন করে বান্দরবানের বীর বিক্রম এর নামে নামকরণের বিষয় প্রস্তাব করেন। তিনি জানান যে, হারিয়ে যাওয়া লোকজ সংস্কৃতিগুলো পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বান্দরবান জেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে লোকজ উৎসব এর আয়োজন করা হবে এবং বান্দরবানের পর্যটন শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে নীলাচল স্পটে ১৬ই ডিসেম্বর এর পরবর্তী সময় হতে পর্যটন মৌসুমে প্রতি সপ্তাহে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে এক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতা কামনা করেন। এই উদ্যোগকে সভায় উপস্থিত সকলেই সাধুবাদ জানান।
বোর্ড সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আলম চৌধুরী (অতিরিক্ত সচিব), জনাব ইফতেখার আহমেদ (যুগ্মসচিব) সদস্য প্রশাসন, মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ (উপসচিব), সদস্য বাস্তবায়ন; খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রতিনিধি বিপুল ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ^াস, রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, বান্দরবান পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বান্দরবান পার্বত্য জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ আবদুল আজিজ, খাগড়াছড়ি ইউনিট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মুজিবুল আলম, মংছেনলাইন রাখাইন, উপ-পরিচালক, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড; বান্দরবান ইউনিট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত, মিশ্র ফল চাষ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম, সিএমইউ জেনারেল ম্যানেজার পিন্টু চাকমা, কল্যাণময় চাকমা, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা; তুষিত চাকমা, রাঙ্গামাটি নির্বাহী প্রকৌশলী (চ:দা); ডজী ত্রিপুরা, তথ্য অফিসার; সাগর পাল, সহকারী পরিচালক (চ:দা) সহ বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।