যেসব পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হয় না, সেগুলো বন্ধের জন্য সরকারের তরফ থেকে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
এসব পত্রিকার ডিক্লারেশন রাখার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এগুলো ভুতুড়ে পত্রিকা। এখানে নিয়োগকৃতদের বেতন দেওয়া হয় না, এরা চাঁদাবাজিসহ নানা কিছুতে লিপ্ত হয় এবং সেই বদনামটা সাংবাদিক সমাজের ওপর বর্তায়, যা কখনোই সমীচীন নয়। এজন্য আমরা ভুতুড়ে পত্রিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি।”
শোকের মাস উপলক্ষে মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘সাংবাদিকতায় বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় কথা বলছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে তবেই অনলাইন গণমাধ্যমের রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “যে সমস্ত অনলাইন পোর্টাল সংবাদ ছাড়া ভিন্ন উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়, সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।”
আইপি টিভির জন্য ইতোমধ্যে ছয়শ আবেদন জমা পড়েছে বলে তথ্য দেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, “আমরা সতর্কতার সাথে দেখছি। মন্ত্রিসভায় পাস করা নীতিমালা অনুযায়ী আইপি টিভি কোনো সংবাদ প্রচার করতে পারবে না। সহসা আইপি টিভির রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার পাশাপাশি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।”
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “রাষ্ট্র, গণতন্ত্র ও সমাজের বহুমাত্রিক বিকাশের স্বার্থে গণমাধ্যমের প্রসার ও স্বাধীনতা যেমন প্রয়োজন, একইসাথে সাংবাদিকতা এবং গণমাধ্যমের নীতি-নৈতিকতাও আবশ্যক। তা না হলে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, রাষ্ট্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রসারের সাথে নীতি-নৈতিকতা থাকলেই কেবল গণমাধ্যমের উদ্দেশ্য সফল হবে।”
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন ‘সাংবাদিকবান্ধব’ নেতা ছিলেন মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, “তখন যারা সাংবাদিক ছিলেন, তারা বঙ্গবন্ধুকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন। সে কারণে বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও বাঙালির জন্য তার চিন্তা জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া সহজ হয়েছিল।
“স্বাধীন হওয়ার পর দেশে একটি বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল। বাসন্তী নামের একজন নারীকে শাড়ির চেয়ে বেশি দামের জাল পরিয়ে ছবি ছাপানোসহ কিছু পত্রপত্রিকায় ক্রমাগত অপপ্রচার চালানো হচ্ছিল। পরে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে আসার পর সেই বাসন্তীর সাথে দেখে করেছেন, তার ঘরও পাকা করে দিয়েছেন।”
হাছান মাহমুদ বলেন, বাকশাল প্রতিষ্ঠার পর পত্রপত্রিকার সংখ্যা নির্ধারণের জন্য বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের নিয়ে একটি কমিটি করে দিয়েছিলেন, যেখানে ছিলেন মিজানুর রহমান, অধ্যাপক খালেদ, আনিসুজ্জামান খান, গিয়াস কামাল চৌধুরী, আমানুল্লাহ খান, আব্দুল গণি হাজারী। আর ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সলিমুজ্জামান। এর বাইরে সাংবাদিক এনায়েতুল্লাহ খানের পরামর্শও নেওয়া হয়েছিল।
“তাদের পরামর্শেই পত্রিকার সংখ্যা সীমিত করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো সাংবাদিক বেকার হননি, বেশিরভাগ চাকরিচ্যুতদের অন্যত্র চাকরি দেওয়া হয়েছিল, বাকিরা তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয়ে গিয়ে ভাতা নিয়ে আসতেন।”
হাছান মাহমুদ বলেন, “বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সাংবাদিক সমাজের জন্য যা করেছেন তা অতীতে কেউ করেনি। করোনার মধ্যে এদেশে তিনি সাংবাদিকদের সহায়তার যে উদ্যোগ নিয়েছেন, আশপাশের দেশে তা করা হয়নি। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠায় সাংবাদিকদের তেমন কোনো জোরালো দাবি ছিল না, প্রধানমন্ত্রী নিজেই এই স্থায়ী ব্যবস্থা করেছেন।
“আজ কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে হাজার হাজার সাংবাদিক উপকৃত হচ্ছে এবং এটি সাংবাদিকদের একটি ভরসাস্থল। কেউ মৃত্যুবরণ করলে পরিবার ৩ লাখ টাকা পায়। সাংবাদিকদের পরিবারকে সহায়তার জন্যও নীতিমালার খসড়া হয়েছে। ডিআরইউ’র এই জায়গাটাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন। আর জাতীয় প্রেসক্লাবের জায়গা বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের যাত্রাও বঙ্গবন্ধুকন্যার হাত ধরে। সেখানে অনেক কর্মসংস্থান হয়েছে।”
ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খানের সঞ্চালনায় সভায় ডিবিসির চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি এম শফিকুল করিম ও সাইফুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুকুর আলী শুভ ও রাজু আহমেদ, যুগ্মসম্পাদক আরাফাত দাড়িয়া, নারী বিষয়ক সম্পাদক রীতা নাহার এবং সদস্য মোতাহার হোসেন ও মানিক লাল ঘোষ বক্তব্য দেন।
ঢাকা: শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র (ডে কেয়ার সেন্টার) স্থাপনে সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন ও সনদ বাধ্যতামূলক করে ‘শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র বিল-২০২১’ সংসদে পাস হয়েছে।
বুধবার (১৬ জুন) জাতীয় সংসদে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।
এর আগে বিলের ওপন দেওয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করা হয়।
বিলে বলা হয়, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র থেকে শিশু হারিয়ে গেলে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদাণ্ডের পাশাপাশি পাঁচ লাখ পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। এ আইন প্রবর্তন হলে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিজ ব্যবস্থাপনায় নির্ধারিত শ্রেণির কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার পাশাপাশি আইনের অধীন নিবন্ধন সনদ নিয়ে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালনা করতে পারবে।
বিলে আরও বলা হয়েছে, শিশু বা ক্ষেত্রমতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর প্রয়োজনীয় সেবা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নিরাপত্তা, চিকিৎসা, বিনোদন, চিকিৎসা, শিক্ষা ও শিশুর জন্য অনুকূল পরিবেশ ও প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতি তিন মাসে একবার করে শিশুদের অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে হবে। বাংলাদেশে বর্তমানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১১৯টি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০টি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র রয়েছে।
এই বিল আইনে পরিণত হওয়ার পর অনুমোদন ছাড়া কেউ শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালনা করতে পারবে না। অনুমোদন ছাড়া এসব পরিচালনা করলে অপরাধ হবে। নিবন্ধন ছাড়া শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র চালালে দুই বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে সংক্রামক রোগের বিস্তার ঘটালেম সহায়তা করলে বা তথ্য গোপন করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা হবে। যেসব শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র এখন পরিচালিত হচ্ছে, নতুন আইন পাস হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে সেগুলোকে নিবন্ধন নিতে হবে। তখন সবগুলো শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলে আসবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে যৌথ পরিবার প্রতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে এবং একক পরিবারের সংখ্যা দেশে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে দিন দিন কর্মজীবী ও পেশাজীবী মায়েদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিকে দিনের বেশিরভাগ সময় নিজ বাসগৃহের বাইরে অবস্থান করতে হয় এবং তার শিশুর জন্য মানসম্মত উপযুক্ত স্থানে নিরাপদ ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিচর্যার লক্ষ্যে শিশুর দিবাকালীন অবস্থানের জন্য শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ফারদিন খান: চট্টগ্রাম ব্যুরো :: ভারি বর্ষণে চট্টগ্রাম নগরীর অধিকাংশ সড়কই পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সকালে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বের হওয়া মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। নগরীর প্রধান প্রধান সড়কের কোমর সমান পানির কারণে যান চলাচল মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। এসময় মানুষের যোগাযোগ ও হাটা চলা কষ্টকর হযে পড়ে। আবহাওয়া অফিস বলছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সহ দেশের নানা জায়গায় ভোর থেকে অল্প ও ভারী বর্ষণ হচ্ছে। রোববার ৬ জুন, রোববার ভোর থেকেই চট্টগ্রামে বৃষ্টি শুরু হয়ে তা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। সকাল ৯টা থেকে বৃস্টি শুরু হয়ে তা থেমে থেমে এখনও অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যেই প্রবল বৃষ্টিতে শহর জুড়ে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। অনেক জায়গায় হাঁটু সমান কিংবা তারও বেশি পানিতে সয়লাব হয়ে যায় রাস্তাঘাট। অবিরাম বৃষ্টিতে নগরীর মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট, বহদ্দার হাট, বাদুরতলা, প্রবর্তক, শুলকবহর, কাতাল গঞ্জ, কাপাসগুলা ,হালিশহরসহ অনেক এলাকা ও অলিগলি রাস্তা যান চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে জরুরি প্রয়োজনে যারা কাজে বের হচ্ছে, তাদেরকে হাটু ও কোমর পরিমান পানি পেরিয়ে পড়তে হচ্ছে মারাত্মক দুর্ভোগে।
হামজারবাগ থেকে মেডিকেলে যাচ্ছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা। তিনি জানান, মুরাদপুরসহ আসার পথে প্রায় সর্বত্র রাস্তা পানিতে ডুবে ছিলো। মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত খুবই খারাপ অবস্থা। অনেক গাড়ী নষ্ট হয়ে রাস্তায় আটকে ছিল। পানিতে রাস্তা ডুবে ছিল। সব মিলিয়ে আজ একেবারে বাজে অবস্থা হয়েছে।এদিকে নগরীর অনেক জায়গায় প্রচণ্ড জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেছে।
নগরীর সরাইপাড়া থেকে মো.ফারুক নামে চাকরিজীবী বলেন, অফিসে যেতে রেইনকোট পড়ে নিচে নামতেই দেখি পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে আছে। নিচতলার অর্ধেক উচ্চতা পর্যন্ত পানি। সেখানে আমার বাইকও ডুবে আছে। শেষ পর্যন্ত অফিসে আর যাওয়া হলো না। অন্যদিকে সকালের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার ছবিতে সয়লাব হয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। কেউ কেউ পথে বেরিয়ে জলাবদ্ধতার মুখে পড়ে স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণ করে তা প্রকাশ করেছেন।
সকালে ১১টায় আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত বুলেটিনে বলা হয়, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার, টেকনাফসহ চট্টগ্রাম বিভাগের বেশিরভাগ স্থানে প্রবল বজ্রপাতসহ ভারি থেকে অতিভারী বর্ষণ চলছে!
ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কার কথাও বলা হয় বুলেটিনে। এসময় বজ্রপাত থেকে সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেয়া হয়। তবে আরো ঘন্টাখানেক এমন বর্ষণ চলমান থাকতে পারে! এছাড়া আগামি ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টায় প্রাক বর্ষার এমন ভারি বর্ষণ বিরতিসহ অব্যাহত থাকতে পারে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলে!
এতে করে রোববার (৬ জুন) চট্টগ্রামের অফিসগামী ও সাধারণ পথচারীদের পড়তে হচ্ছে মারাত্মক দুর্ভোগে। সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের ২ নম্বর গেট, মুরাদপুর, শুলকবহর, প্রবর্তক মোড়, কাতালগঞ্জ, কাপাসঘোলাসহ বিভিন্নস্থানের কোথাও হাঁটু পরিমাণ আবার কোথাও কোমর পরিমাণ পানিতে সড়ক ডুবে গেছে। ফলে জরুরি প্রয়োজনে যারা কাজে বের হচ্ছে, তাদেরকে পড়তে হচ্ছে মারাত্মক দুর্ভোগে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, প্রাক মৌসুমি বায়ু ও লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তবে তা থেমে থেমে হবে। চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হবে।
এদিকে চাক্তাই খাল ও হিজড়া খাল পুরোপুরি পরিষ্কার না হওয়ায় বৃষ্টির পানি আশপাশের ঘর-বাড়িতে উঠে গেছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ’র অধীনে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান প্রকল্পের অধীনে নগরের বিভিন্ন খালে বাঁধ দেওয়া হয়েছে, যা এখন জলাবদ্ধতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ ফেনী নদীতে নির্মিত ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুম ও বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়কে যুক্ত করা বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই সেতু দুই দেশের পর্যটন ও বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র আজ বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। আজ মঙ্গলবার (৯ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সেতুর উদ্বোধন করেন মোদি।
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ২০১৭ সালে আপনারা ত্রিপুরার উন্নয়নে দ্বিগুন মনোযোহী হন। আর এর ফলে যে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তা আজ আপনাদের সামনেই। যেখানে ঘুষ-দুর্নীতি ছাড়া কোনো কাজ হতো না, তা এখন সহজেই হচ্ছে। যেখানে কৃষকদের ফসল সরবরাহ করতে বিভিন্ন অসুবিধা হতো, সেখানে আজ কৃষকরা সরাসরি ফসল সরবরাহ করতে পারছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ত্রিপুরায় আজ যোগাযোগ তথা সড়কপথ, বিমানপথ এবং রেলপথের উন্নয়নের পাশাপাশি প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট সুবিধার মাধ্যমে জনগণের জীবনকে আরও সহজ করে তুলছে। সেই সঙ্গে তাদের অর্থনৈতিক দিকেরও উন্নয়ন হচ্ছে।’
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার এই সেতু পর্যটন ও বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র হবে এমন আশা ব্যক্ত করে মোদি বলেন, ‘এই সেতুর ফলে ত্রিপুরার তথা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধন একদিকে যেমন সমৃদ্ধির পথে আছে, তেমনি দুই দেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে। দুই দেশের অর্থনৈতিক বন্ধনও সুদৃঢ় হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নির্মিত এই মৈত্রী সেতুর কারণে পণ্য পরিবহন এবং পর্যটন খাত আরও উন্নত হবে। ফলে, পণ্য পরিবহনের জন্য এখন আর আপনাদের শুধু সড়ক পথের ওপর ভরসা করে বসে থাকতে হবে না, বাংলাদেশের সড়ক, নদী ও সমুদ্র পথেও সুবিধা পাবে এই রাজ্য।
মোদির বক্তব্য দেওয়ার আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফেনী নদীতে নির্মিত বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে শুধু বন্ধুত্বের বন্ধন নয় বরং দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে বাড়াতেও অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ফেনী নদী। সেতুটি বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্য বাড়াতে আরও সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই সেতুর মাধ্যমে সরাসরি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে যুক্ত হবে ত্রিপুরা। ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েস অ্যান্ড ইনফ্রাস্টাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তানিশ চন্দ্র আগারভাগ ইনপাকন প্রাইভেট লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে ৮২.৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে রামগড়ের মহামুনিতে ২৮৬ একর জমির উপর ‘মৈত্রী সেতু’ নির্মিত হয়েছে।
সেতুর ভারতীয় প্রকৌশলী মতিউর রহমান জানিয়েছেন, গত ১৩ জানুয়ারি সেতুর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়। এ সেতুর মোট পিলার ১২ টি। এরমধ্যে বাংলাদেশ অংশে নির্মাণ ৮ টি ও ভারতের অংশে ৪টি। সেতু থেকে ২৪০ মিটার এপ্রোচ রোড নির্মাণ করে রামগড়-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের সঙ্গে এবং ওপারে সেতু থেকে প্রায় ১২০০ মিটার এপ্রোচ রাস্তা নবীনপাড়া-ঠাকুরপল্লী হয়ে সাব্রুম-আগরতলা জাতীয় সড়কে যুক্ত হয়েছে। আন্কর্জাতিক মানের দুই লেনের এ সেতুর দুই পাশে রয়েছে ফুটওয়ে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
তিনি রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ এ অবস্থিত জাতির পিতার স্মৃতি জাদুঘরের সামনে রক্ষিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে ইতিহাসের এই মহানায়কের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
জাতির পিতার প্রতিকৃতির বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার এই মহান স্থপতিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে এবং প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট শাহাদৎবরণকারীদের স্মরণে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে এ সময় বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেসসচিব কেএম সাখাওয়াত মুন এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। দলীয় সভাপতির শ্রদ্ধা জানানোর পর সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
তবে করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়ির কারণে এ বছর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় দলীয় নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে ছিলেন না।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক রেসকোর্সের ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দি উদ্যান) লক্ষ লক্ষ জনতার উপস্থিতিতে এক ভাষণের মাধ্যমে সমগ্র জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেন।
তিনি বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ পরবর্তীতে এই ভাষণ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক দলিলে স্থান লাভ করে।
॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ মানুষের জীবনকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েই সরকার করোনা ভাইরাসের টিকা আনার পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা এর সমালোচনা করছে, তাদের কথায় গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই। বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারী) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই করোনা ভাইরাসের সময়ে আমরা ইতোমধ্যে টিকা আমরা দেওয়া শুরু করেছি অনেক কথা শুনতে হয়। এসব কথায় কান দিলে চলে না।
অনেকেই তো বলেছে- বাংলাদেশে ভ্যাকসিন আসবে না। অনেক উন্নত দেশও কিন্তু আনতে পারেনি। আমি কিন্তু কোনোদিকে তাকাইনি। আমার কাছে মানুষ সব থেকে বড়, মানুষের জীবন বড়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৭ জানুয়ারি ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে করোনা ভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এরপর রোববার শুরু হয় সারা দেশে গণ টিকাদান।
বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভাইরাসের টিকা। এই টিকা নিরাপদ এবং করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ।
তবে বিএনপি নেতাদের অনেকে বিভিন্ন সময়ে ভারত থেকে টিকা আনার সমালোচনা করেছেন। টিকা দিয়ে সাধারণ মানুষকে ‘গিনিপিগ’ বানানো হবে কি না, সেই সন্দেহর কথাও বলেছিলেন কেউ কেউ।
বাংলাদেশ যাতে দ্রুত করোনাভাইরাসের টিকা পায়, তা নিশ্চিত করতে সরকারের চেষ্টার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, আমি যখন প্রথম ভ্যাকসিনের জন্য টাকা দিই, এক হাজার কোটি টাকা আলাদা রেখেৃ আমি সঙ্গে সঙ্গে অ্যাডভান্স করে দিয়েছিলাম যে যখনই ভ্যকসিন তৈরি হবে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যখনই অনুমোদন দেবে, সকলের আগে যেন বাংলাদেশ পায়। এবং সেটাই আজকে প্রমাণিত সত্য।
সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সরকার যে তিন কোটি ডোজ টিকা কিনছে, তার ৫০ লাখ ডোজ ইতোমধ্যে দেশে এসেছে। এছাড়া আরও ২০ লাখ ডোজ টিকা ভারত সরকার উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে।
ভ্যাকসিন উপহার দেওয়ায় ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এখন আরো অনেকেই দিতে চাচ্ছেন। কিন্তু আমাদের যেটা প্রয়োজন, আমরা কিন্তু নিয়ে এসেছি। টিকা নিয়ে অনেকের মধ্যে শুরুতে কিছুটা দ্বিধা থাকলেও এখন তা কেটে গেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এখানে যুবলীগের একটা দায়িত্ব আছে। বিশেষ করে আমরা বলেছি যে ৪০ বছরের উপরে যারা, আর বিশেষ করে শিক্ষক থেকে শুরু করে অন্যান্য যারা সব সময় মানুষের পাশে কাজ করতে হয়, তাদেরকে আগে দিতে হবে। মানুষের মাঝে এই ভয়টা দূর করতে হবে। সবাই যেন ভ্যকসিনটা নেয়। সেই ব্যবস্থা করে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।
টিকা পাওয়ার পরও সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, টিকা নেওয়ার পরেও কিন্তু স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে। মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, হাত পরিষ্কার করতে হবে এবং সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। এটা সবাইকেই নজরে রাখতে হবে এবং এটা যুবলীগ করবে, সেটা আমি চাই।
অনুষ্ঠানে যুবলীগের নতুন নেতৃত্বকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে সব সময় সকল আন্দোলনে তরুণরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। কাজেই তাদের হাত ধরেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা ইনশাল্লাহ আমরা গড়ে তুলব।
সেজন্য তরুণদের প্রস্তুত হওয়ার তাগিদ দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের তো বয়স হয়ে গেছে। কিন্তু আজকের তরুণরাই তো আগামী প্রজন্ম এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতার আজীবন সংগ্রামের কথা স্মরণ করার পাশাপাশি ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট তাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার কথা অনুষ্ঠানে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। দেশের উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ও ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথাও তিনি বলেন।
রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আওয়ামী যুবলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ূন, যুবলীগের বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ ফজলে সামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ খাদ্য মন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার এমপি বলেছেন, একেএম মকছুদ আহমেদ ৫০ বছর ধরে সাংবাদিকতা ও ৩৮বছর ধরে পত্রিকা প্রকাশ করছে এটি একটি বিরল ব্যাপার। তিনি বলেন, এ ৩৮বছরে একটি দিনের জন্য তিনি পত্রিকা বন্ধ করে নাই। যা চারটি খানি কথা নয়। তাকে আরও বড় সম্মানে ভুষিত করা উচিত। তাই আগামীতে তাকে একুশে পদক দেওয়ার বিষয়ে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে চারণ সাংবাদিক দৈনিক গিরিদর্পণ পত্রিকার সম্পাদক আলহাজ্ব এ কে এম মকছুদ আহমেদ এর সাংবাদিকতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৫ গুণীজন সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দীপংকর তালুকদার এমপি, এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারী) বিকালে রাঙ্গামাটি চেম্বার অব কমার্স এর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল আলম নিজামী, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ, পুলিশ সুপার মীর মোদ্্দাছ্ছের হোসেন, সাবেক মহিলা এমপি ফিরোজা বেগম চিনু, রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামলীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়াম্যান শহীদুজ্জামান মহসিন রোমান, খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সভাপতি জিতেন বড়ুয়া, বিটিভি লোক লোকালয় অনুষ্ঠানের সংগঠক-গবেষক ও অরণ্য বার্তা পত্রিকার সম্পাদক চৌধুরী আতাউর রহমান রানা, রাঙ্গামাটি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ, সদও উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম, খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ আবু তাহের মোহাম্মদ’সহ গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গরা।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক।
অনুষ্ঠানে দীপংকর তালুকদার এমপি আরো বলেন, আমারও এক সময় ইচ্ছে ছিলো পার্বত্য সংবাদ নামে একটি পত্রিকা বের করবো। পত্রিকার অফিস হলো ডিকলারেশন হলো। পত্রিকার সব ধরনের ফরমালিটি হলো। কিন্তু পত্রিকা ছাপানোর সাহস আমার কুলালোনা। যার কারনে পার্বত্য সংবাদ আর দিনের আলোর মুখ দেখেনি। যেখানে একটি পত্রিকা বের করার মতো সাহস আমার ছিলোনা সেখানে মকছুদ ভাই ৩৮বছর ধরে পত্রিকা বের করছে এবং একটি দিনের জন্য পত্রিকা বন্ধ করে নাই। যা চারটি খানি কথা নয় একটি বিরল ব্যাপার। আর এ ধরনের সম্মাননা অনুষ্ঠানে থাকতে পারাটা সৌভাগ্যের বিষয়। তিনি বলেন, আমাদের দেশে রাজনীতির সংস্কৃতি বা অপসংস্কৃতি বলি বিভিন্ন দলের রাজনীতি নেতাদের প্রায়শই দেখা যায় তারা সাংবাদিকদের বিভিন্ন ভাবে নানা ধরনের নাজেহাল ও শারীরিক নির্যাতন করার খবরও আমরা পত্র পত্রিকায় দেখতে পাই। সেক্ষেত্রে মকছুদ ভাই ৩৮ বছর ধরে পত্রিকা বের করছেন ৫০বছর ধরে সাংবাদিকতা করছেন কিন্তু এখনো একটা দিনের জন্য কোন রাজনীতি নেতা বলতে পারে নাই মকছুদ ভাই এটা লিখছেন কেন। আমরা কখন এটা করছি । এই ধরনের কথা বলার সুযোগও এখনো আমার হয়নি। এখনো পর্যন্ত তার সাথে আমাদের মধুর সম্পর্ক রয়েছে এবং থাকবে। তিনি আরো বলেন, রাজনীতি নেতাদের সাথে সংবাদপত্রের সাংবাদিকদের একটা টানাপোড়ন বা মধুর সম্পর্ক থাকে। বলা হয় নির্ভিক সাংবাদিকদের কোন বন্ধু থাকেনা। আমার পক্ষে লিখলে বন্ধু আমার বিপক্ষে লিখলে শত্রু। কিন্তু মকছুদ ভাই নির্ভিক সাংবাদিকতা করে চলেছে।
তিনি একুশে পদকের বিষয়ে বলেন, অনেকেই মকছুদ ভাইকে একুশে পদক দেওয়ার দাবী করেছেন এবং তাদের দাবীটি যৌত্তিক ও মকছুদ ভাই পাওয়ার যোগ্য বলে আমি মনে করি। কিন্তু যেহেতু এ বছর একুশে পদক দেয়া হয়ে গেছে এবং দেশের শত শত সাংবাদিকদের মধ্যে শুধু একজনকেই দেয়া হয় তাই আগামী বছর মকছুদ ভাইকে দেওয়ার জন্য বিষয়ে আমরা চেষ্টা করবো। তিনি বলেন, একুশে পদকের সাংবাদিকদের জন্য ২টি বাক থাকা উচিত একটি হলো সাংবাদিক আরেকটি হলো মফস্বলের সাংবাদিক। তাই আমি মনে করি মফস্বলের সাংবাদিকদর যদি দেওয়া হয় মকছুদ ভাই নিশ্চিত ভাবে পাবে এতে কোন সন্দেহ নেই। তিনি বলেন, মানুষের তিপ্তি এক এক রকম কেউ খেয়ে আনন্দ পান কেউ খাওয়ানের আনন্দ পান। তিন পার্বত্য জেলার অনেক পথিতযশা সাংবাদিক এখন জাতীয় পত্রিকা ও চ্যানেলে কাজ করছে এবং তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাংবাদিকরাই হচ্ছে এই গিরিদর্পন ও বনভুমি পত্রিকার।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল আলম নিজামী বলেন, গুনীজনদের সম্মান না করলে গুনী লোক জন্মায় না। তাই প্রেস ক্লাবের এ ধরনের উদ্দ্যেগ সত্যিই প্রসংসনীয়। তিনি বলেন, মানুষ সম্মান পাই তার মেধা ও জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে যখন ভালো কাজ করে। এই গুনী লোকগুলোও ভালো করেছে যার কারনে আজ তারা সম্মানে ভুষিত হয়েছে।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ বলেন, মফস্বলে সাংবাদিকতা করাটা কষ্টের হলেও মকছুদ ভাই শত কষ্ট ও বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করে ৫০ বছর ধরে সাংবাদিকতা করার পাশাপাশি ৩৮বছর ধরে পত্রিকা প্রকাশ করে যাচ্ছে এটি সত্যিই বিরল। আর এই গুনীজনদের সম্মাননা দিয়ে প্রেসক্লাব যথার্থই করেছে। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সাথে আমার একটা নীবিড় সম্পর্ক রয়েছে। যার ফলে দ্রুত এ জেলার উন্নয়ন, সম্ভবনা, দুর্ঘটনা’সহ বিভিন্ন সংবাদগুলো আমি সহজেই জানতে পারি। তাদের সহযোগীতা আমি সবসময় মনে রাখবো।
সম্মাননাপ্রাপ্ত আলহাজ¦ একেএম মকছুদ আহমেদ বলেন, আমার পত্রিকায় লেখালেখি করে মংছেইন রাখাইন একুশে পদক পেয়েছে শোভা ত্রিপুরা বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছে এটাই আমার বড় জন্য তিপ্তি। তিনি বলেন, আমার লেখনীর মাধ্যমে আমি সবসময় চেষ্টা করেছি পার্বত্য জেলায় শান্তি বিরাজ করুক। কোন ঘটনাকে কারো পক্ষ হয়ে লেখার চেষ্টা আমি করেনি। এখানকার সম্ভবনাগুলোকে তুলে ধরার কারণে আজ পার্বত্য জেলায় অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তিনি গুনীজনদের সম্মাননা প্রদান করায় প্রেস ক্লাবকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এর আগে সুর নিকেতনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনোজ বাহাদুর গুর্খা তার শিল্পীদের নিয়ে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভরাম্ভ করে পরে প্রেস ক্লাবের সদস্যরা আগত অতিথি ও সম্মাননাপ্রাপ্তদের মাঝে ফুল ও উত্তরী দিয়ে সম্মান প্রদর্শন করে শেষে সম্মাননাপ্রাপ্তদের হাতে সম্মাননা ক্রেষ্ট তুলে দেন অতিথিরা।
অন্য গুনীজনরা হলেন, প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্য ও কেডিএস গার্মেন্টস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব খলিলুর রহমান, প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্য ও সাবেক রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রয়াত পারিজাত কুসুম চাকমা (মরণোত্তর), প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্য ও দৈনিক আজাদীর সাবেক চীফ রিপোর্টার মরহুম সাংবাদিক ওবায়দুল হক (মরেণোত্তর) ও প্রেস ক্লাবের শুভাকাঙ্খী ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চিংকিউ রোয়াজা।
॥ ঝুলন দত্ত কাপ্তাই ॥ পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ দিনের রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষ বন্ধে জনমত গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন পাহাড়ের চারন সাংবাদিক দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক একেএম মকছুদ আহমেদ। আর তার লিখনির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে সর্বত্র শান্তি আনয়নে বিশাল জনমত গঠন হয়েছিল। আর সে সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তিচুক্তি সম্পাদন করে পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাই পাহাড়ে সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য একেএম মকছুদ আহম্মেদকে একুশে পদক দেওয়ার দাবি জানান।
মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারী) সকালে রাজস্থলী উপজেলা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত দৈনিক গিরিদর্পনের সম্পাদক চারণ সাংবাদিক একেএম মকছুদ আহম্মেদ এর সাংবাদিকতায় ৫০ বছর পূর্তিতে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
রাজস্থলী উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শেখ ছাদেক সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাজস্থলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উবাচ মারমা। গেষ্ট অব অনার রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য নিউচিং মারমা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক, রাজস্থলী উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান অংনুচিং মারমা, উচসিন মারমা, রাজস্থলী থানার ভাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মফজল আহাম্মদ খান, রাজস্হলী তাইতং পাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ। অনুষ্টান সঞ্চালনায় ছিলেন, রাজস্থলী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোঃ আজগর আলী খান এবং কাপ্তাই প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক ঝুলন দত্ত ।
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ ছাদেক বলেন, বর্তমান প্রজন্মে যারা সাংবাদিকতা করছেন তারা একেএম মকছুদ আহম্মেদের আদর্শকে অনুসরণ করলে উন্নতির চরম শিকড়ে পৌঁছতে পারবে। তিনি রাজস্থলী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে সাংবাদিকতায় ৫০ বছর পূর্তি হওয়ায় একেএম মকছুদ আহম্মেদকে অভিনন্দন জানান।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজস্থলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উবাচ মারমা বলেন, যে আদর্শ এবং নীতি নিয়ে একেএম মকছুদ আহম্মেদ সাংবাদিকতা করে আসছেন তা অনুসরণ করলে এ প্রজন্মের সংবাদকর্মীরা লাভবান হবেন, কারন তিনি কখনও ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দেইনি।
সংবর্ধিত গুণীজন এ কে এম মকছুদ আহমেদ বলেন, এমন কোন সংবাদ পরিবেশন করবেন না, যাতে করে পাঠক আহত না হয়। প্রকৃত একজন সংবাদকর্মী তিনি যিনি সৎ, নীতিবান এবং আর্দশবান হয়ে মানুষের সেবায় নিয়োজিত হয়ে মানুষের হাসি, কান্না, এলাকার সমস্যা ও সমাধানের পথ দেখিয়ে দেন। তিনি এলাকার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সত্যের পথে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানের গেস্ট অপ অনার জেলা পরিষদ সদস্য নিউচিং মারমা বলেন, আমরা যখন সেই ছোটবেলা হতে রাজনীতির সাথে জড়িত হয়েছি, তখন হতে মকছুদ ভাইকে চিনি। তাঁর লেখনিতে এই অঞ্চলের সমস্যা, সম্ভাবনা উঠে এসেছে বহুবার। আর তার এই লেখনির কারণে পাহাড়ে অনেক উন্নয়ন তরান্বিত হয়েছে। তাই রাজস্থলী প্রেস ক্লাব এই গুণি ব্যক্তিকে সংবর্ধনা দেয়ায় তাদের সাধু বাদ জানাই।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাঙ্গামাটি প্রেসক্লাব সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন, রাস্তাঘাট উন্নয়ন এবং এই এলাকার পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে একেএম মকছুদ আহম্মেদের লেখনী সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে বলে আজ শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নসহ পাহাড়ের উন্নয়নের ধারা একখনো চলমান রয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক বলেন, নানিয়াচর উপজেলার চেঙ্গী নদীর উপরে যে ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে সেটার স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন এ কে এম মকছুদ আহমেদ। তিনি জাতীয় এবং স্থানীয় পত্রিকার মাধ্যমে অনেকবার এই বিষয়ে লেখা লেখি করে গেছেন। এখনো তিনি এলাকার বিভিন্ন সমস্যা, মানুষের সুখ দুঃখের কথা লিখে যাচ্ছেন।
রাজস্থলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মফজল আহমদ খান বলেন, সাংবাদিকতা জগতে এ কে এম মকছুদ আহমেদ এর মতো ব্যক্তিত্ব খুব কম জন্মায়, যিনি তাঁর আদর্শ, সততা এবং সত্য প্রকাশের মাধ্যমে এই জগতটা পবিত্র করে রেখেছে। তাই এই গুণি ব্যক্তিকে সবাই মনে রাখবে চিরদিন ধরে।
রাজস্থলী তাইতং পাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, দৈনিক গিরিদর্পন এবং এ কে এম মকছুদ আহমেদ একই সুত্রে গাঁথা। এই অঞ্চলের সু –প্রাচীন এই দৈনিক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি এই অঞ্চলের সংবাদপত্র জগতকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তার হাত ধরে এই অঞ্চলের অনেক সংবাদকর্মী সৃষ্টি হয়েছে।
পরে রাজস্থলী প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে দৈনিক গিরিদর্পনের সম্পাদক চারণ সাংবাদিক একেএম মকছুদ আহম্মেদ এর সাংবাদিকতায় ৫০ বছর পূর্তিতে সম্মাননা প্রদানসহ প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদেরও সম্মাননা তুলে দেন রাজস্থলী প্রেস ক্লাবের সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্যরা।
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ মহামারীতে মৃত্যু, শোক আর সঙ্কটের একটি বছর পেরিয়ে এসে টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়েই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে সরকার আশা করছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বিকালে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এই টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রথম পাঁচজনকে টিকা দেওয়া দেখেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, শিগগিরই সারা দেশে টিকা দেওয়া শুরু হবে, যাতে দেশের মানুষ করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা পায়।
প্রথম টিকা দেওয়া হয় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তাকে। টিকা নিয়ে তিনি বলেন ‘জয় বাংলা’।
প্রথম টিকা পাওয়া বাকি চারজন হলেন- এ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আহমেদ লুৎফুল মোবেন, স্বাস্থ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহা পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, মতিঝিল বিভাগের ট্রাফিক পুলিশ সদস্য মো. দিদারুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম ইমরান হামিদ।
এই পাঁচজনসহ মোট ২৬ জনকে প্রথম দিন টিকা দেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ রয়েছেন।
\ নিজস্ব প্রতিবেদক \ পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ দিনের রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষ বন্ধে জনমত গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন পাহাড়ের চারন সাংবাদিক দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক একেএম মকছুদ আহমেদ। আর তার লিখনির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে সর্বত্র শান্তি আনয়নে বিশাল জনমত গঠন হয়েছিল। আর সে সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তি সম্পাদন করে পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজস্থলী উপজেলা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত দৈনিক গিরিদর্পনের সম্পাদক চারণ সাংবাদিক একেএম মকছুদ আহম্মেদ এর সাংবাদিকতায় ৫০ বছর পূর্তিতে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
রাজস্থলী উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শেখ ছাদেক সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাজস্থলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উবাচ মারমা। গেষ্ট অব অনার রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য নিউচিং মারমা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক, রাজস্থলী উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান অংনুচিং মারমা, উচসিন মারমা, রাজস্থলী থানার ভাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মফজল আহাম্মদ খান। অনুষ্টান সঞ্চালনায় ছিলেন, রাজস্থলী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোঃ আজগর আলী খান।
পরে রাজস্থলী প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে দৈনিক গিরিদর্পনের সম্পাদক চারণ সাংবাদিক একেএম মকছুদ আহম্মেদ এর সাংবাদিকতায় ৫০ বছর পূর্তিতে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের দীর্ঘ সংঘাতময় পরিস্থিতি ও পাহাড়ে রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষ বন্ধে ও পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে পার্বত্য অঞ্চলের চারণ সাংবাদিক এ,কে,এম মকছুদ আহমেদের ভূমিকা ছিলো অপরিসিম বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা। বক্তারা বলেন, সংঘাতময় পার্বত্য চট্টগ্রামের একমাত্র মুখপাত্র ছিলো দৈনিক গিরিদর্পণ। এই গিরিদর্পণের মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা গুলো তুলো ধরে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নকে এগিয়ে নিয়ে গেছে বলে ও মন্তব্য করেন বক্তারা।
সংবর্ধনা সভায় বক্তারা বলেন, পার্বত্য অঞ্চল ছিল একটি সময় সংঘাতময় একটি অঞ্চল। এই অঞ্চলে প্রতিনিয়ত খুন, অপহরণ, ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম বিদ্যমান ছিলো। দৈনিক গিরিদর্পন ও বিভিন্ন পত্রিকায় চারণ সাংবাদিকের লেখনীর মাধ্যমে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে পাহাড়ের শান্তির নীড় গড়ে তুলেছে। কিন্তু এই শান্তির নীড়ে আজো ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। বক্তারা চারণ সাংবাদিক সহ অন্যান্য সাংবাদিকদের তাদের কলমের লেখনীর মাধ্যমে পাহাড়ের স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে নিতে আহবান জানান।