১৪ মার্চ রবিবার আনুমানিক সকাল ০৭৩০ ঘটিকায় বান্দরবান জেলার সমথংপাড়া এলাকা থেকে ভাল্লুকের থাবায় গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যু পথযাত্রী একজন উপজাতী বৃদ্ধ ত্রইল মুরং (৬৬) কে মানবতার দেবদূত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাহায্যে তাৎক্ষনিক বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারের মাধ্যমে প্রথমে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে আসা হয় এবং পরবর্তিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় । আহত ত্রইল মুরং(৬৬) র এলাকার কারবারীর কাছ থেকে জানা যায়, সমথং পাড়া জঙ্গলের পাশে ঝিড়ির কাছে ত্রইল মুরং পানি আনতে যান এবং হঠাৎ একটি হিংস্র ভাল্লুক আক্রমন করে ঐ বৃদ্ধকে। ভাল্লুকটি ত্রইল মুরংকে মারাত্মকভাবে আহত করে। পরবর্তীতে আহত ত্রইল মুরংকে বান্দরবান রিজিয়নের আওতায় নিকটস্থ বলাইপাড়া আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। চট্টগ্রাম সেনানিবাসের জিওসি মহোদয় তৎক্ষণাৎ আহত ত্রইল মুরং কে যেকোনো ভাবে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে আসার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ পেয়েই দুপুর দেড়টার দিকে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে তাকে আনা হয়। পরবর্তীতে তাকে সেনাবাহিনীর সহায়তায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। উল্লেখ্য যে, ইতিপূর্বেও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ বিমানবাহিনী যৌথ প্রচেষ্টায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ মঙ্গলিয় মুরং (০৬) ও দাদা ইয়াংসাই (৪৮) নামে দুইজন মৃত্যুপথযাত্রী উপজাতিকে হেলিকপ্টার যোগে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা সেবা ও উন্নর চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম ম্যাডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। আর্তমানবতার সেবায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই অগ্রযাত্রা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। প্রেস রিলিজ
॥ শামীম ইকবাল চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি ॥ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেছেন, ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হয়েছে বাংলাদেশ আগামী ২০৪১ সালে সমৃদ্ধশালী দেশে রূপান্তর হবে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিয়েছে সরকার। আর এর সুফল পাচ্ছেন স্থানীয় জনগন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানেই এ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
শনিবার (১৩ মার্চ) বেলা ১২টায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বরইতলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তি প্রস্তুর উদ্বোধন শেষে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে পার্বত্য এলাকার ৪০ হাজার পরিবারকে বিনামূল্যে সোলার বিতরণ করা হবে। নাইক্ষ্যংছড়িতে শুধুমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে শত কোটি কাজ হয়েছে। এসময় মন্ত্রী এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে জনগনকে সরকারের পাশে থেকে সহযোগিতা করারও আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন, আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করা হবে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, লামা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন কচি। উপস্থিত ছিলেন, বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) কুদ্দুস ফরাজি পিপিএম, বান্দরবান জেলা পরিষদ সদস্য কেনু ওয়ান চাক, বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবু তাহের কোম্পানী, নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলমগীর হোসেন প্রমূখ। সভা সঞ্চালনা করেন, বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি তসলিম ইকবাল চৌধুরী।
এর আগে মন্ত্রী ঘুমধুম, সোনাইছড়ি ও নাইক্ষ্যংছড়িতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়নাধীন প্রায় ২৭ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ভিত্তি প্রস্তুর উদ্বোধন করেন।
পরে দুপুর ২টার দিকে তুমব্রু বাজার এলাকায় আরেকটি জনসভায় উপস্থিত হন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। জনসভা শেষে বিকেল ৩টার দিকে বান্দরবানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন মন্ত্রী।
জনসভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় সরকার সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি), জেলা পরিষদ, বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সহযোগী সংগঠন, বান্দরবান ও নাইক্ষ্যংছড়ি প্রেসক্লাব সাংবাদিকবৃন্দ, উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, সেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষক লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ঘুমধুমের বিভিন্ন স্তরের জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পার্বত্য অঞ্চলে আবারো আঞ্চলিক দল গুলোর তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের তৎপরতায় আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর কোনঠাসা হয়ে পড়লেও নতুন করে বাঘাইছড়ি উপজেলায় আঞ্চলিক দলগুলোর তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় রাঙ্গামাটির প্রশাসনকে ভাবিয়ে তুলেছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলেও বাঘাইছড়িতে গত দু মাসে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গভীর রাত পর্যন্ত গুলি বিনিময়ের প্রকট শব্দে আবারো ভাবিয়ে তুলেছে প্রশাসনকে। আর এলাকায় বসবাসরত সাধারণ মানুষেরা রয়েছে আতংকে।
বাংলাদেশ সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল গুলোর সশস্ত্র ক্যাডারা দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ভারত সীমান্তবর্তী ভারতের মিজোরাম, দেমাগ্রী, ত্রিপুরা সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় লুকিয়ে ছিলো। প্রশাসনের তৎপরতা কিছুটা কমে আসায় তাদের নেটওয়ার্ক আবারো শক্তিশালী করে প্রবেশ করছে বাংলাদেশে। তারই ধারাবাহিকতায় বাঘাইছড়ি উপজেলায় প্রায় প্রতিটি কোন কোন জায়গায় গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এই ঘটনায় হতাহত হলেও কেউ তা বলতে পারছে না।
পার্বত্য রাঙ্গামাটির রাজস্থলী, বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর এখন হঠ জোন হিসাবে পরিণত হয়েছে। এই সকল উপজেলা গুলোতে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল গুলোর আধিপত্য বিস্তার করে মাঝে মাঝে নিজেদের শক্তির পরীক্ষা করে দল গুলো। এই অবস্থায় পার্বত্য অঞ্চলের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান আবারো নতুন করে শুরু করার জোর দাবী উঠছে।
রাঙ্গামাটির দায়িত্বশীল একটি সুত্র জানায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) দীর্ঘদিন ধরে তাদের রাজনৈতিক কোন কর্মকান্ড চালাচ্ছে না। এটাকী তাদের কৌশল হতে পারে না কোন মরণ কামড় দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। তারা বাঘাইছড়ির কিছু কিছু এলাকা এখন নিজেদের দখলে নেয়ার জন্য শক্তি প্রয়োগ করছে।
অন্যদিকে দায়িত্বশীল একটি সুত্র জানায় সম্প্রতি জেএসএস ও ইউপিডিএফএর মাঝে অস্ত্র বিরতীর চুক্তি শেষ হয়ে গেছে। আধিপত্য বিস্তার করতে তারা মাঝে মাঝে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। অপরদিকে চুক্তি শেষ হওয়ার পর পর জেএসএস এর নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক দল গুলোর মাঝে আবারো বৈঠকের পরিকল্পনা চলছে। যদি আঞ্চলিক দল গুলো আবারো এক হয়ে যায় তাহলে পার্বত্য অঞ্চলে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে।
এছাড়া পাহাড়ের আঞ্চলিক দল গুলোর হাতে অবৈধ অস্ত্রের মজুদ দিন দিন বাড়ছে। অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানিতে পাহাড়ে খুন, গুমসহ নিজেদের মাঝে প্রতিনিয়ত শক্তি প্রদর্শণের কারণে সাধারণ মানুষের জীবনে নার্ভিশ্বাস উঠেছে। প্রতিনিয়ত আঞ্চলিক রাজনেতিক দলের আধিপত্য বিস্তারের কারণে রাঙ্গামাটির বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের শান্তি যেমন বিনষ্ট হচ্ছে তেমনি শত শত মায়ের বুক খালি হচ্ছে।
পার্বত্য তিন জেলার আঞ্চলিক ৫ টি দল অবস্থান করছে। দল গুলো হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (সন্তু গ্রুপ), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ইউপিডিএফ (প্রসিত গ্রুপ), পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (লারমা সংস্কার গ্রুপ), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ইউপিডিএফ (সংস্কার গ্রুপ) ও নতুন দল গঠন করে মগ লিবারেল ফ্রন্ট নামে আত্মপ্রকাশ করছে। মগ লিবারেল ফ্রন্ট বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির রাজস্থলী ও কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থান করছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে।
এদিকে পার্বত্য অঞ্চল ও ভারত এবং মিয়ানমারের অধিকাংশ বর্ডার এলাকা খোলা থাকায় অবৈধ নানা গোনা ও অস্ত্রের আনা গোনা বেশি পাওয়া যায়। রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি, বরকল ও জুরাছড়ির বেশ কিছু এলাকা দিয়ে ভারতের অবস্থান এবং বিলাইছড়ি ও রাজস্থলীর বেশ কিছু এলাকা দিয়ে মিয়ানারের লোকজনের আনা গোনা বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। সম্প্রতি রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার কলেজ পাড়া এলাকায় আরাকান আর্মির আস্তানা পাওয়া গেছে। এসময় ডাঃ রেনিসো নামে একজনকে আটক করা হয় এবং তার বাসা থেকে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী হামলার সময় মাইন বিষ্ফোরণে আহত একজনকে পাওয়া যায়। তার দুটি হাত উড়ে যায় ডাঃ রেনিন সোর বাড়িতে রেখে আহত ব্যক্তির চিকিৎসা রত অবস্থায় পাওয়া যায়।
সম্প্রতি খাদ্য মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বেশ কয়েকটি সভায় বলেন, পার্বত্য অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে আঞ্চলিক রাজণেতিক দলগুলো পাহাড়ের অস্থিতিশীল করে তুলেছে। অবৈধ অস্ত্রের কারণে পাহাড়ের কোন মানুষ শান্তিতে নেই। পার্বত্য পরিস্থিতিতে অস্থিতিশীল করে তুলতে চাঁদাবাজী, খুন, অপহরণ, সহ আনা ধরনের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে তারা। তাদের রিরুদ্ধে পার্বত্য অঞ্চলের সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করার পাঁয়তারা করছে উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো। খুন, গুম, ধর্ষণ, চাঁদাবাজিসহ তাদের নানান অপকর্ম দিনদিন বেড়েই চলেছে। পাহাড়ে ৫ টি আঞ্চলিক সংগঠনের সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর হাতে সীমান্ত দিয়ে অবাধে আসছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ। মাঝে মধ্যে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীর সমন্বয়ে মাঝে মধ্যে অবৈধ অস্ত্র, গুলি ও অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হলেও এদের নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না।
পার্বত্য জেলার অধিবাসীরা জানান, পার্বত্যাঞ্চলে মোতায়েনরত সেনাবাহিনীকে ছয়টি স্থায়ী সেনানিবাসে প্রত্যাবর্তন, সামাজিক উন্নয়ন ও বিদ্যুৎ উন্নয়নসহ প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ৩ পার্বত্য জেলায় ৪১ হাজার ৮৪৭ জনকে বয়স্ক ভাতা, ২২ হাজার ৪১০ জনকে বিধবা ভাতা, ৭ হাজার ৩১১ জনকে অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা এবং ৯৮১ জন প্রতিবন্ধীকে শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় এ অঞ্চলে ১ হাজার ৪৬টি সমিতির মাধ্যমে ৫২ হাজার ১৭২ জন সদস্যের দারিদ্র্য বিমোচন তথা জীবনমান উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৬২৩টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে।
তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আগে যেখানে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ ছিল না সেখানে নির্মিত হয়েছে ১টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১টি মেডিকেল কলেজ। হাইস্কুল ও কলেজের সংখ্যা যেখানে ছিল মাত্র ১১টি সেটা এখন ৪৭৯টি। প্রায় প্রতিটি পাড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। শিক্ষার হার ২ ভাগ থেকে বেড়ে বর্তমানে ৪৪ দশমিক ৬২ ভাগে পৌঁছেছে। যেখানে বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষার হার ৫৯ দশমিক ৮২ ভাগ সেখানে পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা জনগোষ্ঠীর শিক্ষার হার ৭৩ ভাগ। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালিদের শিক্ষার হার ২৩ ভাগ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ১টি থেকে ৩টি করা হয়েছে, হাসপাতালের সংখ্যা ৩টি থেকে ২৫টিতে উন্নীত হয়েছে। যেখানে কোনো খেলার মাঠ ছিলো না সেখানে ৫টি স্টেডিয়াম নির্মিত হয়েছে। কলকারখানা, ক্ষুদ্র কুটির শিল্প ১৯৩টি থেকে বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১৩৮২টিতে উন্নীত হয়েছে। ফলে সরকারের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় পার্বত্য চট্টগ্রামে এককালের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রভূত উন্নতির ছোঁয়া লেগেছে।
॥ শামীম ইকবাল চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি ॥ মিনমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোর থেকেই সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে বিজিবি। সীমান্তের বিভিন্ন চৌকি গুলোতে বিজিবি সদস্য সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে দৃষ্টি রেখে বিজিবি সদস্যরা সীমান্ত চৌকি গুলোতে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বিশেষ করে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু, ঘুনধুম, চাক ঢালা ও কক্সবাজারের উখিয়া টেকনাফ সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বিজিবি কক্সবাজার ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলী হায়দার জানিয়েছেন, সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। সীমান্তে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখছে বিজিবি।
বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজেদুর রহমান জানিয়েছেন সীমান্ত পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে বাংলাদেশ পার্শ্ববর্তী য়িানমারে সেনা অভ্যুত্থানে সেখানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ বেশ কিছু নেতাদের আটক করেছে সেনাবাহিনী। পুরো দেশটির সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
বিষেশ প্রতিবেদক :: পাহাড়ে সাংবাদিকতার পথিকৃত চারণ সাংবাদিক খ্যাত একেএম মকছুদ আহমেদের সাংবাদিকতায় ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাঁকে সংবর্ধনা দিচ্ছে রাঙামাটি প্রেসক্লাব। সংবর্ধনা ঘিরে বুধবার রাঙামাটি প্রেসক্লাবে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাঙামাটি প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মকছুদ আহমেদের সাথে একই অনুষ্ঠানে আরো চার গুণী ব্যক্তিত্বকে সংবর্ধনা প্রদান করবে প্রেসক্লাব।
প্রস্তুতি সভায় জানানো হয়, আগামী ৫ জানুয়ারি এই সংবর্ধনার আয়োজন করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় সংসদের খাদ্যমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার এমপি। অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলাপ্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ উর্ধতন কর্মকর্তাগণ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্সের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাঙামাটিতে কর্মরত সকল গণমাধ্যম কর্মীদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।
অনুষ্ঠানে যাদের সংবর্ধনা প্রদান করা হবে তাঁরা হলেন, প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এ কে এম মকছুদ আহমেদ, প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য ও কেডিএস গার্মেন্টস এর চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান, প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত পারিজাত কুসুম চাকমা (মরণোত্তর), প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য ও বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মরহুম সাংবাদিক ওবায়দুল হক (মরণোত্তর) ও প্রেসক্লাবের শুভাকাক্সক্ষী, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চিংকিউ রোয়াজা। রাঙামাটি প্রেসক্লাবের প্রস্তুতি সভায় সংবর্ধনা আয়োজনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সদস্যবৃন্দ ছাড়াও ক্লাবে নবযোগদান করা ৭ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। প্রস্তুতি সভার শুরুতে রাঙামাটি প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে নবযোগদান করা সাত সদস্যকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় প্রেসক্লাবের সদস্যরা। পরে নতুন সদস্যরা তাদের পক্ষ থেকে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। প্রস্তুতি সভায় সভাপতিত্ব করেন রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল। সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক এর সঞ্চালনায় এ সময় সম্ভাব্য সংবর্ধিত অতিথি একেএম মকছুদ আহমেদসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রেসক্লাবের মর্যাদার বিষয়টি মাথায় রেখে একটি সুন্দর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজনের লক্ষ্যে সকলের সহযোগীতা কমানা করেন প্রেসক্লাব সভাপতি।
॥ রাহুল বড়ুয়া ছোটন, বান্দরবান ॥ হেডম্যান কারবারীদের আরো দায়িত্বশীল হওয়ার আহবান জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। তিনি বলেন, নিজ নিজ মৌজার দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করার পাশাপাশি এলাকার উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে হেডম্যান কাবারীদের।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে বান্দরবান অরুণ সারকী টাউন হলে হেডম্যান-কারবারী কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে পার্বত্য জেলা পরিষদের অন্তবর্তীকালীন পূর্নগঠন পরিষদ এর চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হেডম্যান কারবারী কল্যাণ পরিষদ (হেকাকপ) এর উপদেষ্টা হেডম্যান সা চ প্রু (মংনু) এর সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মংক্যচিং চৌধুরী, নু মং প্রু, বীর মুক্তিযোদ্ধা মংসুই প্রু, হেডম্যান কারবারী কল্যাণ পরিষদ (হেকাকপ) এর সভাপতি হেডম্যান হ্লা থোয়াই হ্রী, হেডম্যান উনিহ্লা, মংনু, মংক্যনু, মিচিং, উবাথোয়াই চৌধুরী, শৈ এ নু হেডম্যানসহ বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের ১৪জন সদস্য, বোমাং সার্কেলের ১০৯টি মৌজার হেডম্যান ও কারবারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় পার্বত্য মন্ত্রী আরো বলেন, রাজাদের পার্বত্য এলাকায় অসীম ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু রাজা আর হেডম্যান-কারবারীদের মধ্যে কোন ধরণের একতা নেই, তাই অনেক এলাকা ও মৌজা এখনো পিঁছিয়ে রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে পার্বত্য এলাকায় হেডম্যান ও কারবারীরা আগের চেয়ে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বেশি পাচ্ছে তবে অনেক হেডম্যান এখনো পুরনো ধাচে এলাকায় কাজ করে যাচ্ছে, যাতে অনেক উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে।
এসময় পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি পার্বত্য এলাকার রাজাদের হেডম্যান ও কারবারীদের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা ও প্রশাসনের সাথে যুক্ত হয়ে আলোচনা ও পরামর্শে এলাকার উন্নয়ন তরান্বিত করার আহবান জানান।
এসময় বক্তারা, ১৯০০ সালের হিল ট্রাক্টস আইন, হেডম্যান কারবারীদের বেতন ভাতা, সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও প্রথাগত প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, পার্বত্য শান্তি চুক্তি এবং পাহাড়ের ভূমি ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিষদ আলোকপাত করেন এবং হেডম্যান কারবারীদের প্রতি আরো সুনজর দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের অন্তবর্তীকালীন পূর্নগঠনকৃত সদস্যদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।
॥ রাহুল বড়ুয়া ছোটন, বান্দরবান ॥ বান্দরবানে প্রথম পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ৩৩৯টি ঘর পেল ভূমি ও গৃহহীন পরিবার।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গৃহহীনদের মধ্যে এ ঘরগুলোর হন্তান্তর প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সকালে বান্দরবান জেলা প্রশাসক এর সভাকক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো:জিয়াউল হক (এনডিসি,এএফডব্লিউ,পিএসসি), পুলিশ সুপার জেরিন আখতার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক লুৎফুর রহমানসহ সরকারি বেসরকারী উর্ধতন কর্মকর্তা এবং ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বক্তব্য রাখতে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, পার্বত্য এলাকায় কেউ গৃহহীন থাকবে না। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সকল সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে আর তারই সুফল পাচ্ছে দেশের সাধারণ জনসাধারণ। এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি আরো বলেন, পার্বত্য এলাকায় যে উন্নয়ন হচ্ছে তাতে আগামী কয়েক বছরে এই এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন সকলের চোঁখে পড়বে এবং পার্বত্যবাসী সরকারের এই সুফল ভোগ করছে এবং করে যাবে।
এসময় মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রথম পর্যায়ে বান্দরবানের সাতটি উপজেলার ৩শত ৩৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদান উপলক্ষে গৃহ হস্তান্তরের সনদপত্র হাতে তুলে দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। নতুন ঘর ও জমির সনদপত্র হাতে পেয়ে আনন্দে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সদস্যরা।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বান্দরবানের সাত উপজেলায় ৬হাজার ৮শত ৬৭ জন গৃহহীন পরিবারের তালিকা করা হয়েছে এবং প্রথম পর্যায়ে ২হাজার ১শত ৩৪টি বাড়ী তৈরির কাজ চলমান রয়েছে এবং প্রাথমিকভাবে তৈরি ৩শত ৩৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর দেয়া শেষে পর্যায়ক্রমে বাকীদের গৃহ হস্তান্তরের সনদপত্র প্রদান করা হবে।
॥ রাহুল বড়ুয়া ছোটন, বান্দরবান ॥ বান্দরবানের থানচির ৩ কিলোমিটার নামকস্থানে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি চাঁদের গাড়ী খাদে পড়ে ৩জন শ্রমিক ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছে আর এই ঘটনায় আহত হয়েছে আরো ৫ শ্রমিক।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারী) সকালে বান্দরবানের থানচি বাজার হতে মালামাল বোঝাই করে লিক্ষি সড়কের ৩কিলোমিটার নামত স্থানে পৌছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গভীর খাদে পড়ে যায়। এসময় গাড়ীতে থাকা বেশিরভাগ শ্রমিক আহত হলে ও ৩জন ঘটনাস্থলে নিহত হয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দা পুলিশের সদস্যরা আহতদের উদ্ধার করে থানচি স্বাস্থ্্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করে।
থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সাইফুদ্দিন আনোয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুর্ঘটনায় নিহত ৩জন ও আহত ৫জনকে উদ্ধার করে থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ আনা হয়েছে, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ওসি মো.সাইফুদ্দিন আনোয়ার আরো জানান, আহত ও নিহতদের নাম পরিচয় এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।
॥ রাহুল বড়ুয়া ছোটন, বান্দরবান ॥ মুজিববর্ষ উপলক্ষে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদান উপলক্ষে বান্দরবানে কর্মরত সংবাদকর্মীদের নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সকালে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি এর সভাপতিত্বে এই প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এসময় জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি সাংবাদিকদের জানান, আগামী ২৩ জানুয়ারি গণভবন থেকে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদান করবেন। এসময় জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি আরো বলেন, বান্দরবানের সাতটি উপজেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬ হাজার ৮শত ৬৭ জন গৃহহীন পরিবারের তালিকা করা হয়েছে এবং প্রথম পর্যায়ে ২হাজার ১শত ৩৪টি বাড়ী তৈরির কাজ চলমান রয়েছে এবং আগামী ২৩ জানুয়ারী প্রথমে বান্দরবানের তৈরিকৃত ৩শত ৩৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদান করা হবে এবং পর্যায়ক্রমে অন্যান্যদের এই সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
প্রেস ব্রিফিং এ এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ লুৎফুর রহমান, সহকারী কমিশনার রতন কুমার অধিকারী, বান্দরবান প্রেসক্লাবের সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনু, সাধারন সম্পাদক মিনারুল হকসহ বান্দরবানের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা।
॥ লামা সংবাদদাতা ॥ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ও দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো বান্দরবানের লামা পৌরসভা নির্বাচন ২০২১। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৯টি ওয়ার্ডের প্রায় সবগুলো কেন্দ্রে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভোট দিতে দেখা যায় ভোটারদের। প্রতিটি কেন্দ্রে পুরুষের চেয়েও নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্য করার মতো। প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতি দেখা যায়।
এদিকে কয়েকটি কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়া হয়েছে এমন অভিযোগ এনে বিএনপি প্রার্থী মোঃ শাহীন বিকাল সাড়ে ৩টায় লামা উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে নির্বাচন বয়কট করে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।
৯টি কেন্দ্রে ঘুরে জানা যায়, পৌরসভার ২নং ভোট কেন্দ্র লামা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় বিধি লঙ্গন করায় ৪নং ওয়ার্ডের করিম মোস্তফার ছেলে মোঃ রহিম (২৭) কে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ২নং ওয়ার্ডের মৃত মোজাহের হোসেনের ছেলে মোজাফ্ফর আহমদকে সাময়িক আটকের নির্দেশ দেয় ভ্রাম্যমান আদালত। লামা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে বিধি লঙ্গনের কারণে দুপুর সাড়ে ১২টায় সাময়িক সময়ের জন্য আটক করা হয় চন্দন দাশ ও অভি দাশকে। দুপুর ১টায় ৯নং ভোট কেন্দ্র শিলেরতুয়া মার্মা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাল ভোট দিতে গিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর কাছে আটক হয় রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সাহাব উদ্দিনের ছেলে মোঃ আলমগীর (৪০)। বিকাল ৩টায় ৮নং ভোট কেন্দ্রে একাধিক ভোট দিতে গিয়ে কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয় আমির হোসেন নামে এক যুবক। পরে কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাকে সাময়িক আটক রাখার নির্দেশ দেয়।
নির্বাচন কমিশন লামা পৌরসভা নির্বাচনকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি কেন্দ্রে একজন ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল। বিজিবি, র্যাব এর পাশাপাশি পুলিশ আনসার, গ্রাম পুলিশ সদস্যরা নির্বাচনের এলাকায় দায়িত্ব পালন করে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, ‘কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে সকল কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। কোন প্রার্থী এখনো অভিযোগ করেনি।
উল্লেখ্য, লামা পৌর এলাকার মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৩৮৯ জন। তার মধ্যে পুরুষ ৭ হাজার ৩ জন এবং মহিলা ভোটার ৬ হাজার ৩৮৬ জন। এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে ৩ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৯ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ৯টি ভোটকেন্দ্রের ৩৯টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসকল ভোটকেন্দ্রে ৯ জন প্রিজাইডিং, ৩৯ জন সহকারী প্রিজাইডিং এবং ৭৮ জন পোলিং অফিসার ভোটগ্রহণের দায়িত্ব পালন করছেন।